somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিষ্ঠুরতা, স্বার্থপরতা ও ভালবাসার গল্প

০৫ ই জুলাই, ২০১১ রাত ১:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গল্প এক.....
হাসপাতালের ছোট কেবিনটিতে নীলচে হালকা এক ধরনের আলো জ্বলছে। বেড এ শুয়ে আছেন সিদ্দিক সাহেব, মুখে অক্সিজেন মাস্ক লাগানো, বেড এর দুই পাশে দুটি করে স্যালাইন ও ব্লাড ব্যাগ ঝোলানো। তিনি নড়তে পারছেন না, নড়তে গেলেই সারা শরীরে এক ধরণের অমানুষিক ব্যাথা অনুভব হচ্ছে । চোখ বন্ধ করে ছিলেন, হঠাৎ তার মনে হল কেঊ তাকে ডাকছে। কষ্ট করে চোখ মেলে তাকালেন,চোখ খুলেই কিছুটা চমকে উঠলেন। দেখলেন তার বেড এর সামনে কালপ্রিটটা বসে আছে! লোকটা একটু ঝুঁকে এসে কিছুটা কৌতুক এর সুর এ বলল, “ভাইজান, চিনতে পারছেন তো? আমি শওকত। কেমন আছেন ভাইজান?? আপনার এক্সিডেন্ট এর খবর শুনে দেখতে আসলাম” লোকটার চোখের দিকে তাকিয়ে সিদ্দিক সাহেবের কেমন জানি এক ধরণের ঘৃণা এবং এক-ই সাথে একটু ভয় করতে থাকে। শওকত নাম এর এই লোকটি তার নিজের আপন ভাই! তার নিজের কোম্পানিটে সে তাকে অনেক বিশ্বাস করে ম্যানেজার এর দায়িত্ব দিয়েছিল, আর সেই ভাই তার সাথে প্রতারনা করে তার পুরো কোম্পানি আত্মসাৎ করে নেয়, তিনি মামলা করেছেন, এখনো চলছে, মামলায় তার কারচুপি প্রায় ধরা পরার পথে। কিন্তু হঠাৎ আজকে এই শয়তান টা কেন তাকে দেখতে এসেছে, সেটা বুঝতে পারলেন না....ভাবনায় ছেদ পরল শওকত এর কথায়, কেমন জানি শীতল দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে সে বলল “ভাইজান আমি জানি আপনি এ মামলায় জিতে যাবেন, আমাকে জেলে যেতে হবে, কিন্তু তা কি করে হয় বলুন? আমাকে যে অনেক উপরে যেতে হবে ভাইজান, পথের সব কাঁটা সরিয়ে না ফেললে যে তা সম্ভব না! আমাকে ক্ষমা করবেন ভাইজান!” সিদ্দিক সাহেব ভয়ানক ভাবে চমকে উঠলেন এবং হঠাৎ করে তার কাছে সব কিছু পরিষ্কার হয়ে যেতে লাগলো, এই শওকত-ই তাকে গতকাল রাস্তায় গারিচাপা দিয়ে মারতে চেয়েছিল! কিন্তু তিনি বেঁচে গিয়েছিলেন, বুঝতে পারলেন তার এই অমানুষ ভাই টি তাকে এখন মেরে ফেলবে! তার নিজের আপন ছোট ভাই!!.. এর থেকে বড় কষ্ট আর কি হতে পারে?? শওকত আরেকটু ঝুঁকে এসে একেবারে সিদ্দিক সাহেবের মুখের কাছে এসে বলল “আপনি কোন চিন্তা করবেন না ভাইজান, আপনার সব সম্পত্তি আমি দেখে শুনে রাখব। আপনার কমবয়সী স্ত্রী, সেও আমার কাছে ভালই থাকবে!” বলে হাহ হাহ করে পিশাচের মতো হাসতে লাগলো শওকত। আরেকবার চমকে উঠলেন সিদ্দিক সাহেব, শেষ পর্যন্ত তার স্ত্রীও তার সাথে!!...আর কিছু ভাবতে পারলেন না, হঠাৎ করে তার সব চিন্তাগুলো এলমেলো হয়ে গেল, কাছের সব মানুষগুলিকে অনেক দূরের মনে হতে লাগলো...চোখের সামনে সবকিছু অন্ধকার হয়ে এলো, শুধু স্পষ্ট দেখতে পেলেন, এক জোড়া হাত তার অক্সিজেন মাস্ক এর দিকে এগিয়ে আসছে....ধীরে ধীরে......শেষ মুহূর্তে তার চোখের সামনে তার ছোট ছোট ছেলেমেয়েদুটির মুখ ভেসে ওঠলো...এই পিশাচটা কি তার
ছেলেমেয়েগুলিকেও মেরে ফেলবে?? খোদা তুমি আমার বাচ্চা দুইটা কে বাঁচাও খোদা, বাঁচাও!!............

আধা ঘণ্টা পর। শওকত গাড়িতে বসে আছে, গাড়ি হাইওয়ে ধরে ছুটে চলছে। বাইরে মুশলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। শওকত জানালার কাচ দিয়ে ভাবলেশহীন দৃষ্টিটে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে। সেই দৃষ্টিতে কোনও দুঃখবোধ নেই, অনুশোচনা নেই, আছে শুধু লালসা..........

গল্প দুই....
জাহিদ তাকিয়ে আছে তার নীল চোখের দিকে, এই নীল চোখের মায়াতেই কি তার প্রেমে পরে গিয়েছিল সে? হয়ত...নীলিমা, তার স্ত্রী। নীল চোখের সৌন্দর্য কে সার্থক করতেই যেন নাম রাখা হয়েছিল নীলিমা। আহা, কত শান্তিতেই না এখন ঘুমাচ্ছে মেয়েটা। জাহিদ শুধু তাকিয়ে দেখছে, ঘুমন্ত ভালবাসার মানুসটিকে দেখতে অনেক ভাল লাগছে তার। হ্যাঁ, অনেক অনেক ভালবাসে সে নীলিমা কে, তার নিজের থেকেও কি বেশি? হয়তো...তাইত নীলিমা কে তার কাছ থেকে হারিয়ে যেতে দেয়নি সে! তাদের বিয়ের প্রায় এক বছর হয়েছে, বিয়ের পর পাঁচ মাসের মাথায় লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয় নীলিমা। প্রথম দিকে বেশি গুরুত্ব না দিলেও দিন দিন লিভার এর অবস্থার অবনতি হতে থাকে। গত এক মাস আগে ডক্টর জানায়, অবস্থা খুব-ই খারাপ, লাস্ট স্টেইজ এ চলে এসেছে, এখন একটি বড় অপারেশান করাতে হবে, নয়ত বাচানো যাবেনা নীলিমা কে। কিন্তু অনেক টাকার দরকার, যা স্বল্প আয়ের বেতনে যোগার করা জাহিদ এর পক্ষে অসম্ভব হয়ে পরে। কিন্তু হাল ছাড়ে না সে। নীলিমা কে যে তার বাঁচাতেই হবে! নয়ত নীলিমাহীন পৃথিবীতে সে বাঁচবে কিভাবে? অপারেশান এর ডেট চলে আসে, কিন্তু তখনো টাকার যোগার হয়না, হন্যে হয়ে টাকার খোঁজে ঘুরতে ঘুরতে একদিন সে একটি অসৎ সুযোগ পেয়ে যায়। জীবনে কখনো তেমন কোনো অসৎ কাজ না করলেও নীলিমার চিকিৎসার টাকা যোগার করার জন্য সে মরিয়া হয়ে ওঠে! মন সায় না দিলেও নিরুপায় হয়ে শেষমেশ এক রকম প্রতারনার আশ্রয় নেয়! যোগার হয়ে যায় টাকা.. এই কথাগুলো ভাবতে ভাবতে আনমনা হয়ে গেল জাহিদ, নিজের ভেতর অপরাধবোধ টা আবার মাথা চারা দিল, জোর করে সেটাকে দমন করল, একটা জীবনের কাছে নিশ্চই অন্য সব কিছু নগণ্য, নিশ্চই নগণ্য! শেষ পর্যন্ত নীলিমার অপারেশান হয়েছে, সে এখন সুস্থ। এতক্ষণ ঘুমুচ্ছিল, এখন চোখ মিটমিট করে তাকাল তার দিকে, তাকিয়েই হাসল আর জাহিদের চোখে পানি চলে আসল, বলল “কেমন আছ নিলু??” আস্তে করে একটু হেসে জবাব দিল নিলু, “যার পাশে তোমার মত একজন ভালবাসার মানুস আছে, সে কি কখনো খারাপ থাকতে পারে??” চোখ মুছে বাচ্চাদের মত হেসে ফেলল জাহিদ। নীলিমা ফিসফিস করে বলল, “জাহিদ, তুমি জান, আমি কি দেখে তোমার প্রেমে পরেছিলাম?? তোমার এই নিষ্পাপ হাসি দেখে, যার হাসি এত নিষ্পাপ, তার ভেতরতা না জানি কত নিষ্পাপ!”...কথাটা শুনে জাহিদ কিছু সময়ের জন্য আনমনা হয়ে গেল, মনে মনে বলল, “হ্যাঁ, নীলিমা, অন্য কারো কাছে আমি পাপী হতে পারি, কিন্তু তোমার কাছে আমি নিষ্পাপ!!”.........

এয়ারপোর্ট রোড এ রেলষ্টেশনের পাশের ব্যাস্ত ওভারব্রিজ। নীচে হাজারো মানুষের স্রোত, উপরে ব্রিজ এ দাঁড়িয়ে আছে মুনির। চোখে টলটল করছে পানি। কোনভাবেই কান্না থামাতে পারছেনা। তার চোখের সামনে সারা জীবনের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু সে কিছুই করতে পারছেনা!! সারাজীবন অনেক কষ্ট করেছে, ছোটবেলাতেই হারিয়েছে মা-বাবা কে, বড় হয়েছে গ্রামে, চাচা-চাচির কাছে। অভাবের সংসারে কষ্ট করে থেকেছে, কিন্তু পড়াশোনাটা চালিয়ে গেছে , সবসময় ভাবতো, একদিন সে বড় কিছু একটা করবে, অনেক ঝড় ঝাপটা গেছে, কিন্তু কখনো ভেঙে পরেনি, নিজের মধ্যে একটা আত্মবিশ্বাস ছিল সবসময়, এই আত্মবিশ্বাস এর জোরেই এগিয়ে যায়। এভাবে একদিন জীবনের স্বপ্ন পুরনের একটি বড় সুযোগ পেয়ে যায়, স্কলারশিপ পায় বাইরে পড়তে যাওয়ার! কিন্তু যাওয়ার জন্য তো টাকা দরকার, প্লেন ভাড়া এবং আরও আনুষঙ্গিক খরচ বাবদ প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা দরকার, মাথায় আকাশ ভেঙে পরে, এত টাকা সে পাবে কোথায়?? স্বপ্নপূরণের এত বড় একটা সুযোগ হাতছারা হয়ে যাচ্ছে দেখে পাগলের মত হয়ে যায়। বিভিন্ন জায়গায় জায়গায় ঘুরতে থাকে টাকা যোগাড়ের জন্য, কিছু টাকা যোগার হয়েও যায়, তার চাচা সাধ্যমতো কিছু সাহায্য করেন, কিছু কোম্পানি থেকে স্টুডেন্ট লোন পেয়ে যায়...কিন্তু সেটাও যথেষ্ট নয়, আরও টাকার দরকার, এদিকে টাকা জমা দেয়ার ডেট চলে আসে, কিন্তু...হতাশ হয়ে পরে!...তখন তার পাশে এসে দাঁড়ায় তার চাচী, ছোটবেলা থেকে চাচী তাকে মায়ের মতই ভালবাসতেন, তিনি তার শেষ সম্বল কিছু গহনা তাকে দিয়ে বলেন সেগুলো বিক্রি করতে। মুনির অবাক হয়ে যায়, এই গহনাগুলি তার ছোট চাচাতো বোন মিলির বিয়ের জন্য রাখা হয়েছিল। তাই মুনির সেগুলা নিতে চায়না, সে নিশ্চয় নিজের জন্য তার ছোট বোনের ভবিষ্যৎ নষ্ট করতে পারেনা! কিন্তু চাচী বলে “শোন, পাগলামি করিস না, তুই যখন বিদেশে গিয়ে পড়াশোনা করে অনেক বড় মানুষ হবি, তখন আমাদের আর অভাব থাকবেনা, এ সবকিছুই তখন পাওয়া যাবে, তুই এখন এগুলো নিয়ে গিয়ে টাকার ব্যবস্থা কর, আল্লাহ এত বড় একটা নিয়ামত দিয়েছেন, সেটা নষ্ট করিস না, যা!!”, মুনিরের চোখ ভিজে যায়, আর কিছু বলতে পারেনা, গহনাগুলি নিয়ে আসে। এগুলা বিক্রি করতে পারলেই তার টাকা যোগার হয়ে যাবে...কিন্তু হায়!, বিধাতা যে তার সাথে এমন নিষ্ঠুর খেলা খেলবেন, তা কি সে জানত?? জাহিদ নাম এর এক লোক ভাল দাম এ বিক্রি করে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে গহনাগুলি তার কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়... পাগলের মত হন্যে হয়ে কয়েকদিন খুজে বেরায় সে লোকটি কে। কিন্তু না, পায়না! নিজেকে কেমন বোকা, অথর্ব, অকর্মণ্য মনে হতে থাকে! এদিকে টাকা জমার সময় শেষ হয়ে যায়, চোখের পলকে ভেঙে যায় সব স্বপ্ন!! জাহিদ নাম এর লোকটা হয়ত আজ অনেক ভাল আছে, কিন্তু সে?? আজ সেই কাঙ্খিত দিন, যেদিন সে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশ পাড়ি দেয়ার স্বপ্ন দেখেছিল, কিন্তু ভাগ্যের নির্মমতায় আটকা পরে গেছে সেই স্বপ্ন! কিভাবে কোন মুখ নিয়ে সে এখন ফিরে যাবে তার চাচা-চাচীর কাছে??, কিভাবে চোখ তুলে তাকাবে তার ছোট বোনটির দিকে?? এক দৃষ্টিতে চারপাশের হাজারো মানুষের ব্যাস্ততার দিকে তাকিয়ে থাকে সে আর অনবরত পানি পড়তে থাকে চোখ দিয়ে, এত মানুষের ভিড়ে কেউ কি একটাবার তার চোখের পানি দেখতে পেয়েছে? বুঝতে পেরেছে তার ভেতরের কষ্টটা??........

গল্প তিন....
উপরের গল্প দুটি কেমন জানি মন খারাপ করা গল্প, তাই এখন একটি মন ভাল করা ভালবাসার গল্প বলি। এটি আসলে কোন গল্প নয়, আমার নিজের জীবনে দেখা একজন মমতাময়ী মা এর কথা, যার জীবনের একমাত্র মূলমন্ত্র ছিল মানুষ কে ভালবাসা। তার চারপাশের মানুষ গুলি ভাল থাকলেই তার মুখে হাসি ফুটে উঠত। এই মানুষটি ছিল সম্পর্কে আমার দাদীর মা, আমারা ডাকতাম বড়ম্মা বলে। কিন্তু উনি দাদীর আসল মা ছিলেন না, ছিলেন দাদীর মামী, ছোটবেলায় মা মারা যাওয়ার পর থেকে উনি-ই দাদি কে মানুষ করেছিলেন একেবারে নিজের সন্তানের মত! এমনভাবে তিনি দাদীকে আগলে রেখেছিলেন যে ছোটবেলায় দাদী কখনো বুঝতেই পারেননি, যে তিনি তার আসল মা ছিলেন না! শুধু যে নিজের সন্তান কে ভালবাসতেন, তাই না, পরিবার ও চারপাশের মানুষের প্রতি তার ছিল অসীম ভালবাসা! নরম স্বভাব এর এই মানুষটি কাউকে কষ্ট দিয়ে কোনদিন কথা বলতেন না, কারো কাছ থেকে কষ্ট পেলে সেটা নিজের মধ্যেই লুকিয়ে রাখতেন, মেনে নিতেন সবকিছু, তবু কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করতেন না। তার সম্পর্কে বেশিরভাগ কথাই আমার দাদীর কাছ থেকে শোনা। আমি তাকে দেখেছি তার জীবনের শেষ সময় তাতে, তখনো উনি অনেক শক্ত সামর্থ্য ছিলেন। যখন আমাদের বাসায় আসতেন, তখন নিজের উদ্যোগে বিভিন্ন কাজে লেগে পরতেন, যেন এটি তার নিজেরই বাড়ি! আর আমাদেরকে এত আদর করতেন! আজও মনে হলে চোখে পানি চলে আসে! মানুষটির মধ্যে আমি কখনো কোন অহংবোধ, লোভ কিংবা হিংসা দেখিনি। জীবনের একেবারে শেষ সময়ে তিনি বেশ কিছুদিন বিছানায় পরে ছিলেন, তখন কাউকে প্রথম প্রথম চিনতে পারতেন না, কাউকে পরিচয় করায়ে দিলে কিছুটা চিনতেন, কিন্তু বেশিক্ষণ মনে রাখতে পারতেন না, তাই কেউ পাশে বসে থাকলে কিছুক্ষণ পর পর তাকে এক-ই জিনিস বারবার জিজ্ঞেস করতেন! কেউ বাসার বাইরে গেলে উনার চিন্তার অন্ত থাকতো না, একটু পর পর সে কখন আসবে, এই প্রশ্নে সবাইকে অস্থির করে তুলতেন। এরকম সময় মাঝে মাঝে আমাদের বিরক্ত লাগত, কিন্তু পরে ভাবতাম, সবাইকে খুব ভালবাসেন বলেই তো তিনি সবার কথা এত জানতে চান, সবার জন্য এত চিন্তা করেন!! একটা কথা খুব মনে হয়, শেষ দিকে যখন আমরা কেউ গ্রামের বাড়িতে যেতাম, উনার কাছে গেলে উনি তখন কাউকেই তেমন চিনতেন না, তবু বলতেন “আজ-ই যাবু (যাবি) বাবা?? আর এডা (একটা) দিন থাক!!” বেশ কিছুদিন হয়ে গেল উনি মারা গেছেন। “বড়ম্মা, আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে ভালমানুষগুলির মধ্যে আপনি একজন! আপনাদের মত কিছু মানুষের ভালবাসা এখনো আছে বলেই এই পৃথিবীটা আজও টিকে আছে...আমি জানি, আপনি যেখানেই আছেন, ভাল আছেন, কারন অনেক অনেক মানুষের ভালবাসা আর দোয়া আপনার সাথে আছে...!!....."

কিছু কথা.....
উপরের তিনটি গল্প-ই খুব সাধারণ তিনটি গল্প। সাধারণ, তবে বাস্তব! এই গল্প তিনটি একসাথে একটু ভালভাবে চিন্তা করলে বেশ কয়েকটা ব্যাপার বের করে আনা যায়। তবে আমি এখন এত বিশ্লেষণ এ যাবনা, কারন সবার নিজের একটা চিন্তাশক্তি আছে, যারা গল্পটি পরবেন, তারা নিজের মত করে সেটা বিশ্লেষণ করবেন...আমি শুধু আমার চিন্তাধারা থেকে কয়েকটা কথা বলব। আমাদের সমাজে কয়েক শ্রেণীর মানুষ আছে, এদের মধ্যে প্রথম এক শ্রেণী আছে, যারা নিজের থেকে আপনজনের জন্য বেশি ভাবেন, অন্য মানুষের সুখে তারা সুখি হন, কখনো নিজের জন্য মানুষের ক্ষতি করেন না। দ্বিতীয় আর এক শ্রেণী আছে, যারা জীবনে সৎপথে থাকতে চান, কারো ক্ষতি করার ইচ্ছা তাদের থাকেনা, কিন্তু বাস্তবতায় পরিস্থিতির শিকার হয়ে বুঝে অথবা না বুঝে মাঝে মাঝে অন্য কারো ক্ষতি করে ফেলেন! আর তৃতীয় এক শ্রেণী আছে, যারা নিজের লাভ এর জন্য, সুখের জন্য আপনজন কে বিক্রি করে দিতেও দ্বিধা করেনা!
দ্বিতীয় শ্রেণীর মানুষ সবসময় সব সমাজেই থাকে, কিন্তু সবচেয়ে আশঙ্কার ব্যাপার হচ্ছে, পৃথিবী থেকে প্রথম শ্রেণীর মানুষের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে আর তৃতীয় শ্রেণীর মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে!! তাহলে কি আমাদের এই স্বপ্নের পৃথিবীটা ধীরে ধীরে ভালোবাসাহীন, স্বার্থপর, নিষ্ঠুর একটি পৃথিবী হয়ে যাচ্ছে???
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুলাই, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:২৭
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মাটির কাছে যেতেই..

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

মাটির কাছে
যেতেই..


ছবি কৃতজ্ঞতাঃ https://pixabay.com/

ঠিক যেন
খা খা রোদ্দুর চারদিকে
চৈত্রের দাবদাহ দাবানলে
জ্বলে জ্বলে অঙ্গার ছাই ভস্ম
গোটা প্রান্তর
বন্ধ স্তব্ধ
পাখিদের আনাগোনাও

স্বপ্নবোনা মন আজ
উদাস মরুভূমি
মরা নদীর মত
স্রোতহীন নিস্তেজ-
আজ আর স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাকা ভাংতি করার মেশিন দরকার

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:১০

চলুন আজকে একটা সমস্যার কথা বলি৷ একটা সময় মানুষের মধ্যে আন্তরিকতা ছিল৷ চাইলেই টাকা ভাংতি পাওয়া যেতো৷ এখন কেউ টাকা ভাংতি দিতে চায়না৷ কারো হাতে অনেক খুচরা টাকা দেখছেন৷ তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেলা ব‌য়ে যায়

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩০


সূর্যটা বল‌ছে সকাল
অথছ আমার সন্ধ্যা
টের পেলামনা ক‌বে কখন
ফু‌টে‌ছে রজনীগন্ধ্যা।

বাতা‌সে ক‌বে মি‌লি‌য়ে গে‌ছে
গোলাপ গোলাপ গন্ধ
ছু‌টে‌ছি কেবল ছু‌টে‌ছি কোথায়?
পথ হা‌রি‌য়ে অন্ধ।

সূর্যটা কাল উঠ‌বে আবার
আবা‌রো হ‌বে সকাল
পাকা চু‌ল ধবল সকলি
দেখ‌ছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পর্ণআসক্ত সেকুলার ঢাবি অধ্যাপকের কি আর হিজাব পছন্দ হবে!

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৩ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:২৭



ইন্দোনেশিয়ায় জাকার্তায় অনুষ্ঠিত একটা প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জিতেছে বাংলাদেশি নারীদের একটা রোবোটিক্স টিম। এই খবর শেয়ার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপিকা। সেখানে কমেন্ট করে বসেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ২৩ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:১৪


কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়
আমার বাবা-কাকারা সর্বমোট সাত ভাই, আর ফুফু দুইজন। সবমিলিয়ে নয়জন। একজন নাকি জন্মের পর মারা গিয়েছেন। এ কথা বলাই বাহুল্য যে, আমার পিতামহ কামেল লোক ছিলেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×