somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছাত্রীকে যৌন হয়রানির কারণে আখাউড়ায় শিক্ষক গ্রেপ্তারৎ অভিভাবকের মতো শিক্ষকের কাছেই যদি মেয়েরা নিরাপদ না থাকে তা হলে আমরা কোথায় যাব?

১১ ই জুলাই, ২০১১ দুপুর ১২:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় ষষ্ঠ শ্রেণীর এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির কারণে পৌরশহরের দেবগ্রাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিড়্গক মো. সামছুল ইসলামকে (৩৬) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার বিকেল চারটার দিকে নিজ বিদ্যালয় থেকে প্রথমে পুলিশ তাকে আটক করে। সন্ধ্যায় এই বিষয়ে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হলে এই মামলায় ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়। হয়রানির শিকার ওই ছাত্রীর মা বাদি হয়ে মামলাটি করেছেন।

থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ জুন বুধবার বিকেল তিনটায় শ্রেণী কক্ষে পড়ানোর সময় অভিযুক্ত শিক্ষক পিছনের বেঞ্চে বসা ওই ছাত্রীর বেঞ্চে বসে। তাকে আরো দুইজন ছাত্রীর মাঝ খান থেকে টেনে এনে ওই শিক্ষক তাঁর পাশে বসায়। এক পর্যায়ে ওই ছাত্রীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দেয়। লজ্জায় ওই ছাত্রী কান্না করতে করতে পাঠদান চলা অবস্থায় শ্রেণী কক্ষ থেকে বেড়িয়ে যায়। বাড়ি গিয়ে বিষয়টি তার মাকে বললে ওই ছাত্রীর মা তাৎক্ষনিক তাঁর মেয়েকে নিয়ে বিদ্যালয়ে আসেন। প্রধান শিক্ষকের কাছে এই ঘটনার বিচার দাবি করেন।

বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলেছেন, ছাত্রীর মা ও ছাত্রীটির দেয়া ভাষ্য শুনে প্রধান শিক্ষক অভিযুক্ত শিক্ষককে তাঁর কক্ষে ডেকে । অন্যান্য শিক্ষকের সামনে ওই শিক্ষক জানান, শাসন করতে গিয়ে অসাবধানতা বসত ওই ছাত্রীর পিঠে হাত না লেগে তাঁর সামনে লেগেছিলো। এই ঘটনার পর ওই শিক্ষককে সাতদিনে মধ্যে বিদ্যালয় ত্যাগ করতে বলা হয়। ঘটনার ১২ দিন পর পুলিশ ওই শিক্ষককে বিদ্যালয় থেকে আটক করে।

এই বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ মাহফুজুর রহমান বলেন, ঘটনা জানার পর বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও অন্যান্য শিক্ষকদের সাথে কথা বলে ওই শিক্ষকের বিচার করা হয়। আগামী শনিবার বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভায় তাঁর চূড়ান্ত বিচার হওয়ার কথা ছিলো। বিদ্যালয়ের ১০০ বছরের ইতিহাসে এমন ঘটনা ঘটেনি। এই শিক্ষক দোষী হলে তাঁর দৃষ্টান্তমূলক শান্তির দাবি জানান তিনি।

অভিযুক্ত শিক্ষক পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর থানায় আসেন আখাউড়া উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ বোরহান উদ্দিন, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির কয়েকজন সদস্য, শিক্ষক এবং এলাকার কয়েকজন গণমান্য ব্যক্তি। তাঁরা থানার ওসির সাথে কথা বলে বেড়িয়ে আসার সময় সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশের কাছে অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্ঠান্তমূলক শান্তির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

এসময় থানা চত্ত্বরে জড়ো হওয়া বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর কয়েকজন ছাত্র বলেন, অভিযুক্ত ওই শিক্ষক পড়া ঠিক মতো বলতে না পাড়লে ছাত্রীদের গায়ে হাত তুলত।

হয়রানির শিকার ওই ছাত্রীর মা বলেন, তাঁর স্বামী নেই। সেলাই করে দুইটি মেয়ের পড়াশুনা করান। বড় মেয়েটি ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ে। তাঁর পড়াশুনা করার অনেক আগ্রহ। তিনি বলেন, বিদ্যালয় থেকে বিচার করার আশ্বাসে আর মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তিনি চুপ ছিলেন।

রোববার পুলিশ তাঁর বাড়ি গিয়ে ঘটনা জানতে চাইলে তিনি জানান। পড়ে থানায় এসে অভিযোগ দেন। তিনি বলেন শিক্ষকের মতো অভিভাবকের কাছেই যদি মেয়েরা নিরাপদ না থাকে তা হলে আমরা কোথায় যাব? কার কাছে ছেলে মেয়েদের শিক্ষা নিতে পাঠাবো?

অভিযুক্ত শিক্ষক সামছুল ইসলামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার পাক শিমূল গ্রামের পূর্ব পাড়ায়। তাঁর বাবা মৃত হায়দার আলী। ব্যক্তি জীবনে তিনি বিবাহিত। তার এক ছেলে সন্তান রয়েছে।

আখাউড়া থানা পুলিশের হেফাজতে থাকা এই শিক্ষক তাঁর বিরুদ্দে আনা অভিযোগ স্বীকার করেন। এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ভুল করে ওই ছাত্রীর গায়ে তার হাত লেগেছিলো। এই জন্য বিদ্যালয় থেকে এমন ঘটনা পরবর্তীতে আর ঘটলে বিদ্যালয় ছাড়ার যে সিদ্ধান্ত দেয়া হয় তা তিনি মেনে নিয়েছিলেন।

আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরম্নল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত শিক্ষক যে দোষী তার সত্যতা পাওয়া গেছে। ছাত্রীটির মায়ের দেয়া অভিযোগের ভিত্তিতে থানাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে।

http://www.comillaweb.com/2011/07/11/11527/


এম ডি ইয়াছিন মিয়া
[email protected]...

৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×