somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হাসান সায়্যিদ একটি পশুর নাম , বুয়েট এবং কিছু প্রাসঙ্গিক কথা বার্তা (হাসান সায়্যিদ যেহেতু বাঙালি , সুতরাং বাঙালি মাত্রই নরপশু !!! )

১৫ ই জুন, ২০১১ বিকাল ৪:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১.
প্রচন্ড মন খারাপ করা সময় কাটাচ্ছি আমরা । আমরা বাঙ্গালিরা । জাতি হিসেবে । মানুষ হিসেবেও । মানুষের সঙ্খ্যাটা নেহাত কম ছিলো না , হয়ত আজো নেই । কিন্তু অমানুষের সঙ্খ্যাটা হঠাত বেড়ে গেছে বহুগুণে । তাই মাঝে মাঝে চমকে উঠে ভাবি “আমি ঠিক আছি তো ?” । কে জানে কখন মানবিক মনুষ্য সমাজের আরাধ্য সিড়ি থেকে আমারো ঘটতে পারে পদস্খলন !! চাপা দীর্ঘশ্বাস বুকে চেপে হতাশ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকি মানুষ-অ্মানুষের সীমারেখার প্রান্তে ।

একজন মাকে আমরা লাঞ্ছিত করছি । জাতির এক শ্রদ্ধেয়া শিক্ষিকাকে জর্জরিত করেছি । একজন মানবিক মানুষকে আমরা রক্তাক্ত করেছি । হাসান সায়্যিদের মত নরপশু সমাজে হাতেগোনা নয় । দিন কে দিন এদের সঙ্খ্যা বেড়েই চলেছে । আশঙ্কার জায়গা এখানে যে, এতদিন এরা বনে জঙ্গলে লুকিয়ে থাকত । মাঝে মাঝে শহুরে মানুষদের আক্রান্ত করে আবার পালিয়ে যেত , অথচ এখন এরা নিশ্চিন্তে ঘুমোয় একেবারে মানব সমাজের হৃতপিন্ডের মাঝে । শঙ্কাটা এখানেই । তবে কি মানুষ আর অমানুষের ব্যবধান কমে আসছে ? নাকি আমরা অন্ধ হয়ে যাচ্ছি ক্রমাগত ? কে জানে ??

রুমানা ম্যামের কাছে ক্ষমা চাইবার ভাষা হয়ত প্রস্তুত আছে আমাদের সমাজের তথাকথিত ন্যায়পালদের অভিধানে । কিন্তু শতভাগ নিশ্চিত করে বলতে পারি ছোট্ট আনুশার কাছে ক্ষমা চাইবার ভাষা আজো এই পৃথিবীতে সৃষ্টি হয় নাই ।
আর ওই শকুনের বিচার ?? আমরা কি চিরকাল বোকা থেকে যাবো ? কার কাছে বিচার চাচ্ছি আমরা ??? কেউ কোনকালে কারো বিচার হতে দেখেছে এই মাটিতে ??? আমাদের রাষ্ট্রের কাছে বিচার চাওয়া কেবল অর্থহীন তাই নয় । বরং নির্বুদ্ধিতারও পরিচায়ক । আসুন আমরা বরং আনুশার কাছে বিচার চাই । শিশূদের প্রার্থনা নাকি আমাদের ঈশ্বর ফেরান না । তাই আনুশার কাছে বিচার চাইলে যদি উপর থেকে তিনি কিছু একটা করেন …।
হ্যা আনুশা, তোমাকেই বলছি , আমদের একটু উপকার করতে পারো তুমি ?? খুব বেশি কিছু না । আমাদের খুব করে অভিশাপ দিও please. তুমিই পারো কিছু একটা করতে । আর কেউ কিছু করবে না । রাষ্ট্র ? সরকার ?? বিরোধীদল ??? মানবাধিকার কমিশন ? কিংবা এমন কি এই আমরাও ? নাহ সবাই তাদের নিজ নিজ শোখিন বিলাসী শোবার ঘরে শহরের শ্রেষ্ঠ নর্তকীদের নিয়ে ব্যস্ত । আনুশা সোনা , তুমি দেখোনা please , কিছু করতে পারো কিনা !!!!
২.
জাতি হিসেবে আমরা ব্যাধি গ্রস্থ । আমরা সু্যোগ পেলেই কাউকে কষে গালি দিলে বড় শান্তি পাই । নিজের মধ্যে একটা বড়ত্ব এসে যায় । হরিণ শাবক পানি ঘোলা করে নি তো কি হয়েছে ? কোন এক কালে এর বাবা দাদারা নিশ্চয় ই করেছিল । তাই ওদের জাতটাই খারাপ ।
“পশু হাসান BUET এর student ছিল । সে যেহেতু এমন অমানুষি করেছে , সুতরাং নির্দ্বিধায় বলা যায় , buetian মাত্রই আমানুষ !!!” – গত কয়েকদিনের ব্লগ গুলোর অসংখ্য লেখা লেখির মধ্যে এই মতামতটা ছিল অন্যতম । আমি অবাক হই । মনের ঈর্ষার বহ্নিজালার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে আমরা এতটাই ব্যস্ত যে , সুযোগ পেলে হাতছারা করতে চাই না । তা সে মুমুর্ষু রোগির শিওরে বসেই হোক আর প্রচন্ড মানবিক বিপর্যয়ের ধ্বংসস্তুপের উপর দাড়িয়েই হোক ।
এই বাংলাদেশের মাটি যেমন একজন শেখ মুজিব কে জন্ম দিয়েছে ,সহস্র আলবদর-রাজাকারের প্রসব বেদনাও সেই মাটিই সহ্য করেছে । তাহলে কি এই রাজাকারদের জন্ম দেয়ার জন্য আমরা এই মাকে কলঙ্কিনি বলব ?
প্রতিবছর প্রায় এক হাজার প্রকৌশলি বের হয় এই buet থেকে । তাদের নৈতিক শিক্ষা দেয়ার দায়িত্ব কি শুধু তার উপর ই বর্তায় ??? কিংবা আদৌ কি বর্তায় ???? কত কত খ্যাতনামা প্রকৌশলি গড়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয় । তার হিসাব কি কেউ রাখে ??? দেশের প্রযুক্তির ও প্রযুক্তি শিক্ষার সে কান্ডারি । শুধু জ্ঞান বিতরণেরই নয় , জ্ঞান সৃষ্টিতেও BUET খ্যাত । তবে কেন এই এক হাসান নামক কুলাঙ্গারের দায় তাকে নিতে হবে যে কিনা তার পড়াশুনাটাও শেষ করতে পারে নি ??
সে গড়ে উঠেছে ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজে-যখন তার বেড়ে উঠবার প্রকৃত সময়, মনন গড়বার , মানুষ হবার শিক্ষা নেবার সময় । আমরা তাই বলে ক্যাডেট কলেজকে কষে চড় হাকাতে পারি না । তা তো আমাদের চিন্তনের সামর্থ আর মানসিক সুস্থতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে । হাসান তো বাংলাদেশে জন্মেছে । তবে কি বাংলাদেশে জন্মানো সব মানুষই পিশাচ ???????
ব্যাক্তিকে মানুষ করবার দায় হয়তো অনেকটাই সমাজের , কিন্তু তার অমানুষ হবার কারণটা তার চেয়েও বেশি তার নিজের এবং তার জৈবিক ধারাক্রমের ।।
কিন্তু যারা সুযোগ পেয়ে আমাদের সবাইকে অমানুষ পিশাচ বলতে পেছপা হচ্ছে না , তারা একবারো
ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ কে লক্ষ্য করে কিছু বলে না । যার অর্থ দাঁড়ায় , কেবল মানসিক বিকার গ্রস্থ চিন্তা থেকে নয় , হয়ত বিশেষ অন্তর্জালা থেকেই তাদের এই মতামত । সহজ ভাবে ভাবুন । সঠিক ভাবে ভাবুন । কেন এমন মানবিক বিপর্যয়ের মুহুর্তে বিভেদ তৈরি হবে ?? BUETian রা এই দেশের সাধারণ মানুষেরই সন্তান । হয়তো তাদের সঙ্খ্যাটা হাতে গোনা । কিন্তু তারাও আর সবার মতই । যারা স্বপ্ন দেখে নতুন কিছু গড়বার । জীবনের নতুন অর্থ উদ্বোধনের । একটি – দুটি কুলাঙ্গার কখনোই একটি গোষ্ঠির বা সমাজের বা দেশের দর্পণ হতে পারে না।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুন, ২০১১ দুপুর ২:২৪
১০টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×