somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভানু বন্দোপাধ্যায়---কখনো শুনে দেখেছেন কি?

২১ শে জুন, ২০১১ বিকাল ৪:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


প্রায় ১০ বছর আগের কথা।তখন আমার বয়স ১৩ কি ১৪।বেড়াতে গেছি চট্টগ্রাম।আমার বড়চাচার বাসায়।একদিন দুপুরে ভাত খেতে খেতে ক্যাসেটে শুনলাম ভানুর কৌতুক।শুনেই আমি পুরা ফিদা হয়ে গেলাম ঐ লোকটির উপর।এতো সুন্দর তার বাচনভংগী,আর প্রতিটি কৌতুকের ভেতর দারুন সব হিউমার লুকানো।আর তার ভেতর রয়েছে সুন্দর কিছু মেসেজ যা ভাবনার খোরাক যোগাতো।কিছু কৌতুক টানা শুনলাম,একেবারে গুণমুগ্ধ ফ্যান হয়ে গেলাম।

বাজার থেকে তার যতো অডিও ক্যাসেট আছে সব কিনে ফেললাম।মাঝে মাঝে তা বাজিয়ে শুনতাম।একেবারে মুখস্ত হয়ে গেলো।যাকে বলে ঠোঁটের আগায়।কিন্তু সবজিনিসের ঝোঁক সবসময় থাকে না।আর একই অডিও ক্লিপ আর কতো শুনতে ভালো লাগে??আস্তে আস্তে সে ঝোঁক কমে যেতে লাগলো।একসময় টোটালি শুনা বন্ধ হয়ে গেলো।সময়ের পরিক্রমায় ভুলেও গেলাম আর আমার সেই সাধের ক্যাসেটগুলোও কোথায় যেনো হারিয়ে গেলো।

মাঝে মাঝে এমন হয়,কখনো কখনো ছোটোবেলার কিছু স্মৃতি আচমকা মনে পড়ে যায়।সেদিন হঠাৎ মনে পড়ে গেলো ভানুর সেই হাসির কৌতুকগুলোর কথা।নেটে গিয়ে পেয়ে গেলাম মিডিয়াফায়ারের ডাউনলোড লিংক।ঝটপট ডাউনলোড করে শুনে ফেললাম।আবারো সেই হাঁ করে শোনা।ছোটোবেলার কথা খুব মনে পড়ছিলো।নতুন করে সেই মুগ্ধতা আর অতীতের স্মৃতি মিলেমিশে একটা দারুণ অনুভূতি।মনে আছে তখন আমরা লক্ষীপুরে থাকতাম।ঢাকায় আমাদের মামা বাড়ি।যখন গাড়িতে করে ঢাকায় আসতাম গাড়ির ক্যাসেট প্লেয়ারে সবসময় বাজিয়ে শুনতাম।

তখনকার সময়ে রবি ঘোষ কিংবা ভানুর লেগাসির মাজেজা হয়তো বুঝতাম না,তারপরেও তাদের হিউমারগুলো ১৩-১৪ বছরের অপরিপক্ক মনকেও মুগ্ধ করেছে।আর সেখানেই তাদের মহত্ব।আপনারা ভানুর কৌতুক কখনো শুনেছেন কিনা জানি না,তবে তার দুই একটি অন্তত শুনে দেখবার অনুরোধ করছি।সববয়সের জন্য হাসির খোরাক।

আসুন ভানু সম্পর্কে কিছু ইনফো জেনে নেই।তিনি একজন ইন্ডিয়ান কমেডিয়ান এবং অভিনেতা হলেও তার জন্ম কিন্তু আমদের এখানেই।১৯২০ সালের ২৬ অগাষ্ট আমাদের এই ঢাকায় তার জন্ম।তিনি তার গোটা জীবনে প্রায় ৩০০ টিরও সিনেমায় অভিনয় করেছেন।পাশপাশি তিনি রেডিওতেও অনেক পারফরম্যান্স করেছেন।তার ছাত্রজীবন কেটেছে ঢাকার St. Gregory's High School এবং পরবর্তিতে জগন্নাথ কলেজে।১৯৪১ সালে তিনি কলকাতায় যান।সেখানেই তার ক্যারিয়ার শুরু।প্রথমে তিনি একজন stand-up comedian হিসেবে পারফরম্যানস শুরু করেন।১৯৪৩ সালে তার প্রথম হাস্যরসের অডিও রেকর্ড বের হয়।এর অসাধারণ সাফল্যের পর তিনি প্রায় প্রতিবছরই একটি করে অডিও রেকর্ড বের করতে থাকেন।আস্তে আস্তে তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সাথে জড়িয়ে পড়েন।তার অভিনীত প্রায় সব সিনেমাতেই তিনি কমেডী রোলে থাকতেন।তবে তিনি বেশকিছু সিরিয়াস রোলেও অভিনয় করেছেন।বাংলা ভাষার কিছু কমেডি টান এবং হাস্যকর উচ্চারনের দরুণ তিনি ধীরে ধীরে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেন।তার কৌতুকের আরও শক্তিশালী দিক ছিলো, প্রতিটির পেছনে লুকানো সোশ্যাল মেসেজগুলো যা শ্রোতাদের মুগ্ধ করতো।তার কৌতুকে কখনো রাজনীতিবিদ, কখনোবা গোটা সমাজের ঘুণে ধরা দিকগুলোর করুণ চিত্র হাসির মাধ্যমে ফুটে উঠতো।

তিনি ১৯৮৩ সালের ৪ঠা মার্চ মৃত্যুবরন করেন।এই মহান কমেডিয়ানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।তার যাবতীয় অডিও কৌতুকের ডাউনলোড লিংক এখানে শেয়ার করলাম।আপনারা শুনে দেখতে পারেন, ভালোই লাগবে আশা করি।

Click This Link

এবং

Click This Link


এছাড়া তার অনেক অডিও ক্লিপ ইউটিউবে পাবেন, সার্চ করে দেখতে পারেন।আগের আপলোড করা লিংকগুলো ডিলিট হয়ে যাওয়ায় নতুন করে এডিট করে আপলোড করে দিলাম। এনজয় !!!!


সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ৩:০৭
৭৭টি মন্তব্য ৬৯টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজকের ব্লগার ভাবনা: ব্লগাররা বিষয়টি কোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪১


ছবি- আমার তুলা।
বেলা ১২ টার দিকে ঘর থেক বের হলাম। রাস্তায় খুব বেশি যে জ্যাম তা নয়। যে রোডে ড্রাইভ করছিলাম সেটি অনেকটা ফাঁকা। কিন্তু গাড়ির সংখ্যা খুব কম।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাপ, ইদুর ও প্রণোদনার গল্প

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৪

বৃটিশ আমলের ঘটনা। দিল্লীতে একবার ব্যাপকভাবে গোখরা সাপের উৎপাত বেড়ে যায়। বৃটিশরা বিষধর এই সাপকে খুব ভয় পেতো। তখনকার দিনে চিকিৎসা ছিলনা। কামড়ালেই নির্ঘাৎ মৃত্যূ। বৃটিশ সরকার এই বিষধর সাপ... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের সংগ্রামী জনতার স্লুইস গেট আক্রমণ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২১


(ছবির লাল দাগ দেয়া জায়গাটিতে গর্ত করা হয়েছিল)

শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

২৩শে এপ্রিল পাক সেনারা ফুলছড়ি থানা দখল করে। পাক সেনা এলাকায় প্রবেশ করায় মানুষের মধ্যে ভীতিভাব চলে আসে। কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাড়ির কাছে আরশিনগর

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫০


বাড়ির কাছে আরশিনগর
শিল্পকলা একাডেমির আশেপাশেই হবে চ্যানেলটার অফিস। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করল মৃণাল। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছে না সে। এক-দু'জনকে জিগ্যেসও করল বটে, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না।

কিছুদূর এগোনোর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×