somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চিচিং ফাঁক!

১৬ ই মে, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চলে যাচ্ছি ১০ বছর পেছনে।


এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিন। বগুড়া ক্যান্ট পাবলিক স্কুলের পরীক্ষার্থীদের সিট পড়েছে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড হাইস্কুলে। যথাসময়ে উপস্থিত হলাম কেন্দ্রের সামনে। খানিকক্ষণ পর ভেতরে যেতে বলা হল আমাদের। দুরুদুরু বুকে, গুটিগুটি পায়ে উঠে গেলাম দোতলায়। ২-৩ রুম পরেই আমাদের সিট যেখানে পড়েছে সেই রুম পেয়ে গেলাম। খুঁজে দেখি সিট একদম দেয়াল ঘেঁষে। ৮জন ছাত্র-ছাত্রী ছিল ওই ব্যাচে (২০০১) মানবিক বিভাগের।

তো যাহোক, আমরা যার যার রোল অনুযায়ী বসে পড়লাম। এই ৮জনের মধ্যে ছেলে-মেয়ের সংখ্যা ছিল সমানুপাতিক। ওয়ার্নিং বেল তখনো পড়েনি। তাই 'জরুরী ত্যাগে'র পরীক্ষাপূর্ব পর্ব সম্পাদনের নিমিত্তে নিম্নতলায় অবস্থিত 'সম্প্রদান কারক' কক্ষপানে ধাবিত হলাম।
গেলাম দলবেঁধে। কিন্তু কাউন্টারের অভাবে সবাই বেরিয়ে যাওয়া পর্যন্ত আমাকে অপেক্ষা করতে হল। এরমধ্যে ওয়ার্নিং বেল পড়ে গেছে। ‘সম্প্রদান’ করতঃ প্যান্টের জিপার উত্তোলন করতে গেলে সেটা এত ‘সাঁই’ করে উঠে এল যে একেবারে সীমানা পেরিয়ে গেল। আর গেল তো গেল, যাবার সময় “পোস্ট অফিস”টাও ‘চিচিং ফাঁক’ করে দিয়ে গেল!

এখন উপায়???

একটা সংক্ষিপ্ত ধ্যানে সমাধান পেয়ে গেলাম।:) শার্টের ইন খুলে টেনেটুনে সোজা করে পোস্ট অফিসের দরজার পর্দা করে দিলাম। তারপর সামলে-সুমলে ভোঁ দৌড়! ক্লাসে তখন সম্ভবতঃ খাতা দেয়া হচ্ছে। বেঞ্চে বসে পর্দার ক্ষেত্রফল আরেকবার অ্যাডজাস্ট করে নিলাম। সে কাজটাও যথেষ্ট সূক্ষ্মভাবে করতে হল কারণ আমার ডান পাশেই উপবিষ্ট আমাদের অর্ধাঙ্গিনী জাতির একজন সম্মানিত সদস্য।:P

যাই হউক, আর কোন আপদ-বিপদ ছাড়াই পরীক্ষা শুরু করে দিলাম। দিচ্ছি...দিচ্ছি...দিচ্ছি...... হুট করে পরিদর্শক পাশে এসে আমার খাতা চাইলেন। সই করবেন। এগিয়ে দিলাম। পরীক্ষার হলের বড় বড় জানালার ফাঁক দিয়ে দুষ্টু হাওয়ার দল এসে কখন যে পোস্ট অফিসের পর্দার ক্ষেত্রফল পাল্টে দিয়েছে, বুত্তেই পারিনি! পারলাম তখন, যখন পরিদর্শক স্যার ছোট্ট ইশারা করে লাজুক কন্ঠে বললেন, “অ্যাই, তোমার ইয়ে ঠিক কর...!” স্যারের দিকে তাকিয়েছি, দেখি তিনি সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম হাসছেন। আমিও একটা সূক্ষ্মতর হাসি দিয়ে এক লাইনে কাহিনীর সারাংশ শোনালাম। শুনে তাঁর হাসিটা বোধহয় কিঞ্চিৎ স্থূল হল! সেই হাসি মুখে নিয়েই তাঁকে আমার পেছনের বেঞ্চে যেতে দেখলাম।

সেই স্যার পরে আরো দু’দিন আমাদের রুমে এসেছিলেন ডিউটি করতে। আমরা তাঁর চেনা মুখ হয়ে গিয়েছিলাম। টুকটাক এদিক-সেদিক শোনাশুনি করতাম স্যারের চোখের সামনেই; কখনো বা সদয় অনুমতিক্রমে! অবজেক্টিভ প্রশ্নের গোল্লা ভরার সময় সুবিধাটা বেশি নেয়ার চেষ্টা করেছি এবং তাতে আমরা চরমভাবে সফল। এখনো যখন ফ্ল্যাশব্যাকে স্কুল-জীবনে ফিরে যাই, তখন স্মৃতির সুতা টানতে টানতে ওই পরীক্ষার হলে চলে আসি এবং স্যারের মুখটা যেন স্পষ্ট দেখতে পাই। পরীক্ষার ওই কয়েকটা দিনেই আমরা তাঁর (সু)নজরে পড়েছিলাম আর তিনি হয়েছিলেন আমাদের প্রিয়মুখ। পরে একদিন তাঁর নামও জেনেছিলাম। চরম ঐতিহাসিক নাম- মজনু! B-)



[পূর্বে লিখিতঃ ব্লগের ঝুড়ি] তে
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মে, ২০১১ রাত ৮:১২
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মাটির কাছে যেতেই..

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

মাটির কাছে
যেতেই..


ছবি কৃতজ্ঞতাঃ https://pixabay.com/

ঠিক যেন
খা খা রোদ্দুর চারদিকে
চৈত্রের দাবদাহ দাবানলে
জ্বলে জ্বলে অঙ্গার ছাই ভস্ম
গোটা প্রান্তর
বন্ধ স্তব্ধ
পাখিদের আনাগোনাও

স্বপ্নবোনা মন আজ
উদাস মরুভূমি
মরা নদীর মত
স্রোতহীন নিস্তেজ-
আজ আর স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাকা ভাংতি করার মেশিন দরকার

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:১০

চলুন আজকে একটা সমস্যার কথা বলি৷ একটা সময় মানুষের মধ্যে আন্তরিকতা ছিল৷ চাইলেই টাকা ভাংতি পাওয়া যেতো৷ এখন কেউ টাকা ভাংতি দিতে চায়না৷ কারো হাতে অনেক খুচরা টাকা দেখছেন৷ তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেলা ব‌য়ে যায়

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩০


সূর্যটা বল‌ছে সকাল
অথছ আমার সন্ধ্যা
টের পেলামনা ক‌বে কখন
ফু‌টে‌ছে রজনীগন্ধ্যা।

বাতা‌সে ক‌বে মি‌লি‌য়ে গে‌ছে
গোলাপ গোলাপ গন্ধ
ছু‌টে‌ছি কেবল ছু‌টে‌ছি কোথায়?
পথ হা‌রি‌য়ে অন্ধ।

সূর্যটা কাল উঠ‌বে আবার
আবা‌রো হ‌বে সকাল
পাকা চু‌ল ধবল সকলি
দেখ‌ছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পর্ণআসক্ত সেকুলার ঢাবি অধ্যাপকের কি আর হিজাব পছন্দ হবে!

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৩ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:২৭



ইন্দোনেশিয়ায় জাকার্তায় অনুষ্ঠিত একটা প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জিতেছে বাংলাদেশি নারীদের একটা রোবোটিক্স টিম। এই খবর শেয়ার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপিকা। সেখানে কমেন্ট করে বসেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ২৩ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:১৪


কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়
আমার বাবা-কাকারা সর্বমোট সাত ভাই, আর ফুফু দুইজন। সবমিলিয়ে নয়জন। একজন নাকি জন্মের পর মারা গিয়েছেন। এ কথা বলাই বাহুল্য যে, আমার পিতামহ কামেল লোক ছিলেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×