somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সবুজ গালিচা

৩০ শে জুন, ২০১১ রাত ১১:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কার্জন হল। আমার নিজের ডিপার্টমেন্ট টা মোকাররম হোসেন ভবনের নিউ সায়েন্স কমপ্লেক্স বিল্ডিং এ হলেও কার্জন হলের প্রতি আমার অস্বাভাবিক মনের টানের কোনো গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা আমি আজও খুঁজে পাইনি। অথচ আমার একাডেমিক রেজাল্টের উপর কার্জন হলের অবদান মোটেই সুখকর নয় ! বিঞ্জান অনুষদের সব পরীক্ষা কার্জন হল কেন্দ্রে হওয়ার সুবাদে শুধুমাত্র প্রতি ইয়ার ফাইনালের সময়ই আমাদের ঢোকা হত কার্জন হলের অভ্যন্তরে। যথারীতি আমার সব ইয়ারের রেজাল্টই ভয়াবহ। ভীতির পরিবর্তে তবুও কেন এই কার্জন হল প্রীতি?

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের ফার্স্ট এবং সেকেন্ড ইয়ারে থাকতে প্রায় প্রতিদিন রাতের বেলা ১০ টার পর থেকে শুরু করে আমি আর হেদু ( হেদায়েত এর সংক্ষেপ, মানুষের নাম সংক্ষেপ করার ব্যপারে আমার খ্যাতি ছিল একসময় ) রাত ১টা-২টা পর্যন্ত কাটাতাম কার্জন হলে। লম্বা রাস্তাটায় আমাদের কলেজ জীবনের গল্প করতে করতে কিংবা শহীদুল্লাহ হলের পুকুর পাড়ে প্রাণী বিঞ্জান ডিপার্টমেন্টের সামনে বসে হাওয়া খেতে খেতে। হেদু বলত 'মামা এই বাতাসের দাম দিতে হইলেতো আমার চৌদ্দ গুষ্ঠি ফতুর হইয়া যাইতো'। মনে আছে আড্ডা মারার পর হেদু আমাকে পৌছে দিত একুশে হলে। রাস্তায় টহল পুলিশ আমাদেরকে বলত 'ভাই এত রাইতে রাস্তায় কি করেন? হলে চলে যান' । হেদু বলত 'আমি এত রাইতে রাস্তায় থাকলে আপনার কোন অসুবিধা আছে?'। চুপ করে যেত পুলিশ। তুলনামূলক শারিরীকভাবে দুর্বল এই আমিও বুঝে গিয়েছিলাম বিশ্ববিদ্যালয় আইডি কার্ডের ক্ষমতা।

এবারে আসল কথায় আসি। অনেকদিন পর ঐদিন সন্ধ্যায় সাব্বির ভাইয়ের সাথে গিয়েছিলাম কার্জন হলে। কেমিস্ট্রি ডিপার্টমেন্টের সামনের সেই পরিচিত জায়গাটা। সবুজ ঘাসে পা দিতেই গোড়ালী পর্যন্ত ডুবে গেল ঘাসের ভেতর। সামার ভেকেশান চলাতে মামারা ঘাস কাটতেছেন না নিয়মিত। ভালই হল। সবুজ মাঠের মাঝখানে দাড়িয়ে থাকা Christmas Tree টার নিচে বসতেই মনে হল কোন নরম গালিচার উপর বসেছি। আলো-আধারি এই শান্ত আর নিবির পরিবেশে সবুজ নরম ঘাসের উপর শুয়ে পড়তেই দেখলাম আকাশে চাঁদ। কেমন যেন অদ্ভুত ভালোলাগার একটা অনুভূতি। ভাষায় প্রকাশ করার মত না । চাঁদ আর আমার মাঝখান দিয়ে দৌড়বেগে ছুটে যাওয়া মেঘগুলোর দিকে যখন চোখ পড়ল তখনই মনে হল- আজ আর ফিরে যাবোনা !

দিন বদলে গেছে। বদলে গেছে অনেক কিছুই। এখন আর রাত ১টা-২টা করা যায়না। পরদিন অফিস যাবার তাড়া থাকে। বাসার কলাপসিবল গেট লাগিয়ে দেয় ১১টার দিকেই। তবুও যেটুকু সময় ছিলাম যেন পুরোটা সময় ধরেই ছিলাম । চলে আসার সময় কেমন জানি লাগতেছিল। আসতে ইচ্ছা হচ্ছিলনা একেবারেই। ছাত্র জীবনে এমন লাগেনিতো কখনো?

সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুন, ২০১১ রাত ১১:৪৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজকের ব্লগার ভাবনা: ব্লগাররা বিষয়টি কোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪১


ছবি- আমার তুলা।
বেলা ১২ টার দিকে ঘর থেক বের হলাম। রাস্তায় খুব বেশি যে জ্যাম তা নয়। যে রোডে ড্রাইভ করছিলাম সেটি অনেকটা ফাঁকা। কিন্তু গাড়ির সংখ্যা খুব কম।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাপ, ইদুর ও প্রণোদনার গল্প

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৪

বৃটিশ আমলের ঘটনা। দিল্লীতে একবার ব্যাপকভাবে গোখরা সাপের উৎপাত বেড়ে যায়। বৃটিশরা বিষধর এই সাপকে খুব ভয় পেতো। তখনকার দিনে চিকিৎসা ছিলনা। কামড়ালেই নির্ঘাৎ মৃত্যূ। বৃটিশ সরকার এই বিষধর সাপ... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের সংগ্রামী জনতার স্লুইস গেট আক্রমণ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২১


(ছবির লাল দাগ দেয়া জায়গাটিতে গর্ত করা হয়েছিল)

শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

২৩শে এপ্রিল পাক সেনারা ফুলছড়ি থানা দখল করে। পাক সেনা এলাকায় প্রবেশ করায় মানুষের মধ্যে ভীতিভাব চলে আসে। কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাড়ির কাছে আরশিনগর

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫০


বাড়ির কাছে আরশিনগর
শিল্পকলা একাডেমির আশেপাশেই হবে চ্যানেলটার অফিস। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করল মৃণাল। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছে না সে। এক-দু'জনকে জিগ্যেসও করল বটে, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না।

কিছুদূর এগোনোর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×