somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি নিদারুন মর্মস্পদ ঘটনা অথচ জাতীয় জীবনের প্রতিচ্ছবি ।

১০ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৪:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সেই ছোট বেলায় মায়ের নিকট অনেক সুন্দর সুন্দর গল্প শোনতাম এবং শোনতাম অনেক মর্মস্পদ বাস্তব ঘটনা যা আজও কল্পনা করলে ঝলঝল করে চোখের সামনে ভেসে ওঠে । কারন একই গল্প ও ঘটনা মা বার বার শুনিয়েছেন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে তার স্মৃতির সীমিত ভান্ডার থেকে । এমনই একটি মর্মস্পদ বাস্তব ঘটনার আলোকে লেখাটি লিখতে যাচ্ছি যা কি না বর্তমানে আমাদের জাতীয় জীবনের প্রতিচ্ছবিই বহন করে ।

সেই অনেকদিন আগের ঘটনা, সীমিত বেতনের এক চাকরিজীবীর সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর মনে সাধ জাগে একটি সুন্দর দামী শাড়ী কেনার জন্য । তাই সে স্বামীর নিকট বায়না ধরে একটি সুন্দর দামী শাড়ি কিনে দেওয়ার জন্য । স্বামী বেচারা যেখানে তার স্বল্প বেতনে সংসারের ঘানি টানতেই হিমসিম খায়, তার উপর সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর আবদার মিটাবে কি করে তা ভেবেই অস্থীর । স্বামী অবশেষে শর্তসাপেক্ষে স্ত্রীর বায়না পূরনের প্রতিশ্রুতি দেয় যে, প্রথম সন্তানটি যদি ছেলে হয় তবে যত কষ্টই হউক না কেন স্ত্রীকে একটি তার পছন্দমত দামী শাড়ী কিনে দিবে । অবশেষে স্ত্রীর কোল জুড়ে আসে ফুট ফুটে একটি পুত্র সন্তান এবং স্বামী বেচারা খুশীর চোটে ভুলে যায় তার নুন আনতে পানতা ফুরানোর কথা ।

স্বামী, স্ত্রীর আবদার মেটানোর প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে গিয়ে বহু কষ্টে ধার-দেনা করে একটি দামী শাড়ী স্ত্রীকে কিনে দেয় । স্ত্রী তো মহা খুশী দামী শাড়ি পেয়ে । এতো দামী শাড়ী কি শুধু ঘরে পরে থাকলে চলে ? দেখাতে হবে না পাড়া-প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজনদের ! এমতাবস্থায় আসে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বিয়ের নিমন্ত্রন । আর যায় কোথায় ? বিয়ে বাড়িতে কতো আত্মীয়-স্বজনেরা আসবে, দামী শাড়ী প্রদর্শনীর এমন মোক্ষম সুযোগ কি আর হাত ছাড়া করা যায় ? শিশুটির বয়স সবে মাত্র দুই কি তিন মাস । এমন ছোট দুধের শিশুকে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠানে যেতে শিশুটির বাবা প্রথমে আপত্তি করলেও স্ত্রীর পীড়াপীড়িতে অবশেষে যেতে রাজি হলো ।

আসল সেই দামী শাড়ী প্রদর্শনীর দিন । স্ত্রীর সাজ-সজ্জা আর দেখে কে ? শাড়ীর সাথে কোন সাজ মানাবে তা দেখতে দেখতে ভুলে গেল অবুঝ শিশুটির প্রতি তার দায়িত্ব বোধের কথা । সাজ সজ্জার কোন এক পর‍্যায়ে শিশুটির প্রস্রাবে দামী শাড়ী ভিজে সাজ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশংকায় শিশুটির নুনু সূতা দিয়ে বেধে দেয় যাতে শিশুটি আর প্রস্রাব করে শাড়ী ভেজাতে না পারে । আর তার এই কান্ডটি সে তার স্বামীর নিকট গোপন রাখে বকা খাওয়ার ভয়ে । তারপর স্বামী-স্ত্রী শিশুটিকে নিয়ে খুশীমনে বিয়ে বাড়িতে যায় । বিয়ে বাড়িতে গিয়ে স্ত্রী তার শিশুটিকে স্বামীর নিকট দিয়ে তার শাড়ীর গুনকীর্তনে ব্যস্ত হয়ে পড়ে এবং বিয়ে বাড়ির ধুম-ধামে ভুলে যায় শিশুটির সাথে করা তার কান্ডজ্ঞানহীন কর্মের কথা । শিশুদের অভ্যাসবসত ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগের কারনে শিশুটি অনবরত কাদতে থাকে কিন্ত অবুঝ বিধায় শিশুটি তার সমস্যাটির কথা বলতে না পেরে আরো জোরে জোরে কাদতে থাকে । শিশুটির বাবা কিছুই বুঝতে না পেরে নানা ভাবে শিশুটির কান্না থামানোর ব্যর্থ চেষ্টা করতে থাকে । এক পর‍্যায়ে শিশুটির বাবা লক্ষ করে দেখে যে শিশুটির পেট স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশী ফুলে গেছে । তৎক্ষনাৎ শিশুটির পেন্ট খুলে বাবা অবাক হয়ে দেখল যে শিশুটির নুনু ফুলে লম্বা বেলুনের মতো হয়ে গিয়েছে । ততক্ষনে অনেক দেরী হয়ে গিয়েছে । দৌড়ে ডাক্তারের কাছে পৌছানোর পূর্বেই শিশুটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল ।

শুধুমাত্র একটি শাড়ী প্রস্রাবে ভিজে নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয়ে যে মা তার শিশু সন্তানের সাথে এমন কান্ডজ্ঞানহীন কাজ করতে পারে, সেই মা যদি দেশের সাধারণ মানুষের সেবার জন্য কোন গুরুত্বপূর্ণ দায়ীত্বশীল পদ পায়, তবে সেই মায়ের কি কোন হুস-জ্ঞান থাকতে পারে ? আর অভাগা জনগনেরই কি প্রাপ্যতা থাকতে পারে? আপনারাই বলুন !
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×