২০০৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কোয়ান্টাম মেথড অডিও সিডি কিনে নিজে নিজেই মেডিটেশন শুরু করি।মেডিটেশন নিয়ে তখন আমার মধ্যে অনেক জল্পনা-কল্পনা।অতীন্দ্রিয় ক্ষমতার প্রতি স্বভাবগতভাবেই আমার প্রচন্ড আগ্রহ ছিল।ভাবতাম,মেডিটেশন করে এক পর্যায়ে হয়তো অতীন্দ্রিয় ক্ষমতা অর্জন করব।একটানা অনেকদিন মেটডটেশন করার পরে আমার মধ্যে নেতিবাচক দৈহিক ও মানসিক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।তাই কোয়ান্টাম কোর্স করার সিদ্ধান্ত নেই এবং করেও ফেলি।কোয়ান্টাম মেথড কোর্স করার পরে বেশ উজ্জীবিত হই।আত্মবিশ্বাস প্রচন্ড বেড়ে যায়।মনে হত আমার দ্বারা সবকিছুই সম্ভব।মাটির ব্যাংকে দান করে ও মনছবি দেখে আমি যা ইচ্ছে তাই পেতি পারি।মনছবি হচ্ছে ধ্যানের স্তরে আপনি কিছু সুনির্ধারিত কল্পনায় মগ্ন হবেন।আপনি বাস্তবে যা পেতে চান তা কল্পনায় দেখবেন।আর কোয়ান্টামের দাবি অনুযায়ী আপনি যা মনছবি করবেন তা পেয়ে যাবেন।আমার মধ্যে ইসলামী চিন্তা-চেতনাবোধ একটু বেশীই ছিল।স্বভাবগতভাবেই যে কোন ব্যাপারে শরীয়তের দিক-নির্দেশনা জানতে চাইতাম।একসময় আমার মধ্যে মনছবির শরয়ী ভিত্তি কি সেই চিন্তা দানা বেধে উঠল।আমার মনে হতে লাগল এটা ইসলাম বিরোধী বিষয়ের অন্তভূক্ত।যারা ইসলামের তাওহীদের ব্যাপারে ভাল ধারণা রাখেন তারা সহজে বুঝতে পারবেন যে মনছবি বিষয়টি তাওহীদ বিরোধী বিষয়।এটিকে আমরা দৈর্বকর্মের অন্তর্ভূক্ত বলতে পারি।জ্যোতিষ বিদ্যার সাথে এর সম্পর্ক গভীর বলা যেতে পারে।একসময় আমি পদ্মাসনে বসে মেডিটেশন করতে চাইতাম।কিন্তু পদ্মাসনের শরয়ী ভিত্তি নিয়ে আমার সন্দেহ শুরু হল।কারণ পদ্মাসন ব্যাপারটি হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মের সাথে সর্ম্পকিত।এনিয়ে আমি খুব মানসিক যন্ত্রণায় ভূগতাম।কোন এক বিষয়ে কাউন্সিল করার জন্য কোয়ান্টামে দায়িত্বরত একজনের সাথে দেখা করি।এক পর্যায়ে তাকে পদ্মাসনের ব্যাপারটিও বলে ফেলি।তিনি আমাকে বোঝাতে শুরু করলেন সব ধর্ম এক।আমি হৃদয় মাঝে প্রচন্ড আঘাত পেলাম।তিনি তার নিজের মুসলিম হওয়ার ব্যাপারটি দাবি করত আমাকে বললেন কিয়ামতের মাঠে এ নিয়ে কোন সমস্যা হলে তিনি সেটা সামলাবেন।এই ব্যক্তির ব্যাপারে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি কি সেটা পাঠকদের বুঝিয়ে বলার প্রয়োজন নেই।কোয়ান্টাম থেকে একটি বালা কিনেছিলাম এবং বালাটি ছিল অষ্টধাতুর তৈরি।কিনে আনা বালাটি হাতে দেওয়ার পর আমার মধ্যে সন্দেহ হতে লাগল শিরকে ঝরিয়ে পড়ছি না তো।পরে সুস্পষ্টভাবে বুঝতে পারলাম যেখানে তাবীযকে ইসলামে শিরক বলা হয় সেখানে বালার ব্যাপারে ইসলামের নির্দেশনা সুস্পষ্ট।বালা ব্যবহার করে রোগ-ব্যধি হতে মুক্ত হওয়ার ধারণা রাখা স্পষ্টতই শিরক।একসময় হাত থেকে বালা খুলে ফেলি।কোয়ান্টাম মেথডের হিলিং বিষয়টি নিয়ে আমার মধ্যে প্রচন্ড সন্দেহ কাজ করত।মেডিটেশন লেবেলে কল্পনার মাধ্যমে অন্যকে সুস্থ করার বিষয়টির ব্যাপারে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি কি হতে পারে তা স্বভাবতই সুষ্পট।শিরক-বেদাতে জর্জরিত মুসলিমরা হয়তো এসবের মধ্যে ইসলাম বিরোধী কিছু খুজে পাবেন না।কোয়ান্টামের কোয়ান্টা সংকেত নিয়ে একসময় আমার মধ্যে মানসিক যন্ত্রণা শুরু হয়।এর পিছনে কারণ ছিল এটা হিন্দু ধর্ম থেকে এসেছে।হিন্দুরা একে অভয় মুদ্রা বলে থাকেন।কোয়ান্টামে কোন বিপদে পড়লে,রাগ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কোয়ান্টা সংকেত ব্যবহার করতে বলা হয়।মেডিটেশন করার সময়ও অভয় মুদ্রা বা কোয়ান্টা সংকেত ব্যবহার করা হয়।শহীদ আল বোখারী অভয় মুদ্রার আধুনিকায়ন করে এর নাম দিয়েছেন কোয়ান্টা সংকেত।তার দাবি অনুযায়ী আল্লাহ শব্দটির আরবীতে লিখলে যেমন দেখা যায় কোয়ান্টা সংকেতে ও তাই দেখা যায়।কি জঘন্য চিন্তা।সত্যিকারের মুসলিম মাত্রই জানবেন বিপদ মুক্তির জন্য এই কোয়ান্টা সংকেত প্রয়োগ করা তাওহীদ বিরোধী বিষয়।এবার আসি কোয়ান্টা ধ্বনির বিষয়ে।সিলেটে কোয়ান্টামের একটা ওয়ার্কশপ হয়েছিল।আমি ও ওয়ার্কশপে গিয়েছিলাম।তো সেখানে খুন শব্দটি অথ্যাৎ কোয়ান্টা ধ্বনির ব্যাপারে কেউ একজন প্রশ্ন করে।শহীদ আল বোখারী প্রশ্নের জবাব দেন।তার কথা অনুযায়ী কুন একটি আরবী শব্দ।এর বাংলা অর্থ হচ্ছে হও।কোয়ান্টামে কোন উদ্দেশ্য হাসিল করতে তারা কুন শব্দটি বলে।তাই শহীদ আল বোখারীর ভাষা অনুযায়ী তারা যখন কুন বলেন তখন তারা প্রকৃতপক্ষে বলেন আল্লাহর ইচ্ছায় হয়ে যাও।তিনি ইসা আলাহিসসালামের সেই মোযেযার কথা বলেন যাতে তিনি কুম বি ইজমিল্লাহ বলে মোযেজা প্রকাশ করতেন।এখন চিন্তা করুন প্রফেট ইসা আলাহিসসালামের মোযেজার সাথে কোয়ান্টামের কুন বলার সর্ম্পক থাকতে পারে।কত সুস্পষ্ট তাওহীদ বিরোধী বিষয়।আল্লাহ আমাদের মাফ করুন।উক্ত ওয়ার্কশপে পর্দার ব্যাপারে একটা প্রশ্ন এসেছিল।প্রশ্নের মূল ব্যাপারটি ছিল কোয়ান্টামে মেয়েরা পর্দা করেনা।তো শহীদ আল বোখারী পর্দার বিষয়টি ব্যাখা করতে লাগলেন।এক পর্যায়ে তিনি বললেন পর্দা বলতে তারা শালীন পোষাককেই বুঝে থাকেন।তাছাড়া তিনি ওয়ার্কশপে আগত মহিলাদের দেখিয়ে বলেন এরা সবাই শালীন পোষাক পড়ে এসেছিলেন।তো এখন শালীন পোষাকের ব্যাপারে গুরুজী কি বুঝেন থাকেন সেটা জানিনা।তবে আমি অনেক মহিলাকে বেপর্দা দেখেছি।বিশেষকরে কোয়ান্টিয়ার মেয়েরা বেপর্দা ছিল।তারা সেজে-গুজে একেবারে হিন্দি সিনেমার নায়িকা হয়ে ভলান্টিয়ারের দায়িত্ব পালন করতে এসেছিল।এসবই যদি হয় শালীনতা তবে আমি ওতে নেই।কারণ আমি ইসলামকেই একমাত্র জীবনব্যবস্থা মনে করি।আমার ভাবতে অবাক লাগে শহীদ আল বোখারীর মতো সাবেক জ্যোতিষীকে ইসলামের মনগড়া ব্যাখার অধিকার কে দিল?তিনি ইসলামের আরো অনেক বিষয়েই কথা বলেন।কোয়ান্টামের শুক্রবারের সকালের প্রোগাম তথা সাদাকায়নে গেলে দেখি নিজের নাম ও জন্মতারিখ লিখে দেই।কৌতুহলবশত জন্মতারিখ বিষয়টি নিয়ে একজনকে প্রশ্ন করলে তিনি জানান হিলিং বা প্রার্থনায় এটি কাজে লাগে।পরে তার সাথে আলোচনা করে জানলাম সেটি জোতিষ শাস্ত্রের ব্যাপার-স্যাপার।লা হাউলা ওয়ালা কুয়য়াতা ইল্লা বিল্লাহ।কত সুস্পষট ইসলাম বিরোধী বিষয়।এতসব কিছুর পড়েও আমার কোয়ান্টামে যাওয়া বন্ধ।কারণ তাওহীদ আমার মধ্যে তখনো পাকাপোক্ত হয়নি।এখন কোয়ান্টামের প্রতি কোয়ান্টাম সংলিষ্টদের দৃষ্টিভঙ্গির কিছুটা বলি।আমার কোয়ান্টামের এক ভাই আছেন।তিনি নিয়মিত কোয়ান্টামে যান।কোয়ান্টামের জন্য কাজ করেন।তিনি আমাকে একদিন বললেন প্রত্যেক যামানায় আল্লহ তাআলা একজন মুজাদ্দিদ প্রেরণ করেন।তার দাবি অনুযায়ী এই যামানার মুজাদ্দিদ হচ্ছে কোয়ান্টাম,ত্রাতা হচ্ছে কোয়ান্টাম।লা হাউলা ওয়ালা কুয়য়াতা ইল্লা বিল্লাহ।এই ভাই ই আরেক দিন বললেন তাদের গুরুজী নাকি রাসূলুল্লাহ সাল্লালাহুআলাইহি ওয়া সাল্লামের মিনি সংস্করণ।আল্লহ আমাদের মাফ করুন।কি করে শিরক-বেদাতের সাথে যুক্ত একজন মানুষ রাসূলুল্লাহ সাল্লাললাহুআলাইহি ওয়া সাল্লামের মিনি সংস্করণ হয়?এক কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েট বোনকে ফেসবুকে অ্যাড করেছিলাম।তো তিনি তার ফেসবুক প্রোফাইলে রিলিজিয়ন হিসেবে দিয়েছেন কোয়ান্টাম।এখন চিন্তা করে দেখুন মানুষ কোয়ান্টামকে দ্বীন মনে করতে শুরু করেছে।সম্মানিত পাঠকগণ,কোয়ান্টাম যে ইমান বিরোধী বিষয়,কোয়ান্টাম যে বড় ফিতনা সেটা আমার কাছে সুস্পষ্ট হওয়ার পর আমি কোয়ান্টাম ত্যাগ করি।আমি এতক্ষণ যা লিখলাম এসবই হচ্ছে আমার অভিজ্ঞতার আলোকে লেখা।তাই আমার উপরে আস্থা থাকলেই আপনারা এগুলো বিশ্বাস করবেন।সেটা করার দরকার নেই।বরং চলুন কোয়ান্টামের বই-পুস্তক,লিফলেট,সিডি,ওয়েবসাইট থেকে এমন তথ্য জেনে নিই যেগুলো ইসলামের শিক্ষা বিরোধী।আর এসব যে ইসলাম বিরোধী সেটা বুঝতে আপনাদের কোন মুফতির দ্বারস্থ হতে হবেনা।তাওহীদের জ্ঞান থাকাই যথেষ্ট।কোয়ান্টামে একটি মেডিটেশন রয়েছে যেটির নাম হচ্ছে প্রকৃতির সাথে একাত্মতা।এই মেডিটেশনে আপনি প্রকৃতির সাথে একাত্ম হবেন।যার ফলে আপনি নিজেকে আর একা মনে করবেন না।আপনি নিজেকে প্রকৃতির অবিচ্ছ্যেদ্য অংশ মনে করবেন।আর গুরুজীর দাবি অনুযায়ী প্রকৃতির সাথে একাত্ম হওয়ার ফলে আপনি আপনার কাজ কর্মে প্রভূত উন্নতি লাভ করবেন।হে মুসলিম ভাই ও বোন এখন বলুনতো,প্রকৃতি আমাদের ভাল-মন্দের ক্ষমতা রাখে?এই মেডিটেশনটি কি সুস্পষ্ট শিরক নয়?এই রকম ধ্যান-ধারণা মানুষকে ইসলাম থেকে বের করে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট নয় কি?
কোয়ান্টামের একটি বিষয় হচ্ছে মনছবি।মনছবি হচ্ছে আপনি কল্পনার মাধ্যমে আপনার ভবিষ্যৎ নির্মাণ বা নিয়ন্ত্রণ করবেন।আল্লাহর কাছে প্রার্থনা বাদ দিয়ে কল্পনার মাধ্যমে নিজের ভবিষ্যত নির্মাণের ব্যাপারে ইসলামের নির্দেশনা সহজেই অনুমেয়।মনছবির জন্য আলাদা মেডিটেশনও রয়েছে।
উচ্চতর মেডিটেশন কোর্স নামে কোয়ান্টামে একটা লিফলেট রয়েছে।লিফলেটে লিখা রয়েছে কোর্সে উপলদ্ধির বিশেষমাত্রা সর্ম্পকে।আসুন সেগুলো পর্যালোচনা করি।
>নিজের অন্তর্গত অনিশ্চয়তা,নিরাপত্তাহীনতা ও নিঃসঙ্গতার কারণ উদঘাটন ও তা দূরীকরণ:নিজেকে স্রষ্টায় সমর্পণের মাধ্যমে প্রশান্ত প্রত্যয় সৃষ্টি করা।বিষাদমুক্ত সদানন্দ আলোকিত জীবনের চাবিকাঠি লাভ।
আচ্ছা পাঠকদের কাছে প্রশ্ন-মুসলিমরা স্রষ্টায় সমর্পণের নিয়মকানুন কোথেকে গ্রহণ করবে?নিশ্চয় কুরআন ও বিশুদ্ধ সুন্নাহ থেকে।রাসূলুল্লাহ সাল্লাললাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে স্রষ্টায় সমর্পণের রাস্তা দেখিয়ে দিয়েছেন।এখন আমরা ভারতীয় মুশরিকদের কাছ থেকে আমদানিকৃত পথে স্রষ্টায় সমর্পণ কেন হতে যাব?
>চেতনার পঞ্ঝম মাত্রার উন্মোচন:কোয়ান্টাম চেতনা মন্ডল /আরবীতে যা 'আলমে লোকমানি' এবং যোগ সাধনায় 'কুন্ডলিনী' শক্তি নামে পরিচিত/ জাগ্রত করে অতিচেতনাকে চেতনার পঞ্ঝম মাত্রা অন্ন্ত চেতনায় উন্নীতকরণ।
আচ্ছা এই কুন্ডলিনী শক্তির ব্যাপারে তাওহীদবাদী মুসলিমরা কি বলেন?আমরা তারকার শক্তিতে বিশ্বাস করিনা,সূর্যের শক্তিতে বিশ্বাস করিনা।আমারা কুন্ডলি শক্তিতে ও বিশ্বাস করিনা।এই কুন্ডলী শক্তির ধারণা ইসলাম বিরোধী বিষয়।
>অঙ্গীকার,বায়াতআত্মিক শক্তির ধারা পরস্পরার সাথে সংযুক্তি স্থাপন।
আচ্ছা এই আত্মিক শক্তির ধারা পরস্পরার সাথে সংযুক্তি স্থাপন এর ব্যাপারে কোরআন ও বিশুদ্ধ সুন্নাহর দিক নির্দেশনা কোথায়?এই বিষয়টি কি আমাদের সামনে শিরকের পথ উন্মোচন করে দেয় না?
>কোয়ান্টাম ফিল্ড এনার্জি-সংক্ষেপে 'কোয়ানফি' প্রয়োগ করে অন্যকে নিরাময় করার প্রক্রিয়া আয়ত্ত করা।
এই কোয়ান্টাম ফিল্ড এনার্জির ব্যাপারে ইসলামের দিক নির্দেশনা।এসব বিষয় কি হালালা চিকিৎসার অর্ন্তভূক্ত?এসব চিকিৎসা পদ্ধতি কি আমাদেরকে শিরকের পথে ধাবিত করছে না?
>স্পর্শ নিরাময় প্রক্রিয়ায় শুধুমাত্র কপালে বা অসুস্থ স্থানে হাত রেখে ব্যাথা-বেদনার তাৎক্ষণিক উপশম করা।
এবিষয়টি যাদু নাকি জ্যোতিষ শাস্ত্রের অন্তভূক্ত নাকি অন্য কিছু আল্লাহ মালুম।তবে এটি নিশ্চিত যে দৈব কর্মের অন্তর্ভূক্ত।দৈব কর্ম সর্ম্পকে বিস্তারিত জানতে চাইলে সালেহ বিন ফাওযান এর লেখা 'যাদু,ভাগ্য গণনা ও দৈব কর্ম'বইটি পড়া যেতে পারে।বইটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন মুহাম্মদ মানজুরে ইলাহি।বইটি http://www.islamhouse.com এ পাওয়া যেতে পারে....চলবে