somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভিকারুন্নেসার সেই মেয়েটির চিঠি

০৮ ই জুলাই, ২০১১ রাত ৯:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সবিনয় নিবেদন এই যে, আমি (নাম)। জন্ম ১৮/১১/১৯৯৬। আমি ভিকারুন নিসা নূন স্কুলের বসুন্ধরা দিবা শাখার একজন নিয়মিত ছাত্রী। আমি ছাত্রী হিসেবে ভাল ফলাফলের জন্য প্রতি বিষয়েই স্কুলের শিক্ষকদের কাছে কোচিং করি। যেমন লুৎফর রহমান স্যারের কাছে গণিত, মাহবুবুল হক স্যারের কাছে ইংরেজি, জাহাঙ্গীর আলম স্যারের কাছে পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন, জিনাতুন্নেছা আপার কাছে জীববিজ্ঞান এবং পরিমল জয়ধর স্যারের কাছে বাংলা। অত্র স্কুলে আমি চতুর্থ শ্রেণী থেকেই পড়ে আসছি। পরিমল জয়ধর স্যার স্কুলে বাংলা বিষয় পড়ান বলে আমি তার কোচিংয়ে গত মে ২০১১ থেকে ১০ জনের ব্যাচে পড়া শুরু করি। আনুমানিক ২০-২৫ দিন পরে কোচিং ক্লাসে পড়তে যাওয়ায় আমার একটু বিলম্ব হয়। দেরিতে যাওয়ায় যেটুকু পড়ায় আমি অনুপস্থিত ছিলাম সেটুকু পড়া স্যার আমাকে বুঝিয়ে দেবেন বলে দেরি করতে বলেন। সবাই চলে যায় কিন্তু আমি রয়ে যাই। সবাই চলে গেলে আমি আগের পড়াটুকু পড়তে থাকি। স্যার মূল দরজা বন্ধ করে রুমে এসে রুমের দরজা বন্ধ করে দেন এবং আমি কিছু বুঝার আগেই আমার মুখ বেঁধে ফেলেন। মুখ বাঁধা থাকায় আমি কিছু বলতে পারিনি। হাত ছোড়াছুড়ি করতে যাওয়ায় তিনি আমার ওড়না দিয়ে আমার হাত পেছনে বেঁধে ফেলেন। হাত বেঁধে সে আমাকে ভীষণ মারধর করে। মারধর করে সে আমাকে উলঙ্গ করে ফেলে এবং আমার ছবি তোলে। ছবি তোলার পর সে আমাকে শারীরিক নির্যাতন করে। ঘটনার আকস্মিকতায় আমি হতভম্ব হয়ে যাই এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি। এরপর সে আমার বাঁধন খুলে দেয় এবং সাবধান করে দেয় যে ঘটনা কাউকে বললে, নিয়মিত তার ক্লাস না করলে সে আমার ছবি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেবে এবং আমাকে মেরে ফেলার হুমকি পর্যন্ত দেয়। এতে আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি এবং দিশাহারা হয়ে যাই। এরপর জুন ১৭ তারিখ লুৎফর স্যারের ব্যাচ থেকে পড়ে আমি পরিমল স্যারের ব্যাচে পড়তে যাই। তখন অন্য ব্যাচ পড়ছিল। স্যার আমাকে পাশের রুমে বসতে বলেন এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই ব্যাচ ছুটি দিয়ে সদর দরজা বন্ধ করতে যান। তখন আমি দৌঁড়ে গিয়ে তাকে দরজা বন্ধ করতে বারণ করি। তখন সে আমাকে ধাক্কা দেয় এবং মাথা দেয়ালে লাগায় আমি মাথায় ব্যথা পাই। তখন সে আমাকে ধমক দেয় যে, ‘তোকে বলেছি আমার ইচ্ছার বাইরে যাবি তো তোকে জানে মেরে ফেলবো’। এরপর সে আমাকে শারীরিক নির্যাতন করে। জুন ১৮ তারিখ সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় ১৯ জুন তারিখে ঘটনাটি আমার সহপাঠীদের অবহিত করি। তারা আমাকে ঘটনাটি শাখা প্রধানকে (লুৎফর রহমান) জানাতে বলে। তারা আমাকে পরামর্শ দেয় যে, শাখাপ্রধান এ বিষয়টির সুষ্ঠু বিচার করতে পারবেন। সেদিন আমি আমাদের শাখাপ্রধান লুৎফর রহমান স্যারকে ব্যাপারটি বলতে যাই। কিন্তু তিনি ব্যক্তিগত বা স্কুলের কাজে স্কুলে ছিলেন না বিধায় তাকে ওইদিন ঘটনাটি জানাতে পারিনি। জুন ২০ তারিখ স্যার স্কুলে অনুপস্থিত ছিলেন। জুন ২১ তারিখে তিনি স্কুলে আসেন এবং আমি তাকে সুযোগ বুঝে ব্যাপারটি জানাই। তিনি আমাকে বললেন যে, তিনি ঘটনাটি দেখবেন। লুৎফর রহমান স্যারকে ঘটনা জানানোর পরও ২২শে জুন পরিমল স্যার স্কুলে এলে আমি লুৎফর স্যারকে পুনরায় ব্যাপারটি বলি। তিনি আমাকে ব্যাপারটি ভেবে দেখছেন বলে আশ্বস্ত করেন। জুন ২৩ তারিখে স্কুলে অভিভাবক মিটিং ছিল যেখানে আমাদের স্কুলের অধ্যক্ষ হোসনে আরা বেগমও উপস্থিত ছিলেন। সেদিন পরিমল স্যারকে আমরা স্কুলে দেখিনি। এরপর ২৬ ও ২৭শে জুন তারিখ অসুস্থতার কারণে আমি স্কুলে উপস্থিত হতে পারিনি। জুন ২৮ তারিখে স্কুলে গেলে আমাদের দশম শ্রেণীর সব ছাত্রী পরিমল স্যারের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় আমরা আলোচনায় বসি। আলোচনায় তার সম্পর্কে আরও কিছু কুরুচিপূর্ণ কথা উঠে আসে। তখন আমরা সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেই যে, আমরা অধ্যক্ষকে এ ব্যাপারে অবহিত করবো। তাই আমরা পরিমল স্যারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে আবেদনপত্র তৈরি করি। আবেদনপত্রটি ক্লাসে পড়ে শোনালে স্বেচ্ছায় সবাই এতে নিজ নিজ নাম স্বাক্ষর করে। এরপর আবেদনপত্রটি শাখা প্রধান জনাব লুৎফর রহমান স্যারের মাধ্যমে অধ্যক্ষ বরাবর পৌঁছে দেয়ার অনুরোধ জানাই। উল্লেখ্য যে, আমি স্কুলে অনুপস্থিত থাকাকালীন ২৭শে জুন ঘটনাটি স্কুলে জানাজানি হয়ে যায়। অতএব, এ ব্যাপারটি আপনার সুবিবেচনায় এনে আমার ওপর পরিমল স্যার যে বর্বরোচিত, অমানবিক, অনৈতিক, ঘৃণিত আচরণ করেছেন তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও বিচারের দাবি জানাচ্ছি।

এইটা আমি একজন 'সকালের খবর' এর সাংবাদিক এর কাছে পেয়েছি.!!!!
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তোমার ভাঁজ খোলো আনন্দ দেখাও :: দু শ'রও বেশি পুরোনো ব্লগারের প্রোফাইল পিকচার নিয়ে একটি মিউজিক ভিডিও

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ৩০ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৭

১৫ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে সামহোয়্যারইন ব্লগের দু শ'রও বেশি ব্লগারের প্রোফাইল পিকচার নিয়ে বানানো একটা মিউজিক ভিডিও শেয়ার করেছিলাম। যে-সব ব্লগার ঐ সময়ে অ্যাক্টিভ ছিলেন, প্রোফাইল পিকচারগুলো তাদের ছিল।



কয়েকদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রহস্যময় কলা

লিখেছেন বিষাদ সময়, ৩০ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:৩১




এই কলা শব্দটা আমার কাছে পুরাই বিভ্রান্তিকর। নারীদের কলা বলতে যে ছলাকলা সেটা ভালই বুঝি। সেই ছলাকলা দেখে গলা বাড়ালেই যে ষোলকলা পূর্ণ হয় সেটাও জানা। কিন্তু এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ দরজা

লিখেছেন মোঃ আরিফুজ্জামান আরিফ, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ১:১৬


বাইরে ঝুম বৃষ্টি। বাইরে ঘোর অন্ধকার, বিদ্যুৎ নেই। মা চুলায় খিচুড়ি দিয়েছে। ঘ্রাণে চারপাশ ছেয়ে আছে। সাথে বেগুন ভাজা, ইলিশের দো পিয়াজি, দই-কাতলা, রুই মাছের মাথা দিয়ে মুড়ি ঘন্ট,... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮



বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি

লিখেছেন শায়মা, ৩১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫


এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×