somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শোকে কাতর পাঁচ গ্রাম..সেই সঙ্গে সারা বাংলাদেশ.. এমনকি সারা দুনিয়ার টপ মিডিয়া জগতে প্রচার..অথচ..

১৩ ই জুলাই, ২০১১ রাত ২:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের সন্মানিত মডারেটর এটা নিয়ে ব্লগে তেমন কিছু উল্লেখ করেন নাই...এটা নিয়ে স্টিকি করার মত হয়তো কেউ তেমন কিছু লিখেও নাই...তবুও আশা করবো আজকে যেহেতু সারা বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এটা নিয়ে শোক দিবস পালন করা হবে তাই এই বিষয়টি নিয়ে পোষ্ট স্টিকি করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি...আমরা শোকে হতবিহ্বল...ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোকে সান্তনা দেওয়ার ভাষা কারও জানা নেই....তবুও একটু এই চেষ্টা....

একটি পত্রিকা (প্রথম আলো)থেকে কপি-পেষ্ট:
এক-দুই বাড়ি পর পর একটি-দুটি করে কাঁচা কবর। এসব কবরে শায়িত মিরসরাইয়ে দুর্ঘটনার শিকার ৩৫ স্কুলছাত্র। একসঙ্গে এত শিশু-কিশোরের মৃত্যু আগে কখনো দেখেনি পাঁচ গ্রামের মানুষ। শোকে হতবিহ্বল গ্রামবাসীকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা কারও জানা নেই।
চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায় সৈদালী এলাকায় ট্রাক ডোবায় পড়ে যে ৪৪ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে, তাদের ৩৫ জনই ওই পাঁচ গ্রামের। অন্যরা আশপাশ এলাকার। গত সোমবার দুপুরে উপজেলা সদরে ফুটবল খেলা দেখে ফেরার পথে এরা দুর্ঘটনার শিকার হয়।
গ্রামগুলো হলো ১৩ নম্বর মায়ানী ইউনিয়নের মধ্য মায়ানী ও পূর্ব মায়ানীর মনু ভূঁইয়াপাড়া। ১১ নম্বর মগাদিয়া ইউনিয়নের মাস্টারপাড়া, জলদাসপাড়া ও শেখের তালুক। নতুন কবরগুলো দেখতে উৎসুক মানুষ ভিড় করেছে গ্রামগুলোতে। সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা গেছে দুর্ঘটনাস্থল সৈদালী এলাকায়। সেখানে কালও শিশু-কিশোরদের ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা জুতা-স্যান্ডেল, গায়ের ছেঁড়া জামাকাপড় পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
গতকাল মঙ্গলবার মাতম দেখা যায় আবুতোরাব উচ্চবিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায়। তোরাব আলী বাজারের প্রতিটি দোকানে উড়ছে কালো পতাকা। লোকজনের বুকে আঁটা ছিল কালো ব্যাজ। দোকানপাটে বসে লোকজন নিচু স্বরে বলাবলি করছিল আগের দিনের দুর্ঘটনার কথা। সকালে বিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক, অভিভাবকেরা শোক মিছিল বের করলে বেদনাবিধুর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
আবুতোরাব উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাফর সাদেক প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুর্ঘটনা বেছে বেছে আমার মেধাবী ছাত্রগুলো নিয়ে গেল। যারা ক্লাস ক্যাপ্টেন ছিল, যারা অ্যাসেম্বলি করত, তারাই খেলা দেখতে গিয়েছিল। তরতাজা ছেলেগুলো ফিরল লাশ হয়ে!’
কবরের পর কবর: দুর্ঘটনাস্থল সৈদালী পার হলেই পূর্ব মায়ানীর মনু ভূঁইয়াপাড়া গ্রামের কেন্দ্রীয় কবরস্থানে পর পর তিনটি নতুন কবর। আরও একটি কবরের জন্য আগাছা পরিষ্কারের নমুনা দেখা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেখানে চতুর্থ কবরটি আর খোঁড়া হয়নি।
আনোয়ার নামের একজন বাসিন্দা জানান, রাজিব, তারেক ও শাখাওয়াতের লাশ এখানে দাফন করা হয়েছে। শাখাওয়াতের ফুফাতো ভাই শামসুদ্দিনের জন্য আরেকটি কবর তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু শামসুদ্দিনের বাবা ছেলেকে তার মামার বাড়িতে দাফন করতে রাজি হননি। এ কারণে দক্ষিণ মগাদিয়ায় বাবার বাড়িতে শামসুদ্দিনকে দাফন করা হয়। পড়ালেখার সুবিধার জন্য শামসুদ্দিন মামার বাড়িতে থাকত।
এরপর পশ্চিম দিকে কিছু দূর এগোলেই মায়ানী গ্রাম। এই গ্রামে মৃতের সংখ্যা সর্বাধিক। এখানে অন্তত ১৬ জনকে দাফন করা হয়েছে। এর মধ্যে কুদ্দুস মাস্টারের বাড়ির কবরস্থানে দাফন করা হয় আবুতোরাব উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র সুজনকে। একই গ্রামের ঝুলুর বাপের কবরস্থানে দাফন করা হয় চার ছাত্রকে। এরা হলো তোফাজ্জল, রিয়াজ, সাকিব ও ইফতেখার। ইফতেখার স্থানীয় প্রফেসর কামাল উদ্দিন চৌধুরী কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। অন্য তিনজন আবুতোরাব উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র। এই গ্রামের মুক্তার বাড়ির কবরস্থানে দাফন করা হয় নয়ন নামের এক ছাত্রকে। আরও পশ্চিমের মগাদিয়া ইউনিয়নের জলদাশপাড়ায় দাহ করা হয় টিটু দাস ও লিটন দাসকে।
গতকাল দুপুরে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া এবং সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আবদুল করিম ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে শোকার্ত মানুষকে সান্ত্বনা দেন। শিক্ষামন্ত্রী নিহতদের প্রত্যেক পরিবারের জন্য ২৫ হাজার টাকা এবং আহতদের জন্য পাঁচ হাজার টাকার সরকারি আর্থিক সহায়তার ঘোষণা দেন। শিল্পমন্ত্রী ঘোষণা করেন, নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবারের জন্য ১০ হাজার এবং আহত শিক্ষার্থীদের পরিবারের জন্য পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। শিল্পমন্ত্রী নিহত শিক্ষার্থীদের স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরির ঘোষণাও দেন। আগের রাতে জানাজায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী আফছারুল আমীন নিহত প্রত্যেক শিক্ষার্থীর পরিবারের জন্য ২০ হাজার টাকা সহায়তার ঘোষণা দেন।
মিরসরাই উপজেলা চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ঘুরে ঘুরে দেখেছি, এই পাঁচ গ্রামের মানুষ শোকে যেন স্তব্ধ হয়ে গেছে। সান্ত্বনা দেওয়ার লোকও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আর্থিক সহায়তার ঘোষণাও এদের মাঝে স্বস্তি আনতে পারছে না।’
পূর্ব মায়ানী গ্রামের আয়নাল হক বলেন, ‘কাকে দোষ দেব বুঝতে পারছি না। ধরে নিতে হবে আমাদের কপাল খারাপ।’
আবুতোরাব উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র রিয়াজ উদ্দিন, কমর উদ্দিন ও ইসমাইল জানায়, তাদের সঙ্গে পড়ত এমন পাঁচজন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। তারা জানায়, সোমবার বিদ্যালয় ছুটি ছিল না। ওরা খেলাপাগল বলে স্কুল ফাঁকি দিয়ে খেলা দেখতে গিয়েছিল।
যুদ্ধকালীন মিরসরাই থানার ডেপুটি কমান্ডার জাফর উদ্দিন আহমদ চৌধুরী জানান, মিরসরাইয়ের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ট্রাক, মাইক্রোচালকদের লাইসেন্স নেই। এসব দেখার যেন কেউ নেই। লাইসেন্সবিহীন গাড়িতে ঝুঁকি নিয়ে মিরসরাইবাসী চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে। তিনি এ ব্যাপারে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
গতকাল আবুতোরাব উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, সহপাঠীরা বারবার মূর্ছা যাচ্ছিল। একটি কক্ষে অন্য সহপাঠীরা তাদের সেবা করছিল। একপর্যায়ে উপজেলা প্রশাসন থেকে একটি চিকিৎসক দল আবুতোরাব উচ্চবিদ্যালয়ে আসে।
চিকিৎসক দিলীপ চৌধুরী বলেন, মেয়েরা বেশি আবেগপ্রবণ হওয়ায় তারা মূর্ছা যাচ্ছে। অবস্থার অবনতি হলে কাউকে কাউকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়।
ক্লাস ছুটি: শোকের কারণে এ সপ্তাহের বাকি দুই দিন আবুতোরাব উচ্চবিদ্যালয়ে ক্লাস হবে না। আনুষ্ঠানিকভাবে ছুটি ঘোষণা করা না হলেও শিক্ষক কিংবা ছাত্র কারও ক্লাস করার মতো মানসিক অবস্থা নেই।
বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে জানান, আজ বুধবার সকালে বিদ্যালয় চত্বরে শোকসভা হবে, বৃহস্পতিবার হবে মিলাদ মাহফিল। শুক্রবারও একটি সংগঠন মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে। তাই শনিবারের আগে কোনো ক্লাস হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুলাই, ২০১১ রাত ২:২৯
৯টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে দেখা - ১৩ মে

লিখেছেন জোবাইর, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:০৩

১৩ মে ২০০৬


দমননীতির অদ্ভুত কৌশল
সরকার নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী দলের ওপর দমন নীতির আশ্রয় নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দ্রুত বিচার আইন ও পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে দমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×