somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চরিত্র-২

০৫ ই মে, ২০১১ দুপুর ২:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পর্ব-১
তাহার নাম রেণু, পড়াশুনা করেন আমাদের পাশের বিশ্ববিদ্যালয়েই। সুতরাং আমরা দুইজন প্রতিবেশি এবং আড্ডা জমিতে বেশিক্ষন বিলম্ব হইল না।
দুইজন মেয়ে মানুষ আর একজন পুরুষ, আলোচনায় সব বিষয়ই উঠিয়া আসিল; সমাজনীতি, রাজনীতি হইতে শুরু করিয়া জ্বীন-ভূত এবং আধুনিক প্রেম ভালবাসা কোন বিষয়ই বিতর্কের বাহিরে থাকিল না।
আমি একলাই এক পক্ষ আর মেয়ে দুইজন একপক্ষ, জমিলও বেশ কিন্তু অনেক চেষ্টা করিয়া আমাকে তাহারা পরাস্ত করিতে পারিল না এবং প্রতিপক্ষ হইলেও আমার হাস্যরসাত্মক কথায় রেণু মুগ্ধ না হইয়া থাকিতে পারিল না
একসময় রেণুর সহিতই বেশি খাতির হইল এবং কথায় কথায় এক প্রসঙ্গে তাহাকে জানাইয়া দিলাম যে, প্রবল ইচ্ছা থাকা সত্বেও আমি তাহাদের সুন্দর ক্যাম্পাসে ঘুরিতে যাইতে পারিনা, পরিচিত কেউ নাই সেখানে। রেণু উৎসাহী হইয়া বলিল, কেন আপনি প্রেম করেন না ??
আমি কিছুটা অপ্রতিভ হইয়া উত্তর করিলাম, সে সুযোগ এখনও হয়ে উঠেনি। আমার কথা শেষ হইলে রেণুও একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলিয়া বলিল,” আমারও একই অবস্থা, পরিচিত কেউ নাই সেখানে, কেমন জানি নিঃসঙ্গ লাগে।
আমি তাহার দুই চোখের দিকে তাকাইয়া অনুভব করিলাম কি এক অজানা গভীর আকুতি যেন ঠিকরাইয়া পড়িতেছে যাহা তীব্র নহে, ভাবলেশহীন কিন্তু তাহা উপেক্ষা করিবার নহে । এক চোখে ছোট মতন ফুসকুঁড়ি উঠিয়াছে, সে চোখের ভাষা সম্পূর্ণ বোঝা গেলনা,সেই ছোট্ট অথচ বিপুল ক্ষমতার ফুসকুঁড়ির অন্তরালে যে ভাব চাপা পড়িল তাহার স্বরূপ উন্মোচন করিতে গিয়া একদিন আবিষ্কার করিয়াছিলাম আমার আত্মার এক দূরারোগ্য ব্যাধির যাহার ঔষুধ নাই চিকিৎসা নাই সেবা নাই, আছে কেবল যন্ত্রণা আর যন্ত্রনা ।
ট্রেন বহুপথ পাড়ি দিয়া শেষ স্টেশনে আসিয়া থামিয়াছে, আমাদের পরিচয় পর্বও ইতিমধ্যে সমাপ্ত হইয়াছে; একসময় রেণু তাহাদের ক্যাম্পাসে যাইতে আমাকে আমন্ত্রণ করিল, আমিও করিলাম। কিন্তু আমাদের যোগাযোগ হইবে কিভাবে ?
ফেসবুকের যুগে মোবাইল নম্বর চাওয়াটা কম মানানসই, আমি আধুনিক সাজিতে রেণুর কাছে মোবাইল নম্বর না চাহিয়া ই-মেইলে যোগাযোগের ঠিকানা চাহিলাম।
রেণু ফিক করিয়া হাসিয়া বলিল, ইন্টারনেট তো ব্যবহার করি না, মোবাইল নম্বর নিন।
আমি তাহার মোবাইল নম্বর লইয়া বলিলাম , আবার দেখা হবে, সেও মাথা দোলাইয়া অনুরূপ ইচ্ছাপোষণ করিল।
এই যে ‘আবার দেখা হবে’ ভবিষ্যতকালের কথাটা ভবিষ্যতের হাতে সম্পূর্ণ ছাড়িয়া দিতে আমার ইচ্ছা হইল না, মনে হইল যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাহাকে বর্তমানে টানিয়া আনা কর্তব্য এবং আমি দ্রুততম সময়ে তাহাতে উদ্যোগী হইলাম। সেদিন বৈকালেই রেনুকে ফোন করিলাম, একবার দুইবার,সাড়া মিলিল না, কিঞ্চিত বিরক্ত হইলাম কিন্তু হাল ছাড়িলাম না। আমি নাম পরিচয় দিয়া ছোট্ট করিয়া মেসেজ লিখিলাম, রেণু চারঘণ্টা পর মিসকল দিল। আমি ইহার প্রতীক্ষাতেই ছিলাম। প্রথমদিন কি বলিব ভাবিয়া পাইলাম না। ঠিকঠাকমত মেসে পৌঁছাইতে পারিয়াছিল কিনা শুরুতে তাহা জানিয়া লইলাম, তারপর কুশল জিজ্ঞাসা করিলাম। আর কি কথা সেইক্ষনে হইয়াছিল তাহা মনে করিতে পারি না, তবে আমার মনে হইল কি যেন এক নূতন আকর্ষণে অজানা এক রাজ্যের দিকে আমি ধাবিত হইতেছি যেইখানে গতিরোধিত হইবার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম; ইহা আকস্মিক নহে, ঠিক যেন কোন এক পূর্বপরিকল্পিত ছকে বাঁধা দাবার বোর্ড, আমি তাহাতে একটি ঘুঁটিমাত্র, খেলোয়াড়ের ইচ্ছানুযায়ী যাহার নড়াচড়া ঘটিতেছে।
ইহার পর হইতে অনিয়মিতভাবে আমার ফোনে রেণুর মিসকল আসিতে লাগিল এবং আমিও নিয়মিতভাবে আমার কর্তব্য পালন করিতে লাগিলাম।
খেজুরে আলাপে পয়সা ব্যয় করা আমার নীতিবিরুদ্ধ, কিন্তু রেণুর ক্ষেত্রে কিছুটা বন্ধুদের উৎসাহে এবং কিছুটা নিজের উৎসাহে নিয়ম করিয়া নিয়ম ভাঙ্গিতে লাগিলাম। সবারই এক কথা, বিনিয়োগ ছাড়া রমনীর সুনজরে আসা সম্ভব নয়। সুতরাং আমি অসম্ভবকে প্রকৃত নিয়মানুসারে সম্ভব করিতে ব্রতী হইলাম।
চলবে............
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মে, ২০১১ দুপুর ২:৪১
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পথ হারিয়ে-খুঁজে ফিরি

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৩


মনটা ভালো নেই। কার সাথে কথা বলবো বুঝে পাচ্ছি না। বন্ধু সার্কেল কেও বিদেশে আবার কেও বা চাকুরির সুবাদে অনেক দুরে। ছাত্র থাকা কালে মন খারাপ বা সমস্যায় পড়লে... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রজাতির শেষ জীবিত প্রাণ !

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫১



বিবিসির একটা খবর চোখে এল সেদিন । উত্তরাঞ্চলীয় সাদা গন্ডার প্রজাতির শেষ পুরুষ গন্ডারটি মারা গেছে । তার নাম ছিল সুদান । মৃত্যুর সময় তার বয়স ৪৫। বিবিসির সংবাদটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মধ্যে সে একজন ।।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯



আপনারা কতজন Umma Kulsum Popi চেনেন, আমি ঠিক জানি না। আমার পর্যবেক্ষণ মতে, বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের একজন হলেন উনি। যদি বলি দেশের সেরা পাঁচজন কনটেন্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×