somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি খারাপ বা সপ্নময় সুন্দর বিকেলের গল্প

০২ রা জুলাই, ২০১১ বিকাল ৩:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফুটপাথ দিয়ে আপন মনে হেটে যাচ্ছে অর্থী। আজ তাঁর ছাত্রীটি বেড়াতে গিয়েছে, তাই আগেই ছুটি মিলল অর্থীর। কিছু এলোমেলো চিন্তায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে অর্থীর মন। অথচ মাস ছয়েক আগেও এমন কোনও চিন্তার লেশমাত্রও মনে ছিলোনা।

চিন্তায় ছেঁদ পড়ল, মোবাইল বাজছে। অপরিচিত নাম্বার। "এইডা কি খাগড়াছড়ি?", একটা কর্কশ কণ্ঠ জানতে চাইল। "না, ঢাকা", অর্থী বলল। "আপনে কে?" আবার বিরক্তিকর কণ্ঠস্বরের প্রশ্ন। মেজাজ টা চরম বিগরে গেলো অর্থীর। কোনও উত্তর না দিয়ে ফোন টা কেটে দিল। একটা সুন্দর অবসরের বিকালে এভাবে মেজাজ টা বিগরে যাওয়াতে খুব খারাপ লাগছে অর্থীর।

বাস স্ট্যান্ড এ এসে দাঁড়াল। আজ বাস এ জায়গা পেতে কোনও সমস্যা হলনা। আবার জানালার পাশের সীট ও পেল। ২ মাস হয়ে গেছে পরীক্ষা শেষ হয়েছে। তাঁর মানে ওর বেকার জীবনের মেয়াদ ও ২ মাস পেরিয়ে গেলো। আরও কতদিন মেয়াদ হবে কে জানে? নিজের অজান্তেই একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল অর্থী। গত ২ মাসে বেশ কি ইন্টারভিউ দেয়া হল। কিন্তু হইনি একটাও। আর যেকয়টার রেজাল্ট বাকি আছে তাও হবেনা, সেটা খুব ভালো করেই জানে অর্থী।

অবশ্য ইদানীং কালে মাস্টার্স পরীক্ষা দেবার ২ মাসের ভিতর কারো চাকরি হওয়াটাই বাতিক্রম। আর এত দ্রুত চাকরির জীবনে ঢুকতে অর্থীর ও ইচ্ছা নেই। কিন্তু চাকরি তো করতেই হবে। যদিও বাবা-মা অর্থী কে চাকরি পাওয়া নিয়ে কোনও চাপ দিচ্ছেন না। অর্থীরও ইচ্ছা অন্তত মাস ৬ বেকার জীবন এ থাকে। কিন্তু তবুও এই বেকারত্ব নিয়ে এখন অর্থীর মন খারাপ।

হটাৎ কান্না পাচ্ছে অর্থীর। "যে দিন যায় ভালো যায়, যে দিন আসে খারাপ আসে" এই কথাটা যে কতখানি সত্যি তাই ভাবে অর্থী। দিন দিন জীবন শুধু জটিল ই হচ্ছে। আশেপাশের পরিচিত মানুষ গুলো কেমন যেন বদলে যাচ্ছে। কারো কারো কথায় মনে হয়, অর্থীর জায়গায় থাকলে তারা যেন পৃথিবী উদ্ধার করে ফেলত। অথচ তারা যে তাদের সময়ে কি করেছে টা খুব ভালই জানে অর্থী। অথচ তারা মুরুব্বী বলে তাদের এই সবজান্তা ভাব টা সব সময় সইতে হবে। উফফ, কি অসহ্যX((। 'সময় হলে তাদের পোলাপানকেও আমি উপদেশ দিব', ভাবে অর্থী। B-):P

জ্যাম এ আটকেছে গাড়ি। খবরের কাগজ, ফেরিওয়ালা পিচ্চিগুলো ঘুরে বেড়াচ্ছে। ও, কাল তো আবার হরতাল। তাঁর মানে পি,এস,সির ফর্ম টা পরশু জমা দিতে হবে। এমনিতে হরতাল এ বিরক্তই হয় অর্থী, কিন্তু কালকের এই "কনকো-ফিলিপ্স এর সাথে চুক্তি বাতিলের দাবীতে" ডাকা এই হরতালে পূর্ণ সমর্থন আছে অর্থীর। অর্থী একটা কথা প্রায়ই মনে হয়, যারা সরকারে আছে তারা কখনও জানেই না জনগন কি চায়? কি ভাবে? তারা মনে হয় সেই আদ্যিকাল থেকে জনগন সম্পর্কে একটাই ধারনা জানে, যে জনগন মাত্রেই বোকা, আর তাদের যা বোঝানো হবে সেটা নিয়েই তারা বসে থাকবে।

বাস থেকে নামতেই এক বন্ধুর সাথে দেখা। "শওকত, তোকে আর আমার পেনড্রেরাইভ দিতাম না। অই টা তোর কাছে গেলেই আর হদিস পাওয়া যায়না। এক্ষন দিবি।" বলে অর্থী। "আরে তোর টা বড় তো তাই মুভি আনতে সুবিধা, তাই একটু ইউস করি আরকি, তাতে চেতার কি হইল? নে ধর, আজই দিতাম" , শওকত বলে, " নাহ, আমার তো আর লাগে না?, আমি মানুষের টা ধার করে চলি আর ওনারা আমারটা দিয়া মুভি আনে, কি সৌন্দর্য! যাকগে, মুভি আছে এতে এখনও?" , বলে অর্থী। "হ্যাঁ", বলে শওকত। এবার খুশি হয় অর্থী, শওকত কে নতুন মুভি দেবার জন্য ধন্যবাদ দিয়ে হল মুখো হয় অর্থী।
আবারও সুন্দর লাগছে পরন্ত বিকেল টা . . .


----------------------------------------------------------------------------


গল্পটিতে কিছু রাজনৈতিক এবং সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে সম্পর্কিত মতামত আছে, যা সম্পূর্ণই আমার নিজস্ব ধারনা। কাউকে আঘাত করার উদ্দেশে নয়।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুলাই, ২০১১ সকাল ১১:৩০
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কথাটা খুব দরকারী

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ৩১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:৩৪

কথাটা খুব দরকারী
কিনতে গিয়ে তরকারি
লোকটা ছিল সরকারি
বলল থাক দর ভারী।

টাকায় কিনে ডলার
ধরলে চেপে কলার
থাকে কিছু বলার?
স্বর থাকেনা গলার।

ধলা কালা দু'ভাই
ছিল তারা দুবাই
বলল চল ঘানা যাই
চাইলে মন, মানা নাই।

যে কথাটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

অতিরিক্ত বা অতি কম দুটোই সন্দেহের কারণ

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩০

অনেক দিন গল্প করা হয়না। চলুন আজকে হালকা মেজাজের গল্প করি। সিরিয়াসলি নেয়ার কিছু নেই৷ জোসেফ স্টালিনের গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। তিনি দীর্ঘ ২৯ বছর সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধান নেতা ছিলেন। বলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮



বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি

লিখেছেন শায়মা, ৩১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫


এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজের পাসওয়ার্ড অন্যকে দিবেন না ;)

লিখেছেন অপু তানভীর, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৭



কথায় আছে যে পাসওয়ার্ড এবং জাঙ্গিয়া অন্যকে দিতে নেই । মানুষ হিসাবে, বন্ধু হিসাবে প্রেমিক/প্রেমিকা হিসাবে অথবা আজ্ঞাবহ হওয়ার সুবাদে আমরা অন্যকে ব্যবহার করতে দিই বা দিতে বাধ্য হই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×