somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিউটনের ঈশ্বর ভাবনা

২৭ শে মে, ২০১১ রাত ৯:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
স্যার আইজ্যাক নিউটন (জানুয়ারি ৪, ১৬৪৩ – মার্চ ৩১, ১৭২৭) প্রখ্যাত ইংরেজ পদার্থবিজ্ঞানী, গণিতবিদ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, প্রাকৃতিক দার্শনিক, আলকেমিস্ট এবং ধর্মীয় চিন্তাবিদ। ১৬৮৭ সালে তার বিশ্ব নন্দিত গ্রন্থ ফিলসফিয়া ন্যাচারালিস প্রিন্সিপিয়া ম্যাথামেটিকা প্রকাশিত হয় যাতে তিনি সর্বজনীন মহাকর্ষ এবং গতির তিনটি সূত্র বিধৃত করেছিলেন। এই সূত্র ও মৌল নীতিগুলোই চিরায়ত বলবিজ্ঞানের ভিত্তিভূমি রচনা করেছে। নিউটনই প্রথম দেখিয়েছিলেন, পৃথিবী এবং মহাবিশ্বের সকল বস্তু একই প্রাকৃতিক নিয়মের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে।

২০০৫ সালে রয়েল সোসাইটি বিজ্ঞানের ইতিহাসে কার প্রভাব সবচেয়ে বেশী এ নিয়ে একটি ভোটাভুটির আয়োজন করে। ভোটের ফলাফলে দেখা যায়, এক্ষেত্রে নিউটনের প্রভাব আইনস্টাইনের চেয়েও অনেক বেশী। এমনকি বিখ্যাত ইতিহাসবেত্তা মাইকেল এইচ হার্ট তার বিখ্যাত বই The 100: A Ranking of the Most Influential Persons in History তে মুহাম্মাদ (সাঃ) পরে ২য় স্থানে নিউটনকে স্থান দেন, বইটিতে পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে প্রভাব বিস্তারকারী ১০০ জন ব্যক্তির তালিকা প্রকাশ করা হয়।

এই মহাণ বিজ্ঞানীর ধর্মীয় বিশ্বাস আরো চমকপ্রদ। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ এই বিজ্ঞানী কি নাস্তিক ছিলেন? ঈশ্বর সম্পর্কে তিনি কি ধারণা পোষণ করতেন? আপানারা জেনে হয়তো অবাক হবেন যে নিউটন নাস্তিক ছিলেন না, তিনি ছিলেন আস্তিক, ঈশ্বরে বিশ্বাসী এবং বিশিষ্ট ধর্মীয় চিন্তাবিদ। এতটুকু বললে একটু কমই বলা হয়ে যায় কারণ তিনি যে শুধু ঈশ্বরে বিশ্বাস করতেন তাই না তিনি ছিলেন একেশ্বরবাদী। নিউটন মনে করতেন ঈশ্বর একজন মহান স্রষ্টা যার অস্তিত্বকে অস্বীকার করা যায় না। তিনি যীশুকে ঈশ্বরের পুত্র হিসেবে বিশ্বাস করতেন না। তার মতে যীশুকে ঈশ্বর হিসেবে উপাসনা করা মূর্তিপূজার শামিল এবং অমার্জনীয় অপরাধ। তিনি ছিলেন খ্রীষ্টিয় ত্রিতত্ত্ববাদ এবং রোমান ক্যাথলিক কর্তৃক পরিচালিত চার্চ তথা পোপ প্রথার ঘোর বিরোধী। গতির সূত্র এবং সর্বজনীন মহাকর্ষ সূত্র নিউটনের সেরা দুইটি আবিষ্কার হলেও এদের ব্যবহার সম্পর্কে তিনি সবসময়ই বিশেষ সতর্ক ছিলেন। এই তত্ত্বদয়ের আশ্রয় নিয়ে মহাবিশ্বকে কেবলমাত্র একটি যন্ত্র আখ্যা দেয়া এবং একটি মহামহিম ঘড়ির নিয়ন্ত্রণে এর বিকাশকে ব্যাখ্যা করার ঘোড় বিরোধী ছিলেন তিনি। এ সম্বন্ধে তিনি বলেন:
"অভিকর্ষ গ্রহসমূহের গতির বিষয়টি ব্যাখ্যা করে, কিন্তু এটি ব্যাখ্যা করতে পারেনা, কে গ্রহগুলোকে গতিশীল হিসেবে নির্দিষ্ট স্থানে স্থাপন করে দিলো। ঈশ্বর সকল কিছু নিয়ন্ত্রণ করেন এবং যা কিছু ঘটছে বা যা কিছু ঘটা সম্ভব তার সবই তিনি জানেন।"

নিউটন ধর্ম এবং বিজ্ঞানকে আলাদা করে দেখতেন না। তার মতে ধর্ম এবং বিজ্ঞান নিয়ে তার করা পরীক্ষণগুলো একই। কারণ উভয়েরই লক্ষ্য মহাবিশ্ব কিভাবে ক্রিয়া করছে তা পর্যবেক্ষণ এবং বোঝার চেষ্টা করা। বিজ্ঞান চর্চা নিউটনের ধর্মীয় সাধনায় কোন ব্যাঘাত ঘটাতে পারেনি। তিনি প্রতিদিন নিয়মিত বাইবেল অধ্যয়ন করতেন। এমনকি বিজ্ঞানের চেয়েও তিনি ধর্ম গ্রন্থ এবং আলকেমি অধ্যয়ন করে অধিক সময় ব্যায় করতেন। নিউটন তার জীবদ্দশায় বিজ্ঞানের চেয়ে ধর্ম বিষয়েই বেশি লিখেছেন।

তথ্যসূত্রঃ
bn.wikipedia.org
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মে, ২০১১ রাত ১০:৫১
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×