somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রোদ, বৃষ্টি আর মেঘের খেলা

০২ রা জুন, ২০১১ বিকাল ৪:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


প্রতিদিন অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে আমাকে অফিসে আসতে হয় আবার অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে অফিস থেকে বাসায় ফিরতে হয়। এই র্দীঘ পথে আমার সাথী আমার বইগুলো। বই পড়তে পড়তেই আমার এতো লম্বা সময়টা কাটে। বরাবরের মতো আজকেও বাসে উঠে, সিটে বসে সাথেই বইটা বের করলাম, তা না করলে আমাদের পাবলিক বাসের খারাপ সিটে বসে লম্বা সময় পার করার কষ্টটা চেপে বসবে। যাই হোক, বাস চলা শুরু করলো, আমারও বই পড়ার শুরু হলো। বাসের জানালার যে পাশে বসেছিলাম, সে পাশেই প্রতিদিন রোদ পড়ে আর লেডিস (!!!) গুলো ওপাশে হওয়ায় প্রায় প্রতিদিনই রোদ পুড়ে কাবাব হতে হয়। আজকে রোদের তেজ একটু কমই মনে হয়েছিলো, তাই যখন বইয়ে গল্পে একদম ডুবে গেছি তখন হঠাৎ করে কড়া তেজের রোদটা যখন মুখটা পুড়িয়ে দিয়ে মেঘের আড়াল থেক বের হলো, অনেকটা বিরক্তি নিয়েই তার দিকে আর মেঘের দিকে তাকালাম। কেন বাবা, তোমার তেজটা এখনই কেন দেখাতে হবে ??? আর মেঘেরই বা কি সমস্যা তার কি রোদটা আড়াল করতে কষ্ট লাগে ??? হাতের বইটাকে ঢাল হিসেবে ধরে রোদের হাত থেকে পোড়া মুখটাকে বাঁচাতে চাইলাম। কিছুক্ষণ সফলও হলাম, কিন্তু বই পড়ার আগ্রহ আর গল্পের কাহিনীর টানে আবার বই পড়ায় মনোনিবেশ করলাম।

হঠাৎ ঠান্ডা কয়েক ফোঁটা পানির স্পর্শে ঝট করে বই থেকে মুখটা তুলেই দেখি, মেঘ বুঝি আমার রাগটা বুঝতে পেরেই অভিমানী মেয়ের মতোই ঝর ঝর করে কেঁদেই ফেলেছে। তার এতদিনের দেওয়া আরামটাকে ভুলে আমি তার উপর বিরক্ত হলাম, এই দুঃখেই যেন তার চোখের পানি আর বাঁধ পমানলো না। আর সূর্যও হঠাৎ মেঘের কান্নার কারণটা না বুঝে অবুঝের মতো তা রোদের আলো নিয়ে দাঁড়িয়েই থাকলো। মানে রোদ আর বৃষ্টি একসাথেই চলতে থাকলো। আর আমি অবাক হয়ে তাদের কাণ্ড কারখানা দেখতে থাকলাম। আমার ফিরে তাকানোতে মেঘ যেন তা অভিমান কিছুটা ভুলে আরও রাগী হয়ে আঁচলটা আরও জোড়ে টেনে সূর্যটাকে পুরোটাই ঢেকে দিলো। বেচারা সূর্য মেঘের রাগ আর অভিমানের ব্যাপার স্যাপার না বুঝতে বুঝতেই আড়ালে ঢাকা পড়ে গেলো। তার মেঘ তার বুক উজার করে কষ্টের পানিগুলো ঝিরঝির করে বইয়ে দিলো। এতকিছুর পর আর আমি থাকতে না পেরে তাকে বললাম, হয়েছে এবার থামো, অফিস টাইমে এভাবে কোন রকম আওয়াজ না দিয়ে কেউ নামে ??? সবার কি দূর্দশাটা করেছো একবার দেখতো !!! এতো ক্ষণে তার হুস হলো। বুঝিবা একটু লজ্জাও পেলো। আর লজ্জা পেয়েই হুট করে তার কান্নাও থেমে গেলো। আমি তো অবাক। নিয়মের একি ব্যতিক্রম ??? একটু আবাস না দিয়েই শেষ। আর আমি যে মনে মনে ভেবে রেখেছিলাম, তার চোখের পানিতে হাত ভেজাবো - সেটা তো করাই হলো না !!! কান্না থামার সাথেই সূর্য বুঝি একটু সাহস করেই আচঁলের বাইরে মুখটা বাড়িয়ে দিলো, আর একঝলক রোদের ছোঁয়ায় অদ্ভুত সুন্দর একটা পরিবেশের সৃষ্টি হলো। কান্না ভেজা আকাশ, সূর্যের উঁকি দেওয়া মুখ আর মেঘের ছায়া - এই তিন বিপরীতমুখী চিত্র পুরো পরিবেশটা স্বপ্লীক করে তুললো। কি যে এক মায়াবি পরিবেশ তা আসলে লিখে বা বলে বোঝানো যাবে না !!!

এইভাবেই একসময় তাকিয়ে দেখি আমি আমার গন্তব্য পৌঁছে গেছি, আর রোদ-বৃষ্টি-মেঘের খেলা আমার বই পড়ার বারোটা বাজিয়েছে। :(
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×