somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অভাবনীয় কমেডি !! অভাবনীয় কমেডি !!!/:)/:)

০৫ ই জুন, ২০১১ রাত ১:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


পরিস্থিতি নতুন একটি দিকে গড়াচ্ছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটা নজিরবিহীন। চরমতম সংবেদনশীল রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত আদালতের আইনগত সিদ্ধান্ত বলে পরিচিতি পাচ্ছে। সে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল কয়েক বছরের টানা সংসদ বয়কট, হরতাল, লাশ ও নৈরাজ্যের মধ্য দিয়ে। একটি পার্লামেন্টের জন্মই হয়েছিল একটি নবজাতকের জন্ম দিতে। শেরেবাংলা নগরের অপারেশন টেবিল ঘিরে সে কি উত্তেজনা। সন্তান লাভই সান্ত্বনা। মাকে মেরে হলেও সন্তান পেতে হবে। বেছে নেয়া হলো সন্তান। সেই নিশীথে ত্রয়োদশ সংশোধনী নামের শিশু প্রসব হলো। মা পার্লামেন্টের মৃত্যু হলো। এখন কলমের খোঁচায় রক্তাক্ত সেই সন্তান। সেই সন্তানের সুরক্ষায় আজ বিরোধী দল হরতাল করবে। আওয়ামী লীগ তা ঠেকাবে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে পরিহাস ও প্রহসনের কোন অভাব নেই। কিন্তু এবারের কমেডি কিংবা ট্র্যাজেডির যেন কোন তুলনা নেই। রাজনীতির প্রহসন নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছিল। কিন্তু এর মধ্যে মাটি ফুঁড়ে মঞ্চে উদিত হলেন এক অচেনা জন। তিনি রাজনীতি কঠিন করে দিয়ে গেলেন। এখন বোঝা যাচ্ছে না কোন পর্ব কমেডি। কোন পর্ব ট্র্যাজেডি। এজন্য ক্রমশ সবার নজর একজনের দিকে। তিনি সম্প্রতি অবসর নিয়েছেন। তিনি ধীরে ধীরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রতিটি রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে বড় ভূমিকা রেখে গেছেন। এমনকি তিনি তার পবিত্র কলম দিয়ে আওয়ামী লীগের জন্য স্বস্তিকর ইতিহাস লিখতেও সচেষ্ট হয়েছেন। অনেকের আশঙ্কা আজ হোক কাল হোক, তাকে আবার সক্রিয় কর্ম জীবনে হয়তো দেখা যাবে। অবশ্য গণআদালতে তার বিচারের দাবি উঠেছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, একজন মাত্র বিচারক এত বেশি দলীয় রাজনৈতিক এজেন্ডায় হাত দিয়েছেন যার কোন নজির বাংলাদেশের চার দশকে নেই। উপমহাদেশে নেই। বিশ্ব ইতিহাসেও হয়তো নেই। এর চরম প্রতিক্রিয়া হিসেবে এবারই সুপ্রিম কোর্টে কুশপুত্তলিকা পোড়ানোর ঘটনা ঘটে। জানা যায়, ওই বিচারক আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করেন যে, বাকশাল সঠিক ছিল। চতুর্থ সংশোধনী গণতান্ত্রিক ছিল।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরপরই স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, তারা ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করবে। সেটাই ঘটলো। কিন্তু পরিহাস হলো, আওয়ামী লীগের নেতানেত্রীরা মুখ রক্ষা করতে পারছেন। তারা এখন গলা ফাটিয়ে বলছেন, তারা তাদের ব্রেইন চাইল্ড কেয়ারটেকার হত্যা করেননি। আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ সাংবাদিকদের প্রকারান্তরে বলছেন, তাদের হাতে রক্তের দাগ নেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকার নামের কিশোরের বুকে তারা ছুরি বসায়নি। একথা শুনে অনেকে স্মরণে আনছেন জেনারেল এরশাদের একটি উক্তি। আমার হাতে কোন রক্তের দাগ নেই।
কার বিরুদ্ধে হরতাল আর কে-ই বা কি কারণে তা ঠেকাবে, সেটাও এবারের হরতালকেন্দ্রিক রাজনীতির এক বিরাট রহস্যঘেরা প্রশ্ন। প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তুলেছেন, এই হরতাল কার বিরুদ্ধে? কিন্তু আজকের হরতাল অনেকগুলো হরতালের সূচনা ঘটাচ্ছে। সরকার বলছে, তারা এই হরতালে বাধা দেবে। কারণ, তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করেনি। বাতিল করেছে আদালত। আবার সংলাপ প্রশ্নেও ধাঁধা তৈরি হয়ে আছে। প্রধানমন্ত্রী বলছেন এক কথা। আশরাফুল ইসলাম বলছেন অন্য কথা। আওয়ামী লীগের অবস্থানে স্ববিরোধিতা। তাদের হার্ডলাইন বলছে, তাদের কিচ্ছু করার নেই। যা করার তা তো আদালত করেছে। নিহত কিশোরকে কাফন পরিয়ে দাফন করা ছাড়া তাদের অন্য কাজ নেই। অন্য কিছু থাকলে তারা শুনতে পারেন। প্রধানমন্ত্রীর একটি বক্তব্য গতকাল মিডিয়ায় ফলাও করে ছাপা হয়েছে। তিনি অনড় নন। বিএনপিকে সংসদে গিয়ে প্রস্তাব দিতে হবে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, তারা এই ফাঁদে পা দেবেন না। প্রধানমন্ত্রীর কথার দু’রকম মানে চলে। তিনি একটি এস্কেপ রুট খোলা রাখবেন। একই সঙ্গে আদালতের কাঁধে রাখা বন্দুকেও ট্রিগার টিপবেন। আর বিরোধীদলকে বলতে হবে সেই সব যুক্তি, সেই সব কথাবার্তা, যা তারা ১৯৯৩-১৯৯৬ পর্বে আওয়ামী লীগের নেতা ও তার সমর্থকদের কাছ থেকে শুনেছিলেন।
এটি এক অভূতপূর্ব কমেডি। বাংলাদেশের নিরীহ পাবলিক এর দর্শক। যারা হাসতে হাসতে হঠাৎ ঠাওরাবেন তাদের চোখ জলে ভেসে যাচ্ছে। কমেডি হয়তো রূপান্তরিত হয়েছে ট্র্যাজেডিতে।

এখান থেকে নেয়া
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রোড জ্যাম ইন ভিয়েতনাম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৭



আমার ধারনা ছিল জটিল জ্যাম শুধু বাংলাদেশেই লাগে । কিন্তু আমার ধারনা ভুল ছিল । ভিয়েতনামে এরকম জটিলতর জ্যাম নিত্য দিনের ঘটনা । ছবিটি খেয়াল করলে দেখবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×