somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুসলিম বিশ্ব সাবধান!!! নব্য ইয়াজিদ ডা: জাকির নায়েকের ভেল্কীবাজী

২৭ শে জুন, ২০১১ বিকাল ৩:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আজ থেকে সাড়ে ১৪ শত বছর পূর্বে মানবতার সার্বিক কল্যান ও মুক্তির লক্ষ্যে মদীনার কামলেওয়ালা মোস্তফা (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর পক্ষ থেকে নিয়ে এসেছিলেন শান্তির প্রতিক ইসলাম।যদিও সকল নবীগনই ইসলামের দাওয়াত নিয়ে এসেছিলেন তথাপি সারকারে দো’আলম(সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর ইসলামই সার্বজনীন এবং প্রতিষ্ঠিত। যা শুধু কোন জাতি বা গোত্রের মধ্যেই সীমাবদ্ব নয়।

দো’জাহানের বাদশা(সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দুনিয়ার মায়া ত্যাগকরে আল্লাহর দরবারে চলে যাবার পর রাসুলের দ্বীনকে বিশ্বের আনাচে কানাচে পৌঁছে দিয়েছিলেন সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ী, আউলিয়ায়ে কেরামগন।বিশেষ করে ভারতীয় উপমহাদেশে আল্লাহর দ্বীন এসেছে আল্লাহর অলিগনের হাত ধরে।আর প্রচারিত এ দ্বীনের আদর্শ ই জ্বালিয়েছে রাসুল প্রেমের অগ্নিশিখা যা ঈমানের মূল দাবী।


দ্বীন প্রচারের ক্ষেত্রে নানা সময় নানা প্রতিবন্ধকতা আসে। আর সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা আসে ইমাম হোসাইন (রা: ) এর শাহাদাতে কারবালার ঘটনার মাধ্যমে। এজিদি শক্তি নবসংস্কার করে রাসুলের ঘোষিত পরিপূর্ণ দ্বীনকে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করতে চেয়েছিল । কিন্তু আওলাদে রাসুলগন বেচে থাকা অবস্থায় তা তো আর সম্ভব নয়।আর তখন শুরু হয় আওলাদে রাসুলকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র যা শাহাদাতে কারবালার মাধ্যমে সফলতার মুখ দেখে।

তখন থেকেই ইসলাম দুটো অংশে খন্ডিত হয়, একটি দল যারা রাসুলের ঘোষিত পরিপূর্ণ দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত আরেক দল এজিদের সংস্কার করা ধর্মের ওপর প্রতিষ্ঠিত।

একবিংশ শতাব্দির এই সময় দাড়িয়ে আজো ইসলামের এই দুটো ধারাই পরিলক্ষিত হয়।একদল হুসাইনী ইসলামের আদর্শে উজ্জীবিত আরেক দল এজিদি ইসলামের আদর্শ প্রচারে ব্যস্ত।এজিদি ইসলামের এই লোকগুলো বিদেশী অর্থ আর বিত্তের বলে হয়ে উঠেছে এক হিংস্র হায়েনা।তারা মানুষের ধর্মীয় জ্ঞানের সীমাবদ্বতাকে পুঁজি করে তাদের অন্তরে ঢুকিয়ে দিচ্ছে এজিদের সেই সংস্কারবাদী দ্বীনের কথা যা হুযুর (দঃ) এর দ্বীনী আদর্শের সম্পূর্ন বিপরীত।

আজ যখন এজিদি ইসলামের অপশক্তির থাবায় মুসলিম বিশ্ব ক্ষত বিক্ষত,তখন গত ৭-৮ বছর ধরে মুসলমাদের কান্ডারীর মত তাদের সামনে একজন দা’য়ী এর আগমন ঘটে। যার নাম ডাঃ জাকির আব্দুল করিম নায়েক। ভারতের লক্ষ্ণৌ শহরের ডাঃ নায়েক একজন চিকিৎসক।চিকিৎসা বিদ্যা ছেড়ে তিনি নিজেকে দ্বীনের প্রচারক হিসাবে সবার কাছে গ্রহন যোগ্য করে তোলেন তার বাকপুটুতা আর সুন্দর উপস্থাপনার মাধ্যমে। কিন্তু সেদিন মুসলিম বিশ্ব ধারনাও করতে পারেনি কি ক্ষতি করতে যাচ্ছে এই লোকটি দেশ জাতি ও ইসলামের।
তার আসল রুপ বেরিয়ে আসে ভারতের একটি সেমিনারে। দর্শকদের একজন তাকে কারবালা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন- ‘The War of Karbala is a political War and Yazid (May Allah peace be upon on him) was a good man.’ অর্থাৎ কারবালার যুদ্ব কোন ধর্মীয় যুদ্ব নয় এটি একটি রাজনৈতিক যুদ্ব আর ইয়াজিদ (আল্লাহ তাকে জান্নাত দান করুন) একজন ভালো লোক ছিলেন।(আসতাগফিরুল্লাহ)


সূন্নী মুসলমানদের এখন আর বুঝতে বাকী রইলোনা কে এ জাকির নায়েক। মানুষকে দ্বীনের কথা বলে আসলে সে প্রচার করছিলো এজিদের আদর্শ।
তাকে আবার ইতালিতে জিজ্ঞাসা করা হলো আপনি এজিদকে কেন জান্নাতী বললেন, তিনি উত্তর দিলেন- এজিদ অবশ্যই জান্নাতী এ ব্যাপারে সন্দেহ নেই।(নাউযুবিল্লাহ)

যে এজিদ হুযুর (দঃ) এর আদরের দৌহিত্র সাইয়্যেদেনা ইমাম হোসাইন (রাঃ) এর কাটা শির মোবারকে নিজের ছড়ি মেরে বলেছিলো আমি বদরের বদলা নিলাম, যে এজিদ বৃদ্ব আবু সাঈদ খুদ্বরী (রাঃ) কে দাঁড়ি ধরে থাপ্পর মারে যে এজিদের লস্কররা, তিনদিন মসজিদে নববী অবরুদ্ব করে রাখে, তিনদিন যাবৎ মসজিদে নববীতে আজান হয় না, যে এজিদ শরাব খোর, জুয়াখোর, নারীলিপ্সূ মাতাল, অবশেষে খানায়ে কাবা জ্বালানোর অপরাধে আল্লাহ যাকে মৃত্যু দেয় সে এজিদ নাকি জান্নাতী। আর কারবালার যুদ্ব যদি রাজনৈতিক হতো তাহলে সাইয়্যেদেনা ইমাম হোসাইন পরিবার পরিজন সহ কারবালায় যেতেন না যেতেন সৈন্য সামন্ত নিয়ে।

আমি ডাঃ নায়েকের সাথে তর্ক করতে চাইনা, কোন দলিলও উপস্থাপন করতে চাইনা, শুধূ আল্লামা ফখরুদ্দীন রাজীর মত বলতে চাই তিনি যেমন বলেছিলেন বিনা দলিলে আল্লাহ এক, আমি বলবো বিনা দলিলে এজিদ কাফির এবং অবশ্যই জাহান্নামী। এতে সন্দেহের অবকাশ নাই। তবু আকায়েদে নসবীওয়ালার একটা সিদ্বান্তের কথা জানাতে চাই। আকয়েদে নসবী আকায়েদের ক্ষেত্রে পৃথিবীর সবচেয়ে গ্রহন যোগ্য একটা কিতাব। সেখানে বলা হয় ‘এজিদের উপর আল্লাহর লানত’ আজ যারা এজিদের দালালী করছে তাদের ব্যাপারেও একই সিদ্বান্ত।

হে মুসলিম বিশ্ব সাবধান, আল্লাহর কসম সাবধান।এই বিশ্বের বুকে নব্য ইয়াজিদের আগমন শুরু হয়ে গেছে। তারা কখনো আসে সউদ নামে কখনো আব্দুল ওহাব কিংবা কখনো আসে ডাঃ জাকির নায়েক নামে।
রাসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- যদি তোমরা আমাকে এবং আমার পরিবারকে সবচেয়ে বেশী ভালবাসতে পারো তবেই তোমরা মুমিন হতে পারবে।

যে জাকির নায়েক (নব্য এজিদ) এজিদকে জান্নাতী বানায়, রাসুল (দঃ) এর কাছে চাওয়াকে হারাম বলে তার সাথে কোন তর্ক করা চলেনা, কারন তর্ক করতে হয় জাগ্রত মানুষের সাথে কোন ঘুমন্ত জানোয়ারের সাথে নয়।
তবে এখন আর মুসলিম বিশ্বের জাকির নায়েকের মোটিভ বুঝতে বাকী নাই। ভারতের সূন্নী আলেমগনের এক বিশাল সম্মেলনে জাকির নায়েককে কাফের ফতোয়া দেয়া হয়েছে। সূফী মতাদর্শের ভারতীয় মুসলমানদের মধ্যে জাকির নায়েকের এমন ইসলাম বিদ্বেশী বক্তব্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখাদিলে ভারত সরকার দ্রুত পদক্ষেপে তার এই বক্তব্যকে নিষিদ্ধ ঘোষনা করেছে। এমতাবস্থায় ভারতের খ্যাতনামা সাংবাদিক সাদিয়া দেহলবী NDTV ইন্ডিয়াকে এক সাক্ষাতকারে বলেন জাকির নায়েকের বিরুদ্বে ফতোয়ার ব্যবস্থা আগেই নেয়া প্রয়োজন ছিল। এই উপমহাদেশে ইসলাম এসেছে আউলিয়ায়ে কেরামের হাত ধরে আমর তার মত লোকের কথায় তাদের ভুলতে পারিনা।

আজ ভারত, পাকিস্থান, মালদ্বীপ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নবী প্রেমিকগন ইমাম হোসাইনের শাহাদাতে কারবালায় ক্ষত বিক্ষত হৃদয়ে নব্য এজিদ জাকির নায়েকের বিরুদ্বে ময়দানে নেমে এসেছে।সারা বিশ্বের নবীপ্রেমিকেরা যখন এই শয়তানের বিরুদ্বে একত্রিত হয়েছে তখন বাংলাদেশের কিছু টি ভি চ্যানেল তার ভাষন সমুহকে বাংলা করে দেখাচ্ছে। সত্যিকারে আমরা যে ‘হুজুগে মাতাল বাংগালী’ তার প্রমান আরেকবার হলো।
মুসলিম বিশ্বের গায়ে আজ অনেক ক্ষত।তাদের ক্ষত বুকে ছুরি চালাচ্ছে পরাশক্তিগুলো। তবু ঈমানী শক্তি আর হুব্বে রাসুলের ভরসায় পৃথিবীর মাটি কামড়ে ধরে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে মুসলমানরা। আর তখন জাকির নায়েকের মত লোকেরা মুসলমানদের শেষ সম্বল ঈমান নিয়ে মেতে উঠেছে কুৎসিত খেলায়।

আজ আর ঘরে বসে থাকার সময় নেই হে আব্দুল মোস্তফা, হে খালিদ বিন ওয়ালিদ, হে আহমদ রেজা তোমাদের হুংকার দিয়ে আবার তোমরা দেখিয়ে দাও তোমাদের লহুর প্রতি ফোটায় আজো বইছে বদরের সে প্রানশক্তি।

“ঝুলিতেছে তরী, ফুলিতেছে জল, ভুলিতেছে মাঝি পথ
ছিঁড়িয়াছে পাল, কে ধরিবে হাল, আছে কার হিম্মত”
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০১১ বিকাল ৩:৪১
১০০টি মন্তব্য ৫৮টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তোমাকে লিখলাম প্রিয়

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০২ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০১


ছবি : নেট

আবার ফিরে আসি তোমাতে
আমার প্রকৃতি তুমি,
যার ভাঁজে আমার বসবাস,
প্রতিটি খাঁজে আমার নিশ্বাস,
আমার কবিতা তুমি,
যাকে বারবার পড়ি,
বারবার লিখি,
বারবার সাজাই নতুন ছন্দে,
অমিল গদ্যে, হাজার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

×