বাংলাদেশী স্টুডেন্টদের অনেকেরেই স্বপ্ন তাকে যে ,এইচ এস সি পাশ করার পর উচ্চশিক্ষা তথা গ্রাজুয়েট বিদেশে করার জন্যে । আর অনেকেরেই সপ্ন তাকে যে –সে বৃত্তি নিয়ে বিদেশে পরাশুনা করবে ।বাংলাদেশী স্টুডেন্টদের সপ্ন পূরনের একটি স্কলারশিপ হছ্ছে খাজানা এশিয়া স্কলারশিপ । এটি একটি ফুল-ব্রাইট স্কলারশিপ । স্কলারশিটির স্পন্সরস হছ্ছে মালেশিয়ার বিগেস্ট অরগেনাইজেশান YAYASAN KHAZANAH এবং বাংলাদেশের GRAMEEN BANK । প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে পাঁচটি স্কলারশিপ দেওয়া হয়। আর এ বৃত্তি পাওয়ার প্রধান শর্ত হছ্ছে –পার্থীকে অবশ্যই গ্রামীন ব্যাংকের সদস্যের ছেলে-মেয়ে হতে হবে । মানে এই স্কলারশিপটা শুধু সারা বাংলাদেশের গ্রামীন ব্যাংকের সদস্যের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে থেকে পাঁচ জনকে দেওয়া হয় ।
এই বৃত্তিটি একশভাগ দূর্নিতি্মুক্ত ও স্বজনপ্রীতিমুক্ত স্কলারশিপ । কেবল মাত্র পরিক্ষার মাধ্যমে বাছাইকৃত সর্বোচ্ছ পাঁচ জন মেধাবিকে এই স্কলারশিপটা দেওয়া হয় ।এতে গ্রামীন ব্যাংকের কোন উচ্ছপদস্ত কর্মকর্তা ,
এমন কি এম ডি স্যারেরও কোন হাত থাকে না । সব কিছু নিয়ন্ত্রিত হয় মালেশিয়ান এক্জামিনি কমিটি দ্বারা।
সুযোগ-সুবিধা :
মূলত YAYASAN KHAZANAH হচ্ছে মালেশিয়ান গভার্ণমেন্ট এজেন্সি । মালেশিয়ার ৬০% বেশি সরকারি বিজনেজ খাজানার অধীনে । তাই স্কলারশিপটির সুযোগ-সুবিধাও অনেক । আমাদের বাংলাদেশেও খাজানার একটি বিজনেজ আছে সেটি হচ্ছে রবি (একটেল) ।
১। স্কলারশিপটির এক্জাম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যাবতীয় খরচ খাজানা বহন করে।যেমন—পরিক্ষার জন্যে গ্রামীন ব্যাংকে আসা যাওয়ার ট্যাক্সি ভাড়া, সি এন জি ভাড়া, রিক্সা ভাড়া সব দেওয়া হয় প্রত্যেক এপলিক্যান্টকে ।
২।নির্বাচিত পাঁচ জনের জন্যে আর্জেন্ট পাসপোর্ট করার জন্যে সমস্ত টাকা দেওয়া হয় ।
৩। বাংলাদেশে থাকতেই শপিং এর জন্যে প্রত্যেক কে ২০০০০ করে টাকা দেওয়া হয় ।
৪। ফ্লাইট টিকেটও তারা করে দেয় ।
৫। পার্থী নিজের পচ্ছন্দের সাবজেক্টে পরার ৯৫% নিশ্চয়তা আছে । এর আগে যারা
এই স্কলারশিপ নিয়ে এসেছে ,সবাই নিজের পচ্ছন্দের সাবজেক্টেই পরতেছে ।
৬। ভার্সিটির সকল টিউশন ফি ,তারা নিজেরাই দিবে ।
৭। খাওয়া-দাওয়া এবং হোস্টেল খরচ তারা বছরে চার কিস্তিতে দেয় । অর্থাৎ প্রত্যেক তিন মাস অন্তর অন্তর টাকা দেয়। বছরের প্রথম তিন মাসের জন্যে ৫৬০০ রিঙ্গিত (১৩৫০০০ টাকা) এবং বাকি তিনটি কিস্তি ৩৩০০ রিঙ্গিত (৮০৩৫৫ টাকা) করে ।
৮। সাথে সিলেক্টেড স্কলার পাচ্ছে মালেয়শিয়ার সর্বোচ্ছ মেধাবী স্টুডেন্ট এর সম্মান । কারণ খাজানা স্কলার মানেই টপেস্ট স্টুডেন্ট ইন মালায়শিয়া ।
৯। কোন কারণে খাজানা স্কলার হিসাবে নিজেকে পরিচয় দিতে হলে বন্ধুরা সেকেন্ড টাইম হেন্ডসেক করে ।
১০। প্রত্যেক সেমিস্টার ব্রেকে বাংলাদেশে যাওয়া যায়, এতে কোন রেসট্রিকশান নেই ।
১১। গ্রাজুয়েট শেষে যোগ্যতা অনুযায়ী খাজানার যে কোন কম্পানিতে চাকরি করার সুযোগ আছে ।
নির্বাচন পদ্ধতি :
১। প্রতিবছর গ্রামীন ব্যাংকের সদস্যের ছেলে-মেয়েদের কাছ থেকে যারা(এস এস সি এবং এইচ এস সি উভই এ+) তাদের কাছ থেকে আবেদনপএ আহব্বান করা হয়।
২। এখান থেকে রেজাল্ট এর ভিওিতে ৪০ জন কে নির্বাচন করা হয়।
৩। নির্বাচিত ৪০ জনের এক্জাম হয় গ্রামীন ব্যাংকের হেড অফিসে ।৫ দিন যাবৎ
পরিক্ষা নেয় মালায়শিয়া থেকে আগত (৫-১০) জনের একটি কমিটি ।পরিক্ষা শেষে তারা সব এক্জাম পেপার নিয়ে মালায়শিয়া চলে যায় এবং ১-২ মাসের মধ্যে রেজাল্ট পাঠায় ।
যেভাবে KHAZANAH SCHOLARSHIP সূচনা :
ডঃ মোহাম্মদ ইউনূস খাজানা ফাউন্ডেশান এর আমনএনে মালায়শিয়া আসেন কয়েকবছর আগে । এখানে খাজানা ফাউন্ডেশানের ডিরেক্টর ট্যান শ্রী আযমান মোখতার এর সাথে উনার বৈঠক হয় । এই বৈঠকেই তিনি মূল্যবান ৫ টি বৃত্তির ব্যাবস্থা করেন ।
বতমানে ২ বছরে ১০ জন বাংলাদেশী স্টুডেন্ট এই বৃত্তি নিয়ে মালায়শিয়া পড়াশুনা করছে । এদের ৪ জন ইউনিভার্সিটি টেনেগা ন্যাসানাল ( ইউনিটেন) ইন (ইইই) এবং ৪ মালায়শিয়া ইসলামিক ইউনিভার্সিটি(ইউ আই এ) ইন (ইকোনোমিক্স, আইন ,জেনেটিক্স, একাউন্টিং) ,বাকি ২ জন মাল্টিমিডিয়া ইউনিভার্সিটি (এম এম এউ) ইন মেকানিক্যাল ইন্জিনিয়ারিং এবং ইনফরমেশান টেকনোলজিতে অধ্যয়নরত ।
ডঃ মোহাম্মদ ইউনূসের অবদানে প্রতি বছর এই ৫ টি মূল্যবান বৃত্তি নিয়ে ৫ টি ছেলে-মেয়ের সপ্ন পূরন হচ্ছে । সকল ধন্যবাদ তারেই প্রাপ্প । অথচ তার প্রতি কিছুদিন আগে আমরা কি আচরনটাই না করলাম । থাক এসব কথা ।
এই স্কলারশিপ সম্পর্কে আরও জানতে এইখানে একটা ক্লিক মারেন—
http://www.khazanah.com.my/scholarship.htm