somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কুষ্টিয়ার পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে একটি পদক্ষেপ (কুষ্টিয়ার ব্লগারদের মতামতের জন্য রি-পোষ্ট)

০১ লা মে, ২০১১ বিকাল ৩:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কুষ্টিয়ার পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে একটি পদক্ষেপ (কুষ্টিয়ার ব্লগারদের মতামতের জন্য রি-পোষ্ট)।

আমরা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী কুষ্টিয়াতে জন্মেছি। ঘর হতে দুই পা ফেলেই পেয়েছি লালন শাহের মাজার, রবীন্দ্রনাথের কুঠিবাড়ি, নীলকুঠি সাহেবের বাড়ি ও জমিদার বাড়ি, ভেড়ামারা তাপ বিদু্যৎ কেন্দ্র, গড়াই ব্রিজ, মোহিনী মিল, মীর মশাররফ হোসেনের বসতবাড়ি, সোনাবন্ধুর মাজার, জর্জবাড়ি, আরও কত কি? সিন্ধু দেখার পর যেমন শিশির বিন্দুর কথা মনে হয় তেমনই ভাবে কুষ্টিয়ার গন্ডির বাইরে আসার পর (বিশেষকরে পয়সা খরচ করে সিন্ধু দেখতে যাবার পর) মনে হয়েছে কি অমুল্য রতন হেলায় ফেলে নষ্ট করছি। তাই অনেকদিন থেকেই সহকর্মীদের সাথে আলাপ করছিলাম কি করা যেতে পারে। আমাদের সামর্থ স্বল্প কিন্তু সাধ অনেক, আর সরকারী সাহায্যের কথা বলে বসে থাকা ভন্ডামিও ভাল লাগেনা। তাই আমাদের নিজেদের যা আছে তাই নিয়ে কাজ করার একটি পরিকল্পনার খসড়া করলাম। নিচের লিষ্টটি দেখুন:

• দোল পূর্ণিমায় ‘‘ লালন স্মরনোৎসব’’ লালন একাডেমী, ছেঁউড়িয়া, কুষ্টিয়া।
• লালন মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন ও লালন মেলা, লালন একাডেমী, ছেঁউড়িয়া, কুষ্টিয়া।
• রবীন্দ্র জন্মজয়মিত্ম উদযাপন ও গ্রামীণ মেলা, শিলাইদহ, কুমারখালি, কুষ্টিয়া
• মীর মশাররফ হোসেনের জন্মবার্ষিকী উদযাপন ও গ্রামীণ মেলা।
• হজরত সোলায়মান চিশতীর বাৎসরিক ওরশ ও গ্রামীণ মেলা।
• রথযাত্রা: বিনোদনধর্মী অনুষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম হ’ল রথযাত্রা । কুষ্টিয়ায় রথের এ মেলা বসে শহরের প্রধান সড়কে। ভোর ৬ টা থেকে শুরু করে চলে রাত ১২ টা পর্যমত্ম ।
• কালীপূজার মেলা: কুষ্টিয়া জেলার খোকসা উপজেলার কালী মন্দিরের বিরাটকায় কালী মূর্তির সামনে পাঁঠা ও মহিষ বলি দেয়া হয় এ মেলায়।
• আড়ং মেলা- চৈত্র সংক্রামিত্মতে এ জেলার আমলা পাড়া(পূর্ণবাবুর ঘাট), কুমারখালির সাঁওতা,বাগুলাট, মিরপুর সহ বিভিন্ন স্থানে এ মেলা বসে ।

উল্লেখিত প্রতিটি উপলক্ষে প্রতি বছর কুষ্টিয়াতে অনেক লোক সমাগম হয়। কিছু উৎসবে কুষ্টিয়ার বাইরের অতিথি এত বেশি আসছেন যে, শেষের দিকে অনেকেই আবাসিক ব্যবস্থা না পেয়ে রাস্তায়/উৎসব প্রাঙ্গণে বসে রাত কাটিয়ে দেন। প্রতিবছর অতিথি বাড়ছে, এবং অব্যবস্থাপনার কারণে ভোগান্তিও বেড়ে চলেছে। বিশেষ উপলক্ষে আসা অতিথিরা ওই অনুষ্ঠান শেষে কুষ্টিয়ার অন্যান্য দর্শনিয় স্থানগুলো না দেখেই ফিরে যান। একে তো স্থানগুলো সম্পর্কে জানার ভাল কোন ব্যবস্থা নেই। তার পরও স্থানগুলোতে ভ্রমণের কোন সহজ ব্যবস্থা নেই। অথচ একটু চেষ্টা করলে দর্শনার্থীদের এসব ঐতিহাসিক স্থান সম্পর্কে আগ্রহ তৈরি করা যায় এবং সহজ ট্যুর এর সুবিধা দিয়ে আয় ও সুনাম দুটোই বাড়ানো যায়।

এই বিষয়ে আমার একটি পরিকল্পনা আগ্রহীদের সকলকে জানাতে চাই। আপনাদের সামান্য সহযোগিতা পেলে পরিকল্পনাটি সফলতার মুখ দেখবে আশারাখি।

কুষ্টিয়ার প্রতিটি দর্শনিয় স্থানের ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও বিশেষ বৈশিষ্ঠের উপরে একটি লাইট এন্ড সাউন্ড শো এর মত তৈরি করা হবে। যেসব তরুণ/যুবকদের নিজস্ব মটর বাইক বা অন্য কোন বাহন আছে এবং টুরিস্ট গাইড হিসাবে কাজ করার ইচ্ছা আছে, তাদেরকে নিয়ে একটি টুরিস্ট গাইড গ্রুপ তৈরি করে প্রয়োজনীয় (ইতিহাস, বৈশিষ্ঠ, নিরাপত্তা ও অন্যান্য) বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।

এরপর আগামী লালন উৎসবে (বা যেকোনো বড় উৎসবে), উৎসব প্রাঙ্গণে একটি ভাল যায়গায় সন্ধ্যার পর ওই লাইট এন্ড সাউন্ড শো টি চালাবার ব্যবস্থা করা হবে। আমি নিশ্চিত যে, ওই শো কেউ দেখলে সে আমাদের দর্শনিয় স্থানগুলো না দেখে ফিরে যেতে পারবেন না অতিথিরা।

ওই স্টলেই আগ্রহী ভ্রমণ ইচ্ছুকদের প্যাকেজ ভিত্তিক নিবন্ধনের ব্যবস্থা থাকবে (যেমন কুষ্টিয়ার ৭ টি দর্শনিয় স্থান দেখা যাবে ৫০০ টাকার বিনিময়ে)। নিবন্ধনের পর অতিথি সকল দর্শনিয় স্থানের উপরে একটি তথ্য সমৃদ্ধ এ্যালবাম ও টুরিস্ট কুপন পাবেন (যা তারা স্যুভেনির হিসাবে রাখতে পারবেন)। এরপর গাইড গ্রুপের সদস্যরা নিবন্ধিত প্যাকেজ অনুযায়ী দর্শনার্থীদের নিয়ে নিজস্ব বাহনে স্থানগুলো ঘুরিয়ে দেখিয়ে নিয়ে আসবেন। অতিথিকে স্টলে পৌঁছে দিয়ে গাইড টাকাটা সংগ্রহ করে নেবেন।

ক্রমশ উৎসবের সময় ছাড়াও বিষয়টি নিয়মিত হতে পারে। এমন একটি সময় আসতে পারে যখন প্রতিটি বাড়ির বাড়তি ঘরটি হতে পারে একটি গেস্ট হাউজ। মটর বাইক নিয়ে ঘুরে বেড়ানো বেকার ছেলেটি হতে পারে একজন সফল টুরিস্ট গাইড। টুরিস্টদের জন্য হোটেল, গেস্ট হাউজ, খাবার দোকান, স্যুভেনির দোকান, সেলুন, ইত্যাদি, ইত্যাদি মিলিয়ে কুষ্টিয়াতে তৈরি হতে পারে একটি টুরিস্ট কেন্দ্রিক অর্থনীতি।

সফল করার যা যা দরকার:
. ভাল একটি লাইট এন্ড সাউন্ড শো তৈরি।
. পুরো বিষয়টির ভালভাবে প্রচার।
. উৎসব কমিটির সহযোগিতা।
. জেলা/উপজেলা প্রশাসনের সম্পৃক্ততা।
. টুরিস্ট গাইড হতে ইচ্ছুক তরুণদের্ প্রয়োজনিয় যোগ্যতার সঠিক মূল্যায়ন ও ভাল একটি প্রশিক্ষণ।
. সকলের ইতিবাচক মনোভাব ও প্রচার।

জেলা প্রশাসনের সাথে কথা বলে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে। যদি কোন উদ্যোক্তা সংগঠন এগিয়ে আসে তবে আমরা তাকে সাহায্য করতে চাই । আর যদি তো না ঘটে তবে আমরা প্রযুক্তিতে কুষ্টিয়ার পক্ষ থেকে উদ্যোগটি নিতে চাই।

আপনাদের মতামত ও সহযোগীতা দরকার।

-----
সুফি ফারুক
সভাপতি, প্রযুক্তিতে কুষ্টিয়া
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যমদূতের চিঠি তোমার চিঠি!!!!

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:০৮

যমদূতের চিঠি আসে ধাপে ধাপে
চোখের আলো ঝাপসাতে
দাঁতের মাড়ি আলগাতে
মানুষের কী তা বুঝে আসে?
চিরকাল থাকার জায়গা
পৃথিবী নয়,
মৃত্যুর আলামত আসতে থাকে
বয়স বাড়ার সাথে সাথে
স্বাভাবিক মৃত্যু যদি নসিব... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×