somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পিয়াসানন্দের কাছে চিঠি (১৮+)

২৫ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ২:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২৫ জুলাই ২০১৩
প্রিয় পিয়াসানন্দ,

সময়ের সাথে যেমন মহাকাল ও বয়ে চলে সমান তালে, তেমনি উত্তরায়নের হাওয়া বদলের গানে আমিও চলেছিলাম দক্ষিনায়নের পথে। আমার আলোকোজ্জ্বল রথ আর ১০১ টি অশ্ব যোগে, আমার সারথি ছিলো এক নারী, উত্তরায়নের পথের শেষে বাঁক নেবার সময় আমি দেখলাম, আমার অশ্ব গুলোর সেই তেজ দীপ্ততা নেই, খুলে পড়ে গেছে আমার রথের আলোক স্জ্জ্বা। আর কোথায় আমার সারথি? তাঁকে আর খুজে পাই নি, সারথি রূপী রাধা আমায় ফেলে চলে গেছে কোথায়, কোন চুলোয় কে জানে?

দাদা, আমি কৃষ্ণ নই, তাই শত শত গোপিনী আমার জন্য প্রান দেয় না, আমার কোন গুপ্ত বৃন্দাবন ও নেই। আমি রাজা নই মহারাজা নই, আমি অশ্বমেধ যজ্ঞ ও করি নি, তবুও আমি সুখী ছিলাম। কেন ছিলাম কি ভাবে ছিলাম জানি না, কখনো জানার প্রয়োজন হয় নি। কিন্তু জীবন এলোমেলো করে দেবার জন্য একজন রাধিকা আর একজন কংশ ই যথেষ্ঠ।

আমি বীরবাহু অর্জুন, আপনার কবিতার বিশাল এক ভক্ত, কিন্তু কখনো বলা হয় নি, হয়তো কোন এক সুদূর ভবিষ্যতে আপনি পঞ্চ কবির এই গন্ডি হতে বেরুতে পারবেন, আমি জানি আপনার সেই ক্ষমতা আছে, হ্যা একদিন আপনার হয়তো ভুল ভাঙবে, কবিতা শুধুই শিল্পোত্তীর্ণ হবার জন্য নয়। কবিতার সামাজিক দায়বদ্ধতা আছে। সাম্যবাদী সমাজের পথে হাঁটার জন্য, সাম্যবাদের বাঁশিই বাজাতে হয়, এখানে ইশ্বর সাধনা, পকৃতি প্রেম আর বস্তা পচা রোমান্টিসিজম দেখালে তা হয়, বিপ্লবের সাথে হঠকারিতা।

হ্যা আমি জানি, আপনি বিপ্লবের ধারণায় বিশ্বাস করেন না। আপনি প্রেমিক কবি, আপনার মাঝে বাস করে সৌম্য শান্ত মহাবীর আর বৌদ্ধের দ্বান্দিক রূপটি। কিন্তু আমি বিপ্লবী, আমার মাঝে যে কবি স্বত্ত্বাটি বাস করে তা হলো পাবলো নেরুদা, সুকান্ত, হোসে মার্তি আর লোরকার এক জগা খিচুরি। আমার মাঝে চে গেবারা আর নানক বাস করেন, যারা সৌম্য নন, অভদ্র চাড়াল আর নিয়ম ভাঙ্গার কারিগর। তাই আপনার আমার স্বন্দ থেকে যাবেই, হোক তা প্রেমে, ভোগে অথবা ত্যাগে।

আমি জানি, আমাদের চিন্তার মাঝে অনেক দূরত্ব আছে, অর্থনৈতিক, সামাজিক আর পারিবারিক সাংস্কৃতিক। আমাদের এই বেড়াজালের পার্থক্য থেকেই যাবে, এটা থাকাটা দরকার। কারণ একদিন বিপ্লবের জন্য মাউ সে তুং এর দুটো কথা সত্য বলে প্রমানিত হবে। প্রথম টা হচ্ছে, অনেক সময় মৌল দ্বন্দ গৌণ আর গৌন দ্বন্দ মৌল হয়ে ওঠে। আর দ্বিতীয় কথাটি হচ্ছে, শত মতের সংঘাত ঘটুক, শত পুষ্প বিকশিত হোক। আমরা দুজনেই সকল মান অভিমান ভুলে একদিন হাতে হাত ধরে অন্য সকলের সাথে মাথে নেমে আসবো, সেদিন, কি মুসলিম, কে হিন্দু, কে নাস্তিক সে হিসেব করার থাকবে না। এই বিশ্ব পালটে যাবে। স্বপ্ন দেখি সেই দিনের। হয়তো দেখতে পাবো পৃথিবীর সব মানুষ হয়ে দাঁড়াবে এক কাতারে। সে দিন হয়তো চন্দ্রাবতী ফিরে আসবেন, কিন্তু ততোদিনে বড্ড দেরি হয়ে যাবে, বৃদ্ধ অর্জুন, এখন বৃদ্ধ হতে বৃদ্ধতরের দিকে। সেই হাত আর ধনুক ধরতে পারে না। তীর ছুড়তে পারে না। তবুও যদি চন্দ্রাবতী এসে বলেন, “হে প্রান সখা, আমি কি সামান্য কাল অবস্থান করিতে পারি তোমার সহিত?” এই তো হবে অর্জুনের শান্তি। আর কি চায় অর্জুন? আমি তো এসেছিলাম ই সেই যৌথ খামারের স্নধানে, রাজ পথে সংসার পাতবো বলে।

এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়
এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়
মিছিলের সব হাত
কন্ঠ
পা এক নয়।
সেখানে সংসারী থাকে, সংসার বিরাগী থাকে।
কেউ আসে রাজ পথে সাজাতে সংসার।
শাশ্বত শান্তির যারা তারাও যুদ্ধে আসে
অবশ্য আসতে হয় মাঝে মধ্যে
অস্তিত্বের প্রগাঢ় আহ্বানে,
কেউ আবার যুদ্ধবাজ হয়ে যায় মোহরের প্রিয় প্রলোভনে
কোন কোন প্রেম আছে প্রেমিক কে খুনী হতে হয়।
যদি কেউ ভালোবেসে খুনী হতে চান
তাই হয়ে যান
উৎকৃষ্ট সময় কিন্তু আজ বয়ে যায়।
এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়।
এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়।

আজ থামছি, কাব্যি করে লিখা আমার হয় না। আমি সাহিত্যিক নই, আমি সাধারণ এক মানুষ, যার সব আছে। আবার আমি সাধারনের মাঝে অসাধারণ, কারণ আমার বিপ্লব আছে। বিপ্লব টিকে থাকুক আজীবন। সকল মানুষের নিজস্ব বিপ্লব।

ইতি,
বীর বাহু অর্জুন।
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×