somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেয়েদের মন

১৯ শে জুন, ২০১১ রাত ৯:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নারী মনের রহস্য নিয়ে গল্প-উপন্যাসে-কবিতায় কথন পড়ে সবসময়ই কেন যেন বিরক্ত লাগত। মেজাজ খারাপ হত মেয়েদের ইমোশোন নিয়ে গড়া হাজারো জোক পড়ে। রাগ হত যখন কোন ছেলে বন্ধু তার গার্লফ্রেন্ডের ‘এই হাসি এই কান্না’ এর বহুরূপী ধরণ দেখে বিলাপ করত। মেয়ে বন্ধুদের তাদের প্রেমিকের সাথে আহ্লাদি দেখেও কম কুন্ঠাবোধ করতাম না।ভাবতাম, দূরো খামোখা গুটি কয়েক মেয়ের জন্য আমাদের গোটা নারীজাতির দুর্নাম হয়!
তখনও প্রেম করিনি, বুঝিনি কেন যুগে যুগে নারীজাতির আবেগ, চোখের জল আর মনের ইচ্ছা নিয়ে এত উপখ্যান! এখন মিলিয়ে দেখলে দেখি যে মেয়েদের যেসব কর্মকান্ডে বিরক্ত হতাম; আমি নিজে ঠিক তাই তাই করি যা মানুষটি আমায় ভালবাসার প্রতিজ্ঞা করেছে তার সাথে।
১। কোন এক অদ্ভুত কারণে একটা মেয়েকে একটা ছেলের যতটা মনে পড়ে; একটা মেয়ের তার চেয়ে অনেক গুন বেশি মনে পড়ে ছেলেটাকে। প্রেম করার আগে ভাবতাম এত ঘনঘন ফোনে কথা বলার কি আছে; ফোন করে খোঁজ না নিলেই বা অভিমান করার কি আছে।
কিন্তু হায়! যখন আশা করি তখন ফোনটা না বাজলে যে বুকটা হুহু করে ওঠে; আর ফোনটা অনেক দেরিতে এলে কথা বলার সময় চোখ দিয়ে পড়ে টপটপ জল।
২। বন্ধুদের সাথে থাকি বা যত আনন্দেই থাকি, সবসময় মনে পড়ে মানুষটার কথা। ওর তো এমন হয় বলে মনে হয় না। দিব্যি ঘন্টার পর ঘন্টা মেতে থাকে বন্ধুদের নিয়ে।
অতঃপর অভিমান আর টপটপ চোখের জল।
৩। সবসময় ভাবতাম, সব সম্পর্কের প্রধান সমস্যা মনের ইচ্ছাটা মনে রেখে দেয়া। আরে বাবা, কিছু অপছন্দ হলে বলে দাও না কেন? দেখা করতে ইচ্ছা হলে বলেই দেখ না! সকালে ঘুম থেকে উঠে ওর গলা শুনতে মন চাইলে বলো না কেন ওকে সকালবেলা ফোন করতে?
নাহ! এখন দেখি এতে মুশকিল আছে। সবসময় সবকিছু বলে পেতে ভালো লাগে না। ইচ্ছা হয় দৈবিক ভালবাসায় ও জেনে যাক যে আমার ওকে দেখতে ইচ্ছে করছে। টেলিপ্যাথি করে বুঝে নিক যে আমার মন খারাপ। আর বায়োনিক ম্যান এর মতন অনুধাবন করুক যে আজ আমার সারারাত কথা বলতে ইচ্ছে করছে। তা তো হয় না, তাই আরো অভিমান।
৪। ভাবতাম সবকিছু শেয়ার করব। সব চিন্তা,ভালোলাগা-মন্দলাগা স-অব। তাহলেই তো সব সমস্যার সমাধান! বলেও ছিলাম,যা মনে হবে বলবে—আমি ঠিক মেনে নিতে পারব। না বললেই যত সমস্যা!
নাহ! তা হয় কি? হয়তো কোনদিন বলেছিল, বাহ! মেয়েটার চুলগুলো ভারী সুন্দর। প্রতিবার নিজের চুলগুলো দেখলেই মনে হয়— ওর তো এই চুল পছন্দ নয়, পছন্দ ওই মেয়েটার চুল। অতঃপর আরো অভিমান। কোনদিন হয়তো বলল, ‘তোমার চুলের গন্ধে বুকটা ভরে উঠে’। বেরসিকের মতন বলে উঠি, ‘ওই কেশবতীর চুলের গন্ধ আরো সুন্দর হবার কথা, তা শুঁকতে পারো না বলে কষ্ট হয়?
৫। মনে প্রানে চাইছি সে ফোন করুক। কথা বলার জন্য প্রান পুরে যাচ্ছে।
ফোনটা হয়ত আশান্বিত সময়ের একটু দেরিতে এল। অনেক অভিমান! যে আমি কথা বলার জন্য মরে যাচ্ছিলাম; সেই চুপ করে থাকব।
৬। খুব কথা বলতে ইচ্ছা করছে, তবুও বলব, ‘তুমি কি ব্যস্ত, তাহলে রাখি?’ যদি বলে, ‘আচ্ছা’। তাহলেই অভিমান।
আমার জন্য ওর কোন সময় নেই। কিন্তু আমিই কিন্তু রাখার কথা বলেছিলাম!
৭। ‘রাগ করেছ’, যদি জানতে চায়। আমার উত্তর, ‘রাগ করব কেন?’ ‘তাহলে এভাবে কথা বলছ কেন?’ ‘আমি তো এভাবেই কথা বলি; পছন্দ না হলে কথা বল কেন?’।
রাগ করেছি এবং কেন রাগ করেছি তা বললে কি সমস্যা বাবা?
৮। ‘মন খারাপ’? ‘নাহ!’ ‘মনে হল তোমার মন খারাপ’। ‘মন যেমনই হোক তাতে কি তোমার আসা যায় কোন?’
৭নং এর মতনই। মন খারাপ হলে বলি না কেন?
৯। অনেক প্রশংসা করলে বলি, ‘যাহ! তুমি খামোখা সবসময় নাই দাও’। আর না করলে, খু-উব মন খারাপ হয়।
১০।‘তুমি কি চাও?’ ‘আমি জানি না’।
আসলেই অন্য মেয়েদের কথা জানিনা। তবে আমি যে কি চাই, আমি জানি না। তাই আমার ভালমানুষ প্রেমিকটাকে খুব জ্বালাই আমার দ্বিধা, অনুভূতি আর মেজাজ এর টানাপোড়েন নিয়ে। আশা করি যে জিনিসটা আমি নিজেই বুঝি না, তা সে বুঝে নেবে। জিনিসটা হল মেয়েদের মন!

পুনশ্চঃ লেখায় দেখলাম খুব ফোনের কথা চলে এসেছে। আজকালকার যুগের প্রেম খুব ফোন নির্ভর; তাই বোধহয় এমনটা।
যে মেয়েরা এমনটি নন, এবং আমার ওপর বিরক্তবোধ করছেন তাদের কিছু বলার নেই। একসময় আমিও বিরক্ত হতাম। /:)
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×