somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পশ্চিমবঙ্গে রাজনীতির ঐতিহাসিক পরিবর্তন .................

১৪ ই মে, ২০১১ সকাল ১১:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পশ্চিমবঙ্গে ইতিহাস সৃষ্টি করলেন মমতা ব্যানার্জী...হতে যাচ্ছেন প্রথম মহিলা মূখ্যমন্ত্রী...হতে পারেন ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রীও !!!
এটা বললাম কারন তিনি গতকাল নিজেই বলেছেন ..‘আমাকে কেউ রেলমন্ত্রী বললে আমার ভালো লাগে না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা- এটাও যেন কেমন লজ্জা লজ্জা লাগে।’ তাহলে কি বোঝাতে চাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী বললে ভালো লাগবে..!!!

আটপৌঢ়ে চেহারার হাওয়াই চটি ও সাদা শাড়িপরা মধ্যবয়সী এই নারী আপামর জনসাধারণের কাছে হয়ে উঠলেন আপনজন।সমর্থকদের কাছে তিনি ‘দিদি’ বলে পরিচিত। সুতির শাড়ি আর সাধারণ চপ্পলেই দিব্যি চলে তাঁর। যে বাড়িতে তিনি থাকেন, এর পাশেই নালা। এতে রাজ্যে মশার বংশবিস্তার হয়। এ থেকেই বোঝা যায়, তাঁর জীবনযাপন কতটা সাধারণ। এই দিদিই ভারতের পশ্চিমবঙ্গে গতকাল শুক্রবার ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। তিনি তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই রাজ্যে বিশ্বের ইতিহাসে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত দীর্ঘস্থায়ী কমিউনিস্ট সরকারের পতনের মূলেও তিনি।

ভোট শুরুর আগেই মমতা ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে এবার ইতিহাস সৃষ্টি হবে।’ গতকাল নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর তাঁর কথাই সত্যি হলো। এমনি এমনি সবার প্রিয় ‘দিদি’ হননি মমতা। অনেক আন্দোলন-সংগ্রাম মমতাকে এ অবস্থানে নিয়ে এসেছে।

মমতা রাজনীতি শুরু করেন জাতীয় কংগ্রেসের মাধ্যমে। ১৯৮৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। হারিয়ে দেন বর্ষীয়ান কমিউনিস্ট নেতা সোমনাথ চ্যাটার্জিকে। পরবর্তী সময়ে আরও কয়েকবার তিনি লোকসভা সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালে কংগ্রেস সরকার গঠন করলে মন্ত্রী হন মমতা। ১৯৯৬ সালে মমতা অভিযোগ করেন, কংগ্রেস দেশজুড়ে দুর্নীতি শুরু করেছে। পশ্চিমবঙ্গের বাম সরকারকে দুর্নীতিতে সহযোগিতা করছে।

একপর্যায়ে কংগ্রেস ছেড়ে দিয়ে ১৯৯৭ সালে অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস গঠন করেন। ১৯৯৯ সালে তিনি বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) গঠিত সরকারে যোগ দেন। তাঁকে কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

২০০১ সালের শুরুতে এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে আসেন মমতা। ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের একমাত্র প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেন। ২০০৫ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিল্পোন্নয়ন নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। বড় ধরনের বিদেশি বিনিয়োগের জন্য সরকার হাওড়ায় কৃষিজমি দিতে রাজি হয়। এর বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠে জনতা। মমতা সেই আন্দোলনে জনতার পক্ষে অবস্থান নিলে বুদ্ধদেব সরকার শিল্পোন্নয়নের নীতি থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়। এরপর ২০০৬ সালে সিঙ্গুরে টাটার ন্যানো গাড়ি তৈরির প্রস্তাবিত প্রকল্পের বিরুদ্ধেও আন্দোলন করেন মমতা। এ ছাড়া নন্দীগ্রামে রাজ্যসরকারের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তাও বন্ধ করতে সক্ষম হন। ওই আন্দোলনে সরকারের নির্দেশে পুলিশের গুলিতে ১৪ জন গ্রামবাসী নিহত হয়। এসব আন্দোলন ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মমতা সাধারণ মানুষের হূদয়ে স্থান করে নেন।

২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বর্তমান ক্ষমতাসীন জোট সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চার (ইউপিএ) সঙ্গে জোট বেঁধে নির্বাচন করেন মমতা। নির্বাচনে তাঁর দল ১৯টি আসন লাভ করে। কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী হন তিনি।

এখানেই থেমে থাকেনি দিদি মমতার অগ্রযাত্রা। ২০১০ সালে কলকাতা ও বিধাননগর মিউনিসিপালে জয়লাভ করে তাঁর দল। আর বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভের মধ্য দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ৩৪ বছরের বাম দুর্গের পতন ঘটাল তাঁর দল। এএফপি ও বিবিসি।

মমতা বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে হাসিনা দি’র ফোন পেয়েছি। খুব ভালো লাগলো। মনে হচ্ছে যেন দুই বাংলা এক হয়ে গেল।’

মমতা বলেন, ‘আঞ্চলিক উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করার কথা হাসিনা দি আমাকে বলেছেন, আমিও তাই মনে করি।’

বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবাংলা একসময় এক ছিলো...ভারতের অনেক প্রভাবশালী রাজনীতিবিদেরও জন্ম হয়েছে আমাদের দেশে। তাই আমরা আশা করবো এই পরিবর্তন যেন সকলের জন্যই একটি শুভ ফল বয়ে নিয়ে আসে।

আমি তাকে ভালোভাবে জানেছি বেশ কিছুদিন আগে সিঙ্গুরে যখন টাটা শিল্পোগোষ্ঠীর জমি অধিগ্রহনকে কেন্দ্রে করে প্রায় ১ মাস অনশন দেখে...আমদের দেশের নেতা/নেত্রীদের তাকে দেখে অনেক কিছু শেখার আছে। একটি বড় গনতান্ত্রিক দেশে বড় মন্ত্রী (রেল মন্ত্রী) হয়েও তিনি ব্যবহার করেছেন সাধারন গাড়ী এর সঙ্গে তুলনা করলে আমাদের দেশে একজন এমপি যখন ব্যবহার করেন ৫০ লাখ টাকা দামের গাড়ী।
তিনি অবসরে ছবি আকেঁন এবং ঘোষনা দিয়েছেন তাঁর ছবি বিক্রি অর্থ থেকে ১ কোটি টাকা রাষ্ট্যীয় তহবিলে দান করবেন...তাকে যতই জানতে চেষ্টা করছি ততই মুগ্ধ হচ্ছি...

পরিবর্তন হলে এমন পরিবর্তন-ই দরকার যার হাত ধরে নতুন কিছুর সৃষ্টি হয় ...



২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×