somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রবীন্দ্রনাথের কোন বিকল্প নাই -২৭

০৬ ই জুলাই, ২০১১ সকাল ১১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ধরুন আপনি নিজের বাড়ি রেখে অন্যত্র বাসা বেঁধেছেন।তাই বলে তো কেউ আপনার বাড়িতে এসে লুটপাট করতে পারে না।রবীন্দ্রনাথ তার গান-কবিতা নিয়ে নিজেই বলে গেছেন- 'আমার গান-কবিতা একান্তই আমার সম্পদ।কারও যদি ভালো না লাগে তাহলে তার এগুলো গাওয়ার দরকার নেই।১৯৯১ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণের ৫০ বছর পূর্ণ হয়।সে হিসাবে ওই বছরেই তার গানের কপিরাইট আইন উঠে যায়।কিন্তু ভারত সরকার আরও ১০ বছর এর মেয়াদ বাড়ায়।ফলে ২০০১ সালে রবীন্দ্রসংগীতের কপিরাইটের সমাপ্তি ঘটে।এরপর থেকে নতুন প্রজন্মের মধ্যে রবীন্দ্রসংগত চর্চার আগ্রহ বৃদ্ধি পেতে থাকে।রবীন্দ্রনাথ সব বাঙালির আশ্রয়।তার রেখে যাওয়া গানগুলো সম্বল করে আমরা সংগীত চর্চা করে আসছি।

রবীন্দ্রনাথ বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলংকার জাতীয় সংগীত রচনা করেছেন।শ্রীলংকার আনন্দ সমরকুন নামের এক ছাত্র শান্তিনিকেতনে কবিগুরুর কাছে কলা ও সংগীত বিভাগে পড়তে গিয়েছিলেন।তার অনুরোধেই রবীন্দ্রনাথ একটি গান লিখে দেন শ্রীলংকার জন্য।এই গানের প্রথম লাইনে আছে 'শ্রীলংকা মাতা...' । সিংহলী ভাষায় অনুবাদের পর ১৯৫৩ সালে এটি শ্রীলংকার জাতীয় সংগীত হিসেবে অনুমোদন পায়।বাংলাদেশে ও ভারতের মতো শ্রীলংকায়ও রবীন্দ্রনাথের সুরেই গানটি গাওয়া হয়।

কঠোর পরিশ্রম ও সাধনার মধ্য দিয়ে রবীন্দ্রসংগীত চর্চা করতে হয়।যে কেউ চাইলেই রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী হতে পারবেন, এই ধারণা একেবারে ভুল।রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী হতে প্রথমেই প্রয়োজন এর স্বরলিপি জানা,এরপর তা সাধনা করা।সাধনা ছাড়া সংগীত শেখা যায় না।রবীন্দ্রনাথ শব্দ দিয়ে কবিতা রচনা করেছেন এবং সেই শব্দের আঙ্গিকে সন্তুষ্ট হতে না পেরে অবশেষে রঙে হাত দিয়েছেন।জীবনের শেষ ১৭টি বছর তিনি ছবি এঁকেছেন। 'দিব আর নিব মিলিবে মিলিবো'- এই বিশ্বাস রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সবসময়ই ছিল।তার চিত্রকর্মেও এর প্রতিফলন রয়েছে। তার ছবি নিয়ে প্রথমে ভাবতাম, এ ছবি গুলো এমন কী! অলকিডের ওয়াটার কালার দেখে রবীন্দ্রনাথের ওয়াটার কালার কোথায় বুঝতে পারলাম।মানুষের মন অচেতন পদার্থের মধ্যেও একটা অন্তরের পদার্থ দেখে। স্বভাবতই মানুষের মন সকল জিনিসকেই মনের জিনিস করে নিতে চায়।তাই আমরা যখন একটা ছবি দেখি তখন এই প্রশ্ন করি, এই ছবির ভাবটা কী।যারা শিল্পী তাদের লক্ষ্য থাকে এই যে, তাদের সৃষ্ট পদার্থ মনের দরবারে নিত্য আসন পাবে।

রবীন্দ্রনাথের ভ্রমন কাহিনী বের হয় তার ২০ বছর বয়সে।'ইয়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র' তার সেই প্রথম যৌবনের লেখা।সেই ছোটবেলা থেকে বুড়ো বয়স পর্যন্ত, তার অন্তত গোটা নয় বই আছে ভ্রমনের ওপর।যেমন- পথের সঞ্চয়(১৯১২), জাপানের যাত্রী(১৯১৯), পারস্যে(১৯৩২)রাশিয়ার চিঠি(১৯৩১) ইত্যাদি। রবীন্দ্রনাথকে যারা বিশ্বপথিক মনে করেন, তারা ঠিকই মনে করেন।আমাদের প্রায়ই মনে থাকে না, রবীন্দ্রনাথ 'দেশ' বলতে সংকীর্ণ অর্থে নিজের মাতৃভূমি বলে ভাবতে তৃপ্তি পেতেন না। তার 'দেশ' ধারণার মধ্যে এক ধরণের মহাজাগতিক উপলব্দির ব্যাপাত ছিল। তার মৃত্যুর পর প্রকাশিত আত্মপরিচয়(১৯৪৩) গ্রন্থের রচনা গুলো তার উপলব্দির অন্য এক জগতের মুখোমুখি করে আমাদের।

'শেষের কবিতা' উপন্যাস প্রকাশিত হয় ১৯২৯ সালে।এই উপন্যাস বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাঠকের কাছ থেকে প্রবল সাড়া এসেছিল।কবি বুদ্ধদেব বসু লিখেছিলেন, অবাক হয়ে দেখলাম রবীন্দ্রনাথের আধুনিক মূর্তি আমরা আধুনিক বলতে যা ভাবছিলাম, ঠিক তা নয়।শিলাইদহ থেকে ইন্দিরা দেবীকে কবি লিখেছেন- 'সবে দিন চারেক হলো এখানে এসেছি, কিন্তু মনে হয় যেন কতদিন আছি তার ঠিক নেই- মনে হচ্ছে আজিই যদি যাই তা হলে যেন অনেক বিষয়ে অনেক পরিবর্তন দেখতে পাবো....'। আর স্ত্রীকে লিখেছেন- শিলাইদহে এসে মনটা কেমন ব্যাকুল হয়।যাকে ছেড়ে যেতে হবে তাকেই বেশি সুন্দর দেখায় এই আমাদের মোহ।'

ভারতের পশ্চিম বঙ্গের বীরভূম জেলার বোলপুর রেলওয়ে স্টেশনের পাশে তৈরি হচ্ছে 'গীতাঞ্জলি' রেলওয়ে জাদুঘর'। কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনাদর্শ, কবিতা, রচনা, কবির আঁকা চিত্রকর্ম,পান্ডুলিপিসহ বিভিন্ন সৃষ্টি সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে অবহিতের লক্ষ্যেই এটি নির্মাণ করা হচ্ছে।কবির শেষ যাত্রার 'চিরন্তনী' নামের যে ট্রেনের কামরাটি বর্তমানে বোলপুর স্টেশনের পাশে রাখা আছে সেটিকে ওই জাদুঘরের নিচতলায় রাখা হবে।

(চলবে....)
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×