somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হঠাত একদিন লাউয়াছরায় :)

০৫ ই মে, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত বছর বর্ষার ঘটনা। আমাদের কয়েকজন বন্ধু লাউয়াছরা যাবে রাতের ট্রেনে। সন্ধার পরে ফোন দিল। রোজকার আড্ডায় দেখা হবেনা বলে বলল কমলাপুর গিয়ে দেখা করে আসতে। এমনিতেই এই টুর নিয়ে ঝামেলা হয়ে গেছে, এ যাবে সে যাবেনা করে ৫ জনের জন্য টিকেট কাটা হলেও যাচ্ছে ৩ জন। ভাবলাম যাই দেখা করে আসি। ট্রেন ছাড়ার আধা ঘন্টা আগে পৌছলাম স্টেশন। ২ জন এসেছে বাকি আর একজন এয়ারপোর্ট স্টেসন থেকে উঠবে। বেশ ভালো কথা। আমরা আড্ডা দিচ্ছি এই সেই। হঠাত ফয়সাল ভাই, আমাদের ভ্রমন জগতের সুপারম্যান বলল, তোরাও চল, কাল সকালে চলে আসব ! আরি !! বলে কি। বাসায় কি বলব? মেরেই ফেলবে রাতে বাইরে থাকলে। আগে থেকে কিছু জানাইনি। তার উপরে পায়ে চটি কাধে ঝোলা, ধুতি ফতুয়া পরে ট্রেকিং !! … কিছুতেই কিছু বোঝানো গেলনা। শক্ত নরম বিচিত্র কথার জালে ফেলে আটকে দিল। বাসায় এই সেই বুঝ দিয়ে আল্লাহর নাম নিয়ে ট্রেনে চেপে থাকলাম। কিছক্ষনের মধ্যেই টেনশন ভুলে আমরা আড্ডায় মেতে গেলাম। রাতে ৩ টার দিকে স্টেশনে নেমে যথারীতি হাল্কা ঘুম দেয়ার ট্রাই করলাম। কোথায়? কেন স্টেশনের মেঝেতে :D. …আলো ফোটার পরে আমাদের আর কিছুতেই বসে থাকতে ইচ্ছে হোল না। একটা বড় সাইযের সি এন জি (শ্রীমঙ্গল এলাকায় ঢাকার চেয়ে বড় সাইজের সি এন জি আছে !) নিয়ে আমরা ছুটলাম লাউয়াছরার দিকে। দিনের বেলায় ই বনের মধ্যে দিয়ে যাওয়া রাস্তাটা থাকে ছায়া ঢাকা। এই মাত্র অন্ধকার ফুড়ে বেরোনো সকাল রাস্তাটা ঝাপ্সা অন্ধকার… লাঊয়াছরা রিসার্ভ ফরেস্টে ঢোকার গেটে তখোনো কেউ আসেনি। কি আর করা। ঢুকে গেলাম আমরা। সদ্য আলো জেগে ওঠা সকাল বেলায় জংগল যে কত অন্যরকম হতে পারে তা লিখে বোঝানো একটু কঠিন। পরে বা আগে যতবার লাউয়াছরা গিয়েছি, দিনের অন্য সময়ে জঙ্গল এমন থাকেনা। আস্তে আস্তে ঘুম ভেঙ্গে জেগে ওঠা প্রকৃতি একটু একটু করে আরমোড়া ভাঙ্গে চোখের সামনে। পাখির কিচির মিচির, পাতার ফাকে চুইয়ে নামা ধোয়াটে আলো সব মিলে অদ্ভুত পরিবেশ। আর শুধুমাত্র এইবার ই দেখেছিলাম অনেক অনেক উল্লুক। অত সকালে আর কোন টুরিস্ট ছিল না। তাই হয়ত ওরা মনের আনন্দে গাছে গাছে লাফিয়ে বেরাচ্ছিল। মা উল্লুকের কোলে সাদাটে রঙের ছোট্ট বাচ্চা। পেটের সাথে চেপে রেখে এক ডাল থেকে আরেক ডালে লাফিয়ে যাচ্ছে। আরেক্টু বড় যেগুল মা কে ছাড়া চলতে শিখে গেছে, অগুলোর সাহস বেশি। অথবা অভিজ্ঞতা কম। মানুষ নামের প্রানীটাকে যে ভয় পেতে হবে সেটা এখনো চিনে উঠেনি। তাই মোটামুতি দৃস্টি সীমার মদ্ধেই লাফ ঝাপ দিচ্ছে। কেউ কেউ আবার বসে বসে তাকিয়ে দেখছে বনের ভেতরের দু পেয়ে জীবগুলোকে। আমার সাথে যুম লেন্স ছিলনা। তাই ছবি তুলতে পারিনি। অবশ্য ছবিতে আর কি বোঝা যায় এই মজা?

বেশিক্ষন মাপ এ আকা ট্রেইল এ না হেটে আমরা যথারীতি ঝিরি ধরে হাটা শুরু করে এই সেই পথে হাটা শুরু করলাম… সেই পথ আবার কিছুদুর গিয়ে ২-৩ ভাগে ভাগ হয়ে যায়। আন্দাজ করে ট্রেইন লাইনটা কোন দিকে হবে ভেবে নিয়ে যাচ্ছি। এই বনের ভিতরের ট্রেইন লাইন টা দেখার মত বিষয়। ঘন ঝোপঝারের মাঝে রেল লাইন। সবুজ বনের মাঝখান থেকে যখন ঝিক ঝিক শব্দ করে লাল নীল ট্রেন টা চলে যায়, দেখতে বড়ই সুন্দর লাগে। তো এদিক সেদিক বনের মদ্ধে ঘুরে ঘুরে ১২ টা বেজে গেল। কিন্তু ট্রেন লাইন আর পাইনা। ততক্ষনে বেশ ক্যেক্টা জোক পায়ের এইদেকে সেদিকে ধরে ফেলেছে… কেউ কেউ খেয়ে চলেও গেছে। কামড় দেয়ার জায়গা থেকে অনবরত রক্ত পড়ছে। যারা যোকের কামড় কেহ্যেছে চারা সবাই জানে যে জোকের কামরের যায়গাটা থেকে রক্ত সহজে বন্ধ হয়। জোক একধরনের লালা দিয়ে যায়গাটা অবশ করে নিয়ে রক্ত খায় এবং এমন আর একটা লালা লাগায় যেটাতে রক্ত জমাত বাধতে পারেনা। যাই হোক আমরা শেষে বনের ভিতরের ট্রেন লাইনটা না খুজে পেয়ে পুরোনো চেনা ট্রেইল ধরে ফিরে আসলাম জঙ্গলের ভেতরের চা এর দোকান্টার কাছে। এইখানে একটা বাদর দেখলাম। বাদর লাঊয়াছরা জঙ্গলের প্রানী না। এটা নিশ্চই পোষা। ছবি তুলতে যেয়ে দেখা গেল সে রীতিমত মডেল ! এই রক্ম সেই রকম পোজ দিচ্ছে ছবি তোলার। যাই হোক উল্লুক এর ছবি না তুলতে পারি, মন ভরে মডেল বান্দরের ছবি তুলে নিয়ে আসলাম…









সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মে, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:২৭
২২টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যাড গাই গুড গাই

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

নেগোশিয়েশনে একটা কৌশল আছে৷ ব্যাড গাই, গুড গাই৷ বিষয়টা কী বিস্তারিত বুঝিয়ে বলছি৷ ধরুন, কোন একজন আসামীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে৷ পারিপার্শ্বিক অবস্থায় বুঝা যায় তার কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

টান

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২২


কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর
বিচ্যুতি ঠেকা‌তে ছু‌টির পাহাড়
দিগন্ত অদূর, ছ‌বি আঁকা মেঘ
হঠাৎ মৃদু হাওয়া বা‌ড়ে গ‌তি‌বেগ
ভাবনা‌দের ঘুরপাক শূণ্যতা তোমার..
কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর।
:(
হাঁটুজ‌লে ঢেউ এ‌সে ভাসাইল বুক
সদ্যযাত্রা দম্প‌তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরী

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৯

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরীঃ


১। নিজের সিভি নিজে লেখা শিখবেন। প্রয়োজন অনুযায়ী কাস্টোমাইজ করার অভ্যাস থাকতে হবে। কম্পিউটারের দোকান থেকে সিভি বানাবেন না। তবে চাইলে, প্রফেশনাল সিভি মেকারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×