somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রনির ঠিকুজি! সে কোন দলের?

২৬ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ৭:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


রনির পিতা ফরিদপুরের সদরপুর এলাকার মো. সামসুদ্দিন মুন্সি জীবীকার সন্ধানে ১৯৭৪ সালে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার রতনদী-তালতলী ইউনিয়নের উলানিয়া বন্দরে আসেন। উলানিয়াসহ গলাচিপা-দশমিনার বিভিন্ন হাটে গামছা এবং লুঙ্গি ফেরি করে বিক্রি করতেন তিনি। রতনদী-তালতলী ইউনিয়নের তত্কালীন চেয়ারম্যান মো. লাল মিয়া হাওলাদার সামসুদ্দিন মুন্সিকে পরিবার নিয়ে থাকার জন্য উলানিয়া বন্দরে এক টুকরো খাস জমিতে ঘর তোলার অনুমতি দেন। এরপর থেকে তিনি সপরিবারে সেখানেই বসবাস করেন। সামসুদ্দিন মুন্সির সাত ছেলের মধ্যে সবার বড় গেলাম মাওলা রনি।
গোলাম মাওলা রনি ১৯৮৬ সালে উলানিয়া হাট মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করে ঢাকা কলেজে ভর্তি হন। তার ভাষ্যমতে পরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
দশম শ্রেণীতে পড়ার সময়ই তিনি বিয়ে করেন তার সহপাঠী গলাচিপার পূর্বপাড়ডাকুয়া গ্রামের মো. ফজলে আলী খানের মেয়ে কামরুন নাহার রুনুকে। তাদের এ বিয়ে কামরুন নাহারের পরিবার তখন মেনে না নেওয়ায় স্ত্রীসহ ১৯৮৮ সাল থেকে গোলাম মাওলা ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। ওই সময় জীবীকা নির্বাহ করার জন্য তারা দুজনেই বিভিন্ন বাসায় গৃহ শিক্ষক হিসেবে কাজ করতেন বলে তাদের ঘনিষ্ঠজনেরা জানিয়েছেন।
গোলাম মাওলার দাবি, তিনি জীবনে প্রতিষ্ঠা পেতে অনেক সংগ্রাম করেছেন। একটি চাকরির জন্য বিভিন্ন যায়গায় ধরনা দিয়েছেন। তিনি এও দাবি করেন এক সময় তিনি দৈনিক খবর, আজকের কাগজ এবং ভোরের কাগজে কাজ করেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজকের কাগজে গোলাম মাওলা কন্ট্রিবিউটর হিসাবে কিছুদিন কাজ করেছিলেন।
গলাচিপা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা টিটো জানান, নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে একজন কর্মী হিসাবে ঢাকায় অবস্থিত সেবোল্ট গ্রুপে তিনি কাজ শুরু করেন। পরে ওই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক হিসাবে পদোন্নতি হয় তার। কয়েক বছর যেতে না যেতেই প্রতিষ্ঠানটির মালিক বনে যান গোলাম মাওলা রনি। কীভাবে তিনি প্রতিষ্ঠানটির মালিক হলেন সে প্রশ্ন এখনো অমীমাংসিত। এরই মধ্যে এলাকায় বেশ ফলাও করে প্রচারিত হতে থাকে রনির রাতারাতি কোটিপতি হয়ে ওঠার গল্প।

তিনি আরো জানান, গোলাম মাওলা রনি ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হওয়ার পরের দিন থেকেই দলীয় শিষ্টাচার বহির্ভূত কথাবার্তা বলতে শুরু করেন তিনি। এতে স্থানীয় নেতা কর্মীদের সঙ্গে তার দূরত্ব বাড়তেই থাকে। এরই মধ্যে বখাটে কিছু লোকজন নিয়ে একটি পেটোয়া বাহিনী গড়ে তোলেন রনি। এ বাহিনীর নেতৃত্বে রয়েছেন তার শ্যালক বর্তমানে ডাকুয়া ইউপির চেয়ারম্যান মো. মকবুল খাঁন। গোলাম মোস্তফা জানান, মকুবুলের নেতৃত্বে পরিচালিত ওই বাহিনী এলাকায় 'ভাইয়া বাহিনী' নামে পরিচিত। মকবুল খানের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় পোড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। পরবর্তীতে ভাইয়া বাহিনীর হাতে শারীরীক নির্যাতনের শিকার হন উপজেলা আ.লীগের সভাপতি মো. হারুন অর রশিদ, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, সহসভাপতি ও পৌরসভার মেয়র আ. ওহাব খলিফা, মো. দুলাল চৌধুরী, আ.লীগের উপদেষ্টা কালাম মো. ইসাসহ শতাধিক নেতাকর্মী। দশমিনা উপজেলা যুবলীগের শাখাওয়াত হোসেনও রনির ভাইয়া বাহিনীর হাতে আওয়ামী লীগ কর্মীদের নির্যাতিত হওয়ার কথা জানিয়েছেন।

সংসদ সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার কয়েক মাসের মাথায় গোলাম মাওলা গলাচিপার আড়তপট্টি এলাকায় রামনাবাদ নদীর তীরের প্রায় সাড়ে আট একর জমি দখল ও ভরাট করে বিপনী বিতান নির্মাণের কাজ শুরু করেন। অভিযোগ আছে, টিআর এর অর্থ এবং তার ব্যক্তিগত অর্থে এ জায়গা ভরাট করা হচ্ছিল। এ ঘটনায় ২০০৯ সালের ২১ আগস্ট 'গলাচিপায় নদী ভরাট করে চলছে মার্কেট নির্মাণ' শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে এমপি রনি তার লোকজন দিয়ে প্রথম আলোর গলাচিপা প্রতিনিধির বিরুদ্ধে পরপর চারটি সাজানো মামলা করেন। ২০০৯ সালের ৮ সেপ্টেম্বর থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে মামলাগুলো করা হয়। ওই বছরের ৯ সেপ্টেম্বর পটুয়াখালীর একদল সাংবাদিক ঐ মামলা সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের জন্য গলাচিপা আসলে রনির ক্যাডাররা তাদের ওপর হামলা ও পরে মামলা করে। সুত্র


আবার সরকারি জমি এক বছরের জন্য বন্দোবস্ত নিয়ে শর্ত ভঙ্গ করে দোতলা পাকা বাড়ি করেছেন পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসনের সাংসদ গোলাম মাওলা রনি। এরপর সেই বন্দোবস্ত আর নবায়নও করেননি। অবৈধভাবে দখলে রাখা ওই জমির ওপর তৈরি বাড়িতে বসবাস করছে তাঁর পরিবার। বিস্তারিত

মোটের উপর রনি গ্রেফতারের প্রতিবাদে নাকি আওয়ামী লীগ
নেতাকর্মীদের বাড়িতে বিএনপির হামলা হচ্ছে!

রনিকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার তার শ্বশুরবাড়ি পটুয়াখালীর গলাচিপার উলানিয়া বাজার এলাকায় হরতাল পালিত হয়। এ সময় রনির শ্যালক মকবুল ও তার শ্বশুর ফজলে আলী খানসহ রনি সমর্থক ক্যাডাররা রাস্তায় টায়ারে আগুন দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতকর্মীদের ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রনি সমর্থকদের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীরাও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলায় অংশ নিচ্ছেন বলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবদুল ওহাব খলিফার অভিযোগ।
গলাচিপা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও গলাচিপা পৌর মেয়র আবদুল ওহাব খলিফা বলেন, “রনির শ্যালক মকবুল, শ্বশুর ফজলে আলী খানের নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা ডাকুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মান্নান হাওলাদার (৮০), সাংগঠনিক সম্পাদক মনির হোসেনসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এবং রনির সন্ত্রাসী বাহিনী উলানিয়া ও ডাকুয়া এলাকার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে লুটপাট চালাচ্ছে বলে আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। আমরা বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছি। এবং দলীয় মিটিংয়ে বসেছি এ বিষয় করণীয় নির্ধারণে।”

তিনি আরো বলেন, “রনির শ্যালক মকবুল ও শ্বশুর ফজলে আলী খান বিএনপি নেতা। রনির মামাশ্বশুর শাহজাহান খান উপজেলা বিএনপির সভাপতি।”

তিনি বলেন, “শুধু রনিকে গ্রেফতার করলেই হবে না। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি তাকে সংসদ সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করতে হবে। একইসঙ্গে রনির সন্ত্রাসী বাহিনীকেও গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানাচ্ছি।”

গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম জিয়াউল হক নতুন বার্তাকে বলেন, “উলানিয়ায় এমপির সমর্থকরা হরতালের সমর্থনে টায়ারে আগুন দিতে গেলে মনির নামে আওয়ামী লীগের এক নেতা তাদের বাধা দেয়ার চেষ্টা করেন। এতে উভয়ের মধ্যে হট-টক হয়েছে বলে জেনেছি। মারধরের খবর পেয়েছি, তা সঠিক কি না এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।”
সুত্র
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ৮:০৯
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ফাঁদ (The Middle Class Trap): স্বপ্ন না বাস্তবতা?

লিখেছেন মি. বিকেল, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:৪৫



বাংলাদেশে মধ্যবিত্ত কারা? এই প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে কিছু রিসার্চ এবং বিআইডিএস (BIDS) এর দেওয়া তথ্য মতে, যে পরিবারের ৪ জন সদস্য আছে এবং তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রোফেসরদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসুন সমবায়ের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন করি : প্রধানমন্ত্রী

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১২ ই মে, ২০২৪ ভোর ৪:১০



বিগত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নিজ সংসদীয় এলাকায় সর্বসাধারনের মাঝে বক্তব্য প্রদান কালে উক্ত আহব্বান করেন ।
আমি নিজেও বিশ্বাস করি এই ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক ।
তিনি প্রত্যন্ত অন্চলের দাড়িয়ারকুল গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×