somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বুয়া সংকট,বউ সংকট,পানি সংকট... খালি সংকট আর সংকট

০২ রা জুন, ২০১১ দুপুর ১:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাস ২৮ই হউক ২৯ই হউক ৩০ই হউক কিংবা ৩১ই হউক প্রতিদিনই আমার ঘুম ভাঙে কাজের বুয়ার ঝাড়িঁ খেয়ে।এবং প্রতিদিনকার মত আজও বুয়ার সেম ডায়লগ,ভাইজান নবাবগির ছাইড়্যা উইঠ্যালান আপনার মত আমার নবাবগিরি নাইযে বাপের হোটেলে খামু মায়ের হোটেলে ঘুমামো,তাড়াতাড়ি উইঠ্যালান আমি বিছানা গোছামু।চরম গরম আর মশার কামড়ের যন্ত্রনায় এমনিতেই রাতে ঘুম হয়না ।লোডশেডিং,গরম,মশার সাথে যুদ্ধ করতে করতে সারারাত বিছানায় এপাশ ওপাশ করেই রাত পার হয়ে যায়।৪টার দিকে ভোরের শীতল অনুভূতির পরশে যাও একটু ঘুম আসে কিন্তু সকাল ৭টা না বাজতেই প্রতিদিনই বুয়ার ঝাঁিড়তে ঘুম ভাঙে।মানুষ ঘুমাতে যাওয়ার আগে মজার মজার স্বপ্ন দেখার আশা নিয়ে ঘুমায় আর আমি ঘুমায় বুয়া যদি আজও নবাব বলে ঝাড়িঁ দিয়ে ঘুমের তেরটা বাজায় তাহলে বুয়াকে ইচ্ছামত ঝাড়িঁ দিব।কিন্তু কোনদিনই বুয়াকে ঝাড়িঁ দেওয়া হয়না।‘তোর কারণে বুয়া যদি কাজ ছেড়ে দেয় তাহলে বুয়ার কাপড় পড়ে কোমরে আচঁল গুজে বাসার সব কাজ তোকেই করতে হবে’ বোনের হুমকির কথা মনে পড়তেই প্রতিদিনকার মত আজও মনের আশা মনে রয়ে গেল।বড়ই বিচিত্র এই ঢাকা শহর।পথে ঘাটে ভিখারিনীর অভাব না থাকলেও কাজের বুয়া সংকট চরমে।

কবে যে বোনটার বিয়ে হবে আর আমার উপর খবরদারি বন্ধ হবে ভাবতে ভাবতে বাথরুমে গিয়ে দেখি পানি নেই।নদী-সাগরের দেশে পানি সংকট এরপরও ডিজিটাল হর্তাকর্তারা প্রায় বানী ছাড়েন,ফারাক্কায় আমরা ন্যায্য হিস্যা পাচ্ছি;টিফাইমুখ হলে আমাদের ক্ষতি হবেনা উল্টো আমরা লাভবান হবো! ভাবখানা এমন যেন টিফাইমুখ হলে দেশের নদী-সাগর,খাল-বিল,ডোবা যত আছে সব পানিতে ভরে যাবে।আর সেসব পানি পরিশোধন করে ওয়াসা পানি সংকট মেটাবে!

বর্ষার পানি ধরে রাখার জন্য ডিজিটাল সরকারের সোনার ছেলেরা যদি নিজেদের মধ্যে কোপাকুপি বাদ দিয়ে মাটি কুপিয়ে বড় বড় কূপ খনন করত তাহলে কেমন হত ভাবতে ভাবতে জয় ডিজিটাল বাংলাদেশ বলে প্রাকৃতিক কার্য সম্পাদনের আশাকে টয়লেটে বিসর্জন দিয়ে খাওয়ার টেবিল থেকে একগ্লাস পানি নিয়ে মুখে পানির ছিটা দিয়ে নাস্তার টেবিলে গিয়ে দেখি দুই পিস পাউরুটি একটা কলা আর একগ্লাস পানি।শুকনো পাউরুটি আর কলা খেয়ে এককাপ চা চাইতেই কাজের বুয়া কিচেন থেকে কটকটে স্বরে বলল,ভাইজান গ্যাস নাইক্কা দোকানে গিয়া চা খাইয়া নেন।
-যাও তুমি নিয়ে আসো।
-আমি চা আনতে গেলে আমার কাজগুলো কি আপনের বউ আইসা কইরা দিব?
-আমার বউ আসলে এভাবে ধমক দিয়ে দেখিও।সাথে সাথে তোমার চাকরি নট করে দিবে আমার বউ।বুঝলা?
-আপনার মত ভাদাইম্ম্যারে কেউ মেয়ে বিয়ে দিবেনা এইটা লেইখ্যা রাখেন।
-বকবক একটু কম করে হয় চা এনে দাও না হয় যেভাবে হউক বানায়া দাও বলতে দেরী বুয়া কিচেন থেকে একরকম দৌড়ে এসে আমার হাতে লাইটার ধরিয়ে দিয়ে বলল,এই লন লাইটার।আমার শরীরে আগুন জ্বালায়া সেই আগুনে কড়া লিকারের চা বানায়া খান।বুয়ার কথায় ভাবী পাশের রুম থেকে বলে উঠল,আমার দেবরটাকে সহজ-সরল পেয়ে তুমি সব রাগ ওর উপর ঝাড় কেন?আমার দেবরটা যদি এখন তোমার যন্ত্রনায় ও বউ ও বউ তুমি কোথায় গান শুরু করে দেয় তাহলে বউ কোথা থেকে এনে দেব?
-ভাবী এইডা একটা কথা কইলেন যে এই যুগের পোলাপাইন সহজ সরল হয় ?বাসায় থাকে ভেজা বিলাইয়ের (বেড়ালের ) মত কিন্তু কলেজে গিয়ে দা,ছুরি লইয়া একজন আরেকজনরে কোপায়,রাস্তায় গাড়ি ভাংগে,গাড়িতে আগুন লাগায়,মাইয়াগো দেখলে শিষ বাজায় ,ওড়না ধরে টানাটানি করে।

১০টাকায় চাল খাওয়ার স্বপ্ন ভংঙ্গের বেদনা বুয়া আজ পর্যন্ত ভুলতে পারলনা তাই আমার ছোট্র ভাইটার উপর সব রাগ না ঝাড়ঁলে আমাদের বুয়ার ৪০টাকায় কেনা চালের ভাত হজম হয়না বলে আফু হাসতে হাসতে ডাইনিং রুমে ঢুকল।হাতে মিষ্টির প্যাকেট।সদ্য এসএসসি পাস করা ছোট ভাইটার পাসের মিষ্টির ২টা আমার হাতে দিয়ে বলল,আগামী ৩দিন তোর কাজ হচ্ছে ঢাকা শহরে যত ভাল ভাল কলেজ আজে সবগুলোর লিস্ট করে কোন কলেজে কতজন ভর্তির সুযোগ পাবে তার লিস্ট করে আমাকে দেখানো।বললাম,তিনদিনে কি সম্ভব?বোন আমার দেয়াশলাইয়ের মত জ্বলে উঠে বলল,সম্ভব না কেন শুনি?আড্ডা ফাড্ডা সব বাদ দিয়ে যা বলছি তা করবি।খবর কিছু রাখিস?পাস করেছে যত আসন সংখ্যা এর চাইতে কম।এখন থেকে ভর্তির প্রস্তুতি না নিলে পরে কি ঝামেলা হবে সে চিন্তা তোর আছে?মারুফের ভর্তি নিয়ে যদি কোন সমস্যা হয় তাহলে তোর একদিন কি আমার একদিন।কি বলেছি বুঝেছিস?
পানি সংকট,গ্যাস সংকট,বিদুৎ সংকট,জ্বালানী সংকট,কলেজের ভর্তি আসন সংকট সহ হরেকরকম যাপিত জীবনের সংকটের কারণে মেজাজ সংকটে না থাকা বোনটির সামনে আর একটি কথাও বলার সাহস পেলাম না।মিষ্টি মুখে দিয়ে বেরিয়ে এলাম ঘর থেকে।চরম গরম মাথায় নিয়ে যানজটের সাথে যুদ্ধ করে আগামী তিনদিনের মধ্যে যদি বোনের হাতে কলেজগুলোর ভর্তি বিষয়ক যাবতীয় তথ্য তুলে দিতে না পারি তাহলে আমাকে পেঠানোর জন্য যে বেত সংকট হবেনা তাতে কোন সন্দেহ নেই।প্রিয় পাঠক,দোয়া রাইখ্যেন এই অধমের জন্য...
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×