somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"ও আমার দেশের মাটি"

২৭ শে মে, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মঞ্চ ও টেলিভিশনের নাট্যকার, পরিচালক ও অভিনেতা অনন্ত্ম হিরা এবার সিনেমা বানালেন। সিনেমার নাম "ও আমার দেশের মাটি"। ডেসটিনি মিডিয়া এন্ড পাবলিকেশন্স এর প্রযোজনায় অনন্ত হিরা'র কাহিনী, সংলাপ, চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় "ও আমার দেশের মাটি" ছবির শুটিং শেষ হয় বিক্রমপুর, ব্রাক্ষ্মণবাড়ীয়া সহ ঢাকার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন মনোরম লোকেশনে।

"ও আমার দেশের মাটি" সিনেমায় অভিনয় করেছেন নায়করাজ রাজ্জাক, সোহেল রানা, আমিন খান, নূনা আফরোজ, তমা মির্জা, শাকিল আহাম্মেদ, হাবীব আহসান, শিশু শিল্পী ইশিকা ষড়জ, ফসল হায়দার ও আরো অনেকে। সিনেমাটি চিত্রগ্রহণ করেছেন একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রগ্রাহক মাহফুজুর রহমান খান ও সঙ্গীত পরিচালনা করছেন একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত সঙ্গীত পরিচালক আলাউদ্দিন আলী। গানের কথা মোহাম্মদ রফিকুজ্জামান এবং গানে কন্ঠ দিয়েছেন বারী সিদ্দিকী, অদিতি মহসিন, বিউটি, রাজীব, মুনির ও লিজা। এছাড়া রবীন্দ্রনাথের "দুজনে দেখা হলো মধু যামিনীরে" গানটি সিনেমায় ব্যবহার করা হয়েছে। কারিগরী সহযোগিতা দিচ্ছে দি রেইন পিকচার্স লিমিটেড।

কাহিনী সংক্ষেপ : ''ও আমার দেশের মাটি'' চলচ্চিত্রের প্রধান দুই চরিত্র দু'জন মুক্তিযোদ্ধা। রমেশ ও কমান্ডার দিনু সিকদার। রমেশ একজন গ্রাম্য ডাক্তার। চারপুরম্নষ ধরে তাঁরা এ পেশায় নিয়োজিত। একমাত্র কলেজ পড়ুয়া মেয়ে গীতাকে নিয়ে তাঁর সংসার। রমেশ ডাক্তার ও তাঁর মেয়ে গীতা দু'জনই গান পাগল মানুষ। তুলসী তলার অদূরে বাড়ির দাওয়ায় প্রায় প্রতি সন্ধ্যায় গানের আসর বসে। সে আসরে একজন নিয়মিত মানুষ মুনির। মুনির কমান্ডার দিনু সিকদারের ছোট ছেলে উচ্চ শিক্ষিত এক যুবক।

দিনু সিকদারের বড় ভাইয়ের মেয়ে সদ্য বিধবা মায়া এ চলচ্চিত্রের অপর একটি চরিত্র। মায়ার আবারো বিয়ে করবার মতো যথেষ্ট বয়স থাকা সত্ত্বেও এবং চাচাত ভাই মুনির ও ছোট চাচা দিনু সিকদার নিজের পছন্দ মতো বিয়ে করে জীবনটা গুছিয়ে নিতে বলার পরেও মায়া এক অজানা আকর্ষণে থেকে যায় দিনু সিকদারের পরিবারেরই একজন হয়ে। চাচাত ভাই মুনিরের সময় মতো খাবার দেয়া, কাপড় ধুয়ে দেয়া ইত্যাদি খুঁটি নাটি করতে করতে হঠাৎ আবিস্কার করে তারঁ স্বামী যে সেনা পোশাক পরে নিহত হয়েছিলো ঐ ব্যবহৃত পোশাকের সঙ্গে মুনিরের ব্যবহৃত পোশাকের ঘ্রাণটি একই রকম। মায়া মানসিক ভাবে মুনিরের প্রতি কিছুটা দূর্বল হলেও সে দূর্বলতা পুরো ছবিতে অব্যক্তই থেকে যায়।

রমেশ ডাক্তার কৃষ্ণ ভক্ত। বাড়ির সামনে মন্দিরে সে নিয়মিত কৃষ্ণ পূজা করে। একরাতে রাজাকার পুত্র বাবলু মেম্বারের লোকজন মন্দিরটিতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এরপর ক্রমাগত বাবলু মেম্বারের চাপ ও নানাবিধ মানসিক অত্যাচার দিনে দিনে বাড়তেই থাকে। এক রাতে লোকজনসহ বাবলু মেম্বার মুক্তিযোদ্ধা রমেশের বাড়িতে গিয়ে চুড়ান্ত্ম হুমকি দেয়- সাত দিনের মধ্যে বাড়িটি লিখে দিয়ে মেয়ে গীতাকে নিয়ে দেশ ছেঁড়ে না গেলে মেয়েটির বিপদ হবে।

রমেশ সিদ্ধান্ত্ম নেয় দেশ ছেঁড়ে যাবে ঠিকই কিন্ত্মু তাঁর চার পুরম্নষের বসত বাড়ি একজন রাজাকারের পুত্রকে লিখে দিয়ে তার ভিটে বাড়ির পূণ্য মাটি অপবিত্র করবে না। তাই রমেশ বাড়িটি কমান্ডার দিনু সিকদারকে দিয়ে যাবে সিদ্ধান্ত্ম নেয় এবং এক রাতে গোপনে নিজ বাড়িতে বসে কাঁপা কাঁপা হাতে বাড়ি হস্ত্মান্ত্মরের দলিলটি সই করে শিশুর মতো কাদঁতে থাকে রমেশ ডাক্তার ও তাঁর মেয়ে গীতা। দু'জনের চোখের পানিতে চার পুরম্নষের বসত বাড়ির মাটি ভিজতে ভিজতে এক সময় ভোরের সূর্যোদয় হয়।

নদীর ঘাটে নৌকায় প্রয়োজনীয় যা কিছু জিনিস পত্র তুলে রমেশ যখন অস্থিরতায় পায়চারী করছে আর গীতা অশেষ অন্ধকার পথের দিকে তাকিয়ে চোখের পানি ঝরাচ্ছে তখন নদীর ঘাটে আসে দিনু সিকদার। যথারীতি মুক্তিযোদ্ধা রমেশ তাঁর চিরাচরিত নিয়মে স্যালুট করে তার কমান্ডারকে এবং আর হয়তো এ জীবনে কোনো দিনই স্যালুট করা হবে না ভেবে কমান্ডারের অনুমতি নিয়ে আরও একবার স্যালুট করে। রমেশ ডাক্তার নৌকায় উঠার আগে নিজ দেশের পূণ্যভুমিকে প্রণাম করে নৌকায় উঠে। অন্ধকারে নদীর ভেতর বিন্দুর মতো মিলিয়ে যায় মুক্তিযোদ্ধা রমেশ ডাক্তারের নৌকা।

পরদিন সকালে অন্য দশজন গ্রাম বাসির মতো মুনিরও ঘুম থেকে জেগে মায়া মুখে ঐ সংবাদ পায়। দৌঁড়ে যায় গীতাদের বাড়ি। গত সন্ধার সংগীত মুখর আঙিনাটিসহ সর্ম্পুন বাড়িটি শুন্যে পড়ে আছে। তুলসি তলার অদূরে রমেশ ডাক্তারের ফার্মেসীর চেয়ার টেবিল আলমারিসহ আর সবই আছে স্ব স্ব স্থানে। নেই শুধু গীতা।

পিতার অনুমতি নিয়ে মুনির গীতাদের বাড়ির বাসিন্দা হয়। মুনির সিন্ধান্ত্ম নেয় বাকী জীবনটা সে রমেশ কাকু আর গীতার স্মৃতি বিজরিত ঐ বাড়িতেই কাটাবে। প্রতি বেলায় এবং রাতেও যথারীতি কলাবতি মুনিরের খাবার ঐ বাড়িতে পৌঁছে দেয় এবং কলাবতি খুব গভীর থেকে জানে যে মুনির গীতাকে নিয়ে উপন্যাস লিখছে তবুও কোথায় যেনো কোন এক অদৃশ্য বন্ধন।

এক রাতে বাবলু মেম্বার কয়েক শো লোকজন নিয়ে রমেশ ডাক্তারের বাড়িতে হামলা চালায় এবং কমান্ডার দিনু সিকদারের ছেলে মুনির ও মায়ার অবৈধ সম্পর্কের মিথ্যা অজুহাত দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে বাড়ির উঠানে ফেলে রেখে চলে যায়। খবর পেয়ে নিজ বাড়ি থেকে যখন ছুটে আসে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার দিনু সিকদার তখন হয়তো মৃতলোকে মিলন হয়েছে সারাজীরন অবদমনের যন্ত্রনায় ক্লান্ত্ম মায়ার সঙ্গে মুনিরের।

"মুক্তিযোদ্ধা দিনু সিকদারের প্রিয় সুর- ''আমার সোনর বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি, চিরদিন তোমার আকাশ তোমার বাতাস আমার প্রাণে বাজায় বাঁশী'' গানটির সমস্বরের পরশ দিয়ে চলচ্চিত্রটি শেষ হয়।
লিংক
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মে, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:২৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮



বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি

লিখেছেন শায়মা, ৩১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫


এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (দ্বিতীয় অংশ)

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:০৫


আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (প্রথমাংশ)
আমাদের সদ্য খনন করা পুকুরটা বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেল। যা মাছ সেখানে ছিল, আটকানোর সুযোগ রইল না। আমি আর দুইবোন শিউলি ও হ্যাপি জালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজের পাসওয়ার্ড অন্যকে দিবেন না ;)

লিখেছেন অপু তানভীর, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৭



কথায় আছে যে পাসওয়ার্ড এবং জাঙ্গিয়া অন্যকে দিতে নেই । মানুষ হিসাবে, বন্ধু হিসাবে প্রেমিক/প্রেমিকা হিসাবে অথবা আজ্ঞাবহ হওয়ার সুবাদে আমরা অন্যকে ব্যবহার করতে দিই বা দিতে বাধ্য হই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শৈল্পিক চুরি

লিখেছেন শেরজা তপন, ০১ লা জুন, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭


হুদিন ধরে ভেবেও বিষয়টা নিয়ে লিখব লিখব করে লিখা হচ্ছে না ভয়ে কিংবা সঙ্কোচে!
কিসের ভয়? নারীবাদী ব্লগারদের ভয়।
আর কিসের সঙ্কোচ? পাছে আমার এই রচনাটা গৃহিনী রমনীদের খাটো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×