somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

টিউশন গদ্য

০১ লা জুন, ২০১১ রাত ৯:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছাত্রী যা ভুল করেছে তাতে কি করব ঠিক বুঝতে পারছিনা। নানারকমের টিউশন করতে গিয়ে নানারকম ছাত্র-ছাত্রীর সাথে পরিচয়। এদের সবার মেধা সমান হবেনা সেটাই স্বাভাবিক। আমার কাছে সবসময় মনে হয় মেধার থেকে যেই জিনিসটা বেশি প্রয়োজন সেটা হল ইচ্ছাশক্তি। মানে আপনার যদি ইচ্ছাশক্তি থাকে যে এই জিনিসটাকে আমি জয় করব তাহলে আপনি পারবেন। মুসা ভাই আর মুহিত ভাই যে তরতর করে এভারেস্ট (ব্যাপারটা এত সহজ নয়, এই অসাধারন অর্জনের পেছনের কাহিনী অবশ্যই দুর্দান্ত) এর চূড়ায় উঠলেন সেটার পেছনে ইচ্ছাশক্তি অনেক বড় ব্যাপার। যাই হোক ছাত্রীকে বললাম তুমি এটা কি করলা? ছাত্রী যা করেছে তা অবিশ্বাস্য। তার দাবী তাকে পূর্ন নম্বর দেওয়া উচিত। সমকোনী ত্রিভুজের অতিভুজ যদি ৫ হয় আর বাকি দুই বাহুর এক বাহু যদি ৪ হয় আরেকবাহু ৩ হবে। সে উত্তরমালা চেক করে আমাকে দেখালো। ব্যাপারটাতে আমার আপত্তি থাকা উচিত না। কিন্তু সে যা করেছে সেটা হল সে সমকোনী ত্রিভুজ এঁকেছে। অতিভুজটা স্কেল দিয়ে এমন ভাবে একেছে যাতে ৫ হয়। আরেকটা বাহুও এমন ভাবে একেছে যাতে ৪ হয়। কোন ভাবে ব্যাপারটা হয়ে গেছে আর কি। তারপর সে স্কেল দিয়েই আমাকে দেখাচ্ছে আরেকবাহু ৩। আমি কি মুর্তি ধারন করব জানিনা তাকে বললাম তোমাকে যে পীথাগোরাসের উপপাদ্য বললাম সেটাকে কাজে লাগাবা কবে? ছাত্রী চুপ। তার যুক্তি একটাই। সে আর্টসের ছাত্রী তার অঙ্ক শিখার কি দরকার। কোনভাবে মুখস্থ করে পাশ করতে চায়। ছাত্রীর মাকে অনেক বুঝিয়েছি যে অংক মুখস্থ করে কিভাবে পাশ করে ব্যাপারটা আমার জানা নেই। তাই আপনি অন্য শিক্ষক খুঁজেন প্লিজ। ছাত্রীর মা আমাকে রাখতে চান। আজকালকার ছেলেদের নাকি চরিত্র ভালনা কাকে না কাকে রাখবেন!! টিউশনী করতে এসে প্রেম টেম করে বসবে। তিনি আমার মধ্যে সৎ চরিত্রের দেখা পেলেন কিভাবে তাই এখন চিন্তা করছি। বাসায় এসে আয়নাতে নিজের চেহারা দেখলাম। চেহারায় বেকুব ভাব থাকতে পারে কিন্তু চরিত্রবান ভাব কই পেলেন কে জানে!! তার উপর আমার কিঞ্চিত বিশ্বাস এই ছাত্রীর মোবাইলে কথা বলার লোক আছে। কিন্তু আন্টি ছাড়ছেননা। প্রথম দিকে নাস্তাতে টোস্ট বিস্কুট আর চা দিতেন। ইদানিং পুডিং, নুডলস এইসব আশা শুরু করেছে। ছাত্রীকে যাতে অঙ্কটা শিখাতে পারি। আবার চেষ্টা করলাম। মোটিভেট করার চেষ্টা। খেয়াল করলাম মেয়েটা ইংরেজীতে খারাপ না। কিন্তু অঙ্ক করতে গেলেই অথৈ সাগরে পড়ার কোন কারন খুঁজে পেলাম না। কেন্দ্রস্থ কোন বৃত্তস্থ কোনের দ্বিগুন - এই ব্যাপারটা মানতে সে কোন ভাবেই রাজীনা। তার সোজা কথা বৃত্তস্থ কোনটা দেখতে বড়। কোনের রেখাগুলা দিয়ে কোনের পরিমান হয়না এই ব্যাপারটা তাকে কিভাবে বুঝাব চিন্তা করলাম। আরও একটা সমস্যা আসল। ত্রিভুজ এ,বি,সি এর এবি আর এসি বাহু সমান। এ বিন্দু থেকে এডি আবার মধ্যমা। কোন এবিসি আর কোন এসিবি যদি সমান হয় তাহলে এবিডি আর এসিডিও সমান হবে এই ব্যাপারটাতে তার আপত্তি। তার সোজা কথা এবিসিকে এবিডি লিখতে পারব কিন্তু এসিবিকে এসিডি লিখা যাবেনা। এইবার আমি অথৈ সাগরে পড়লাম। কোন একটা সমস্যা হয়েছে। সিক্স, সেভেন, এইট এই ক্লাস গুলাতে সে কোন ভাবে জ্যামিতি একবর্নও না শিখে পার করে আসছে। এখন সে অঙ্কে পাশ করতে পারছেনা। ফাইনালে যাতে পাস করতে পারে তাই আমার আগমন। যাই হোক এ যাত্রা পার করিয়েছিলাম। কিভাবে সেই গল্পটা ততো মজার নয়।

ছাত্রীর সাথে কিছুক্ষন আগে দেখা। এইবার এইচএসসি দিয়েছে। আমাকে দেখে জিকো ভাইয়া বলে চিৎকার দেওয়ার আগে পালানোর চেষ্টা করেছিলাম। লাভ হয়নি। কি ব্যাপার? ব্যাপার ভাল। এসএসসিতে গোল্ডেন এ প্লাস ছিল। তার মানে অঙ্কেও ছিল। যাক খুশ হইলাম। বান্ধবীদের নিয়ে চটপটি খাচ্ছে। তিনপ্লেট খাওয়ার পর ১০০ টাকা দিয়ে ৩০ টাকা ফেরত নিল। তিনপ্লেটের দাম সত্তর টাকার মত একটা ফিগার হয় কিভাবে কে জানে!! আমার বোঝার ভুলও থাকতে পারে। তবে সে তার কথা তো রেখেছে। অঙ্কে এ প্লাস ছিল।

সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুন, ২০১১ রাত ৯:২২
৪১টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×