বর্ধিত নতুন বাস ভাড়া নির্ধারণের সময় অনেক বিবেচ্য বিষয়ের সাথে একটা যুক্তি দেখানো হয়েছে- একটা বাসের নাকি ৮০% যাত্রী বোঝাই থাকে অথছ আমরা সবাই দেখি বাসে কি পরিমান ভিড় থাকে। প্রচণ্ড গরমের মাঝে দাড়িয়ে থাকা যাত্রীর ঘাম বসে থাকা যাত্রীর গায়েও পড়ে কখনো কিন্তু কেউ কিছু বলতেও পারেনা কারন মধ্য বিত্তের বাহন বাস ছাড়া চলার উপায় ও নাই। কাউএন্টার ভিত্তিক বাস সার্ভিস এ আগে কিছু ফ্যান থাকতো, এখন তো তাও নেই। অথছ ভাড়া বাড়ানোর সময় বাস এর রক্ষনা বেক্ষনার খরচও হিসাবে ধরা হয় কিন্তু বাস্তবে তার সামান্যতম প্রতিফলনও কি আমরা দেখতে পাই?
বসার সিট গুলো থাকে প্রচণ্ড নোংরা, রোগজীবাণু যে কি পরিমান থাকে তা বলাই বাহুল্য। অবশ্য সিট নোংরা হবার পিছনে বাস এ চলাচলকারী কিছু যাত্রীও এর জন্য দায়ী। রাতের বেলায় বাস স্ট্যান্ডে গেলে দেখা যায় বাস এর শুধু বহিরাবরণ পানি দিয়ে ধোয়া হয় অথছ ভিতর পরিস্কার করতে কখনও দেখা যায়না।
গ্লাস গুলো থাকে ভাঙা। যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে – এ ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিনই যাত্রী সাধারণের চড়তে হয়।
টিকেট কেটে যে সব বাসে চড়তে হয় তার গায়ে দূরত্ব লেখা থাকেনা। ভাড়া লেখা থাকে অনুমানকৃত দূরত্ব অনুযায়ী তো বেশিই, তারপর যে স্টপেজ থেকে টিকেট কাটা হয়, দেখা যায় আগের দুই-তিন স্টপেেজর টিকেট দেয়া হয়। একইভাবে নির্দিষ্ট গন্তব্য থেকে দুই-তিন স্টপেজ পরের টিকেট দেয়া হয়। উদাহরণস্বরূপ কেউ যদি পান্থপথ বসুন্ধরা সিটি থেকে মগবাজারের উদ্দেশে দিবা–নিশি বাসের টিকেট কেনে, তখন এর গায়ে স্টপেেজর নাম লেখা থাকে এভাবেঃ-
“সোবহানবাগ / রাসেল স্কোয়ার /পান্থপথ – ইস্কাটন / মগবাজার / মৌচাক”
ভাড়াঃ ১২ টাকা।” -- কি সুন্দর প্রতারণা!! গন্তব্য বসুন্ধরা সিটি থেকে মগবাজার; আর কোথায় সোবহানবাগ কোথায় মৌচাক? অতিরিক্ত ২-৩ কিঃমিঃ পথ না চললেও তার ভাড়া ঠিকই দিতে হচ্ছে। স্টপেজ থেকে নির্দিষ্ট গন্তব্বের ভাড়া দূরত্ব অনুযায়ী না হয়ে তা হয় খেয়াল খুশি মতো! একই অবস্থা উওরা, মিরপুর, ধানমণ্ডি, রামপুরা সহ অন্যান্য এলাকায় চলাচলকারী বাস সার্ভিেস।
এটা গেলো বাস মালিকদের প্রতারণা; টিকেট বিক্রেতারাও ভাংতি না থাকার অজুহাতে টাকা কম দেয়। ১২/১৪ টাকার টিকেট কিনে ২০ টাকা দিলে ফেরত দেয় ৭/৫ টাকা। যদি একজন টিকেট বিক্রেতা দৈনিক গড়ে ৪৫০-৬০০টি টিকেট বেচে কমপক্ষে ২০০-২৫০টি টিকেটে ১ টাকা করে কম দেয়, মাস শেষে তার উপরি কামাই হয় ৬-৭ হাজার টাকা। বসে-বসে টিকেট বেচা আর একই সাথে ভিক্ষা করার প্রতারণা চলছে ঢাকা শহরের সব কটি কাউএন্টার এ।
টিকেট কেটে বাসে চড়া মানে অর্থের বিনিময়ে সেবা কেনা। যান বাহনের ভাড়া বেড়েছে কিন্তু সেবা কি সেই অনুপাতে বেড়েছে? একটুও? এসব দেখার কি আদৌ কেউ আছে? যদি কেউ থেকেও থাকে তবে সব অযোগ্য, অপদার্থ।