somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

‘সিসা লাউঞ্জে’ নতুন নেশা!

০১ লা মে, ২০১১ বিকাল ৫:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
লাল-নীল আলো। চারদিকে হৈহুল্লোড়। এমন পরিবেশে সোফায় বসে বড় বড় হুক্কায় সিসা টানছে ৭-৮ তরুণ-তরুণী। একটু পরপরই হাতবদল হচ্ছে হুক্কা। হিন্দি গানের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে হুক্কায় সিসা টানার গভীর নেশা। চার দেয়ালের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে ধোঁয়া। রাজধানীর উত্তরা এলাকায় একটি অভিজাত হোটেলে প্রতিরাত ৮টার পর বসে সিসার এমন জমজমাট আসর। চলে গভীর রাত পর্যন্ত। শুধু উত্তরা নয়, রাজধানীসহ সারাদেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে গজে উঠেছে সিসা লাউঞ্জ। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, রাজধানীতে ২০০ সিসা লাউঞ্জ রয়েছে। অভিজাত পরিবারের তরুণ-তরুণীদের কাছে নেশার নতুন ক্রেজ হুক্কায় সিসা টানা।
সিসার উপাদান : বিভিন্ন ফলের নির্যাসই সিসার মূল উপাদান। আপেল, আঙ্গুর, আনারস, কলা, পেঁপে থেকে শুরু করে নানা ফলের নির্যাসে তৈরি হয় সিসার উপাদান। এসব উপাদান শুকনো আকারে থাকে। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত কোনো কোম্পানি সিসার উপাদান তৈরি করছে না বলে জানান মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা। বাংলা-দেশে মূলত দুবাই থেকে এর উপাদান আসে। এখন দুটি কোম্পানি এসব উপাদান আনছে।
সিসার উপাদান হিসেবে বিভিন্ন ফলের শুকনো নির্যাসবিশেষ কলকেতে ভরা হয়। স্টিলের তৈরি কারুকার্যময় এসব কলকে দেখতে অনেকটা হুক্কার মতো। তবে এর সাইজ অনেক বড় এবং একাধিক ছিদ্রযুক্ত। এসব ছিদ্রে লম্বা পাইপ
থাকে। কলকের নিচের অংশে বিশেষ তরল পদার্থ থাকে, উপরিভাগে থাকে কলকে। এ কলকেতেই সিসার উপাদান দেওয়া হয়।[
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানান, মোগল আমল থেকেই সিসার প্রচলন চলে আসছে। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে দুবাইয়ে এর প্রচলন বেশি। অভিজাত এলাকা ছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় সিসা লাউঞ্জ গড়ে উঠছে। বার ও ক্লাব ছাড়াও চাইনিজ রেস্টুরেন্টের আড়ালে সিসা লাউঞ্জ গড়ে উঠছে।
সিসার আড়ালে মাদকবাণিজ্য : মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানান, সিসা মূলত মধ্যপ্রাচ্যের অভিজাত শ্রেণীর একটি নেশা হলেও বাংলাদেশে এর আড়ালে চলছে মাদক ব্যবসা। অধিকাংশ লাউঞ্জে সিসার উপাদানের সঙ্গে মেশানো হচ্ছে ইয়াবা ট্যাবলেটের গুঁড়া, হেরোইন ও বিভিন্ন যৌন উত্তেজক ট্যাবলেটসহ নেশাজাতীয় নানা ট্যাবলেটের গুঁড়া। এছাড়াও গাঁজার বিশেষ রাসায়নিক অংশ মিশিয়ে এর উপাদান ব্যবহার করা হচ্ছে।
যারা যায় লাউঞ্জে : বাংলাদেশের লাউঞ্জগুলোতে মূলত অভিজাত ঘরের উঠতি তরুণ-তরুণীরাই বেশি যায়। এছাড়াও মধ্য বয়স্ক কর্মজীবী থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণীর যুবক-যুবতীরও আনাগোনা রয়েছে এসব লাউঞ্জে। বিশেষ করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তরুণ-তরুণীরা এসব লাউঞ্জে গিয়ে ভিড় করে। ৫০০ টাকায় পাইপে একবার মুখ লাগিয়ে বুঁদ হয়ে থাকে দীর্ঘক্ষণ।
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য : মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিদর্শক (গুলশান সার্কেল) হেলাল উদ্দিন ভূঁইয়া সমকালকে বলেন, এটি মূলত মাদক নয়। ফলে তাদের করার কিছু থাকে না। তবে লাউঞ্জকে কেন্দ্র করে মাদকসেবন ও বিক্রির সন্ধান পাওয়া গেলে তারা অভিযান চালান। গুলশান এলাকার বিভিন্ন লাউঞ্জে অভিযান চালিয়ে এর বিভিন্ন উপকরণ উদ্ধার করা হয়েছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিচালক তালেবুর রহমান সমকালকে বলেন, লাউঞ্জে গিয়ে ছেলেমেয়েরা বিপথগামী হচ্ছে। তবে লাউঞ্জগুলো মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের নিয়ন্ত্রণাধীন নয় বলে তারা কিছু করতে পারছেন না।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানান, মূলত অন্যান্য ব্যবসার মতো ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে লাউঞ্জ গড়ে তোলা হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন মদের বৈধ ও অবৈধ বার, পাঁচতারকা হোটেল এবং বিভিন্ন চাইনিজ রেস্টুরেন্টের লাইসেন্সের আড়ালেও লাউঞ্জ গড়ে তোলা হচ্ছে। ফলে রাজধানীসহ সারাদেশে এর কত লাউঞ্জ রয়েছে তার কোনো সঠিক হিসাব বা তথ্য নেই কোনো সংস্থার কাছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, রাজধানীর উত্তরা, গুলশান, ধানমণ্ডি, মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় প্রায় ২০০ লাউঞ্জ রয়েছে।
সৌজন্যেঃ
সমকাল
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মে, ২০১১ বিকাল ৫:৩৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সমাধান দিন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩১




সকালে কন্যা বলল তার কলিগরা ছবি দিচ্ছে রিকশাবিহীন রাস্তায় শিশু আর গার্জেনরা পায়ে হেটে যাচ্ছে । একটু বাদেই আবাসিক মোড় থেকে মিছিলের আওয়াজ । আজ রিকশাযাত্রীদের বেশ দুর্ভোগ পোয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নিছক স্বপ্ন=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৮



©কাজী ফাতেমা ছবি
তারপর তুমি আমি ঘুম থেকে জেগে উঠব
চোখ খুলে স্মিত হাসি তোমার ঠোঁটে
তুমি ভুলেই যাবে পিছনে ফেলে আসা সব গল্প,
সাদা পথে হেঁটে যাব আমরা কত সভ্যতা পিছনে ফেলে
কত সহজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

একদম চুপ. দেশে আওয়ামী উন্নয়ন হচ্ছে তো?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৯



টাকার দাম কমবে যতো ততোই এটিএম বুথে গ্রাহকরা বেশি টাকা তোলার লিমিট পাবে।
এরপর দেখা যাবে দু তিন জন গ্রাহক‍কেই চাহিদা মতো টাকা দিতে গেলে এটিএম খালি। সকলেই লাখ টাকা তুলবে।
তখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গরু দুধ দেয় সেই গরু লাথি মারলেও ভাল।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১২:১৮


০,০,০,২,৩,৫,১৬, ৭,৮,৮,০,৩,৭,৮ কি ভাবছেন? এগুলো কিসের সংখ্যা জানেন কি? দু:খজনক হলেও সত্য যে, এগুলো আজকে ব্লগে আসা প্রথম পাতার ১৪ টি পোস্টের মন্তব্য। ৮,২৭,৯,১২,২২,৪০,৭১,৭১,১২১,৬৭,৯৪,১৯,৬৮, ৯৫,৯৯ এগুলো বিগত ২৪ ঘণ্টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×