somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তবু প্রত্যাশা- আলোয় ভরে উঠুক রুমানার বিশ্ব

২১ শে জুন, ২০১১ রাত ৮:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেশে ফিরেছেন রুমানা মনজুর। যার সামনে সব অন্ধকার। সন্তানের পবিত্র মুখ টি কি আর কখনো দেখতে পাবেন না রুমানা?
ছোট্ট আনুশাহর কাছে ‘বাবা’ ও সংজ্ঞা কি? সে কি মূর্তিমান আতংক? বাবা দিবস চলে গেলো। আমি সারাক্ষণ ভাবছিলাম চারিদিকে কতো হশীল বাবা আছেন। আমি অনেক বাবাকে চিনি- যারা মাতৃহারা সন্তানের কাছে বাবা-মা দু’জনের দায়িত্বই পালন করেন। সবার মাঝে থেকেও আনুশাহ বড়ো নিঃসঙ্গ-অসহায়। তার বাবা হাসান সাইদ সুমন এমন ই একজন বাবা-মা দু’জনের দায়িত্ব পালনের বিপরীত অবস্থানে যার বসবাস। দৃষ্টিহীনতার কারণে শিক্ষাগত এবং পেশাগত জীবনে সফলতা না পেয়ে চরম হীনমন্যতায় ছিলেন যে সাইদ। তার মিথ্যাচার আর প্রতিহিংসার বর্বর আক্রমন রক্তাক্ত করেছে আনুশাহর মা রুমানা মনজুরকে। যার উদ্দেশ্য ছিল আনুশাহকে মাতৃহীন করা।
জীবন অনেক সময় কোন যুক্তি তর্কই মানে না। রুমানা যেন এমনই যন্ত্রণার প্রহর কাটাচ্ছেন। আরো দু’মাস তাকে অপেক্ষা করতে হবে আলোর প্রতীক্ষায়।
ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়া ভ্যানক্যুভার ক্যাম্পাসে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে তকোত্তর ডিগ্রি নিচ্ছিলেন রুমানা। অক্টোবরে থিসিস জমা দেবার জন্য কাজ করছিলেন।
সাইদের এ অন্যায় আর বর্বরতার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড়ো প্রতিবাদ হবে এই থিসিস তৈরি করার মধ্যে দিয়ে। রুমানা চোখে না দেখলে থিসিস করবেন কিভাবে? আমরা আশাবাদী তাকে সহযোগিতা করবেন তার সহকর্মী এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রুমানার সাথে যারা থাকতেন এমন ২০ সহপাঠী এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান রুমানাকে সহানুভ’তিশীল বুদ্ধিমতি ও নিষ্ঠাবান হিসেবে মূল্যায়ন করে সাইদের অভিযোগের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন।
ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোলের এমিরেটাস প্রফেসর ও সেন্ট জোন্স কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ড.ওল্যান্ড স্লেমেকার বলেছেন,“ কানাডায় রুমানা আসার পর থেকে আমরা যারা তার সাথে ছিলাম সবাই এই অভিযোগের ঘোর আপত্তি জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, যোগ্যতার বিচারে প্রত্যেকেই বিশেষায়িত গবেষণা কর্মে যুক্ত রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার, গবেষণাগার, মিউজিয়ামেও তাদের প্রবেশাধিকার রয়েছে। তারা প্রত্যেকেই পরিপক্ক, স্বতন্ত্র- এ বিষয়ে আমার পূর্ণ আত্মবিশ্বাস রয়েছে।
নরওয়ের আলেক্সান্দ্রে বাওয়ের ওয়েস্টবিয়ে বলেন, ‘আমি প্রমাণ করতে পারবো, তার বিরুদ্ধে স্বামী যে অভিযোগ এনেছেন এর পুরোটাই মিথ্যে এবং এটি রুমানার সুখ্যাতি নষ্ট করার অপচেষ্টা মাত্র।’
তুরস্কের ইলসেন সিনে বলেন, ‘ইসলামী মূল্যবোধের প্রতি সম্মান জানিয়ে তিনি শুধু মাথাই ঢেকে রাখতেন তা না, সবসময় মেয়ে বন্ধুদের সঙ্গেই তিনি থাকতেন।’
বেলজিয়ামের বিক জোহানা ম্যাগডেলেন প্রিমাভেরা বলেন, ‘আমি ও রুমানা প্রায়ই একসঙ্গে সময় কাটাতাম। সকালের নাস্তা ও রাতের খাবারের পাশাপাশি মাঝে মাঝে দুপুরের খাবারও একসঙ্গে খেতাম আমরা।
এমন অমানবিক বর্বর হাসান সাইদের সাথে এগারো বছরের দাম্পত্য জীবন কী করে কাটালেন রুমানা?
চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা বলেন, সন্দেহবাতিকতা এক ধরণের রোগ। যার ভয়াবহতা বড়ো আত্মঘাতী।
বাবা মেজর মনজুরের হাত ধরে রক্তাক্ত রুমানা দেশ ছেড়েছিলেন ১৪ জুন। ২০ জুন বিকেলে ফিরলেন। ২১ জুন ভোরে সাংবাদিকদের সামনে হাজির হয়ে নিজের কথাগুলোও আর গুছিয়ে বলতে পারলেন না রুমানা। কাঁদলেন বাবা মনজুরও।
ক্ষত বিক্ষত চোখের ভেতরের যে অবস্থা এই মুহুর্তে ভালো হবার কোন সম্ভাবনা দেখছেন না ডাক্তাররা।
তবু শুধু বলি চোখের জল মুছে ফেলুন রুমানা। মেজর মনজুর এক অসহায় বাবা। সাবেক সেনা কর্মকর্তা এ বাবাকে বলি আপনার চোখে জল মানায় না। অন্যায়কারী কাঁদবে অনন্ত প্রহর। আপনাদের সাথে আমরা আছি। আমরা সংখ্যায় অনেক। রুমানা, আপনি আর আনুশাহ-আপনারা একা নন। দেশ আর বিশ্বেও সকল শুভশক্তি আপনাদেও সাথে আছে। সামনে এগিয়ে যেতে হবে সতর্কতার সাথে। এই র্ববর পাপাচারী মিথ্যাচারীদের প্রতিরোধ করতেই হবে। সাইদের যেন পুনর্জন্ম না হয়। প্রতিটি ঘরে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। সুস্থ সমাজ গড়ে তুলতে এক হতে হবে সকল শুভশক্তিকে।

সূত্র : Click This Link
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজকের ব্লগার ভাবনা: ব্লগাররা বিষয়টি কোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪১


ছবি- আমার তুলা।
বেলা ১২ টার দিকে ঘর থেক বের হলাম। রাস্তায় খুব বেশি যে জ্যাম তা নয়। যে রোডে ড্রাইভ করছিলাম সেটি অনেকটা ফাঁকা। কিন্তু গাড়ির সংখ্যা খুব কম।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাপ, ইদুর ও প্রণোদনার গল্প

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৪

বৃটিশ আমলের ঘটনা। দিল্লীতে একবার ব্যাপকভাবে গোখরা সাপের উৎপাত বেড়ে যায়। বৃটিশরা বিষধর এই সাপকে খুব ভয় পেতো। তখনকার দিনে চিকিৎসা ছিলনা। কামড়ালেই নির্ঘাৎ মৃত্যূ। বৃটিশ সরকার এই বিষধর সাপ... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের সংগ্রামী জনতার স্লুইস গেট আক্রমণ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২১


(ছবির লাল দাগ দেয়া জায়গাটিতে গর্ত করা হয়েছিল)

শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

২৩শে এপ্রিল পাক সেনারা ফুলছড়ি থানা দখল করে। পাক সেনা এলাকায় প্রবেশ করায় মানুষের মধ্যে ভীতিভাব চলে আসে। কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাড়ির কাছে আরশিনগর

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫০


বাড়ির কাছে আরশিনগর
শিল্পকলা একাডেমির আশেপাশেই হবে চ্যানেলটার অফিস। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করল মৃণাল। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছে না সে। এক-দু'জনকে জিগ্যেসও করল বটে, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না।

কিছুদূর এগোনোর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×