somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছাত্রীকে জোড় করে যৌন নির্যাতন, নগ্ন ভিডিও চিত্রের ফাঁদ পরিমলের....

১০ ই জুলাই, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শুধু অভিযুক্ত ছাত্রীই নয়, ভিকারুন নিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অনেক ছাত্রীই পরিমলের শিকার হয়েছে। আর এ জন্য নগ্ন ভিডিও চিত্রের ফাঁদ পেতেছিল পরিমল। তা প্রকাশের ভয় দেখিয়ে একাধিক ছাত্রীকে সর্বনাশ করেছে সে। রিমান্ডের দ্বিতীয় দিন গতকাল সে এসব কথা স্বীকার করেছে পুলিশের কাছে। বলেছে, গোপনে নগ্ন ভিডিও চিত্র ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল, কখনও প্রেমের ফাঁদে ফেলে শয্যাসঙ্গী করেছি তাদের। পরিমলকে কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করে বাড্ডা থানা পুলিশ। তদন্ত কর্মকর্তা ও ইন্সপেক্টর শাহাদাত হোসেন বলেন, নগ্ন ভিডিও চিত্র উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। ভিডিও চিত্রগুলো পাওয়া গেলেই পরিমলের ছাত্রী ব্ল্যাকমেইলের কৌশল সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। তিনি বলেন, ভিকারুন নিসা নূন স্কুলের একাধিক পৃষ্ঠা ৮ কলাম ৫
ছাত্রীকে কয়েক দফায় ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। তদন্ত সূত্র মতে, অভিনব কৌশলে পরিমল ছাত্রীদের বাগে আনতো। পরীক্ষার খাতায় বেশি নম্বর দেয়ার প্রলোভন দিয়ে সম্পর্ক শুরু করতো। এজন্য প্রলুব্ধ করতো কোচিংয়ে যেতে। এ ক্ষেত্রে তার নজর ছিল নবম ও দশম শ্রেণীর ছাত্রীদের দিকে। তবে ফাঁদে পড়া ছাত্রীদের কখনও পড়াতো না। তাদের কাছে পরীক্ষার আগেই প্রশ্নপত্র ফাঁস করে দিতো সে। বসুন্ধরা শাখাপ্রধানের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে সহজেই সে এমন দু’নম্বরী কাজ চালিয়ে যেতো। স্কুল সংশ্লিষ্টরা জানান, শক্তিশালী লবিংয়ের মাধ্যমে ২০১০ সালে পরিমল শিক্ষক হিসেবে যোগ দেয়। ওই প্রভাবশালী লবিংয়ের কারণে পরিমলকে নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতেন না শাখাপ্রধান লুৎফর রহমান। বরং, তার সঙ্গে সৎভাব বজায় রেখে চলতেন। শুধু অধ্যক্ষ নন, ওই স্কুলের বেশিরভাগ শিক্ষক ও ছাত্রী পরিমলকে ভয়ের চোখে দেখতেন। এ কারণে ১০ম শ্রেণীর ধর্ষিত ছাত্রী প্রথমে মৌখিকভাবে অভিযোগ দেয়ার পরও তা চেপে যেতে পরামর্শ দেন অধ্যক্ষ। ততক্ষণে ওই ধর্ষণের কথা ছাত্রী ও অভিভাবকদের মুখে মুখে চাউর হওয়ার পর স্কুল কর্তৃপক্ষ বেসামাল হয়ে পড়েন। ফুঁসে ওঠে নিপীড়িত ছাত্রীরা। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, একাধিক ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনে বাধ্য করার কারণে পরিমল ফেঁসে গেছেন। মান-সম্মানের ভয়ে অনেক নির্যাতিত ছাত্রী তা চেপে যায়। কিন্তু একজন ছাত্রী সাহসের পরিচয় দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্যরাও ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আন্দালন শুরু করে। মামলার তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, পরিমল ছাত্রী ধর্ষণের আগে প্রেম করার কথা অকপটে স্বীকার করেছে। তার দাবি- ব্ল্যাকমেইল করে নয়, প্রেমের ফাঁদে ফেলে ছাত্রীদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়েছিল। আলাদাভাবে অনেক ছাত্রীকে বিয়ের আশ্বাস দিয়েছিল। এ কৌশলেই নির্জন দুপুরে তার বেডরুমে একাধিকবার মিলিত হয়েছিল। আর এ দৃশ্য ভিডিও করে রাখতো। পরবর্তীতে ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করতো এ ভিডিও চিত্রকে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর শাহাদত হোসেন বলেন, পরিমল এখন অনুতপ্ত। এজন্য নিজেই নিজের শাস্তি দাবি করেছে। বলেছে- আমি ছাত্রীদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক করে অপরাধ করেছি। আমি জেলে যেতে চাই। কারাদণ্ড ভোগ করতে চাই। তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, চলতি বছরের শুরুতেই ৯ম ও ১০ম শ্রেণীর দুই ছাত্রীকে বশ করেছিল পরিমল। দু’জনের সঙ্গে একযোগে পরকীয়ার বিষয়টি ফাঁস হয়ে পড়লে তারা দু’জনেই পরিমলের কাছে পড়া বাদ দেয়। এরপর সে আরও কয়েক জনকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। সর্বশেষ গত মে মাস থেকে পরিমল মিথ্যা তথ্য দিয়ে অভিযোগকারী ছাত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। পুলিশ জানায়, কোচিং সেন্টারের নাম করে স্কুলের পাশেই ৫ রুমের একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল। ওই বাড়ির একটি কক্ষ সুসজ্জিত। সেই কক্ষটিই বেড রুম হিসেবে ব্যবহার করতো। ওই বেড রুমেই শিকার হওয়া ছাত্রীদের নিয়ে যেতো। পরে ধারণ করা ভিডিও চিত্র ইন্টারনেটে প্রকাশের ভয় দেখিয়ে লম্পট পরিমল নিয়মিত পাশবিক নির্যাতন চালাতো। তদন্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর শাহাদত হোসেন বলেন, এখন পাঁচ বিষয়ে পরিমলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে- কয়জনকে শিকার করেছিল, প্রেমের সম্পর্ক দাবি করলেও কেন তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। ছাত্রীদের কাছে বিয়ে ও সন্তানের কথা কোন উদ্দেশ্যে গোপন করেছে। কেন গোপনে ভিডিও চিত্র ধারণ করেছে। একই সঙ্গে তার লাম্পট্য কর্মকাণ্ডের আর কোন শিক্ষক জড়িত কিনা সে বিষয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
ভিডিও চিত্রে যা আছে: পুলিশ ও গোয়েন্দারা জানান, লম্পট পরিমলের অনুদ্ধারিত দু’টি মোবাইল সেটের মেমোরি কার্ডে অভিযোগকারী ছাত্রীসহ আরও অনেক ছাত্রীর চিত্র ধারণ করা হয়েছে। ছাত্রীদের বিবস্ত্র চিত্রসহ অনেক অশ্লীল দৃশ্য সেখানে সেভ করা আছে। ওইসব অশ্লীল ছবি প্রকাশের ভয় দেখিয়ে সে দিনের পর দিন ছাত্রীদের নিপীড়নে বাধ্য করেছে। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার পরিমলকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেয় বাড্ডা থানা পুলিশ। এর আগে বুধবার সকালে রাজধানীর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আমিরাবাগ (জিঞ্জিরা) গ্রামে স্ত্রীর বড়বোনের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। ১৭ই জুন ভিকারুন নিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বসুন্ধরা শাখার ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী ওই স্কুলের বাংলা বিভাগের শিক্ষক পরিমলের বাসায় ধর্ষণের শিকার হয়। এমন অভিযোগ করে ওই ছাত্রী ৫ই জুন বাড্ডা থানায় শিক্ষক পরিমল জয়ধরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করে। মামলার অভিযোগে ছাত্রী জানায়, পরিমল তার দু’হাত বেঁধে বিবস্ত্র করে ভিডিও চিত্র ধারণ করে। পরে ওই ভিডিও চিত্র ইন্টারনেটে প্রকাশ করার হুমকি দিয়ে কয়েক দফায় ধর্ষণ করে।
চিকিৎসা নিতে সিঙ্গাপুরে নিপীড়িত ছাত্রী
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বসুন্ধরা শাখার শিক্ষকের ধর্ষণের শিকার ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর গেছে। বৃহস্পতিবার রাতে ওই ছাত্রী তার বাবা ও মায়ের সঙ্গে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। নির্যাতিত ছাত্রীর এক স্বজন বলেন, সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণের কথা রয়েছে। এর আগে অ্যাপোলো হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছিল সে। ধর্ষণের আগে দু’হাত বাঁধার সময় কনুইতে প্রচণ্ড ব্যথা পেয়েছিল ছাত্রীটি। এছাড়া মেয়ের বাবাও একজন হার্টের রোগী। তাছাড়া পরিমলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার পর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিল ছাত্রী ও তার পরিবার।

এই রকম কুত্তারবাচ্চাদের কঠিন শাস্তি হওয়া দরকার। শিক্ষার নামে যদি এই ভাবে ছাত্রী ধর্ষণ করা
হয় তাহলে মানুষ আর শিক্ষকের কাছে কোন মেয়েকেই পাঠাবে না। পরিমলের এইসব ঘটনা স্কুলের অন্যান্য শিক্ষক বা শিক্ষিকা হয়তোবা কেউ জানে। কিন্তু তারা জেনেও কোন কথা বলতো না। অপরাধ যে করে আর অপরাধ যে সহ্য করে দুজনেই সমপরাধী। এই কথা যদি সত্যি হয় তাহলে স্কুলের অন্যান্য শিক্ষক বা শিক্ষিকা এমনকি অধ্যক্ষ যারা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তাদেরও তার মতই শাস্তি হওয়া দরকার।
কোন রাজনৈতিক দলের লোক যদি তাকে সাপোর্ট করে তাহলে সেই রাজনৈতিক দল অনেকটা জনপ্রিয়তা হারাবে। তাই আমরা আশা করবো পরিমলকে কোন উপর মহলের লোক সাহায্য করবে না বা বিচার থেকে বাচাতে এগিয়ে আসবে না। বাংলাদেশের মানুষ পরিমলের শাস্তি দেখতে চায়। শুধু পরিমল নয় যারা পরিমলকে সাহায্য করেছে বা পরিমলের এসব বিষয় জানতো তাদেরও শাস্তি আমরা দেখতে চাই।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে চাইলে পরিমলের মতো মানুষকে অবশ্যই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতেই হবে। কারণ আজকের স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরাই আগামী দিনের ভবিষ্যত।

১২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×