মামুন খাঁন
আমি কি আমাকে চিনতে পেরেছি? জানি না।
আমি কি আমার পরিচয় জানি? মনে হয় না!
এ দেখি বড়ই আজব ঘটনা, নিজকে নিজেই চিনি না আমি!
কে দেবে তাহলে আমার পরিচয়?
কি আমার নাম? কোথায় ছিলাম?
কিছুই কি আমি বলতে পারি না?
নিশ্চয় না। তাহলে আমাকে সবাই যে নামে ডাকে
সেটা কি আমার নাম নয়?
নিশ্চয়ই না, যে নাম আমার রেখেছে বাবা-মা
সে নামই যে আমার প্রকৃত নাম
কি করে আমি জানতে পারি?
‘মানুষ’ নামেই পরিচিত আমি, তবু আমাকে
অনেকেই বলে মানুষের মতো মানুষ হতে!
‘মুসলিম’ বলে পরিচয় দেই,
আমি কি মুসলিম সত্যিকারের?
নিজেকে আমি ‘বাঙালি’ বলি
মাতৃভাষা বাঙলা’র টানে
কখনো বলি ‘বাংলাদেশি’
বাংলাদেশের নাগরিক বলে!
কে দিল আমায় নাগরিকত্ব?
-জন্মসূত্রে নাগরিক আমি!
তবে কি আমি এই পৃথিবীরও
জন্মসূত্রে নাগরিক?
পূর্ব পূরুষ হযরত আদম (আঃ)
তিনি তো ছিলেন জান্নাতে;
আমি কি তবে সেই সূত্রে
জান্নাতে যাওয়ার অধিকারী?
কৃত কর্ম কেন আমাকে
নিয়ে যেতে পারে জাহান্নামে?
নিজেকে আমি কেন রাখতে পারি না
আমারই নিজের নিয়ন্ত্রণে?
আমি কি তবে আমাকেই আজও
চিনতে পারিনি? না।
আমি কি আমার ঠিকানা জানি? না।
মায়ের পেটেও কিছুদিন ছিলাম
কিছুদিন থেকেছি গ্রামের বাড়ি,
শহরে-নগরে ঘুরে বেড়িয়েছি
দেশে-বিদেশে কত যে ঘুরাবো আরো!
অন্ধকার সেই ছোট্ট ঘরেও
থাকতে হবে আমাকে, জানি;
কিন্তু সেখানে হাঁড়-মাংস আমার
বেঁচে থাকবে কি আজীবন? না।
আয়নায় আমি নিজেকেই দেখি
‘এই কি তাহলে আমি?’
এটা যে আমার শুধুই দেহ
এ দেহেই আমি থাকি-
আমি কি তাহলে খাঁচার ভিতরে
বন্দী হওয়া কোন পাখি?