অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।
র্যাব লিমনকে ধরে পায়ে গুলি করেছে এমন অভিযোগ ঠিক নয়। সন্ত্রাসী মোরশেদ জমাদ্দারকে ধরার সময় লিমন পালাচ্ছিল। তখন র্যাব তার পায়ে গুলি করে। ঘটনার সময় লিমনের বাবা সাভারে ছিল আর মা ছিল ২/৩ কিলোমিটার দূরে। আমরা তথ্য পেয়েছি, সন্ত্রাসী মোরশেদ জমাদ্দারের সঙ্গে লিমন ও তার বাবা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। লিমনের ব্যাপারে র্যাব তার বক্তব্য মিডিয়ার মাধ্যমে দেশবাসীকে জানাবে।
দেশের ৯৫ শতাংশ মানুষ নিরাপত্তার জন্য র্যাবকে চায় । সন্ত্রাস ও জঙ্গী দমনে র্যাবের সাফল্য দেশীয় ও আনত্মর্জাতিক মহলে স্বীকৃত হলেও র্যাবকে ব্যর্থ ও বিলুপ্ত করার চক্রানত্ম চলছে। এর সঙ্গে একটি গোষ্ঠী এবং এনজিও জড়িত। জঙ্গী তৎপরতায় ও র্যাব ধ্বংসের চক্রান্তে দৈনিকের একজন সম্পাদকের সম্পৃক্ততা রয়েছে।
ওই পত্রিকা লেমনের ঘটনা নিয়ে ৪০ দিনে ৪৮টি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। অথচ সন্ত্রাসী মোর্শেদ জমাদ্দার একজন গ্রাম্য পুলিশের পা কেটে ফেললেও একটি রিপোর্ট করেনি। যে-পত্রিকা লিমনকে নিয়ে বেশি লেখালেখি করছে, সেই পত্রিকা বিপদে পড়লে র্যাবের কাছে যায়, এর আগে পত্রিকাটি যখন পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছিল এবং কাফনের কাপড় পাঠানো হয়েছিল তখন র্যাব তাদের সহায়তা করেছে। ওই সম্পাদকের পারিবারিক ৪৪ লাখ টাকাও র্যাব উদ্ধার করে দিয়েছে।
জাতীয় ওই দৈনিকের সম্পাদক জঙ্গিদের সহায়তা করছেন, জঙ্গিদের সঙ্গে তার বৈঠক হয়েছে, এমন প্রমাণও আছে। তার পত্রিকার কয়েকজন সাংবাদিকও জঙ্গিদের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের হয়রানি করতে চান না বলেই সংশিস্নষ্ট সম্পাদক ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গতকাল দুপুরে এক সংবাদসম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারেক আহমেদ সিদ্দিকী।
আসলেই কিন্তু ব্যাপারটা তাই । একটা ছেলে হেটে যাচ্ছে রাস্তা দিয়ে গরু নিয়ে তাকে ডাক দিয়ে র্যাব অফিসার ঠাস করে গুলি করে দিল । এই কাজের সাথে র্যাবের আর বাকী কাজগুলোর মিল নাই মোটেই । এখন কথা হল হতে পারে সেটা মিসফায়ার । মানে র্যাবের ডিজি যা বলেছিলেন । কেন কিভাবে বলেছিলেন তখন তা আমরা কেউ কিন্তু জানিনা । প্রতিরক্ষা আডভাইজারের এই ব্যাপারটা ও জাতীর সামনে ক্লিয়ার করলে ভাল হয় ।
র্যাবের ক্রস্ফায়ারগুলো কখন হয় ? মিড নাইট বা শেষ রাতে । তাও আবার লোকসমাজ থেকে দুরেই সাধারনত ক্রস ফায়ারগুলো হয় ।তাহলে র্যাবের একজন অফিসার আসামি রেট দিতে নেমে একটা ছেলেকে দিন দুপুরে ডাক দিয়া ঠ্যাং প্যাচাইয়া বসাই দিবে কেন ? তাতে র্যাবের লাভ কি ? ওই গূলি করল যে র্যাব অফিসার তার লাভই বা কি ?
ডিফেন্স আডভাইজার আরো বলেন ,
র্যাবকে নিয়ে একটি মানবাধিকার সংগঠনের বক্তব্যের পর আমি নিজে একটি জরিপ পরিচালনা করি। সাধারণ মানুষের ওপর পরিচালিত ওই জরিপে দেখা যায়, ৯৫ শতাংশ মানুষ মনে করে র্যাবের প্রয়োজন রয়েছে। মানুষের কাছে র্যাব একটি 'ফ্রেন্ডলি ফোর্স'।
তিনি বলেন, জঙ্গিদমনে র্যাব সফলতা দেখিয়েছে। পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহ দমনেও র্যাবের সফলতা অতুলনীয়। 'তুমিও বাঁচো, আমিও বাঁচি' এমন নীতি নিয়ে অনেকেই কাজ করে থাকেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জঙ্গিদের বিষয়ে কোনো ধরনের ছাড় দিতে নারাজ। তিনি জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর ওপর হুমকিও বেড়ে গিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, র্যাবের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। অথচ দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্যই চারদলীয় জোট সরকারের আমলে এ বাহিনী গঠন করা হয়েছিল। ওই সময় দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে সন্ত্রাসদমনে এ ধরনের একটি বাহিনী গঠনের বিকল্প ছিল না। ২০০৪ সাল থেকে আজ অবধি র্যাব একটি এলিট বাহিনী হিসেবে কাজ করছে। গঠনের পর থেকে এই বাহিনী পুলিশ, বর্ডার গার্ডসহ অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজের বাড়তি চাপ কমিয়ে দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একজন অফিসার ও সৈনিকের টেম্পারামেন্ট দেখে আমরা র্যাবে নিয়োগ দিয়ে থাকি। র্যাবে নিয়োগ পাওয়া অফিসার ও সৈনিকেরা সাহসী, কিন্তু উচ্ছৃঙ্খল নয়।
প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজেও মানবাধিকারের পক্ষে। সবসময়ই তিনি মানবাধিকারের পক্ষে কথা বলেন, নির্যাতিতের পাশে থাকেন। তাই উনি এমন কিছু করবেন না যাতে মানুষ ক্ষতিগ্রসত্ম হয়।
প্রধানমন্ত্রী যুব সমাজের অবক্ষয় ঠেকাতে র্যাবকে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন এবং এতে তারা সফলতা দেখিয়েছে। র্যাবের অভিযানের কারণে দেশে এখন ইয়াবার বিসত্মার নেই বললেও চলে। তারা এ পর্যনত্ম ১৭ লাখ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে। ফেনসিডিল এখন সহজলভ্য নয় বলে ২০০ টাকার বোতল এখন দুই হাজার টাকা হয়েছে। এটা র্যাবের কৃতিত্ব।
সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে ২০০৪ থেকে ২০০৮ পর্যনত্ম সময়কালে র্যাব ৪১ হাজার ৭শ ২৩ জনকে আটক করে। আর বর্তমান সরকারের আড়াই বছরে আটকের সংখ্যা ছিল ৫৩ হাজার ৪শ ৬৫ জন। ২০০৪ থেকে ২০০৬ সময়কালে র্যাব দুই হাজার ৩শ ৭৮টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে। ২০০৭ থেকে ২০০৮ সালে উদ্ধার করা অস্ত্রের সংখ্যা ছিল দুই হাজার ৭শ ৯০টি। বর্তমান সরকারের সময়ে অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে ৩ হাজার একশ ৯৯টি। সব মিলিয়ে প্রতিষ্ঠার পর থেকে পুলিশের বাইরে র্যাব ৮ হাজারের অধিক অস্ত্র উদ্ধার করেছে। তিনি বলেন, র্যাব এ পর্যনত্ম ১৭ লাখ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে। পর্নো সিডি উদ্ধার করেছে ১২ লাখ। অবৈধ ভিওআইপি বন্ধ করেছে, যা দিয়ে প্রতিদিন গড়ে দুই কোটি মিনিট কথা বলা হতো। এতে বছরে ৬ হাজার কোটি টাকার সাশ্রয় হয়েছে।
তিনি বলেন, 'আমি নিজে ডিজিএফআই-এ ছিলাম। তখন দেখেছি বিএনপি সরকার প্রচ্ছন্নভাবে জঙ্গিদের সমর্থন দিয়েছে। জঙ্গিরা বলত আমাদের সমর্থন দাও, আমরা দেশের ভেতরে কিছু করব না। তারা পরবর্তীতে তারাই দেশের একের পর এক জঙ্গিহামলা চালিয়েছে। বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে র্যাবকে জঙ্গিদমনসহ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হত না।
এলিট ফোর্সকে দলীয় বা রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার না-করার পরামর্শ দিয়ে তারেক সিদ্দিকী বলেন, এটি বর্তমান সরকারের একটি বড় সফলতা। কিছু ব্যক্তিকে র্যাবের নামে ধরে নিয়ে লাশ গুম করে ফেলার অভিযোগ সম্পর্কে তিনি জানান, এসব লোককে খুঁজতে র্যাব চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিপক্ষের সঙ্গে শত্রুতা বা পারিবারিক দ্বন্দ্ব ও সংঘাতের কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তিনি বলেন, অথচ এমনও অনেক ঘটনা ঘটেছে যেখানে রাসত্মায় পড়ে থাকা আহত সন্ত্রাসীকে উদ্ধার করে র্যাব হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছে। আর তখন বলা হয়েছে র্যাব মেরে আহত করেছে।
র্যাবের পাশাপাশি পুলিশকেও শক্তিশালী করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, পুলিশকে উন্নততর বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে র্যাব লাগবে না।
তারেক সিদ্দিকী বলেন, সবদেশেই এ ধরনের বাহিনী রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র নাইন ইলেভেনের পর হোমল্যান্ড সিকিউরিটি নামে একটি বাহিনী করেছে। ওই বাহিনীকে অনেক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। ক্ষমতা দেওয়া না হলে কেউ কাজ করতে পারবে না। তবে সেই সঙ্গে জবাবদিহিতাও থাকতে হবে। আমরা র্যাবের জবাবদিহিতা বাড়াতে ন্যায়পাল নিয়োগ দিতে যাচ্ছি। সেই সঙ্গে এ বাহিনীর দক্ষতা বাড়াতেও কাজ করছি। বিদেশে র্যাবের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর প্রমাণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র র্যাবের এক কর্মকর্তাকে নিজেদের অর্থে উন্নততর প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। এছাড়া ইংল্যান্ড, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া সব সময়ই সহায়তা করছে। তারা চায় বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা বজায় থাকুক। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসসহ বিভিন্ন ইস্যুতে অধিক জনসংখ্যা অধ্যুষিত বাংলাদেশ অস্থিতিশীল হলে তার প্রভাব পড়বে পুরো দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে।
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়, তা আমি বলব না। তবে কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকতে পারে।
