বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতে পণ্য চোরাচালানে কলকাতা, গুয়াহাটি ও শিলং শহর ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠছে।
Published : 27 Jul 2013, 02:52 PM
ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় ওই তিনটি শহরকে মিয়ানমার ও নেপালের সঙ্গে চোরাচালানের জন্যও মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
দেশটির শুল্ক বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, মাদক দ্রব্য, অস্ত্র ও জাল নোটসহ বিভিন্ন পণ্য পাচারে ভারতের সবচেয় বড় আন্ডারওয়ার্ল্ড শহর হিসেবে পরিচিব মুম্বাইয়ের চেয়েও এ শহরগুলো ক্রমেই চোরাচালিনীদের পছন্দের পথ হয়ে উঠছে।
সেন্ট্রাল বোর্ড অফ এক্সাইজ অ্যান্ড কাস্টমসের (সিবিইসি) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১২-১৩ অর্থবছরে চোরাচালান ও বাণিজ্যিক প্রতারণার ঘটনায় মামলা হয়েছে ৩৫ হাজার ৫০০টি, যা আগের অর্থবছরে ছিল ৩৩ হাজার ২৫১টি।
এর মধ্যে ৬৪ শতাংশ মামলাই কলকাতা, গোয়াহাটি ও শিলংকেন্দ্রীক। আর মাত্র পাঁচ শতাংশ মামলা হয়েছে মুম্বাইতে।
অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গেও এরকম বৈঠক হয়ে হলেও নিশ্চিত কোনো দেশই সমাধানে পোঁছাতে পারছে না বলে জানান মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
বর্তমানে অস্ত্র, বিস্ফোরক, জাল মুদ্রা এবং বিভিন্ন রকমের মাদক দ্রব্য পাচারের প্রতিই চোরাচালানীদের আগ্রহ বেশি দেকা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। আগে সোনা, রুপা ও ইলেকট্রনিক্সের বিভিন্ন পণ্য বেশি চোরাচালান করা হতো।
শুল্ক বিভাগের পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, মাদক হিসেবে ব্যবহার হয় অ্যামফেটামিন ও মিথাফিটামিনের মতো- এমন বিভিন্ন ধরনের নিষিদ্ধ ওষুধ মিয়ানমার থেকে মিজোরাম ও মনিপুরসহ উত্তরপূর্বাঞ্চল দিয়ে হয়ে ভারতের ঢুকে পড়ছে।
বিএসএফের মুখপাত্র টিকে চেত্রি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ভারত ছাড়া বাংলাদেশেও এসব নেশাজাত ও উত্তেজক ওষুধ পাচার হচ্ছে।
চলতি মাসে এক বিশেষ অভিযানে ফেনসিডিল ও গাঁজা পাচারের অভিযোগে সীমান্ত থেকে দুই বাংলাদেশীকে আটক করে বিএসএফ।
পশ্চিমবঙ্গ ও আসামের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় জাল নোট ও গবাদি পশু বেশি পাচার হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিএসএফের কর্মকর্তারা।
গোয়াহাটির শুল্ক বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, সীমান্ত পথের বিভিন্ন রকম অব্যবস্থাপনার সুযোগ নিয়ে অনেক নিষিদ্ধ ও জঙ্গী সংগঠনও তাদের কার্যক্রম প্রসারিত করছে।
সীমান্ত রক্ষাবাহিনী, রাজ্য পুলিশ, মাদক ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ব্যুরো, শুল্ক ও রাজস্ব বিভাগের মধ্যে সমন্বয়হীনতা ও অব্যস্থাপনাকেই চোরাচালান ও সীমান্ত পথে অপরাধের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম প্রদান কারণ বলে মনে করছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
তারা জানান, বাংলাদেশ, মিয়ানমার, নেপাল ও চীনের সঙ্গে ভারতে প্রায় ২ হাজার ২১৬ কিলোমিটারের বিশাল সীমান্ত পথ সমন্বিতভাবে নিয়ন্ত্রণে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে নির্দিষ্ট কোনো নিয়মনীতি অথবা কৌশল অনুসরণ করা হয় না বলে সমস্যা বাড়ছে।