somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই, বাংলা ভাষার রাষ্ট্র চাই।।

০৯ ই জুন, ২০১১ সকাল ৮:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঘটনাটি আমাদের প্রিয় চিত্রশিল্পী হাশেম খানের। ১৯৫২ সালে তিনি স্কুলের ছাত্র। সপ্তম বা ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়েন। গ্রামে থাকেন। সেখানে পত্রিকা পৌঁছায় দুইদিন পরে। ভাষা আন্দোলনের খবর তাঁদের কাছেও পৌঁছাল। পাড়ার বড় ভাইয়েরা বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষা করার দাবীতে মিছিল করছিল। সেখানে হাশেম খান তাঁর কিছু বন্ধু বান্ধবও অংশ গ্রহণ করেন। সবাই মিলে মিছিলে স্লোগান দিচ্ছিলেন, “রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’’। কিন্তু বার বার মিছিলের ছন্দ পতন হচ্ছিল হাশেম খানের এক বন্ধুর কারণে। যখনই সবাই বলছিল, ‘’ “রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’’ তখন সে বলছিল, ‘’ বাংলা ভাষার রাষ্ট্র চাই’’। এতে মিছিলের সৌন্দর্য্য নষ্ট হচ্ছিল। বড় ভাইয়েরা বার বার তাকে সাবধান করে দিচ্ছিল, ঠিক মত স্লোগান দিতে না পারলে মিছিল থেকে বের করে দেওয়া হবে। ছেলেটি বার বার আশ্বাস দিচ্ছিল এর পরের বার আর ভুল হবে না। কিন্তু আবারও মিছিলের নেতা যতবারই, ‘’ রাষ্ট্রভাষাআআআ’’ বলে নেতৃত্ব দিচ্ছিল, অন্যদের সাথে কণ্ঠ মিলিয়ে ’’ বাংলা চাইইই’’ না বলে সে ‘’ বাংলা ভাষার রাষ্ট্র চাই’’ বলে স্লোগান দিয়ে যাচ্ছিল। আরো কয়েক দফা সাবধান করে দেবার পরেও যখন কাজ হল না তখন সেই ছেলেটিকে মিছিল থেকে বের করে দেওয়া হল। সেই সাথে বন্ধুকে দল থেকে বাদ না দেবার অনুরোধ করার জন্য হাশেম খানকেও।

মিছিল থেকে বের করে দেবার জন্য হাশেম খান বন্ধুর উপর চটে যান, ‘’কী হত রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই বললে? বাংলা ভাষার রাষ্ট্র চাই বলার কী দরকার ছিল?’’ বন্ধুটি তখন মিষ্টি হেসে হাশেম খানকে জানায়, আমাদের এখন দরকার একটা বাংলা ভাষার রাষ্ট্র। হাশেম খানের ছোট্ট মাথায় এত কিছু ঢোকে না। বন্ধুর উপর রাগ হয়।



এরও অনেক বছর পরে আসে ১৯৭১। ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পরে আসে স্বপ্নের স্বাধীনতা। স্বাধীন দেশে অমর একুশে পালন করতে গিয়ে শিল্পী মনে পড়ে যায় সেই ছোট্টবেলার বন্ধুটির কথা। ১৯৫২ সালেই কী করে সে বুঝছিল, আমাদের এখন দরকার একটা বাংলা ভাষার রাষ্ট্র। এত দূরদৃষ্টি ছিল তার?







আমার মায়ের ভাষা ছিল বাংলা। কিন্তু বর্তমান আধুনিক মায়েদের ভাষা হয়ে গিয়েছে না বাংলা-না হিন্দি-না ইংরেজী। তার উপর বিষফোঁড়ার মত রইল এফ.এম রেডিওর আরজে, আইসি-করসি মার্কা নাটক আর অশ্লীল ব্লগীয় ভাষা। স্বাধীনতার ৪০ বছর পরে আজ আমাদের সত্যিই প্রয়োজন একটি ‘’ বাংলা ভাষার রাষ্ট্র’’।



(হাশেম খানের এই স্মৃতিকথাটি আমি পড়ি সাপ্তাহিক ২০০০ এর একটি সংখ্যায়)



৯ ফাল্গুন, ১৪১৭

২১শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×