somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শরীর

১২ ই মে, ২০১১ সকাল ৭:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আর কেউ না হোক, বিধাতা জানেন, কিছু জানি আমি, বৈধব্যের যে কী যন্ত্রণা। এ যন্ত্রণা সবচে বেশি যাদের অনুভব করার কথা, বিধবা সম্প্রদায়, তাদের কথা বলাই বাহুল্য। অবশ্য আমার এ জানাকে ঠিক ‘জানা’ বললে ভুল হবে, অনুমানমাত্র। এ অনুমান, অনুভবে কতটুকু ফাঁকফোকর আর কতটুকুই বা প্রকৃত তা এক প্রকার অজানাই।
আমার মা, মমতাময়ী মা একজন বিধবা। জ্ঞান হওয়ার পর থেকে বাবাকে দেখিনি। এমনকি বাবার কোনো স্মৃতি, কোনো ছবি আমারচোখে কিংবা মনে অথবা কল্পনায়, কোথাও ভাসে না। ভাসবেই বা কী করে, আমার জন্মের পরপরই তো বাবা পরলোকগত হোন। তখন আমার বয়স সাত মাস চব্বিশ দিন। অবশ্য তিনি আমাদের একেবারে সাগরে ভাসিয়ে দিয়ে যাননি, টেনে-টুনে চলার মতো যৎকিঞ্চিত সহায়সম্পত্তি রেখে গেছেন। সম্পত্তি বলতে বাউন্ডারি করা বিশাল বাড়ি, বাউন্ডারির ভিতরেই নারকেল সুপারি আম কুল পেয়ারা কাঁঠাল আতা ইত্যাদি ফলের বড়সড় বাগান। বাউন্ডারি থাকায় চুরি-চামারিও তেমন একটা হয় না। এর বাইরেও রয়েছে এক কানি ধানি জমি। জমিগুলো অবশ্য আমরা দেখাশোনা করি না, পর্যাপ্ত লোকবলের অভাবে। তাছাড়া সংসার বলতে তো শুধু মা আর আমি। দুজন মানুষের পক্ষে কি আর এতসব করা সম্ভব! সুতরাং পুরো জমি বর্গা দেয়া হয়েছে। বর্গা চাষীরা যথাসময়ে আমাদের পাওনা বাড়ি এসেই মিটিয়ে দিয়ে যায়। ফল-ফলাদি বিক্রি করেও বেশ কিছু টাকা আসে। তবে গণ্ডিবদ্ধ এ আয়গুলোর দিকে তাকিয়ে না থেকে মা চেষ্টা-চরিত্র করে একটা চাকরিও জুটিয়ে নিয়েছেন। সরকারি চাকরি, স্বাস্থ্যকর্মী পদে। গ্রাম-মহল্লার বাড়ি-বাড়ি গিয়ে মা মহিলাদের ছোটখাটো অসুখ-বিসুখের ওষুধ দেন, পরামর্শও।
কর্ম-এলাকায় তো বটেই দূরদূরান্তেও ছড়িয়ে আছে মায়ের খ্যাতি ও জনপ্রিয়তা। প্রায় দেড় যুগ ধরে চাকরি করছেন সে সুবাদে তার চেনাজানার পরিধি খুব একটা ছোট নয়। শুধু স্বাস্থ্যবিষয়ক সমস্যাই নয়, মহিলা-পুরুষদের সাংসারিক যে কোনো সমস্যায় যথোপযুক্ত পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করার চেষ্টা করেন মা। এ ধরনের কাজে মাকে বাড়তি কিছুই করতে হয় না, শুধু একটু খেয়াল করলেই চলে। তার সামান্য সদিচ্ছায় নিরীহ নিরন্ন নিরক্ষর এ প্রান্তিক জনগোষ্ঠী উপকৃত হয়। মা সবার কাছে ডাক্তার আপা হিসেবে পরিচিত, জনপ্রিয়। ‘ডাক্তার আপা’র একমাত্র ছেলে হিসেবে জনপ্রিয়তার সুফল আমিও কিছুটা ভোগ করি। রাস্তাঘাট-পথ-মাঠে দেখা হলে অনেকেই খাতির করে চা-পানি খাওয়াতে চেষ্টা করে, কুশলাদি জানতে চায়। বিশেষ কোনো আয়োজন কিংবা এমনিতেই অনেকের কাছ থেকে দাওয়াত পাই।
প্রাচুর্য না থাকলেও মোটামুটি স্বচ্ছলতা ও সম্মানের সাথে কাটছে আমাদের জীবন, মা-ছেলের যৌথ সংসার। মাঝে-মধ্যে মাকে ঠাট্টা করে ডাক্তার আপা সম্বোধন করি। মা সহজাত স্বভাবে মুখে কিছু না বলে স্মিত হাসেন। সত্যি বলতে কী, ‘ডাক্তার আপার ছেলে’ এ পরিচয়টা আমার জন্য অনেক বড়। গর্ব করার মতো তেমন কিছু না থাকলেও এই একটা পরিচয় নিয়ে আমি গর্বিত। ডাক্তার আপার একমাত্র সন্তান, চাট্টিখানি ব্যাপার তো নয়! আমার কোনো ভাইবোন নেই। তার কারণ ঐ একটাই, বাবার মৃত্যু।
ডাক্তার আপা নামের আড়ালে চাপা পড়ে গেছে প্রকৃত নাম; বোধহয় মা-ও বিস্মৃত হতে চলেছেন তার নাম যে রেবেকা সুলতানা। কেউ হুট করে নাম জিজ্ঞেস করলে তিনি তৎক্ষণাৎ বলতে পারবেন না, একটু ভাবতে হবে, আমার এরকমই ধারণা!
আশা-নিরাশা আর বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে মোটামুটি ভালো কাটছিল সময়। আমাদের দিন। যেভাবে কেটেছে অতীতের দিনগুলোও।
কিন্তু হঠাৎ...।
কীসের যেন পদধ্বনি।
বিদ্ঘুটে কী একটা যেন শুরু হতে যাচ্ছে।
মা আগের মতো নেই।
কেমন যেন পাল্টে যাচ্ছেন।
অবশ্য পাল্টানো খারাপ কিছু না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পাল্টানোই ভালো। চেঞ্জ উই নিড, বারাক ওবামার সাথে আমিও একমত!
তাই বলে এমন পাল্টানো! এভাবে পাল্টানো!
আজকাল হঠাৎ-হঠাৎ মায়ের মাঝে আবিষ্কার করি গোপন উল্লাস। চাপা আনন্দ। চোখে-মুখে ফুটে উঠতে শুরু করে অদৃশ্য ফুল। সে ফুলের সৌরভ না থাক, উপস্থিতি আছে। উপস্থিতি অনুভব করা যায়।
ব্যাপারটা খটকা জাগানোর মতো।
কী এমন হয়েছে বা হতে যাচ্ছে যা মা আমার সাথে শেয়ার করতে পারছেন না। লুকিয়ে রাখতে হচ্ছে!
কেন, কী আছে এর ভিতরে কিংবা বাইরে?
আনন্দ কি আর লুকিয়ে রাখার জিনিস? আপন স্বভাবে ঠিকই প্রতিভাত হয়।
মা খুশি থাকলে, সুখী বোধ করলে সন্তান হিসেবে আমি তো উৎফুল্লই হবো। এমনটাই তো স্বাভাবিক। বরং তাকে সুখী দেখলে আমি আরো অধিক মাত্রায় সুখী হবো, প্রীত হবো। মায়ের সুখে সন্তান সুখী হবে, আনন্দিত বোধ করবে এটাই তো স্বাভাবিক।
তাহলে এতো লুকোচাপা কেন? কোন প্রয়োজনে!
হালে মায়ের মুখে সদ্য-যৌবনা তরুণী-মুখের মতো লাবণ্য বাসা বাঁধতে শুরু করেছে। সে লাবণ্য ঢলঢল করে না ঠিক, কিন্তু নজর কাড়ে। মনোযোগ দাবি করে।
এখন মাকে দেখে কে বলবে, তার বয়স বিয়াল্লিশ, সন্তান অনার্সপড়–য়া?
কারো ধারণায় এমনটায় আসবে বলেই আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
কিন্তু কোন পরশপাথরের ছোঁয়ায় মা এমন পাল্টে গেছেন, বদলে যাচ্ছেন বুঝতে পারছি না। কখনো-সখনো গুনগুন সুরের গান গলায় খেলা করে, আনন্দধারা বহিছে ভুবনে!
মায়ের গুনগুনানি, উচ্ছল প্রজাপতি হয়ে ওঠা দেখতে আমার ভালোই লাগে। খুশি-খুশি ভাবটা আরো বেশি আনন্দ দেয়।
কিন্তু, কিন্তু... কিন্তু... নাহ্ থাক!
দ্বিধাদ্বন্দ্ব ঝেড়ে সাহস করে একদিন বলেই ফেলি, ‘আপনার কী হয়েছে মা? কেমন যেন বদলের আভাস পাচ্ছি?’
মাকে আমি আপনি বলি। মা বলেন তুমি। কখনোবা তুই। বিশেষ কোনো মুহূর্তে বা মন ভালো থাকলেই কেবল তুই বলেন।
আমার এ প্রশ্নে মা কেমন যেন অবাক হোন, ‘কী রকম বদল বলো তো?’
‘আপনি বুঝতে পারছেন না?’
‘বদলালে ক্ষতি কী। সারা জীবন কি মানুষের সমানভাবে কাটবে?’
‘তা ঠিক। বলছিলাম ইদানীং আপনাকে এত্তো বেশি খুশি খুশি লাগে...।’
‘শোনো পাগল ছেলের কথা। তবে কি তুমি চাও আমি বেজার থাকি?’
‘ঠিক তা না মা...।’
‘আমার খুশি হওয়ার দিন কি আসেনি? আর কিছুদিন পরই তো সুন্দর, মিষ্টি দেখে একটা বউ আনবো। তাকে সংসারের ভার বুঝিয়ে দিয়ে আমার নিশ্চিদ্র অবসর।’
‘আহ মা...।’
‘দ্যাখো ছেলের কা-। লজ্জায় মি. টমেটো হচ্ছো কেন? লজ্জার কী?’
‘আপনি থামবেন মা?’
‘থামছি। এখন বলো, কলেজে বা কলেজের বাইরে কোনো মেয়ের সাথে তোমার ভাব-টাব আছে?’
‘কী রকম ভাব?’
‘তোমরা যেটাকে প্রেম বলো আর কি!’
‘না।’ আমার লাজরাঙা উত্তর। যদিও এ উত্তর সর্বৈব মিথ্যা।
‘সে কী, থাকবে না কেন?’
‘বললাম তো নেই! আর থাকবেই বা কেন?’
‘কোনো বান্ধবী?’
‘কয়েকজন ক্লাশমেটের সাথে সদ্ভাব আছে। বান্ধবী বলা যাবে কিনা বুঝতে পারছি না।’
‘সবচে সুন্দরী মেয়েটাকে একদিন দাওয়াত করে বাড়ি নিয়ে এসো। দেখি।’
‘দাওয়াত দিলেই কি সুড়সুড় করে চলে আসবে?’
‘কোনো একটা মেয়েকে বাসায় আনতে পারবে না, এতো কম মুরোদ তোমার! এ যুগের ছেলেরা কি এতোটা পিছিয়ে থাকে? তোমার বাবা তো ফার্স্ট ইয়ারে পড়াকালীনই কঠিন পণ করে বসে, আমাকে ছাড়া বাঁচবে না!’ মা আর কিছু না বলে, লাজুক হেসে থেমে যান। জানি, এখন আর কিছু বলবেনও না। স্মৃতিসাগরে ডুবসাঁতার দিয়ে তিনি এখন মণিমুক্তা কুড়াবেন, আবেশিত হবেন। মরহুম আব্বাজানের স্মৃতিরাজি রোমন্থন করে আকুল হবেন, ব্যাকুল হবেন, রোমাঞ্চিত-পুলকিত হবেন...।’

০২.
কলেজে যাবো। হাতে সময়ও বেশি নেই। কিন্তু নীল শার্টটা খুঁজে পাচ্ছি না। কোথায় যে গেল! অন্য কোনো সময় হলে হাতের কাছে যেটা পেতাম সেটা পরেই বেরিয়ে যেতাম কিন্তু আজকের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। বীথি পইপই করে বলে দিয়েছে নীল শার্টটা পরে কলেজে আসতে। শার্টটা নাকি শুট করেছে, আমাকে এ পোশাকে দেখতে ওর ভালো লাগে। এটা ওর উপহার দেয়া বলেই বোধহয়। রেডিমেড কাপড় কিনে হাতের কাজ-টাজ করে দিয়েছে। শার্টের মোটামুটি দুর্গম অঞ্চল, যেখানটায় মানুষের চোখ পড়বে না সেখানে একটা ‘বাংলাদেশি হাইকু’ খোদাই করে দিয়েছেÑরবির তরে বীথি/এই ক্ষুদ্র স্মৃতি।
রবি মানে আমি। ওর প্রতিদিনের আকাশে যে রবি আলো ছড়ায়, পথ দেখিয়ে দেয় তাও আমি। ওর সব আমি এবং আমি।
কিন্তু আঁতিপাতি করে খুঁজেও শার্টটা কোথাও পাই না। না পেয়ে শেষমেষ হাত দিলাম মায়ের ওয়ারড্রবে। বেখেয়ালে আলনায় না রেখে ওয়ারড্রবে রাখলেও রাখতে পারেন। বলা তো যায় না।
শার্ট পেলাম না। পেলাম অন্য জিনিস। অপ্রত্যাশিত।
কনডম!
এখানে কেন এ জিনিস আসবে?
আমার বিধবা মা কী করেন এ ‘ভয়ানক’ জিনিস দিয়ে?
এই বেলায় এ জিনিসটাকে কেন জানি ভয়ানক বলেই মনে হয়। যদিও ছেলেবেলায় ঈদে এবং কারণে-অকারণে পটকা কিনতাম। কখনো বাঁশের বাঁশির সাথে সেট করে প্যাঁ পুঁ করে শব্দ শুনতাম। কী মজার খেলা। টাকায় চারটা পটকা পাওয়া যেতো। পটকা মানে রাজা কনডম। প্যাকেটের গায়ে একজন রাজার ছবি থাকতো আর ছবির নীচে ইংরেজিতে লেখা থাকতো জঅঔঅ। অনেক পরে জেনেছি এটা আসলে বড় মানুষের জিনিস। প্রথম দিকে বিশ্বাস হয়নি। বিশ্বাস ফিরে এসেছে অনেক পরে!
আমাদের তো কোনো বাচ্চাকাচ্চা নেই যে পটকা ফোলাবে। বাঁশির মাথায় পটকা বেঁধে প্যাঁ পুঁ শব্দ তুলে আমোদিত হবে।
তবে কি...।
ছি ছি, এসব কী ভাবছি আমি! এমন ধারণা মনে আনা শুধু পাপই নয়, মহাপাপ। অসুস্থ মানসিকতার লক্ষণও বটে।
কিন্তু পাপপুণ্যের বিচার না মেনে প্রশ্নটা পিছু ছাড়ে না। ‘অস্পৃশ্য’ জিনিসটা এখানে আসবে কোন যুক্তিতে? জিনিসটা অনেক আগের ভেবে ফুৎকারে যে উড়িয়ে দেবো, সে উপায়ও নেই। সদ্য বাজারজাত করা প্রোডাক্ট এটা। কোম্পানিটিও বেশ আঁটঘাট বেঁধেই নেমেছে। দেদারসে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায়। এমনকি বিশাল কর্মীবাহিনী ব্যবহার করে সরাসরি হাটে মাঠে ঘাটে প্রচারণা চালাচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ কর্মীরা আগ্রহীদের দুইটি করে ফ্রি দিচ্ছে, শ্যাম্পল হিসেবে। শ্যাম্পল তো নয়, এটার নামই বিজ্ঞাপন! গ্রাম ও শহরের জনবহুল স্থানগুলোয় চলছে এ কার্যক্রম। পথচারীরা প্রথমাবস্থায় নিতে উসখুস করলেও পরে এদিক-ওদিক তাকিয়ে আলগোছে পকেটে ঢুকিয়ে ফেলে!
এর সবই আমার দেখা, সরাসরি এবং পত্রিকা, টেলিভিশনের পর্দায়।
শুধু আমি একা নই, এদেশে অসংখ্য নাগরিক অবগত হচ্ছে। জনভারে এবং রোগভারে ভারাক্রান্ত এদেশের সমস্যা সমাধানে এ জিনিসটার ব্যবহার ব্যাপকভাবে প্রয়োজন। সরকারি বেসরকারি এবং ক্ষেত্রবিশেষে ব্যক্তি উদ্যোগে অনেকদিন ধরে প্রচারণা চলছে। যদি এ প্রচারণা তেমন কাজে আসছে না বললেই চলে। সরকার ব্যর্থ হচ্ছে। সরকারের প্রচারমাধ্যম ব্যর্থ হচ্ছে। এনজিও এবং ব্যক্তি উদ্যোগ সেøাগান দিয়েই সারা। কার্যকর কিছুই হয় না। যতটুকু হয়, তাকে হওয়া বলে না। সবার একই সুর, কনডম ব্যবহার করো। ঘাতক ব্যাধি থেকে বাঁচারও মহৌষধ এটা। কিন্তু কে শোনে কার কথা। সরকারের কথা সাধারণ নাগরিকরা শুনতে চায় না বললেই চলে। যেন সরকার যা বলে, যা করে সবই ভুল। সরকারের শুনতে নেই, কানে তুলতে তো নেই-ই। বেসরকারি উদ্যোগও অনেকটা সে রকম।
সবাই যখন মোটামুটি ব্যর্থ তখন এলো এ কনডম। অবশ্য এমন কোম্পানি আগেও ছিল, প্রচারণাও ছিল কিন্তু এমন ব্যাপক ও সাড়াজাগানো না। এদের মতো জোরে-সোরে কেউই চেষ্টা করেনি বা করলেও গণমানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারেনি।
সবকিছু ছাপিয়ে কনডমটা আমার মাথায় গেঁথে যায়। বেয়াড়া (বেহায়াও কি নয়?) মন যে কত শত রকম সম্ভাব্য উত্তর হাতড়ে ফেরে। কতভাবে যোগসূত্র স্থাপনের চেষ্টা করে। যুক্তি কিংবা কুযুক্তির মালা গাঁথে।
তবে এটার সাথে মায়ের হঠাৎ রূপলাবণ্য ফিরে আসা, প্রগলভতার কোনো সম্পর্ক আছে!
যুৎসই উত্তর পাই না।
মনে দার্শনিক ভাবনা আসে, যে সময়টাতে কোনো নারীর একা থাকা ‘বিপজ্জনক’ সেই ভরযৌবনেই মা সন্তানকে মানুষ করার অভিপ্রায়ে স্বেচ্ছায় বৈধব্য বরণ করে নিলেন। আত্মীয়স্বজন, শুভাকাক্সক্ষীদের পরামর্শ উড়িয়ে দিয়ে, নিজের সুখশান্তির কথা না ভেবে নতুন করে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেন না। মা জানতেন, নতুন করে সংসার পাতলে সে সংসারের বাচ্চাদের ভিড়ে প্রথম সন্তানকে যথার্থভাবে লালনপালন করতে পারবেন না। সন্তান যে নিগৃহীত হবে, সে সম্ভাবনার কথাও মাথায় কাজ করে।
আমার সেই সন্তানবৎসল মা, জনসেবা আর সন্তানসেবায় কেটে গেছে যার বসন্তদিন, সেই মা-মহীয়সীকে নিয়ে এমন উদ্ভট সম্ভাবনার কথা ভাবছি, ধিক আমাকে!
ছি, পৃথিবীতে এমন কলঙ্কিত সন্তান, এমন নরাধম আর কয়টা আছে?
আছে কি একটাও!
কিন্তু... সমস্ত যুক্তিতর্ক মেনে নিলেও ভিতরে যে তুমুল যাতনার আলোড়ন। অন্তহীন অন্তর্দহন। থামানো যায় না।
না পারি সইতে।
না পারি কইতে।
না পারি বইতে।
না পারি রইতে।
যে প্রোডাক্টটা হালে বাজারে এসেছে সেটা আমাদের বাড়ি কেন আসবে? কে আনবে? কেনই বা আনবে? পুরোনো হলে তবু বুঝতাম কোনো না কোনোভাবে থেকে গেছে, পড়ে আছে অনেকদিন ধরে। মা নিশ্চয়ই বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে অন্য লোকদের মতো প্রথমে ইতস্তত করে, চারদিক তাকিয়ে জিনিসটা নিয়ে চটজলদি ব্যাগে ঢুকিয়ে ফেলবেন না। এসব বিজ্ঞাপনে তার সাড়া দেয়ার দরকারই কী। জিনিসটাও সম্ভবত তার জন্য সহজলভ্য। এসব স্বাস্থ্যগত বিষয়-আশয় নিয়েই তো তার কাজ।
মাথায় ঘূর্ণন তোলা প্রশ্নের উত্তর হাতড়াতে হাতড়াতে আমি হয়রান। অস্থির।
অস্থির হই। হয়রান হই।
হয়রান হই। অস্থির হই।
উত্তর মেলে না।
অধরা থেকে যায়।

০৩.
আমার এ মানসিক দ্বন্দ্ব, অন্তহীন অস্থিরতা নজর এড়ায় না বীথিরও। সে প্রশ্ন করে, ‘কী হয়েছে তোমার?’
‘আমার আবার কী হবে?’ হেসে উড়িয়ে দিতে চেষ্টা করি ব্যাপারটা।
‘সত্যি করে বলো।’
‘সত্যি করেই বলছি, আমার কিছুই হয়নি।’
‘অন্য সবার চোখে ধুলো দিলেও তুমি আমার চোখে ধুলো দিতে পারবে না। অবশ্য কিছু একটা হয়েছে তোমার। সেটা কী?’
‘ধুলো দিতে পারবো না? তাহলে কী দিতে পারবো, মুলো?!’
‘ফাজলামি করবে না। আমার মাথা ছুঁয়ে বলো, তুমি ঠিক আছো।’ বীথি আমার ডানহাতটা ওর মাথায় নিয়ে শক্ত করে ধরে রাখে। নাছোড়বান্দার (বান্দা নাকি বান্দি? কিন্তু বান্দি মানে তো দাসী! আর ওতো আমার মনের রাণী) মতো; মনঃপূত উত্তর না পেলে ছাড়বে বলে মনে হচ্ছে না। বীথির মাথা ছুঁয়ে মিথ্যা বলার প্রশ্ন আসেই না। কিন্তু কী বলবো, কীভাবে বলবো? যে অদৃশ্য আগুনে জ্বলছি তা কি অন্যদের বলা যায়, দেখানো যায়! লজ্জা, লজ্জা।
বৈধ আগুনের কথা বলা যায়। কিন্তু...।
জবাব দিতে না পেরে আমার চোখ বেয়ে অশ্রুধারা নামে। প্রাণপণ চেষ্টা করি স্বাভাবিক থাকতে। পারি না। চোখজুড়ে ভেসে থাকে কনডম। কনডমের ছবি। মনে গুঞ্জরণ তোলে বিজ্ঞাপনের কথাগুলো, নিরাপদ শারীরিক সম্পর্কের জন্য অপরিহার্য বস্তু...। ভেসে ওঠে সে ছবিটা যা বিজ্ঞাপন প্রচারকালে এ কথাগুলোর সাথে ব্যবহৃত হয়। অথবা কথাগুলো ব্যবহৃত হয় চিত্রের সাথে সামঞ্জস্য রেখে। একটা ছেলে আর একটা মেয়ে হাসতে হাসতে ঘরের ভিতর ঢুকছে। ছেলেটার এক হাতে কনডম, অন্য হাত দিয়ে মেয়েটার কোমরদেশ আঁকড়ে ধরা...।
ধীরে ধীরে আমার চারদিক কনডম থেকে কনডমময় হয়ে যায়। অন্য কিছুই দেখি না, চতুর্পাশে কেবল কনডম ঘুরতে থাকে। শূন্য থেকে মহাশূন্যে। দৃষ্টি থেকে দৃষ্টিহীনতায়। কেবলই ঘুরে বেড়ায়, উড়ে বেড়ায়। যেন হাত বাড়ালেই ধরতো পারবো।
বীথি ভাবেনি অকালবর্ষণ হবে। ও আর পীড়াপীড়ি করে না। মাথায় রাখা হাতটা ধীরে ধীরে ছাড়িয়ে আনে। ওড়নার প্রান্ত দিয়ে চোখ-মুখ মুছে দেয়। তাতে জলের ধারাপাত আরো বেড়ে যায় যেন। ক্যাম্পাসের সবুজ ঘাসের উপর বসে আমরা। নীরবে আমার মাথাটা টেনে নেয় সে বুকে। আলতো করে জড়িয়ে রাখে। কিছুক্ষণ পর চুলে-পিঠে আদরের স্পর্শ বোলায়। ছোট বাচ্চাদের যেভাবে মানুষ আদর করে অনেকটা সেভাবে। মমতার বাঁধনে সে আমাকে আরো শক্ত করে বাঁধে।
সেদিন এবং তারপর বীথি আমাকে এ সংক্রান্ত আর কোনো প্রশ্ন করেনি। হয়তো বুঝে ফেলেছে, এমনতর প্রশ্নে আমি ক্ষতবিক্ষতই হবো কিন্তু উত্তর দিতে পারবো না। দেয়া সম্ভবও না। সব প্রশ্নের উত্তর হয় না। সব উত্তর জানতে নেই। তাছাড়া সব কথা তো আমি ওকে এমনিতেই বলি। যে সব কথা কোনো গুরুত্ব বহন করে না তাও বলতে দ্বিধা করি না।

০৪.
বীথি আর প্রশ্ন করে না, বা করবে না, স্বস্তিটুকু মিলিয়ে যায় আরেকজন নারীর প্রশ্নে। নারীদের চোখ বোধহয় তীক্ষèই হয়। সহজে নজর এড়ায় না। তাদের বিছিয়ে রাখা মমতার আয়নার অনেককিছুই ধরা পড়তে বাধ্য। বোধহয় এর অন্যথা নেই।
খেতে বসেছি। রাতে। যথারীতি মা আর আমি। মা কিছুক্ষণ নিবিড়ভাবে আমাকে দেখেন। তারপরই প্রশ্নটা আসে, ‘রবি, আজকাল কী হয়েছে তোমার?’
‘না মা, কিচ্ছুটি হয়নি।’
‘কিচ্ছু না?’
‘হ্যাঁ।’
‘তোমার প্রিয় শর্ষে-ইলিশ রান্না হলো অথচ তোমার মাঝে উচ্ছ্বাস দূরে থাক একটু চেখেও দেখলে না। এটা কী প্রমাণ করে?’
‘এটা কিছুই প্রমাণ করে না। আসলে খেতে ভালো লাগছে না।’
‘প্রশ্নটা তো তাই, কেন ভালো লাগছে না। ভালো না লাগার মতো কী হয়েছে।’
‘আহ্ মা, বললাম তো আমি ঠিক আছি। কিচ্ছুটি হয়নি...।’
‘মায়ের দৃষ্টি ফাঁকি দেবে, পৃথিবীতে এমন সন্তানের জন্ম হয়নি। মায়েদের দৃষ্টির তীক্ষèতা সম্বন্ধে তুমি জানো না।’
‘কেন বেহুদা টেনশন বাড়াচ্ছেন মা।’ আলগা আদিখ্যেতা দেখিয়ে দেখিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরি। ততক্ষণে আমার খাওয়া হয়ে গেছে। হয়েছে মানে আধ-খাওয়া। খাওয়ায় রুচি নেই। অভুক্ত অবস্থায় উঠে গেছি। মা থালা-বাটি গোছাচ্ছেন। আমার জড়িয়ে ধরায় মা’র হাতের কাজ থামে না। মা এতে গলেন না মোটেই, বুঝতে পারি। এ অবস্থায়ও তার কাজ চলে।
প্রশ্নটা জেরা হয়ে ফিরে আসে। বাক্যবাণ প্রয়োগে বীথির চেয়ে মা কয়েকগুণ এগিয়ে। উপর্যুপরি প্রশ্নে ব্যতিব্যস্ত করে তোলেন। জবাব দিতে এবং না দিতে দিতে আমি বিভ্রান্ত! যখন সুবিধা করতে পারছি না, হাল ছেড়ে দিই। বোবা সাজি। বোবার কাছে প্রশ্ন করে লাভ নেই। গোঁ গোঁ ছাড়া কিছু বের হবে না। আমি সেই গোঁ গোঁ তরিকায় আশ্রয় খুঁজলাম!
নারী হচ্ছে কাঁঠালের আঠা। লাগলে আর ছাড়ে না। দুই নারীর ধাক্কায় আমার যখন বেসামাল অবস্থা, রঙ্গমঞ্চে আবির্ভাব ঘটলো আরেকজনের। আরেক নারীর। তবে আগমন একেবারেই অপ্রত্যাশিত, অনাকাক্সিক্ষত।

০৫.
শিমুল ম্যাডাম আমাদের রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়ান। কলেজে আমার যতজন প্রিয় শিক্ষক আছেন তন্মধ্যে তিনি অন্যতম। আরো অনেকেই শিমুল ম্যাডামকে পছন্দ করে। তার কারণও আছে। ম্যাডাম পড়ান চমৎকার। গল্পও শোনান আরো চমৎকার। সব শিক্ষার্থীই শিক্ষকের কাছ থেকে গল্প শুনতে পছন্দ করে, ভালোবাসে। এতে তারা আমোদিত হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষকের সাথে স্বাভাবিক একটা সম্পর্কও গড়ে ওঠে। কাঠখোট্টা শিক্ষকরা যত ভালোই পড়ান না কেন, তাদের শিক্ষার্থীরা খুব একটা ‘সুনজরে’ দেখে না। সে হিসাবে শিমুল ম্যাডাম এ প্লাস। গোল্ডেন জিপিএ!
কলেজ করিডোরে চিন্তামগ্ন আমাকে দেখে ম্যাডাম চলতে চলতে থেমে যান। অবশ্য আমার অজান্তেই। ক্লাশ নেয়া শেষ হয়েছে, এখন তিনি টিচার্স রুমে গিয়ে পরবর্তী ক্লাশের জন্য প্রস্তুতি নিবেন। সস্নেহে আমার পিঠে হাত রাখেন তিনিÑ‘কী মিয়া, এতো কী ভাবো?’
‘না ম্যাডাম, ক্ক্ক্ কি কিচ্ছু না।’ ধাতস্থ হওয়ার চেষ্টা করে বলি।
‘তোমার তোতলামিই বলে দিচ্ছে কিছু তো অবশ্যই। প্রাণোচ্ছ্বল তরুণ অশীতিপর বৃদ্ধের মতো চিন্তা করবে, তাও দিনকে দিন, তবু কিছু হয়নি এটা আমাকে বিশ্বাস করতে হবে?’
‘আসলে... আসলে কি ম্যাডাম...।’
‘থাক, কষ্ট করে কথা খুঁজতে হবে না। বুঝেছি, প্রেমঘটিত ব্যাপার। কোন মেয়ে তোমাকে কষ্ট দিচ্ছে, নাম বলো শুধু। আচ্ছা করে বকে দেবো!’
‘ও-রকম কিছুই না।’
‘তার মানে তুমি প্রেমে পড়োনি?’
‘না, আপনি ভুল বুঝছেন...।’
‘তাহলে শুদ্ধটা কী?’
‘আমি জানি না।’
‘জটিল কেস মনে হচ্ছে। শোনো, কলেজ ছুটির পর আমার বাসায় এসো। তোমার কথা শুনে সমাধান বের করার চেষ্টা করবো। সামনে তো পরীক্ষা, স্পেশাল কিছু লেসনও দেবো।’
‘জ্বি আচ্ছা।’
‘বাসা চেনো?’
‘না ম্যাডাম।’
‘তাহলে ঠিকানা না নিয়ে জ্বি জ্বি আচ্ছা আচ্ছা করছো কেন?’
শিমুল ম্যাডাম লোকেশনসহ বিস্তারিতভাবে বাসার ঠিকানা বলেন। আমি টুকে নিই।
ব্যাপারটা কেমন যেন অস্বাভাবিক লাগে। এমন কোনোদিন হয়নি। ম্যাডামের উদ্দেশ্য ঠিক পরিষ্কার বুঝতে পারছি না।
তিনি চলে যাওয়ার প্রাক্কালে স্মরণ হয়, আজ তো বীথির সাথে আমার ওর এক বান্ধবীর বাসায় যাওয়ার কথা। বান্ধবী অসুস্থ, দেখতে যেতে হবে। আবার এদিকে ম্যাডাম...। সাহস করে বলি, ‘ইয়ে... ম্যাডাম, আজ না এসে অন্য কোনোদিন আসি?’
‘না আজই আসবে। তোমার সমস্যারও ত্বরিত সমাধান হোক।’
আর কিছু বলার সাহস পাই না। ম্যাডাম যদি কিছু মনে করেন!
তাঁর বয়স আনুমানিক পঁয়ত্রিশ। তিনি বিবাহিতা, অবিবাহিতা নাকি ডিভোর্সিÑকোনোটাই জানি না। অবশ্য দুই-একজন ব্যতিরেকে স্যার-ম্যাডামদের সম্বন্ধে আমাদের জানার সুযোগ নেই বললেই চলে। শুধু ভাসা ভাসা ধারণা। শিমুল ম্যাডামের ক্ষেত্রেও তাই। কলেজের ক্লাশ শেষ করে আমার বীথিদের বাসার মোড়ে যাওয়ার কথা। শুভ জেনারেল স্টোরের সামনে আমি থাকবো, ও আসবে। আজ কলেজে আসেনি। কী একটা পারিবারিক জটিলতা নাকি ছিল। এসব গতকালই বলেছে। অর্থাৎ প্ল্যানটা আগের। নির্ধারিত সময়ে শুভ জেনারেল স্টোরের সামনে যাই। বীথি আসে। আমি যাবো না শুনে সে এতো মন খারাপ করে! দেখে আমার বুক মুচড়ে ওঠে। তার প্ল্যান-প্রোগ্রাম সব ভেস্তে গেল। আমি গেলে নাকি বান্ধবী খুশি হতো। অসুস্থ মানুষকে খুশি করা বড় কাজ। কারণ হিসেবে কেন যেন ম্যাডামের বাসায় যাওয়ার কথা বলতে পারি না। অন্য অজুহাত দেখাই।
বীথির কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ম্যাডামের বাসায় যাই। বাসা খুঁজে পেতে বেগ পেতে হয়নি। ম্যাডাম সহাস্যে অভ্যর্থনা জানান, ‘এসো, এসো। তোমার অপেক্ষায় আমি এখনো খাইনি।’
আমি গতানুগতিক ধারায় বলি, ‘না না, আমি বাসায় গিয়ে খাবো।’
ম্যাডামও গতানুগতিক ধারায় যা যা বলতে হয় তা বলেন!
স্বল্প আয়োজনে বেশ ভালোই খাওয়া হলো। কিন্তু বাসায় ম্যাডাম ছাড়া দ্বিতীয় কারো উপস্থিতি দেখলাম না। অন্তত ফুটফরমাশ খাটার মতো একটা বাচ্চাও নেই। পুরো বাসাই নীরব নিথর।
ম্যাডাম আমাকে তার বেডরুমে নিয়ে এসে বলেন, ‘কিছুক্ষণ রেস্ট নাও। ঘুমাতে চাইলে তাও পারো।’
এখানে ঘুমানোর কথা ভাবি কী করে! রেস্টও বা কেন নেবো। ‘কাজ’ সেরে আমার যত তাড়াতাড়ি যাওয়া যায় তত ভালো। কিন্তু ম্যাডাম কাজের কথা কিছুই বলেন না। কেমন যেন অস্বস্তি লাগে আমার। উপায়ান্তর না দেখে গুটিসুটি মেরে খাটের এক কোণে বসি। ম্যাডাম বলেন, ‘কী হলো, ঘুমাবে না? তাহলে আমি একটু ঘুমিয়ে নিই। অবশ্য আমার খাট এই একটাই।’
বলতে বলতে ম্যাডাম শাড়ি খুলতে শুরু করেন। খোলা শেষ হলে মেঝেতেই ফেলে রাখেন সেই শাড়ি। তোলেন না!
হায়, কী হচ্ছে এসব! এ কীসের আলামত?
ম্যাডামের পরনে এখন শুধু ব্লাউজ আর পেটিকোট। অনিচ্ছাসত্ত্বেও চোখ চলে যায় সেদিকে। লালরঙা আঁটোসাটো ব্লাউজ ভেদ করে যেন ছুটে আসতে চাচ্ছে সুবর্তুলাকার স্তনদ্বয়। ব্লাউজটা ফিনফিনে, সাদা ব্রার অস্তিত্ব স্পষ্ট অনুভব করা যাচ্ছে।
এটাই কি তবে ম্যাডামের স্পেশাল লেসন? এ লেসন প্রথমবারের মতো আমাকে দিচ্ছেন নাকি আরো কাউকে কাউকে দেন!
নিঃশব্দে খাটে এসে শোন ম্যাডাম। দুই তিন হাত দূরে বসা আমি তার ঘন-ঘন গরম নিঃশ্বাস টের পাই। এ নিঃশ্বাস পোড়ায় না ঠিক কিন্তু কাবু করে দেয়ার ক্ষমতা রাখে। নিঃশ্বাস থেকে আগুনের হলকা আসে। সক্ষম একজন পুরুষের জন্য এরচে বেশি কিছুর দরকার হয় বলে মনে হয় না। বিপরীত দিক থেকে প্রত্যাশিত সাড়া না পেয়ে কিছুক্ষণ পর ম্যাডাম আবার বলেন, ‘শোও। আমি তোমার চুলে বিলি কেটে দিই। ভালো লাগবে।’
পূর্ববৎ স্থানুর মতো বসে থাকি। কোনো রা করি না, যেন কিছুই শুনতে পাইনি। চোখের সামনে ভেসে ওঠে বীথির কাতর মুখ। সে যেন আমার দিকেই চেয়ে আছে। চোখে ঝরে পড়ছে মিনতি। প্রচ্ছন্ন একটা অনুরোধ নীরবে বেজে যাচ্ছে।
সাড়া না পেয়ে ম্যাডাম যেন একটু ক্ষুব্ধ হন। তা বোঝা যায় কণ্ঠস্বরেÑ‘তাহলে তুমি বরং টেলিভিশন দেখো।’
উঠে গিয়ে তিনি প্রথমে দরজার খিল লাগান। যদিও তার কোনো প্রয়োজন ছিল না। অন্তত এতোক্ষণ খোলা থাকা সেটাই প্রমাণ করে। তাছাড়া কে আসবে এখানে, কেনই বা আসবে।
যেখানটায় শাড়ি রাখা আছে সেখানে তিনি এবার ব্লাউজ ও পেটিকোট বিসর্জন দেন। এখন শুধু ব্রা ও প্যান্টি পরনে। ব্রার দু কূল উপচে পড়ে, প্যান্টি ব-দ্বীপ এবং প্রতিবেশী অঞ্চলের সাথে এমনভাবে সেঁটে আছে যেন অস্তিত্ব হারাবে। সব মিলিয়ে অপ্সরী...।
এ নিবিড় আহ্বান বুঝতে না পারার মতো হাঁদা আমি নই। কোন পুরুষ বা মহাপুরুষ এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে স্থির রাখতে পারে! তবু কেন যে গোঁজ হয়ে থাকি। জেগে উঠি না, জাগিয়েও দিই না। চোখের সামনে বীথির দুষ্টু দুষ্টু অথচ পবিত্র মুখাবয়ব ভেসে বেড়ায়। নেচে বেড়ায়। কখনো কটাক্ষ করে আবার পরক্ষণেই ভ্রুকুটি। বঙ্কিম গ্রীবায় নান্দনিক ছন্দের কারুকাজ।
বীথি, তুমি এখন কোথায়? কী করছো! আমি দুঃখিত, তোমার সাথে আজ অকারণে লুকোচুরি খেলা খেলেছি।
সব পুরুষের ভিতরেই বসবাস সাম্রাজ্যবাদী মনোভাবের। যা সময়-সুযোগে চাগিয়ে ওঠে। পুরুষ মানেই কামদেবতার অনুগামী।
কিন্তু আমার ভিতরের সেই সাম্রাজ্যবাদী মানসিকতার, দখল বুঝে নেয়ার মানুষটা কই। সে কি কোনো সাধুসন্তের দীক্ষা নিয়েছে!
আসলেই কি আমি পুরুষ, নাকি মহাপুরুষ? অথবা না-পুরুষ?
ব্রা-প্যান্টি পরিহিতা অনেকাংশে বিবসনা ম্যাডাম আবার খাটে এসে শোন। চিৎ হয়ে, কাত হয়ে, উপুড় হয়ে। কিছুক্ষণ পরপর অবস্থান পাল্টান। এই করতে করতে তিনি হাতে তুলে নেন রিমোট কন্ট্রোল। তাক করেন টেলিভিশনের দিকে। সিডি বা ডিভিডি বোধহয় আগে থেকেই ঢোকানো ছিল। টেলিভিশন চলতে শুরু করার পর আধো আলো, আধো অন্ধকার ঘরের কিছু অংশ আলোকিত হয়ে ওঠে। সে আলোয় ম্যাডামকে রহস্যময়ী লাগছে। যদিও আলো ছাড়াই এ অভিধায় অভিহিত করা যায় তাকে।
মোহময়ী রূপ উদ্ভাসিত হওয়ায় আরো আকর্ষণীয়া তিনি। অনিন্দ্যসুন্দরী এ রহস্য-মানবী আমার দিকে চেয়ে কটাক্ষ হানেন। সে কটাক্ষ উপেক্ষা করে আমি টেলিভিশন পর্দায় চোখ রাখি। বাহ্, থ্রি এক্স মুভি চলছে! এতো বুদ্ধি ম্যাডামের! এ মানুষটিও এমন ছলাকলা জানেন, আশ্চর্য!
নরনারীর আদিম কামলীলা, পিষ্টন চোষন মর্দন বিকৃত যৌনাচার টিভি পর্দায় একের পর এক ধরা দিচ্ছে। এগুলো আগে যে দেখিনি তা নয়। উল্টাপাল্টা কিছু চটি বইও পড়েছি। শুনেছি এরকম বই যারা লেখে তাদের জনপ্রিয়তা প্রথম সারির লেখকদের চেয়ে খুব একটা কম নয়! এটা ঠিক, এ ধরনের বই দেহমনে শিহরণ জাগায়। সিনেমার ক্ষেত্রেও তদ্রূপ। তবে বইয়েই ভালো ফিলিংস হয় ভালো। সিনেমার চেয়ে বই উপাদেয়! কিন্তু আজ কেন যে ভালো লাগছে না। উল্টা বিষবৎ মনে হচ্ছে।
সত্যি সত্যি বোধহয় আমি মহাপুরুষের কাতারে চলে গেছি। মহাপুরুষ আমি। বাহ্ ভাবতে ভালোই লাগছে!
ইচ্ছা করেই কিনা কে জানে, ম্যাডাম সাউন্ড অনেক বাড়িয়ে দিয়েছেন। টেলিভিশন পর্দাজুড়ে মানবমানবীর ক্রীড়ানৈপুণ্য আর ঘরজুড়ে শব্দের ছুটাছুটি, শীৎকারÑআহ্ উহ্ ওহ্। কাতরানি। বিলাপ। হর্ষ।
রহস্যময় আলোয় উর্বশী হয়ে ওঠা ম্যাডাম আবেদনময়ী হাসি উপহার দিয়ে বলেন, ‘ভালো লাগছে?’
নিরুত্তর আমি। তা দেখে ম্যাডাম আমার হাত ধরে কাছে টানেন। মুখে অপার্থিব হাসি।
ঝটকা মেরে তার হাত সরিয়ে দিই, ‘আমি এসব দেখবো না।’
‘কেন, খোকাবাবু রাগ করেছে?’
‘আমি যাই।’
‘যাই মানে?’ ম্যাডাম তড়াক করে বিছানায় উঠে বসেন। কণ্ঠস্বর কিছুটা কঠিন ও রুক্ষ।
‘যাই মানে যাই। গো টু হোম।’
‘তাহলে এসেছিলে কেন?’
‘আসতে বলেছিলেন, তাই।’
‘চলে যাচ্ছো কেন, যেতে তো বলিনি!’
‘আমাকে যেতে দিন।’
‘তুমি জানো, চলে গেলে কী হারাবে?’
‘বিলক্ষণ জানি।’
‘মহাপুরুষ সাজতে চাচ্ছো, কাপুরুষের বাচ্চা!’ ম্যাডামের কণ্ঠে যুগপৎ রাগ ও ঝাঁঝ।
‘স্যরি।’ আমি খাট থেকে নেমে দরজার দিকে পা বাড়াই। ম্যাডাম খাট থেকে নেমে এসে সর্বশক্তি দিয়ে থাপ্পড় মারেন আমার গালে। এতোটা জোরে, মাথা চক্কর দিয়ে ওঠে। গাল জ্বালা করে। কানের ভিতর ঝিঁঝি পোকার ক্রমাগত ডাক। চিরদিনের জন্য বধির হয়ে গেলাম কিনা কে জানে। তবু এই অস্থির-বিপর্যস্ত অবস্থায়ও শব্দটা কান এড়ায় না, ‘নপুংসক!’
নপুংসক?
শিমুল ম্যাডাম আমাকে নপুংসক বলে গালি দিয়েছেন!
হয়তো তার কথাই ঠিক। নপুংসক না হলে কি কেউ এতোকিছুর পরও নিস্তেজ থাকে?
বীথি, বীথি তুমি কোথায়? কী করছো এখন জাদুসোনা? সোনামানিক, আমার বর্তমান হাল কী, তা তুমি জানো...?
ফণা তোলা সাপিনীর মতো ম্যাডাম হিস হিস করতে থাকেন। সে বিষ নিঃশ্বাসকে পাশ কাটিয়ে, এক অতৃপ্ত নারীর কামনা-বাসনাকে পদদলিত করে ছিটকিনি খুলতে উদ্যত হই।
উপেক্ষা সহ্য করা কঠিন। উপেক্ষিতা ম্যাডাম শেষ বাক্যটি বলেন, ‘চলে যাবে, কথাটা আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বলো।’
তাকিয়েই আবার চোখ ফিরিয়ে নিই। কী তীব্র সে চাহনি, যেন আগুন জ্বলছে দু চোখে। এ তেজ সহ্য করার শক্তি আমার নেই।
‘কোনো রকমে বলি, ‘স্যরি ম্যাডাম।’
ম্যাডাম কিছু বলেন না। আশাহত চোখে একবার তাকান শুধু। দেখে মনটা কেমন যেন কেঁদে ওঠে। আহা বেচারী, অতৃপ্ত মানুষ!

০৬.
কী এক ঘোরের মধ্যে, কীভাবে কখন যে বাড়ির কাছে চলে এসেছি জানি না। বুঝতেই পারিনি চলে এসেছি। টনক নড়লো মৌ’র ডাকে। মৌ আমাদের পাশের বাড়ির। সেভেনে পড়ে। মাঝে-মধ্যে পড়া বুঝে নিতে আমার শরণাপন্ন হয়।
এখন, ওর এই আচানক প্রশ্নে চমকাই, ‘কাকা, গোঁফঅলা লোকটা কি আপনাদের আত্মীয়?’
‘কোন গোঁফঅলা লোক?’
‘দুপুরে যে এসেছিলেন?’
‘কোন দিন?’
‘আজ। দুপুর দুইটার দিকে। আপনি দেখছি কিছুই জানেন না।’
‘সাথে কে ছিল?’
‘কেন, ডাক্তার আপা!’
মাকে মৌ’র বাবা-মা ডাক্তার আপা বলে সম্বোধন করে। দেখাদেখি মৌও! অবশ্য এলাকার ছেলে-বুড়ো, সব সম্পর্কের মানুষ যখন ডাক্তার আপা ডাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। তেমনি মৌ-ও। হয়তো বিয়ে হওয়ার পর ওর বাচ্চাও এ সম্বোধনটাই করবে!
কিন্তু কে এসেছিল কাল, মা-তো আমাকে এ সংক্রান্ত কিছুই বলেননি? এ সময়টাতে কলেজে থাকি। মফস্বলের কলেজ, মোটামুটি দূরে বলে ফিরতে বিকাল বা সন্ধ্যা হয়ে যায়। সুতরাং না বললে জানার উপায় নেই কে কোত্থেকে কেন এসেছিল।
মনের ভিতর নতুন আরেকটা খোঁচাখুঁচি, কে সে? আমাদের তো ঐভাবে তেমন আত্মীয়স্বজন নেই । যা-ও আছে দূরে দূরে।
মাকে নিয়ে ইদানীং দুশ্চিন্তা বেড়েছে। বেড়েই চলেছে, জ্যামিতিক হারে। তুচ্ছ একটা ঘটনা কীভাবে মনে এতো প্রভাব বিস্তার করতে পারে, বুঝি না। নইলে নিজেকে অহেতুক ক্ষতবিক্ষত করছি কেন। কেন অদৃশ্য কোনো একটা ছায়াকে প্রতিপক্ষ ভেবে যোগসূত্র খুঁজে মরছি; অহর্নিশ মনোযাতনায় ভুগছি। এ কাঁটাকে উপড়ে ফেলতে পারলে অন্তত এ মুহূর্তে আমার চেয়ে সুখী কেউ হতো না। কেউ না। সারাক্ষণ বুকের ভেতর খচ খচ খচ... ভাল্লাগে না।
কী যে করি!

০৭.
শিমুল ম্যাডামের সাথে আবার দেখা হয় পাক্কা এক সপ্তাহ পর। যদিও ক্লাশে, বাইরে বেশ কয়েদিন চোখাচোখি হয়েছিল। এটুকুই কেবল। কথা হয়নি। অবশ্য কথা হওয়ার স্বাভাবিক অবস্থা কি আর আছে, দুজনের জন্যই?
ইদানীং কী যে হয়েছে। একা থাকলে মনের ভিতর সেই বিষকাঁটার উপস্থিতি। ক্রমাগত খোঁচাতে থাকে। খোঁচাতেই থাকে। খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে রক্তাক্ত করে। সে অদৃশ্য ক্ষরণ কেউ দেখে না, বোঝে না। আমিও না। বীথিও না। অনুভব করি কেবল একা আমি। অবশ্য বীথি আছে আমার মতোই গ্যাঁড়াকলে। বেচারী সমস্যায় পড়ে গেছে। কিছুতেই আমাকে স্বাভাবিকভাবে পাচ্ছে না। আমার সমস্যা কী, সেটার আদৌ সমাধান হবে কিনা, হলেও তাতে বীথির ভূমিকা থাকবে কিনা, এসব নিয়ে দিকভ্রান্ত সে।
বীথি এবং নিজের যাপিতজীবনের সমস্যাগুলো আত্মমগ্ন হয়ে, রক্তক্ষরণে ভিতর-বাহির সিক্ত করছি এ-সময় ম্যাডামের উপস্থিতি। এবারও তিনি আমাকে ধ্যানমগ্ন অবস্থাতেই পান; কিন্তু আগের মতো সেই লেসন দেয়া বা সমস্যা সমাধানের কথা বলেন না। ঘোর ভাঙিয়ে আমাকে ডাকেন তিনি। চকিতে ফিরে তাকাই, তাঁকে সালাম দিই। শিক্ষকরা সাধারণত শিক্ষার্থীদের সাথে ক্যাম্পাসে বসেন না। কী ভেবে ম্যাডাম বসে পড়েন সবুজ ঘাসের গালিচায়। আমাকেও বসতে আহ্বান জানান।
কুশলাদি বিনিময়, মামুলি দুই একটা কথার তিনি আসল কথা পাড়েন, ‘সেদিনের ব্যবহারের জন্য আমি দুঃখিত। আমাকে ক্ষমা করো, রবি।’
‘এমন কথা বলে কেন আমাকে অপরাধী করছেন ম্য
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মে, ২০১১ রাত ৯:১৪
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার মায়ের চৌহদ্দি

লিখেছেন শাওন আহমাদ, ১২ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৫



আমার মা ভীষণ রকমের বকবকিয়ে ছিলেন। কারণে-অকারণে অনেক কথা বলতেন। যেন মন খুলে কথা বলতে পারলেই তিনি প্রাণে বাঁচতেন। অবশ্য কথা বলার জন্য যুতসই কারণও ছিল ঢের। কে খায়নি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণা!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৭



নীচে, আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণাকে ( পেশগত দক্ষতা ও আভিজ্ঞতার সারমর্ম ) আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি। পড়ে ইহার উপর মন্তব্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

মোজো ইদানীং কম পাওয়া যাচ্ছে কেন?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


শুনলাম বাজারে নাকি বয়কটিদের প্রিয় মোজোর সাপ্লাই কমে গেছে! কিন্তু কেন? যে হারে আল্লামা পিনাকী ভাট ভাঁওতাবাজিদেরকে টাকা দিয়ে 'কোকের বিকল্প'-এর নামে 'অখাদ্য' খাওয়ানো হচ্ছিলো, আর কোককেই বয়কটের ডাক... ...বাকিটুকু পড়ুন

জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০৮ : পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২৪


পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

বিশেষ ঘোষণা : এই পোস্টে ৪৪টি ছবি সংযুক্ত হয়েছে যার অল্প কিছু ছবি আমার বন্ধু ইশ্রাফীল তুলেছে, বাকিগুলি আমার তোলা। ৪৪টি ছবির সাইজ ছোট করে ১৮ মেগাবাইটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×