somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেয়েটার নাম আকাশী

১৭ ই জুন, ২০১১ সকাল ৯:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মেয়েটার নাম আকাশী

(গল্পটা পড়তে আনুমানিক ১২ মিনিট সময় লাগবে)

“বাবা, বাবা, আমি আকাশী। এভারেস্টে, ১৮ হাজার ফুট উপরে। শুনতে পাচ্ছ বাবা, হ্যালো, হ্যালো। বাবা দোয়া কর যেন শেষ পর্যন্ত যেতে পারি।”

পরিস্কার শোনা যাচ্ছে না।

“একটু ধর, মায়ের সাথে কথা বলে নে”।

মা ছিল বাথরুমে। তাকে ডাকতে ডাকতে লাইন কেটে গেল। বাবা-মা আসলে অপেক্ষা করছিল এই কলটার জন্যে। তারা জানে ১৮ হাজার ফুট উপরে যেই বেস ক্যাম্প আছে, সেখান থেকে ভাগ্য ভালো থাকলে ফোন কল করা যায়। সিগনাল পাওয়া , না পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। কিন্তু আকাশী ঠিকই লাইন পেল। কিন্তু কথা খুব একটা হল না।

কথা বলতে না পেরে মা রহিমা খুব বিরক্ত হল। স্বামী ইদ্রিসকে বকা দিয়ে বলল, ‘আমাকে ডাকতে না যেয়ে মেয়েটার সব খবর শুনে নিলেইতো পারতে’। বাবা বলল, ‘তুমি নিজের কানে ওর গলার আওয়াজ শুনবে, সেই জন্যেই তোমাকে ডাকতে গেলাম। তাছাড়া আমি তো জানি আমার মেয়ে এবার এভারেস্ট জয় করবেই’।

আকাশী আজ ত্রিশ দিন ধরে নেপালে। বাংলাদেশের প্রথম মেয়ে এভারেস্ট জয় করতে গেছে। পৃথিবীর সব চেয়ে উঁচু শৃঙ্গে আকাশটাকে ছুঁয়ে, বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকা লাগিয়ে আসার স্বপ্ন। এর আগে অবশ্য আরো দু জন বাংলাদেশের বাঙালি এই দুঃসাহসিক কাজ করেছে---মুসা আর মুহিত। কিন্তু, এই প্রথম এক বাঙালি মেয়ে এই কাজ করতে চলেছে। আকাশীকে আরো উঠতে হবে দশ হাজার ফুট। সব মিলিয়ে ২৯,০২৮ ফুট।



বছর পাঁচেক আগের কথা। আকাশীর বিশ্ববিদ্যলয়ের জীবনের বয়স মাত্র মাস ছয়েক হয়েছে। ক্লাসমেট মঞ্জু আর রনি কথা বলছিল। আগামী মাসের তিন তারিখে ওরা বান্দরবন যাচ্ছে। পাহাড়ে উঠবে। মোট দশ দিন থাকবে। বান্দরবন থেকে রাঙ্গামাটি। সেখানেও তিনটা পাহাড়ে উঠবে। সাথে থাকবে মাউন্টেন ক্লাবের মোট দশ জন সদস্য। এক জন মেয়েও আছে, নীনা।

আকাশীর ব্যাপারটা খুব রোমাঞ্চকর মনে হল। সাথে সাথেই ঠিক করে ফেলল, তাকেও এদের সাথে যেতে হবে। ভুলে থাকা যাবে প্রতিদিনের একই রকম জীবন। মঞ্জু, রনি শুনতেই রাজী হয়ে গেল। তবে আকাশীকে মাউন্টেন ক্লাবের সদস্য হতে হবে। আর জিমে যেয়ে প্রতি দিন তিন ঘণ্টা করে প্র্যাকটিস করতে হবে। পকেট থেকে সাত হাজার টাকা খরচ করতে হবে।

আকাশী চিন্তা করতে লাগল টাকার ব্যাবস্থা করতে সমস্যা হবে না। তার ব্যাঙ্কে দশ হাজার টাকা আছে। কিন্তু, সমস্যাটা হবে মাকে নিয়ে। পারমিশন নিতে গেলে হয়তো তুলকালাম কাণ্ড বাধিয়ে বসবে। মেয়ে দশ দিন বাসায় থাকবে না। তাও যাবে এক দল ছেলেদের সাথে।

যা ভেবেছিল তাই হল। মা শুনেই তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো। মনে হল এর থেকে অদ্ভুত বিষয় সে কখন শুনে নি। প্রথমে কিছুক্ষণ হাসল। ভাবল মেয়ে তার সাথে রসিকতা করছে। পরে স্পষ্ট জানিয়ে দিল একেবারে অসম্ভব। আকাশীকে কোন ভাবেই বাড়ির বাইরে যেতে দেয়া হবে না। দশ দিন কি, এক রাতের জন্যেও না।

আকাশীর মনে পড়ল বাবার কথা।



বাবা ইদ্রিস আলি পেশায় ডাক্তার। গত তিন বছর ধরে ইরানে। পাঁচ বছরের চুক্তি। দুই বছর পরে ফিরে আসবে দেশে। বাবার বিদেশ যাবার তিন দিনের মাথায় তার সেখান থেকে মন উঠে গেল। দেশে বউ রহিমা আর সতের বছরের আকাশীকে রেখে এসেছে। মনটাকে কোন ভাবেই তাদের কাছ থেকে নিয়ে আসা গেল না। মাছকে নিয়ে ডাঙ্গায় ফেলার অবস্থা হল। বুকের ভিতরটা সারাক্ষণ ছটফট করতে লাগল।

কিন্তু চাইলেই তো আর ফিরে আসা যায় না। বিদেশ আসার জন্যে তিন লক্ষ্য টাকা খরচ হয়েছে। তার পরে, রহিমার আজন্মের আবদার ঢাকা শহরে নিজের একটা বাড়ি। কতদিন আর ভাড়া বাসায় থাকা যায়! মানুষদের ধারের টাকা শোধ দিতে হবে, বাড়ি কিনতে হবে। মেয়ের বিয়ে দিতে হবে; আর কত কি! দেশে ফেরা হল না। মানুষ নামের টাকা বানানোর যন্ত্রকে পূর্ণোদ্যমে উৎপাদন করে যেতে হল।

কিছু মানুষজন এর জন্যেই হয়তো অপেক্ষা করছিল। পাড়ার সব ধরনের মাস্তান ছেলেরা পাল্লা দিয়ে বিরক্ত করতে আরম্ভ করল আকাশীকে। এক জন গেলে আরেক জন। একেবারে বিরামহীন যন্ত্রণা। আকাশী ঘর থেকে বের হওয়া একটা কঠিন কাজ হয়ে গেল। মা রহিমা সাথে থাকলেও খুব একটা উপকার হত না। এমনকি মা একা বের হলেও, বখাটেরা চীৎকার করে জানতে যেত, ‘আকাশী কই, আকাশী?’

বাবা বিদেশ যাবার পরে মায়ের মন এমনি খারাপ থাকত। তার পরে পাড়ার সব বখাটেদের উৎপাতে একেবারে নাজেহাল হয়ে উঠলো। সারদিন ধরে ফোন বাজতে। ফোন ধরলে, আকাশীকে চায়। তার পরে শুরু হয় অশ্লীল কথা বার্তা। বাড়ির সামনে কেও না কেও সব সময় দাঁড়িয়ে থাকে।

মায়ের অস্থির মনের সব রাগ যেয়ে পড়লো মেয়ের উপর। মা ঠিক করে কথা বলে না মেয়ের সাথে। মেয়ের সব ব্যাপারেই ধৈর্য হারা হয়ে পড়ে। আকাশীর অপমানের জগৎ বাইরে থেকে ঘরের ভিতর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়লো। আকাশীর মাথায় আসে না, তার কি অপরাধ।

একদিন ‘গাল কাটা কুদ্দুস’ নামের মাস্তান ছেলেটা বাসায় এসে কলিং বেল টিপতে থাকল। মা দরজা খুলে সাথে সাথে বন্ধ করে দিল। প্রায় আধা ঘণ্টা বিরক্ত করে, তার পরে গেল। মা আকাশীকে তুমুল বকা ঝকা করল। তার পরে আটকিয়ে রাখল তার রুমে। পরের দিন বান্ধবী রুমকির বাসায় যেতে পর্যন্ত দিল না। রুমকি এক মাস আগের থেকে তার জন্মদিনের দাওয়াত দিয়ে রেখেছিল। ঝুনু, মিলা, রুপা সবার আসার কথা। অনেক কিছু প্ল্যান করা ছিল।



এর কয়েক দিন পরে আকাশী মামার সাথে বেরিয়েছিল। সেই ‘গাল কাটা কুদ্দুস’ চায়ের দোকানে বসে ছিল। আকাশীকে দেখে ছুটে আসলো। বেশ জোরেই বলতে থাকল, ‘ও মাই ডার্লিং, তোমার বাসায় গেলাম। তুমি দরজা খুললে না। আমাকে এখন আত্মহত্যা করতে হবে’। মাস্তানের বন্ধুরা সব দাঁত কেলিয়ে হাসতে লাগল।

আকাশী অকল্পনীয় একটা কাজ করল। মামার পাস থেকেই ডাকল মাস্তান কুদ্দুসকে। ‘এই, এই দিকে আস’। তার পরে ডান গালে কষে এক থাপ্পর মারল। বলল, ‘আরেকবার যদি অসভ্যতা করেছো, পায়ের স্যান্ডেল খুলে মুখে মারব’।

মা ঘটনা শুনে ভয়ে অস্থির। সবাই বলতে লাগল, ‘গাল কাটা কুদ্দুস’ তার দল বল নিয়ে এসে আকাশীকে তুলে নিয়ে যাবে। তার সম্পর্কে এ ধরনের অনেক গল্প চালু আছে। এক বার রীনা নামের একটা মেয়েকে বিয়ে বাড়ি থেকে সবার সামনে তুলে নিয়ে এসেছিল। তার পরে তিন দিন আটকিয়ে রেখেছিল। মা কাঁদতে কাঁদতে বাবাকে ফোন করলো। ‘তুমি এখনি ফিরে আস। আমার টাকার দরকার নাই’।

কিন্তু না। কোন সমস্যা হল না। এর পর থেকে আকাশীর জীবন অনেকটা শান্তির হল। একা যাওয়া আসা করে। কেও বিরক্ত করে না। তার পরেও, মায়ের মন শান্ত হয় না। তার ধারনা, ‘গাল কাটা কুদ্দুস’ সুযোগের অপেক্ষায় আছে। যে কোন দিন আকাশীর মহা সর্বনাশ নেমে আসতে পারে। মা, মামার সাথে শলা পরামর্শ করে ঠিক করলো আকাশীর বিয়ে দেয়াটা সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ হবে।



আকাশী বাবাকে ইরানে ফোন করে বলল, ‘বাবা, আমি পাহাড়ে উঠতে যাব। তুমি, মাকে বল, আমাকে যেতে দিতে’। বাবা আকাশীর কথা মন দিয়ে শুনে বলল, ‘মা, তোমাকে পাহাড়ে সব চেয়ে উপরের শৃঙ্গে উঠতে হবে’।

দশ দিন সফরের পরে ফিরে আসলো। আকাশী মোট চারটা পাহাড়ের চুড়ায় উঠলো। ঢাকায় ফিরে এসে বাবাকে ফোন করলো খবরটা দিতে। বাবাকে ওই দিক থেকে মহা আনন্দিত মনে হল। বলল, ‘আমি জানতাম, আমার মেয়ে এই কাজটা পারবে’।

আকাশী মাউন্টেন ক্লাবের নিয়মিত সদস্য হয়ে গেল। মাস তিনেক পরে ক্রিওক্রাডাঙ উঠতে যেয়ে পা ভেঙ্গে ঢাকায় ফিরল। মা বাবাকে জানাল, ‘তোমার মেয়েকে তুমি এস দেখ’। অবাক করে দিয়ে, বাবা এক মাসের ছুটি নিয়ে চলে আসলো মেয়ের কাছে থাকার জন্যে।

বাবা ছুটি বেশির ভাগ সময় আকাশীর সাথে কাঁটাল।



মা আর মামা বেশ অল্প সময়ের মধ্যে আকাশীর বিয়ের ব্যাবস্থা করে ফেলেছিল। মামার অফিসের মালিক বহর খানের ছেলের সাথে। লন্ডন গিয়েছিল পড়ালেখা করতে। কিন্তু পরে জানা গিয়েছিল, সে দেশে নকল করে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেছিল। তার পক্ষে কি আর বিদেশে পড়ালেখা করা সম্ভব!

বিলাত ফেরত ছেলের সাথে আকাশীর বিয়ে দিয়ে মা-মামা মহা খুশী। কিন্তু তারা আসল খবর রাখত না। ছেলে বিদেশ যাবার আগে থেকেই ড্রাগ এডিক্ট ছিল। পয়সাওয়ালা বাবার ধারনা ছিল ছেলেকে বিদেশ পাঠালে ছেলে হয়তো লাইনে চলে আসবে। কিন্তু হল তার বিপরীত। ছেলে এক কাড়ি টাকা ধ্বংস করে বাড়ি ফিরে আসলো।

দেশে ফিরে আবার সেই একই নেশার লাইনে আরো বেশী ব্যাস্ত হয়ে পড়লো। বাবা মানুষের কাছে জানাজানি হয়ে যাবে, এই ভয়ে ছেলের নেশার সব খরচ যোগাতে থাকলো। পীর বাবার পানি পড়া আর ডাক্তারের চিকিৎসা ---কোনটাই কোন উপকার এনে দিতে পারল না। ছেলের নেশা বাড়তে লাগলো দিনে দিনে।

ছেলেকে কোন ভাবে সামাল দিতে না পেরে বহর খান সাহেব অস্থির হয়ে পড়লো। এতো বড় ব্যাবসা আর এতো মানুষ চালাতে কোন সমস্যা হয় না; আর নিজের ছেলে নেশা খোর হয়ে গেছে, কিছু করা যাচ্ছে না। তার ছেলে নেশার জগত হারিয়ে যাচ্ছে। এইটা কি করে মেনে নেয়া যায়।

বহর খান সিদ্ধান্ত নিল ছেলেকে বিয়ে দিতে হবে। বৌয়ের প্রেমে পড়ে যদি ঐ লাইন থেকে ফিরে আসে। শেষ চেষ্টাটা করতেই হবে। শহরের মেয়ে পাওয়া না গেলে, গ্রাম থেকে মেয়ে এনে বিয়ে দেয়া হবে।



আকাশী নতুন এক বাবাকে আবিষ্কার করলো। খাওয়ানো, গোসল করানো ---বাবা সব নিজের হাতে করলো; খূব যত্ন করে। আকাশীর নিজেকে ছোট একটা শিশু মনে হতে থাকলো। বাবা তিন দিন পরে আকাশীকে হাসপাতাল বাসায় নিয়ে আসলো।

এর সপ্তাহ খানিক পরে, বাবা মেয়েকে নিয়ে বেড়াতে আসলো মাউন্টেন ক্লাবে। সবার সাথে পরিচিত হল। শুনল বাঙালীরা অনেক এগিয়ে গেছে। মুসা, মুহিত পরের বছর যাবে এভারেস্ট জয় করতে। বাবার আনন্দ আর ধরে না। খূব উত্তেজিত হয়ে কথা বলতে লাগলো, ‘বাবারা, আমার মনে হচ্ছে তোমরা পারবে। আমাকে শুধু বল, আমি তোমাদের জন্যে কি করতে পারি?’

আকাশী ভেবে পেল না, বাবা শেষবার কবে এতো খুশী হয়েছিল। বাবা মাউন্টেন ক্লাবের ১২ জন সদস্যকে নিয়ে চাইনিস খেল। যাবার সময় সবাইকে বুকে জড়িয়ে ধরল। বলল, ‘আমার আকাশীকে তোমাদের সাথে রেখো’।

বাড়ীতে ফেরার সময় আকাশীকে বলল, ‘মা, তুইও যদি এভারেস্টের চূড়ায় উঠতে পারতি!’



আকাশীর বিয়ে হয়েছিল খুবই সাধাহরণ। আগের দিন মা বলেছিল, ‘কাল শুক্রবার তোমার বিয়ে। অনেক বড় লোকের ছেলে’।

আকাশীর কথাটা বুঝতে অসুবিধা হল। মা কি বলে এই গুলি। একটু থেমে, বলল, ‘বাবার জন্যে অপেক্ষা করলে হতো না’। মা উত্তরে বলল, ‘ তোমার বাবা বলেছে বিয়ে দিতে। পরে দেশে আসলে অনুষ্ঠান করবে। গাল কাটা কুদ্দুস কোন ঝামেলা করার আগে, তোমার শ্বশুর বাড়ীতে চলে যাওয়াই ভালো’।

বাবার উপর খুব অভিমান হল। মাস্তানদের অত্যাচারে তার ‘বেঁচে থাকার স্বপ্নটা’ মারা গেল। কেও এসে তার পাশে দাঁড়ালো না। মামার সাথে এক দল মানুষ আসলো সন্ধ্যার দিকে। একজন কাজী সাথে ছিল। বিয়ে পড়াতে মিনিট দশেক লাগলো। আকাশীর ভাবল, তার এ পর্যন্ত জীবনের সব চেয়ে বড় ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে আর কেও তার মতামত নেওয়ার যে একটা প্রয়োজন থাকতে পারে তাও কেও স্বীকার করতে রাজী না।



বাবা ইদ্রিস ইরানে ফিরে যাবার সময় আকাশীরকে বলল, ‘মা এখন থেকে আমি তোর সাথে আছি সারাক্ষণ। দেশে ছিলাম না---আর তোর এতো বড় ক্ষতি হয়ে গেল। আর দেড় বছর। তার পরে আমি চলে আসবো। আমরা এর শোধ নেব মা’।

বাবা ইরানে যেয়ে মেয়েকে প্রতিদিন ফোন করে। কথা বলে সব ব্যাপারে এক জন বন্ধুর মতো। তবে কথার অনেকটুকু জুড়েই থাকতো পাহাড়ে উঠা নিয়ে। কার প্রস্তুতি কেমন, কোন বাংলাদেশী প্রথম জয় করবে এভারেস্ট ইত্যাদি।

ইদ্রিস আলী নিজেও খবর নেয়া আরম্ভ করলো হিমালয় আর এভারেস্ট নিয়ে। ১৯৫৩ সালে হিলারি আর তেণজীং প্রথম হিমালয় জয় করে। কিন্তু তার আগে অনেক মানুষ চেষ্টা করেও উঠতে পারে নি চূড়া পর্যন্ত। বেশ কিছু মানুষ প্রাণ পর্যন্ত দিয়েছে। থেমে থাকে নি মানুষ। প্রতি বছরই মানুষ উঠার চেষ্টা করে। বেশীর ভাগ মানুষকে হতাশ হয়ে ফিরে আসতে হয়। প্রতিটা পদে পদে ওখানে বিপদ। যত উপরে উঠা হয়, বাতাসের চাপ তত কমতে থাকে, শরীর ভারী হয়ে আসে। অনেকের শরীর তা নিতে পারে না। অক্সিজেনের সিলিন্ডার পিঠের সাথে বেঁধে নিতে হয়। সিলিন্ডার ছিদ্র হয়ে যাবার সম্ভবনা সব সময় থাকে। ।

গৌতম বুদ্ধের একটা মূর্তি বসানো হয়েছে এভারেস্টের চূড়ায়। এখন, অনেকটা অলিখিত নিয়ম হয়ে গেছে মূর্তিটার সাথে ছবি তুলে নিয়ে এসে কতৃপক্ষকে দেখানো। তার থেকে প্রমান হয় কেও পৃথিবীর সর্বোচ্চ জায়গা পর্যন্ত আসলেও পৌছাতে পেরেছে কি না। ভারতের বাঙ্গালী দীপঙ্কর আর রাজীব এর মধ্যে চূড়া ঘুরে এসেছে। লাগিয়ে এসেছে ভারতের পতাকা। ইদ্রিস আলী ভাবে, বাংলাদেশের পতাকা কখন যে ওখানে উড়বে। রাধানাথ শিকদার দেহরুন নামের এক বাঙ্গালী ১৮৫২ সালে ট্রিকোণোমিটি ব্যাবহার করে প্রথম বারের মত এভারেস্টের সঠিক উচ্চতা বের করে ছিলেন।

বাবা ইরান থেকেই সব ব্যবস্থা করে দিল আকাশীর দার্জিলিং হিমালায় মাউন্টেনিয়ারিং ইনষ্টিটিউটে ট্রেনিঙের। দুই দফা যেতে হল। অবশ্য আরও কিছু বাংলাদেশী ছেলে এর মধ্যে ট্রেনিঙ নিয়ে এসেছে। তবে আকাশীই প্রথম বাঙ্গালী মেয়ে। নেপাল, ভারত আর বাংলাদেশের বেশ কিছু কষ্টকর পাহাড় আকাশীকে ট্রেনিঙের জন্যে জয় করতে হল।

ট্রেনিঙ থেকে ফিরে আকাশী বাবাকে ফোন করে জানালো, সে এখন এভারেস্টে উঠার যোগ্যতা অর্জন করেছে। মুসা, মুহিত দুই বছরের ব্যাবধানে বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে এসেছে এভারেস্টের চুড়ায়। আগামী বছর, যদি আকাশী একই কাজ করতে পারলে, সেই হবে প্রথম বাঙালি মেয়ে আর তৃতীয় বাংলাদেশী যে কাজটা করলো।

১০

আকাশী শ্বশুর বাড়িতে ছিল সব মিলিয়ে ছিল এগার মাস। প্রথম দুই সপ্তাহ তার আদর আপ্যয়ায়নের কোন কমতি ছিল না। কিন্তু বিয়ে করলেও ছেলের মধ্যে কোন পরিবর্তন দেখা গেল না। বয়সে যুবক হলেও। নেশায় সে এমন বুদ থাকে, যে তার শরীরে আর অন্য কোন চাহিদা সৃষ্টির কোন চিহ্ন দেখা গেল না। ।

শ্বাশুড়ি একদিন বিরক্ত হয়ে বলল, ‘কি কর একটা যুবক ছেলেকে ধরে রাখতে পার না’। তার পরে শ্বাশুড়ি যেই শলা কলা করার পরামর্শ দিল, তা শুনেই আকাশীর কান লাল হয়ে গেল। কিছু না বলে উঠে চলে গেল ওখান থেকে।

ওই রাতে শ্বাশুড়ি নিজের হাতে সাজিয়ে, খুব ছোট একটা ঘুমের পোশাক পরিয়ে দিল। আকাশীর ভীষণ লজ্জা লাগতে লাগল। ফিনফিনে কাপড়, পুরো শরীরটা বেরিয়ে আসতে চায়।

আকাশী ধরেই নিয়েছিল ওর স্বামী আজকে তাকে ছুঁয়ে দেখবে, ধরবে। এই সময়টার জন্যে সে হয়তো নিজেকে রক্ষা করে এসেছে এত গুলো বছর। নেশা করে, তার পরেও স্বামী। যদি নেশা ছেড়ে দেয়, ভালবাসতে শিখে, তা হলে খারাপ কি। সুন্দর একটা জীবন কে না চায়।

মৃদু আলোয় বিশেষ একটা ভঙ্গী করে এসে দাঁড়াল স্বামীর সামনে। ঢুলু ঢুলু চোখ দিয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে স্বামী বলল, ‘আরে বউ আমার দেখি বিদেশী বেশ্যার সাজ দিয়েছে’। আবার রসিকতা করার চেষ্টা করলো, ‘তুমি কি আগে কি বেশ্যা ছিলে না কি?’ আকাশী মনে হচ্ছিল, তার বুঝি এই কষ্টটা ফল দিতে চলেছে। স্বামী এক বার হাত বাড়ানোর চেষ্টা করলো। আকাশী দেখল, হাতটা কাঁপছে। দাঁড়াতে যেয়ে বিছানায় যেয়ে পড়লো। আকাশী বিছানায় পাশে যেয়ে বসলো। একটা মেয়ে একটা ছেলেকে উত্তেজিত করার চেষ্টা করলো। কিন্তু না। আকাশী আবিষ্কার করলো এই মানুষটা নপুংসক।

শ্বাশুড়ির বুঝতে সময় লাগল না, আকাশী তার কাজে ব্যর্থ হয়েছে। কারন জানতে চাইল না, আকাশিও বলল না। তার পর প্রতিটা মুহূর্ত ছিল অপমান আর নির্যাতনের। বাড়ির সব কাজ করতে হত আকাশীকে। কিছু এই দিক ওই দিক হলেই, অকথ্য গালাগালি আর মারধর। একদিন কাপড় ইস্ত্রি করতে যেয়ে শ্বাশুরির ব্লাউস পুড়িয়ে ফেলল। সাথে সাথেই শ্বাশুরি চুল ধরে চড় থাপ্পর আরম্ভ করে দিল।

আকাশী এই বার একটা অস্বাভাবিক কাজ করলো। শ্বাশুরি হাত চেপে ধরে বলল, ‘আপনার হওয়ার কথা ছিল মায়ের মত স্নেহময়ী। কিন্তু আপনি আসলে একটা ডাইনী। আমি এখন এই বাসা থেকে বেরিয়ে যাচ্ছি। দেখি। আমাকে কে আটকায়’।

১১

ক্লাসমেট মঞ্জু আকাশীর গত তিন বছরের নিত্য সাথী। ক্লাস, মাউন্টেন ক্লাবে প্রাকটিস, পাহাড়ে উঠা, বাসায় পৌঁছে দেওয়া সব ব্যাপারেই তার মহা আগ্রহ। পৃথিবীতে এমন কোন বিষয় নাই যা নিয়ে দু জন কথা বলে না । কিন্তু, একটা ব্যাপারে কথা আরম্ভ হলেই আকাশী অন্য প্রসঙ্গে চলে যায়। বিষয়টা হল প্রেম। মঞ্জু অনেক ভাবেই বোঝাতে চেষ্টা করে, আকাশীকে তার ভাল লাগে।

একদিন মঞ্জু খুব করে চেপে বলল, ‘আজকে তোমাকে বলতেই হবে, তুমি কেন আমাকে এত উপেক্ষা কর’। অনেকটা বাধ্য হয়েই আকাশী বলল তার জীবন কাহিনী। প্রথমে বেশ কিছুক্ষণ কাঁদল। তার পরে মুখ খুলল। শেষে বলল,‘ আমার জীবনে এখন একটা মাত্র লক্ষ্, এভারেস্টের চুড়ায় উঠা। আমার বাবা আমাকে বড় একটা ডাক্তার বানাতে চেয়েছিল। কিন্তু কোথায় যেন কি হয়ে গেল। আমার বাবা আমাকে খুব যত্ন করে মানুষ করেছে। আমার অসুখ হলে সারা রাত জেগে কাটিয়েছে, স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আগে আমাকে নিয়ে প্রাকটিস করেছে। আমি মেয়ে হয়েও যে খেলা ধুলায় ভাল, এইটা তারই কারন। আমার প্রতিটা সাফল্য আর ভাল লাগার ক্ষেত্র বাবা তৈরি করে দিয়েছে। মাঝে মাঝে মনে হয়, বাবা ফিল্ম ডাইরেক্টারের মত আমার সব ঘটনার পিছনে। শুধু একটা ঘটনা ছাড়া। বাবা নিজেকে অপরাধী ভাবে আমার জীবনের এই একসিডেন্টের জন্যে। বাবা বলে, সে দেশে থাকলে কখন এরকম হত না।‘

আকাশী বলতে থাকে, ‘আমাকে এভারেস্টের চুড়ায় উঠতে হবেই। সেটা আমাদের প্রতিবাদের ভাষা। একটা বাবা, একটা মেয়ে সবার পক্ষ থেকে ঘোষণা করবে সুন্দর জীবন পাবার অধিকার সবার আছে।‘

মঞ্জু অঙ্গীকার করলো, আকাশীকে সে কখন কোন ভাবেই কষ্ট দিবে না।

১২

বাবা ইদ্রিস আলি দেশে এসে ডিভোর্সের কাগজ পত্র ফাইনাল করে ফেলল। উকিল দিয়ে পাঠাল বহর খানের বাসায়। আকাশী নতুন করে পড়া লেখা আরম্ভ করলো। বাবা নিজে যেয়ে ভর্তি করিয়ে আসে নর্থ -সাউথ ইউনিভার্সিটিতে। বাবা, মেয়ে পন করে আর কোন ভাবে পরাজিত হওয়া যাবে না।

বাবা ইরান থেকে এসে মাকে একটা দামী ফ্ল্যাট আর গাড়ি কিনে দেয়। দেশের বাড়িতে তার বাবার নামে একটা ছোট স্কুল আর মসজিদ বানায়। কিছু গরীব আত্মীয় স্বজনকেও সাহায্য করে।

দেশে বাবার একটা চাকরিও হয়ে গেল। কাজের পরে যত টুকু সম্ভব মেয়ের সাথে সময় কাটায়। এর মধ্যে মাউন্টেন ক্লাব আকাশীর এভারেস্ট উঠার ব্যাবস্থা চূড়ান্ত করে। কিন্তু বাদ বাঁধে টাকা, আরও সাত লক্ষ্ টাকার দরকার। বাকি বারো লক্ষ্ টাকা স্পনসাররা দিতে রাজী হয়েছে।

বাবা ইদ্রিস আলি মহা চিন্তায় পড়লো কিভাবে বাকি টাকার পাওয়া যায়। জমানো টাকা সব শেষ হয়ে গেছে। বাবা তার গ্রামের বাব-দাদার ভিটাবাড়ি আর ধানের জমি বিক্রি করে দিল।

১৩

চৌদ্দ জনের দল এভারেস্টের চুড়া জয়ের জন্যে যাত্রা করেছিল। তার মধ্যে ছিল, ছয় জন নেপালি শেরপা। পয়সার বিনিময়ে তার অন্যদের সাহায্য করে পাহাড়ে উঠতে। বাকি আট জন এসেছে সাতটা বিভিন্ন দেশ থেকে। ভারত থেকে দুই জন।

মোট তিনটা দুর্ঘটনা হল। তের হাজার ফুট উপর জার্মানির ডেভিড পা পিছলে পড়ে গেল। ওখানেই মৃত্যু। বিশ হাজার ফুট উপরে এসে খুব অসুস্থ হয়ে পড়লো ভারতের মাধব। ফিরে যেতে হল তাকে। তৃতীয় দুর্ঘটনায় পড়লো আকাশী নিজে।

মাত্র যখন এক শ ফুট মত বাকি, গৌতম বুদ্ধের মূর্তি দেখা যাচ্ছে, তখন আকাশীর অক্সিজেনের সিলিন্ডার লিক করা আরম্ভ করলো। শেরপারা ঘণ্টা খানেক চেষ্টা করে সেটা মেরামত করলো। নির্ঘাত মৃত্যু থেকে বাঁচল বাংলাদেশের মেয়ে আকাশী।

১৪

নাইমা আলি আকাশী গৌতম বুদ্ধের মূর্তির পাশে বাংলাদেশের পতাকা লাগাল। অন্যরা ছবি উঠালো। চারিদিকে সাদা বরফ। মনে হল, পৃথিবীর সব চেয়ে উঁচু জায়গায় বিধাতা যেন নিজের হাতে অদ্ভুত এক সৌন্দর্য আর নীরবতা বানিয়ে, নিজেই তা রক্ষা করছেন। এর ভাষা যে জানতে চায়, সেই শুধু জানতে পারে। পাহাড় আর আকাশ বলে দিচ্ছে, প্রকৃতিটা বিশাল। দুঃখ-কষ্টে ক্লান্ত, হতাশ হওয়ার কোন কারন নাই। প্রকৃতিই বলছে পাহাড়ের মত সোজা হয়ে দাঁড়াতে আর হৃদয়কে আকাশের মত ছড়িয়ে ভালবাসাতে।


আকাশীর অবচেতন মনে সব সময় বাবা থাকলেও, এই মুহূর্তে তাকে খুব বেশী করে মনে পড়লো । তার সীমাহীন ভালবাসার যেন এভারেস্ট, আকাশ, বরফ আর পুরো প্রকৃতির মত। সব বাবারা হয়তো এরকমই। কাজ, সংসার, বাস্তবের কতনা এভারেস্ট তাদের জয় করতে হয় প্রতিনিয়ত। কত না কষ্ট, অপমান, গ্লানি সহ্য করে সংসার মাঝির নৌকা বেয়ে চালাতে হয়। আবার সেই সব নৌকা গুলোতে বেশির সব সময় থাকে না জয়গানের কোন আয়োজন। বাবারা unsung heroes হয়েই থাকে, হয়তো।

HAPPY FATHERS DAY TO ALL OF YOU

জুন ১০, ২০১১
http://www.lekhalekhi.net


সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুন, ২০১১ সকাল ৯:৫৯
১২টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জেন্ডার ও সেক্স

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৪ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:৫২

প্রথমে দুইটা সত্যি ঘটনা শেয়ার করি।

২০২২ সালে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দিতে জেলা পর্যায়ে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। মৌখিক পরীক্ষার ঘটনা। দুজন নারী প্রার্থী। দুজনই দেশের নামকরা পাবলিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

এমপি আনারকে সবাই কৃত্রিম সন্মান দেখায়েছে, বেনজিরকে মিথ্যা স্যার ডেকেছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৪ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৫



এমপি আনার ৪/৫ শত ক্যাডারকে লালন পালন করতো, সবাই তাকে "ভাই" ডাকতো; কত কলেজের শিক্ষক, প্রিন্সিপাল, থানার দারোগা উনাকে স্যার ডেকেছে; পার্লামেন্ট ভবনে উনাকে কত আদর করে খাবার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামীলীগে শুধুমাত্র একটি পদ আছে, উহা সভাপতি পদ!

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৪ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪১


বাঙ্গালীদের সবচেয়ে বড়, পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী দল হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এই দলটির প্রতি মানুষের ভালোবাসা আছে। মানুষ এই দলের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন করেছে। ৭০ এর নির্বাচনে এই দলটিকে নিরঙ্কুশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

এমপি আনারের মৃত্যু এবং মানুষের উষ্মা

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৪ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:২৯


সম্প্রতি ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার পর আনোয়ারুল আজীম আনার নামে একজন বাংলাদেশি এমপি নিখোঁজ এবং পরবর্তীতে তাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর তার মরদেহের হাড়-মাংস আলাদা করে হাপিত্যেশ করে দেওয়া হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

তোমার বকুল ফুল

লিখেছেন নীল মনি, ২৪ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:১৪

বকুল ফুলের মিষ্টি গন্ধে ভরে থাকে আমার এই ঘর। আমি মাটির ঘরে থাকি। এই ঘরের পেছন দিকটায় মা'য়ের হাতে লাগানো বকুল ফুলের গাছ৷ কী অদ্ভুত স্নিগ্ধতা এই ফুলকে ঘিরে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×