somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পৈশাচিক উল্লাসে আর কত জীবন নেবে জল্লাদগুলো?? X( X(

১০ ই জুলাই, ২০১১ দুপুর ১২:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজকের একটা নিউজ দেখে মনে প্রশ্ন জাগে আমাদের রাজনীতিবিদরা আর কত খেলবে আমাদের জীবন নিয়ে? আমাদের মৌলিক অধিকার হরন করে আমাদের ঘরে বসিয়ে রাখতে চাইছে তারা?? এর একটা সমাধান জরুরী। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। হয় মরবো নাহলে মারবো! আর নয়!!

গত সপ্তাহের হরতালের একটি অমানবিক ও পৈশাচিক ঘটনার কথা বলছি। বলছি তরুন ফল ব্যবসায়ী মোশাররফ এর কথা। যাকে হরতালকারীরা ট্রাকসমেত পুড়িয়ে দেয়। কি নির্মমতা!! সেই মোশাররফ তিনদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে গতকাল রাত দেড়টায় মারা গেছেন!!

হরতালের আগুনে শরীরের শতকরা ৯০ ভাগ পুড়ে যাওয়া তরুণ ব্যবসায়ী মোশাররফ হোসেন (২২) মারা গেছেন। গতকাল শনিবার রাত দেড়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। বার্ন ইউনিট সূত্র ও নিহতের পরিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকায় আম নিয়ে আসার সময় নাটোরে ট্রাকে আগুন দেয় হরতালকারীরা। এতে তাঁর শরীরের ৯০ ভাগ পুড়ে যায়। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা মোশাররফকে ওইদিনই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালের বেডে শুয়ে ভাঙা গলায় মোশাররফ প্রথম আলোকে ঘটনার বর্ণনা দেন এভাবে, ‘আমরা কানসাট হাট থিকা আইতাছিলাম। নাটোর শহরের কাছাকাছি আইছি (নাটোর শহরে ঢোকার মুখে, তেবাড়িয়ায়)। হঠাৎ দেহি রাস্তার উপরে কয়ডা গাছ ফেলানো। ড্রাইভার জায়গায় ব্রেক করল। গাড়ি থামার লগে লগে ১০-১৫টা পোলা দৌড়ায়া আইল। কয়েকজনের হাতে লাডি আর বোতল। কয়েকজন ঢিলাইতে শুরু করল। আর কয়েকজন আইয়াই বাইড়ানি শুরু করল। এর মধ্যে একজন বোতল মারল। এক মিনিটের ভিতরেই পুরা গাড়ির ভিতরে আগুন ধইরা গেল। আমি পড়ছি আগুনের মইধ্যে। আমি বাইরাইতে পারতাছিলাম না। জানালা দিয়া লাফ দিলাম, পড়লাম জঙ্গলের (ঝোপ) ওপর। হেরপর দুইডা পোলা দৌড় দিয়া আয়া আমারে উডাইল। আমারে পুড়া দেইখা হ্যারা আমারে ফালাইয়া দৌড় দেয়।’

মোশাররফের গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরের জাজিরায়। ঢাকার হাজারীবাগ, কোম্পানীঘাটে বাবা-মার সঙ্গে থাকতেন তিনি। মোশাররফের বাবা আইয়ুব আলী ফুটপাতে কলা বিক্রি করেন।

সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো

ফ্ল্যাশ ব্যাকঃ হরতালকারীদের সহিংসতা


বিএনপি-জামায়াত জোটের টানা হরতালে সহিংসতার শিকার অগ্নিদগ্ধ পুরনো ঢাকার হাজারীবাগের তরুণ ফল ব্যবসায়ী মোশাররফ হোসেন (৩০) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিটের বেডে মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছে। সারা শরীর পোড়াদগ্ধ যন্ত্রণা শুধু ছটফট করছে মোশাররফ। কে জানত হরতালসমর্থকরা তার আমবোঝাই ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেবে। কী অপরাধে তারা এমন ঘটনা ঘটাল। এরা কি মানুষ হত্যায় আনন্দ পায়। এমন প্রশ্ন গুরুতর আহত ফল ব্যবসায়ী মোশাররফের। কষ্ট ও যন্ত্রণায় মৃদু কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন। এ সময় তার চোখের কোল বেয়ে অশ্রু ঝরে পড়ছিল। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিটে প্রকল্প পরিচালক ডা. সামনত্ম লাল সেন জনকণ্ঠকে জানান, ফল ব্যবসায়ী মোশাররফ হোসেনের শরীরের ৯৫ ভাগ পুড়ে গেছে। তাকে বাঁচানো কঠিন। বাঁচা-মরা সৃষ্টিকর্তার হাতে। তবে আমারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তাকে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে। শরীরে স্যালাইন চলছে। পোড়ায় টান ধরলেই তার অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হবে।

বার্ন ইউনিটের ৪র্থ তলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্ড এসডিইউ ১১ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন মোশাররফ হোসেনের মুখম-ল, চোখসহ সারা অঙ্গ পুড়ে দগ্ধ। চেনারই উপায় নেই_ এটি মোশাররফ? এমন কথা বললেন তার ঘনিষ্ঠ এক বন্ধু। শরীয়তপুরের আইয়ুব আলী মাতব্বরের পাঁচ সনত্মানের মধ্যে মোশাররফ দ্বিতীয় সনত্মান। তিন বোন আর দুই ভাইয়ের সংসারে মোশাররফই একমাত্র আয়ের ভরসা। তার এই করম্নণ পরিণতি দেখে পরিবারের সদস্যরা অন্ধকারে নেমে এসেছে। দুই ভাই, তিন বোন আর বাবা-মাসহ ৭ সদস্যের সংসার নিয়ে হাজারীবাগ এলাকায় বসবাস করেন।

হাসপাতালে বেডে কষ্ট ও যন্ত্রণায় মোশাররফ হোসেন মৃদু কণ্ঠে বলেন, হরতালে প্রথমদিন বুধবার সন্ধ্যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ৫৪০ ঝুড়ি আম কিনে তা ট্রাকে (ঢাকা মেট্রো-ট-১১- ৪৪৮১) তুলে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। আনুমানিক ১২টায় নাটোর শহরের বাইপাস সড়কের তেবাড়িয়া এলাকায় এলে ২৫-৩০ যুবক তাদের ট্রাক গতিরোধ করে। হরতাল-হরতাল সেস্নাগান দিয়ে ওই যুবকরা ট্রাকের সামনে গাছের গুঁড়ি ফেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। একপর্যায়ে যুবকরা আমবোঝাই ট্রাকে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় ট্রাকের চালক ও হেলপার গাড়ি থেকে নামতে পারলেও ট্রাকের কেবিনে থাকা তিনি আটকা পড়ে। চোখের সামনে তিনি আগুনে ঝলসে যান। বাঁচাও বাঁচাও শত চিকিৎসার করেও তিনি বের হতে পারেননি। আগুনে তার শরীরের প্রায় ৯৫ ভাগ দগ্ধ হয়। জানা গেছে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা রাসত্মার পাশ থেকে মোশাররফকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। এরপর পুলিশের সহযোগিতায় একটি এ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় পাঠানো হয় মোশাররফকে।

বেডে যন্ত্রণায় কাতর অগি্নদগ্ধ মোশাররফ হোসেন জানান, হরতালে দূরপালস্নার কোন বাস চলাচল করেনি। অতীতের এমন অভিজ্ঞতা থেকেই চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম কিনতে গিয়েছিলাম। তাই মঙ্গলবার রাতে বাসা থেকে বিদায় নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হন। হরতালের সুযোগে ফাঁকা রাস্তা পেয়ে তিনি আম কেনার লোভে ছুটে গিয়েছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জে। তার ধারণা ছিল হরতালের রাতে মহাসড়কসহ রাজধানী রাস্তা ফাঁকা থাকবে। তাই হরতালে প্রথমদিনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রওনা দেন।

এদিকে ক্ষতিগ্রসত্ম আম ব্যবসায়ী চাঁপাইনবাবগঞ্জের মোছাদ্দের আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৫০ জনের নামে বৃহস্পতিবার নাটোর সদর থানায় মামলাটি করেন। ট্রাকে অগি্নসংযোগের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ নাটোরের তেবাড়িয়া এলাকার বাদশা মিয়ার ছেলে রফিকুল, বানু ভূঁইয়ার ছেলে আলম, আবদুল জব্বারের ছেলে মাসুদ রানা, ইউনুছ আলীর ছেলে মামুনুর রশীদ ও চৌধুরী বড়গাছা এলাকার মামুনকে আটক করেছে। মামলার তদনত্মকারী কর্মকর্তা নাটোর থানার উপ পরিদর্শক জালাল উদ্দিন জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িত তেবাড়িয়া বাইপাস এলাকার রফিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ আলম, মাসুদ রানা ও মামুনুর রশিদকে গ্রেফতার করে পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়ে শুক্রবার নাটোরের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট লিয়াকত আলীর আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সূত্রঃ দৈনিক জনকন্ঠ

এ ধরনের ঘটনা মোটেও নতুন নয়। প্রতি হরতালেই দেখা যায় হরতালকারীরা গাড়ীতে অগ্নি সংযোগ কিংবা ব্যক্তির উপর আক্রমন চালায়। এর একটা বিহিত হওয়া জরুরী। আমরা এই নরপিশাচ রাজনীতিবিদ এবং তাদের সহযোগীদের হাত থেকে মুক্তি চাই। আসুন আমরা দলমত নির্বিশেষে হরতালকে প্রত্যাখান করি এবং হরতালকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াই।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুলাই, ২০১১ দুপুর ১২:৫৯
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মাটির কাছে যেতেই..

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

মাটির কাছে
যেতেই..


ছবি কৃতজ্ঞতাঃ https://pixabay.com/

ঠিক যেন
খা খা রোদ্দুর চারদিকে
চৈত্রের দাবদাহ দাবানলে
জ্বলে জ্বলে অঙ্গার ছাই ভস্ম
গোটা প্রান্তর
বন্ধ স্তব্ধ
পাখিদের আনাগোনাও

স্বপ্নবোনা মন আজ
উদাস মরুভূমি
মরা নদীর মত
স্রোতহীন নিস্তেজ-
আজ আর স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাকা ভাংতি করার মেশিন দরকার

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:১০

চলুন আজকে একটা সমস্যার কথা বলি৷ একটা সময় মানুষের মধ্যে আন্তরিকতা ছিল৷ চাইলেই টাকা ভাংতি পাওয়া যেতো৷ এখন কেউ টাকা ভাংতি দিতে চায়না৷ কারো হাতে অনেক খুচরা টাকা দেখছেন৷ তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেলা ব‌য়ে যায়

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩০


সূর্যটা বল‌ছে সকাল
অথছ আমার সন্ধ্যা
টের পেলামনা ক‌বে কখন
ফু‌টে‌ছে রজনীগন্ধ্যা।

বাতা‌সে ক‌বে মি‌লি‌য়ে গে‌ছে
গোলাপ গোলাপ গন্ধ
ছু‌টে‌ছি কেবল ছু‌টে‌ছি কোথায়?
পথ হা‌রি‌য়ে অন্ধ।

সূর্যটা কাল উঠ‌বে আবার
আবা‌রো হ‌বে সকাল
পাকা চু‌ল ধবল সকলি
দেখ‌ছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পর্ণআসক্ত সেকুলার ঢাবি অধ্যাপকের কি আর হিজাব পছন্দ হবে!

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৩ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:২৭



ইন্দোনেশিয়ায় জাকার্তায় অনুষ্ঠিত একটা প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জিতেছে বাংলাদেশি নারীদের একটা রোবোটিক্স টিম। এই খবর শেয়ার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপিকা। সেখানে কমেন্ট করে বসেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ২৩ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:১৪


কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়
আমার বাবা-কাকারা সর্বমোট সাত ভাই, আর ফুফু দুইজন। সবমিলিয়ে নয়জন। একজন নাকি জন্মের পর মারা গিয়েছেন। এ কথা বলাই বাহুল্য যে, আমার পিতামহ কামেল লোক ছিলেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×