somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইদানীং নিজেকে নিয়ে যে মজার ভাবনাগুলো ভাবি

২০ শে মে, ২০১১ সকাল ১১:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সময় অতিবাহিত হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীতে মানুষের অভিজ্ঞতাও একটু একটু করে বাড়তে থাকে। সেই সঙ্গে বাড়তে থাকে তার বোধ। কোনোকিছু অনুভব করার ক্ষমতা, কষ্ট বা সুখ এসব বোঝার ক্ষমতা তার মধ্যে বড় হতে থাকে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। একটা সময়ে এসে সবাই উপনীত হয়, যখন সে তার জীবনে প্রায় সব ধরনের অনুভূতিরই সম্মুখীন হয়েছে। কিন্তু কারো কারো জীবনে এই সময়টা অনেক আগেই চলে আসে।

ইদানীং নিজের মধ্যে দুইটা বড় পরিবর্তন টের পাচ্ছি। প্রথম পরিবর্তনটা চোখে পড়ার মতো কিছু নয়। অন্তত আমার আশেপাশে যারা আছে তাদের কাছে তো নয়ই। কারণ, সেটা হলো অনেক বেশি চুপচাপ থাকা। আমি বরাবরই অতিরিক্ত ঠাণ্ডা স্বভাবের মানুষ। কেউ এসে কিছু বললে চুপচাপ শুনি। কেউ এসে বকাঝকা করলে কোনোকিছুর উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে কথা শুনি। কেউ এসে ভালো কিছু বললে সেটাও একদৃষ্টে পাশে রাখা পানির গ্লাস বা হাতপাখার দিকে তাকিয়ে চুপচাপ কেবল শুনে যাই। কোনো কথা বলতে ইচ্ছে করে না। কীসের যেন একটা অপরাধবোধ নিজের মধ্যে সবসময় বিরাজ করে। কথা বলতে ভয় পাই কি না জানি না, তবে এটা জানি যে কথা বলতে ইদানীং ভীষণ অপছন্দ করি। তাই সবকিছু চুপচাপ সয়ে যাই। সেটা যা-ই হোক না কেন। ধৈর্য্যশক্তি আমার বোধহয় ছোটবেলা থেকেই একটু বেশি ছিল।

মজার ব্যাপার হলো, দ্বিতীয় যে পরিবর্তনটা এসেছে সেটাও চোখে পড়ার মতো তেমন কিছু নয়। কারণ, আমার চিন্তা-ভাবনায় নতুন একটা মাত্রা যোগ হয়েছে। কেউ তো আর আমার চিন্তা-ভাবনা দেখতে পাচ্ছে না। পরিবর্তন টের পাওয়ার তাই কোনো ভয় নেই।

স্যাডিস্ট শব্দটা প্রথম পড়েছিলাম তিন গোয়েন্দা বইয়ে। শব্দটা আসলে কী অর্থ বহন করে তা কখনো জানতে চেষ্টা করিনি। তবে এতটুকু আন্দাজ করতে পেরেছি যে খুব খারাপভাবে কারো উপর নির্যাতন করার মানসিকতা যার আছে তাকে হয়তো স্যাডিস্ট বলা যেতে পারে। আমার সংজ্ঞা যদি সঠিক হয়, তাহলে আমিও এক ধরনের স্যাডিস্ট হয়ে যাচ্ছি। পার্থক্য হচ্ছে, আমার গল্পে ভিকটিম আমি নিজেই।

মাঝে মাঝে মাথার উপরে ঘূর্ণায়মান ফ্যানের দিকে তাকিয়ে হঠাৎই কল্পনায় ভেসে উঠে মজার মজার কিছু চিন্তা। কাল সকালে উঠে যদি আমার রুমের দরজাগুলো বন্ধ পায় সবাই, কেউ কি টেনশন করবে? হয়তো করবে। দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকতে হবে। ঢুকে যদি দেখে ঘরে একটা মানব-ঝাড়বাতির আবির্ভাব হয়েছে, কেউ কি খুব অবাক হবে? নাতো! অবাক হওয়ার কথা না। তবে ঝামেলায় পড়বে এটা ঠিক। এক. দরজা ভাঙার ক্ষতি। দুই. মানব-ঝাড়বাতিটাকে তোর আর ঝুলিয়ে রাখা যাবে না, এটার ব্যবস্থা করতে হবে। সেই ঝামেলা। নাহ, আর ঝামেলা করার কোনো মানে হয় না।

আমি গুটিয়ে যাই।

মাঝে মাঝে রাস্তা পার হওয়ার সময় মনে হয় একটা দূর্দান্ত সুযোগ ঠিক হাতের মুঠোয়। মাত্র কয়েক সেকেণ্ডের ব্যাপার। পার হয়ে যাওয়া রাস্তা থেকে মাত্র কয়েক পা পেছনে আসলেই ঝড়ের গতিতে এগিয়ে আসা ভারি যানটার স্পর্শ পাওয়া যাবে। ব্যস। এক নিমিষে কেচ্ছা-কাহিনী খতম। কিন্তু তবু কেন যেন পারি না। সাহসে কুলায় না? তাহলে তো আমি ভীতু। কী জানি! হয়তো আমি ভীতু। তবে কতদিন আর ভীতু থাকবো সেটা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে আমার।

এসএসসির রেজাল্ট দিল। সামনে কলেজে ভর্তির টেনশন। এখনো সার্কুলার দেয়নি কোথাও। দিলে তারপর দেখা যাবে ফলাফল এবং সামর্থ্যের সমন্বয় কোন কলেজে হয়। তার আগ পর্যন্ত এই সময়টায় তেমন কোনো কাজ নেই। অবশ্য কাজ থাকলেও কোনো লাভ হতো না, এসব মজার মজার চিন্তা মাথা থেকে যেত না। চিন্তাগুলো করে আমি বরং মজাই পাই। আরও মজার ব্যাপার হলো, চিন্তাগুলো আমি নিজে থেকে করি না। আমার মধ্যের স্যাডিস্ট আমিটা যখন-তখন এসব চিন্তা শুরু করে দেয়। আমি তো কেবল তার চিন্তাগুলো শুনি বসে বসে। আর অদ্ভূত একটা নিঃশব্দ হাসি দেই মনের অজান্তেই। ঠিক যেন স্যাডিস্ট, তাই না?
১২টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ফাঁদ (The Middle Class Trap): স্বপ্ন না বাস্তবতা?

লিখেছেন মি. বিকেল, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:৪৫



বাংলাদেশে মধ্যবিত্ত কারা? এই প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে কিছু রিসার্চ এবং বিআইডিএস (BIDS) এর দেওয়া তথ্য মতে, যে পরিবারের ৪ জন সদস্য আছে এবং তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রোফেসরদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসুন সমবায়ের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন করি : প্রধানমন্ত্রী

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১২ ই মে, ২০২৪ ভোর ৪:১০



বিগত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নিজ সংসদীয় এলাকায় সর্বসাধারনের মাঝে বক্তব্য প্রদান কালে উক্ত আহব্বান করেন ।
আমি নিজেও বিশ্বাস করি এই ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক ।
তিনি প্রত্যন্ত অন্চলের দাড়িয়ারকুল গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×