বিশ্বে সবচেয়ে ধনীর তালিকায় রয়েছেন বিল গেটস, মার্ক জুকারবাগ ও কার্লোস স্লিমের মতো ব্যক্তিরা। ধারণা করা হচ্ছে, এক বছরের মধ্যেই তাঁদের টপকে যেতে পারেন একজন অস্ট্রেলীয় নারী। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে ধনী এই নারীর নাম জিনা রাইনহার্ট। ফোর্বস সাময়িকীর ব্লগ এবং ব্রিটেনের প্রভাবশালী দৈনিক গার্ডিয়ানের ওয়েবসাইটে গতকাল মঙ্গলবার এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
রাইনহার্টের বর্তমান সম্পদের পরিমাণ ৯০০ কোটি ডলার। গত বছর লোহা ও লোহার আকরিকের দামের ব্যাপক বৃদ্ধি এবং চীনে সেগুলোর রপ্তানির পরিমাণ বাড়তে থাকায় তাঁর ভাগ্য খুলে যায়। মাত্র এক বছরেই রাইনহার্টের সম্পদ চার গুণ বেড়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সাংবাদিক টিম ট্রিডগোল্ড সম্প্রতি ফোর্বস এশিয়া নামে একটি প্রতিবেদনে তাঁকে নিয়ে লিখেছেন। ওই সাংবাদিক মনে করেন জিনা রাইনহার্টের সম্পদের পরিমাণ আগামী বছর ১০ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে!
বর্তমানে ফোর্বসের তালিকায় বিশ্বের সবচেয়ে ধনী মেক্সিকোর কার্লোস স্লিমের সম্পদের পরিমাণ সাত হাজার ৪০০ কোটি ডলার আর দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের রয়েছে পাঁচ হাজার ৬০০ কোটি ডলারের সম্পদ।
জিনা রাইনহার্ট বিশ্বের খনিজ পদার্থ আহরণ ও পরিশোধনের জন্য বিখ্যাত কোম্পানি হ্যানকক প্রসপেক্টিংয়ের মালিক। অস্ট্রেলিয়ার সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত এ কোম্পানির মূল্য আগামী বছর তিন হাজার কোটি ডলারের উন্নীত হতে পারে।
যদি অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে কয়লা খনির নতুন প্রকল্প হোপ ডাউনস ফলপ্রসূ হয় এবং খনিজ পদার্থের দাম এমন বেশি থাকলে তাঁর বার্ষিক মুনাফা এক হাজার কোটি ডলার ডলার হতে পারে। সঙ্গে রিও টিন্টোর পিই দ্বিগুণ ধরলে রাইনহার্টের সম্পদের পরিমাণ ১০ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। তবে তিনি বলছেন, ‘এটা অনুমান ও ভবিষ্যদ্বাণী। যা অন্য বিষয়গুলোর সাপেক্ষে হতে পারে।’
১৯৫২ সালে ল্যাংলে হ্যানকক পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় লোহার খনি আবিষ্কার করেন। ১৯৯২ সালে তাঁর মৃত্যু হলে জিনা রাইনহার্ট বাবার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান হ্যানকক প্রসপেক্টিংয়ের উত্তরাধিকারী হন। চার সন্তানের জননী বিধবা জিনার তখন বয়স ছিল ৩৮ বছর। পরে তিনি ওই এইচপিপিএল গ্রুপের চেয়ারম্যান হন। সেই থেকে জিনা বিশ্বের সেরা ধনকুবেরদের তালিকায় রয়েছেন। ২০০৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার একটি অর্থনীতিবিষয়ক সাপ্তাহিক সাময়িকী তাঁকে দেশের বিলিওনিয়ার ও দেশের অষ্টম বৃহত্ ধনকুবের বলে ঘোষণা দেয়। এক বছরের মধ্যেই তিনি আরও চার ধাপ এগিয়ে যান। ফোর্বস সাময়িকী চলতি বছর তাঁকে অস্ট্রেলিয়ার সেরা ধনকুবের ঘোষণা করেছে। তাঁর সম্পদের পরিমাণ এখন ১০ হাজার কোটি অস্ট্রেলিয়ান ডলার। সিটি গ্রুপস নামে একটি প্রতিষ্ঠান মনে করে, জিনা রাইনহার্ট অর্থ-বিত্তের শক্তিতে কয়েক বছরের মধ্যেই বিল গেটস ও কার্লোস স্লিমকে অতিক্রম করে যাবেন। জিনা আরও কয়েকটি লোহার আকরিক ও কয়লা সংগ্রহের কোম্পানি চালু করেছেন এবং অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় মিডিয়া কোম্পানিতে অর্থ লগ্নী করেছেন।