তিনি বুঝাতে চেয়েছেন মনুষ্যত্ব তপস্যাকে মানুষের উত্কৃষ্ট ধর্ম । তাঁর কথা হলো—‘ মানুষের একটা দিক আছে যেখানে বিষয়বুদ্ধি নিয়ে সে আপন সিদ্ধি খোঁজে। সেইখানে আপন ব্যক্তিগত জীবনযাত্রানির্বাহে তার জ্ঞান, তার কর্ম,তার রচনাশক্তি একান্ত ব্যাপৃত। সেখানে সে জীবরুপে বাঁচতে চায়। কিন্তু মানুষের আর একটা দিক আছে যা এই ব্যক্তিগত বৈষয়িকতার বাইরে। সেখানে জীবনযাত্রার আদর্শে যাকে বলি ক্ষতি তাই লাভ, যাকে বলি মৃত্যু সেই অমরতা। সেখানে বর্তমান কালের জন্যে বস্ত সংগ্রহ করার চেয়ে অনিশ্চিত কালের উদ্দেশে আত্মত্যাগ করার মূল্য বেশি। সেখানে জ্ঞান উপস্থিত—প্রয়োজনের সীমা পেরিয়ে যায়, কর্ম স্বার্থের প্রবর্তনাকে অস্বীকার করে। সেখানে আপন স্তন্ত্র জীবনের চেয়ে যে বড়ো জীবন সেই জীবনে মানুষ বাঁচতে চায়।’
‘স্বার্থ আমাদের যে সব প্রয়াসের দিকে ঠেলে নিয়ে যায় তার মূল প্রেরণা দেখি জীবপ্রকৃতিতে: যা আমাদের ত্যাগের দিকে, তপস্যার দিকে নিয়ে যায় তাকেই বলি মনুষ্যত্ব, মানুষের ধর্ম।’
২.
রবীন্দ্রনাথ মনের মধ্যে ঠাঁই করে নেন প্রত্যেক মানুষের জীবনে সেই ছোটবেলায়। যখন থেকে প্রাণভরে গাইতে শিখেছি—‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোয়ায় ভালোবাসি।’ তারপর নানাভাবে সূর্যের তীব্র কিরণের মতো উঁকি দেয় রবীন্দ্রনাথ। কলেজে পড়ার সময় আমার এক স্যার মানুষের জীবনদর্শন নিয়ে কথা বলছিলেন তখন স্যার রবীন্দ্রনাথের শেষবেলার একটা কবিতার তিনটা লাইন উচ্চারণ করেছিলেন। আর সেই কবিতার তিনটা লাইন হয়ে উঠে আমার আদর্শ। মনের প্রেরণার সঙ্গী। বদলের হাতিয়ার। তখন থেকে মনের মধ্যে মনের মানুষ শুধুই রবীন্দ্রনাথ। কবিতার তিনটা লাইন হলো—
‘সত্যে যে কঠিন
কঠিনেরে ভালোবাসিলাম
যে কখনো করে না বঞ্চনা।’
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মে, ২০১১ রাত ৮:১২