somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সবকিছু গুপ্ত থাকে না!

১২ ই জুন, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সবকিছু গুপ্ত থাকে না!

আবু তাশরীফ

একজন সংখ্যালঘু রাজনৈতিক নেতা। এককালে ন্যাপ ও গণতন্ত্রী পার্টি হয়ে এখন আওয়ামী লীগ করেন। তার স্থির রাজনৈতিক আদর্শ কী-এটা বরাবর অস্পষ্ট থাকলেও যখন যে দলের মঞ্চে থাকেন তখন সেদিকের কথা এমনভাবে বলেন, মনে হতে থাকে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তিনি সেখানেই স্থির হয়ে আছেন। বাস্তবে অবশ্য সেই স্থিরতা তার মাঝে দেখা যায় না। কিন্তু একটি বিষয়ে তার তেমন কোনো নড়চড় নেই। সেটা হচ্ছে, দেশের ইসলামী আদর্শ, ইসলামী রাজনীতি ও ইসলাম ইস্যু পেলেই একচোট বিষোদগার করা। পঁচাশিভাগ মুসলমানের এদেশে তার এ জাতীয় আচরণ আমরা বেশি দেখছি গত কয়েকটি মাস ধরে। দেশের ঈমানদার মুসলিম নাগরিকরা হতভম্ব হয়ে দেখছেন, ধর্মীয় বিষয়ে একের পর উস্কানি ও তাচ্ছিল্যমূলক বক্তব্য দিয়ে তিনি গণমাধ্যম গরম করছেন।

বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বিতর্কিত প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের দেওয়া রায়ে পঞ্চম সংশোধনী বাতিল হওয়া এবং আপিল বিভাগে সে রায় বহাল থাকার পর দেশের সংবিধান নিয়ে এক জগাখিচুড়ি অবস্থর সৃষ্টি হয়। এরপর গঠিত হয় সংবিধান সংশোধনে বিশেষ কমিটি। ওই কমিটির দুই নম্বর ব্যক্তি হিসেবে সংবিধানে ইসলামী ইস্যু নিয়ে প্রায়ই তিনি তাচ্ছিল্যপূর্ণ বক্তব্য দিচ্ছেন। কখনো বলছেন, সংবিধানে বিসমিল্লাহ থাকবে কি না জাতীয় কমিটি সেটা দেখবে। কখনো বলছেন, ‘আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ আর ধর্মনিরপেক্ষতা একসঙ্গে থাকতে পারে না। কখনো সংবিধানে ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ থাকবে কি না এ বিষয়ে তারা বিবেচনা করে দেখবেন-ধরনের কথা বলছেন। কখনো বলছেন, ধর্মভিত্তিক (ইসলামী) রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ হওয়ার বিষয়টি এখনো বলা যাচ্ছে না। ভাবখানা তার এমন যে, বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের ইসলামী আদর্শ ও ইস্যুর টিকে থাকা যেন তার অনুগ্রহের ওপর নির্ভর করছে। প্রতিবারই অত্যন্ত তাচ্ছিল্য আর উল্লাসভরা স্বরে তিনি এসব কথা বলছেন। তার এ জাতিয় বক্তব্য ও আচরণ দেখে বিশিষ্ট আইনজীবী ও রাজনীতিক ব্যরিস্টার নাজমুল হুদা তো ক্ষুব্ধ স্বরেই ওই নেতার নাম নিয়ে বলেছেন, তার ইচ্ছার উপরই কি এখন বাংলাদেশের মুসলমানদের ধর্মকর্ম নির্ভর করছে?

বিষয়টা এমন নয় যে, শুধু সংবিধান সংশোধন নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি এ ভঙ্গিতে কথা বলছেন। বরং যে কোনো ইস্যুতেই ইসলামী চরিত্র ও প্রতীকের প্রতি নাক সিঁটকানো ভঙ্গিতে বিষোদগার করা তার চরিত্রের অংশ হয়ে গেছে। মে মাসের শেষদিকে শেয়ার মার্কেট কারসাজির হোতাদের বিরুদ্ধে বলতে গিয়ে বলেন, শেয়ার মার্কেটের সব দরবেশ, ইমাম-মুয়াজ্জিনদের ধরতে হবে।’ ওই সংখ্যালঘু নেতা অপরাধী একটি শ্রেণীর কথা বলতে গিয়ে ‘মুনি-ঋষিদের’ কথা বললেন না, বললেন ‘দরবেশ-ইমাম-মুয়াজ্জিনের’ কথা। মনের ঝাল ও খেদ তিনি গুপ্ত রাখতে পারছেন না। তার মতলবী শব্দ প্রয়োগ থেকে একটি চতুর সাম্প্রদায়িকতার দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। সে দুর্গন্ধ দেশের সব ধর্মপ্রাণ মুসলিম নাগরিকের নাকেই লাগছে। নিজেকে নামাযী ও নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াতকারী হিসেবে ঘন ঘন পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ বোধকারী প্রধানমন্ত্রী এ রকম সাম্প্রদায়িক উস্কানিদাতা এক সংখ্যালঘু নেতাকে কেন মুসলমানদের মাথার উপর কাঠাল ভাঙ্গার দায়িত্ব দিলেন, সেটাও বোঝা যাচ্ছে না। এই ভদ্রলোককে যদি প্রধানমন্ত্রী ও তার দল খুব নিষ্ঠাবান আওয়ামী লীগার মনে করেই এটা করে থাকেন, তাহলে তারা মস্ত বড় ভুল করছেন। এই লোকের উস্কানিতে মানুষের ক্ষোভ ও যন্ত্রণা যে কোনদিকে ধাবিত হচ্ছে এটা তারা খোঁজ নিয়ে দেখছেন না। এর ফল ভালো হয় না।

এই সংখ্যালঘু নেতা এখন ৭২-এর সংবিধানের খুব মাহাত্ম বয়ান করছেন। সে সময় কিন্তু তিনি ওই সংবিধানে স্বাক্ষর না করে বিরোধিতা করেছেন। এই নেতা এখন জিয়াউর রহমানের চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করছেন। কিন্তু ৯১ সনে বিএনপি সরকার গঠনের পর প্রথম কি দ্বিতীয় বছরে জিয়ার মৃত্যুবার্ষিকীতে বিটিভিতে গিয়ে বহু জিয়াবন্দনা করেছেন। তখন তিনি গণতন্ত্রী পার্টির নেতা হলেও এমপি হয়েছিলেন নৌকা প্রতীকে। এ কারণে পরদিন তার বাড়িতে তার বর্তমান দলের কর্মীরা ককটেল ফাটালে তিনি সাংবাদিক সম্মেলনে আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন-আমার বাড়িতে কেন, সাহস থাকলে ওরা ফারুক-রশিদের বাড়িতে ককটেল ফাটিয়ে দেখুক।’ এক-এগারোর পর এই নেতা অন্য তিন নেতার সঙ্গে মিলে আওয়ামী লীগের জন্য এমন এক সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যার ফলে শেখ হাসিনার আর দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ থাকে না। আর এই সেদিন তো তিনি প্রধানমন্ত্রীর নাম নিয়েই খেদ প্রকাশ করলেন, ‘বাঘে ধরলে ছাড়ে, শেখ হাসিনা ধরলে ছাড়ে না।’

এই নেতার বালখিল্যতা ও উস্কানিমূলক বক্তব্য নিয়ে কথা বললে আলোচনা অনেক দীর্ঘ হবে। তার সাম্প্রদায়িক জিহবাকে লম্বা হতে দিলে ক্ষতি কার ও কাদের হবে-এটা ক্ষমতাসীন শীর্ষনেতা ও দলের কর্মীদের বোঝা উচিত। মুসলমানদের ধর্ম নিয়ে একজন সংখ্যালঘু রাজনীতিক ব্যাঙ্গাত্মক মুখভঙ্গি ও ক্যারিকেচার দিয়ে অনবরত বক্তব্য দিতে থাকবেন, আর লাখ লাখ সাহসী মুসলিম তরুণ ধৈর্য্যের পরিচয় দিয়েই যাবেন-এ রকম অংক বাস্তব হিসাবে বড়ই ভুল প্রমাণিত হতে পারে। তার থামা উচিত, প্লিজ! তাকে থামানোর ব্যবস্থা করুন। বাংলাদেশের মানুষ এখন অনেক সচেতন। নানা রঙে চেহারা রঞ্জিত করলেও সবার কাছে সব বিষয় গুপ্ত থাকে না।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=নিছক স্বপ্ন=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৮



©কাজী ফাতেমা ছবি
তারপর তুমি আমি ঘুম থেকে জেগে উঠব
চোখ খুলে স্মিত হাসি তোমার ঠোঁটে
তুমি ভুলেই যাবে পিছনে ফেলে আসা সব গল্প,
সাদা পথে হেঁটে যাব আমরা কত সভ্যতা পিছনে ফেলে
কত সহজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

একদম চুপ. দেশে আওয়ামী উন্নয়ন হচ্ছে তো?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৯



টাকার দাম কমবে যতো ততোই এটিএম বুথে গ্রাহকরা বেশি টাকা তোলার লিমিট পাবে।
এরপর দেখা যাবে দু তিন জন গ্রাহক‍কেই চাহিদা মতো টাকা দিতে গেলে এটিএম খালি। সকলেই লাখ টাকা তুলবে।
তখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গরু দুধ দেয় সেই গরু লাথি মারলেও ভাল।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১২:১৮


০,০,০,২,৩,৫,১৬, ৭,৮,৮,০,৩,৭,৮ কি ভাবছেন? এগুলো কিসের সংখ্যা জানেন কি? দু:খজনক হলেও সত্য যে, এগুলো আজকে ব্লগে আসা প্রথম পাতার ১৪ টি পোস্টের মন্তব্য। ৮,২৭,৯,১২,২২,৪০,৭১,৭১,১২১,৬৭,৯৪,১৯,৬৮, ৯৫,৯৯ এগুলো বিগত ২৪ ঘণ্টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোরআন কী পোড়ানো যায়!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৮

আমি বেশ কয়েকজন আরবীভাষী সহপাঠি পেয়েছি । তাদের মধ্যে দু'এক জন আবার নাস্তিক। একজনের সাথে কোরআন নিয়ে কথা হয়েছিল। সে আমাকে জানালো, কোরআনে অনেক ভুল আছে। তাকে বললাম, দেখাও কোথায় কোথায় ভুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×