somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আম এবং আমরা খাটি গরীব

০৩ রা জুন, ২০১১ রাত ১০:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কয়েকদিন আগে আম নিয়ে সাহিত্যকর্ম খোঁজার চেষ্টা করছিলাম। তেমন কিছু খুঁজে পেলাম না। আম পাতা জোড়া জোড়া, মারব চাবুক চলবে ঘোড়া - এরকম একটা কবিতা কে জানি মনে করায় দিল। অপমানিত বোধ করলাম। কোথায় আম আর কোথায় আমপাতা!! আমপাতা কি আমাদের খাবার নাকি?? একটি আমে ফলের অংশ থাকে। আমের আঁটি থাকে। এইগুলা ভাগ্যে না থাকলে আমের ছোকলা থাকে। তা না কবি একটা কবিতা লিখেছে তাও আমপাতা নিয়ে। আম নিয়ে সাহিত্যকর্ম এত কম কেন তা নিয়ে বেশ অবাক হলাম। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথও ব্যাপারটা এড়িয়ে গেছেন। তিনি আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে- এই লাইনটির পরে আমের কথা আনতে পারতেন। তিনি বলতে পারতেন আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে, বৈশাখ মাসে আম খেতে ভাল লাগে- তা না তিনি কিনা বললেন বৈশাখ মাসের হাটু জলের কথা। তারপরে হটাৎ চমকে উঠলাম। আরিব্বাস। কবি গুরু তো কবি গুরুই। তিনি কি আর বিশ্বকবি এমনি এমনি হয়েছেন!! আমাদের জাতীয় সঙ্গীতেই তো তিনি আম দিয়েছেন। তা খালি আম না একেবারে আমবাগান। আমবাগানকে তিনি বলেছেন আম বন। ওমা ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রানে, পাগল করে। সত্যিই আম তো পাগল করারই জিনিস।



আমার এক বন্ধু আছে যার জাতীয়ফল নিয়ে বেশ ক্ষোভ আছে। তার সোজা সাপটা কথা কাঠাল জাতীয় ফল হয় কেমনে? এই জিনিস খাইতে ভাল না দেখতে ভাল? আমি অনেক চিন্তা করলাম- কই নাতো খাইতেও খারাপ না দেখতেও খারাপ না। বন্ধু তেলে-পেপেতে (তখন বেগুনের কেজি ১০০ টাকায় গেছে, মানুষ পেপে দিয়ে বেগুনী বানায়। আর বন্ধু অতোও রাগেনায়) জ্বলে উঠল। কই আম আর কাঠাল। কই আয়ুব খান কই খিলি পান। কই ম্যারাডোনা কই পেলে। আমি দেখলাম অবস্থা বেগতিক। ফল দিয়া কাহিনী শুরু এখন ফুটবলের দিকে ধ্রাবমান। আমি ফলেই থাকলাম। বললাম কি কইতে চাস ক। বন্ধু বলে কোন কিছু বলতে চাইনা কাঠাল হইল গরুর খাবার। গরুরা খুব আগ্রহ নিয়া এই জিনিস খায়। জাতীয় ফল হওয়া উচিত আম। এই ধরনের বিতর্কে চুপ থাকা ভাল। বন্ধুর মন রক্ষাতেই সম্ভবত জাতীয় গাছ এখন আম গাছ। ১৪ ডিসেম্বর ২০১০ থেকে আমগাছ জাতীয় গাছের মর্যাদা লাভ করেছে।



আম হল ফলের রাজা। কে তাকে এই মর্যাদা দিল জানিনা তবে এই মহান মর্যাদা সে অনেক দিন ধরেই ধরে রেখেছে। আমের মৌসুমে আম খাওয়া হবেনা- এটা মানতে আমরা সবাই নারাজ। কারো কোনো তৎবিরের কাজ আছে। বসের বাড়ি আম নিয়ে যাওয়া ভাল। রসের মিষ্টির থেকে আমের সাফল্য এখানে বেশি। ফ্রিজে রাখা ঠান্ডা আম তার কোন জুড়ি নেই নেই কোন তুলনা। আম খেতে দুহাত একসাথে নষ্ট হয় তাও আম খাওয়া চাই। হাবিবুল বাশার সুমন অবশ্য হাত নষ্ট করেননা। তিনি ফ্রুটো খান। সেইজন্যই তিনি বলেন ফ্রুটো- সে যে পুরা আম।



তবে যেমন যেমন আম- আমের রয়েছে দাম। মৌসুমী ফল কিনে খাওয়া তা মধ্যবিত্তের নিচে নামা মাত্রই ধরাছোয়ার বাইরে। পথে ঘাটের ছোট ছোট বাচ্চাদের আম খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয় কিন্তু একটি সংগঠন। সম্পূর্ন অলাভজনক এই সংগঠনের পেছনে যারা কাজ করেন তারা প্রথম আলোর রস আলোর কিছু লোকজন (তবে রস+আলোতে কাজ করলেও রস+আলোর সঙ্গে কিন্তু এই গ্রুপের কোনো সম্পর্ক নেই। এটা একটি ফেসবুক গ্রুপ। শুধু ফেসবুক ইউজারদের সাহায্যেই এই কার্যক্রম ও গ্রুপ পরিচালিত হয়)। গরীবদের দূঃখ বুঝতে হলে নিজেদের গরীব হতে হবে। বড়লোকদের পক্ষে গরীবের দুঃখ বোঝা কঠিন। কারন তাদের প্লেন গরীবের হৃদয়ে ল্যান্ড করেনা। বড়লোকদের প্লেন ল্যান্ড করে সিঙ্গাপুর মালয়েশিয়াতে। তাই গরীব বাচ্চাদের আম খাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া সংগঠনের নাম আমরা খাটি গরীব- যারা নিজেদের গরীব ভাবে- কারন তারা গরীবের দূঃখ অনুভব করতে চায়। তাদের পূর্বের কার্যক্রমের কিছু ছবি আমি আপনাদের দেখাচ্ছি। আম পেয়ে বাচ্চাদের খুশির ছবি দেখাচ্ছি। ভাল কথা- আপনারা যদি চান আপনাদের সামান্য কিছু টাকার বিনিময়ে এবারেও গরীব বাচ্চারা আমের স্বাদ পায় তাহলে আপনি " আমরা খাটি গরীব " কে সাহায্য করতে পারেন। এটা সম্পূর্নই আপনাদের ব্যক্তিগত ইচ্ছা। তবে খেয়াল করে দেখুন। ছবিতে বাচ্চাদের হাসিগুলো দেখতে ভাল লাগছে। চলুন বাচ্চাদের আম খাওয়াই। ফলের রাজা- আম। জাতীয় বৃক্ষের ফল- আম।

বিস্তারিত জানার সুযোগ।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুন, ২০১১ রাত ১১:১৩
৯টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজত্ব আল্লাহ দিলে রাষ্ট্রে দ্বীন কায়েম আমাদেরকে করতে হবে কেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:০৬



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) কেড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তির কোরাস দল

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৫



ঘুমিয়ে যেও না !
দরজা বন্ধ করো না -
বিশ্বাস রাখো বিপ্লবীরা ফিরে আসবেই
বন্যা ঝড় তুফান , বজ্র কণ্ঠে কোরাস করে
একদিন তারা ঠিক ফিরবে তোমার শহরে।
-
হয়তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাইডেন ইহুদী চক্তান্ত থেকে বের হয়েছে, মনে হয়!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮



নেতানিয়াহু ও তার ওয়ার-ক্যাবিনেট বাইডেনকে ইরান আক্রমণের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো; বাইডেন সেই চক্রান্ত থেকে বের হয়েছে; ইহুদীরা ষড়যন্ত্রকারী, কিন্তু আমেরিকানরা বুদ্ধিমান। নেতানিয়াহু রাফাতে বোমা ফেলাতে, আজকে সকাল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজ ২৫শে বৈশাখ। ১৬৩তম রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আমার গাওয়া কয়েকটি রবীন্দ্রসঙ্গীত শেয়ার করলাম। খুব সাধারণ মানের গায়কী

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০৫

আপনারা জানেন, আমি কোনো প্রফেশনাল সিঙ্গার না, গলাও ভালো না, কিন্তু গান আমি খুব ভালোবাসি। গান বা সুরই পৃথিবীতে একমাত্র হিরন্ময় প্রেম। এই সুরের মধ্যে ডুবতে ডুবতে একসময় নিজেই সুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্ব কবি

লিখেছেন সাইদুর রহমান, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৭

বৈশাখেরি পঁচিশ তারিখ
কবি তোমার জনম
দিন,
বহু বছর পার হয়েছে
আজও হৃদে, হও নি
লীন।

কবিতা আর গল্প ছড়া
পড়ি সবাই, জুড়ায়
প্রাণ,
খ্যাতি পেলে বিশ্ব জুড়ে
পেলে নভেল, পেলে
মান।

সবার ঘরেই গীতাঞ্জলী
পড়ে সবাই তৃপ্তি
পাই,
আজকে তুমি নেই জগতে
তোমার লেখায় খুঁজি
তাই।

যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×