somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শাহবাগের পক্ষে থাকার দরকার নাই - বাংলাদেশের পক্ষে থাকুন

০৯ ই মার্চ, ২০১৩ ভোর ৪:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শাহবাগ নিয়ে দেখছি একটা বেশ বিতর্কের তৈরি হয়েছে।

এটাই এই জাতির দুর্ভাগ্য। একাত্তরে যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল, তখন তা নিয়েও অনেকে বিতর্ক তৈরি করেছিল। তখন্ও অনেকে পক্ষ বিপক্ষ নিয়েছিল। সব দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ই কিছু লোক থাকে, তারা শত্রুদের সাথে হাত মেলায়। ভিয়েতনামে যুদ্ধের পরই তাদের সবাইকে খতম করে দেয়া হয়েছিল। তাই আজ দেশটা এতটা ঘূরে দাড়াতে পেরেছে। অন্য দেশগুলোতেও তাদের তাক্ষণিক বিচার করে দেয়া হয়েছে। তাই সেই দেশে রাজনীতি নিয়ে যতই মতভিন্নতা থাকুক না কেন, দেশের স্বাধীনতা নিয়ে কার্ও কোন প্রশ্ন নেই।

আমরা সেটি করি নাই। আমাদের ভুলটা হয়ে গেছে অনেক আগেই। তাই দেশ বিরোধীদের শিকড় একটা গভীর হয়ে দাড়িয়েছে।

তো, কথা হলো, শাহবাগের আন্দোলন নিয়ে। কয়েকজন ব্লগারের শুরু করা একটি উদ্যোগ আজ এত বড় হয়ে দাড়িয়েছে।

কিন্তু মানুষ কি এই ব্লগারদের ডাকে সারা দিতে সেখানে গেছে? না। আমি অন্তত যাই নি। ইমরান এই সরকারের নাম আমি এর আগে কখনোই শুনি নাই। ব্লগার হিসাব্ওে তার তেমন একটা কর্মকান্ড আমি খুজে পাই নাই। সুতরাং, তার ডাকে আমি শাহবাগে গিয়েছে, তা নয়।

আর ব্লগাররা এমন মহান কোন জাতি বা মানুষ্ও নন, যে তারা একটা ডাক দিলেন, আর আমরা সবাই ছুটে গিয়ে তাদের পেছনে দাড়ালাম। সেটিও নয়।

কিন্তু তারপরেও আমি শাহবাগের আন্দোলনে গিয়েছি। কেন গেলাম?

কারণ এই দেশেই আমি দেখেছি, যুদ্ধাপরাধীরা, স্বাধীনতা বিরোধীরা তাদের গাড়িতে পতাকা উড়িয়ে বেড়াচ্ছে। মন্ত্রী এমপি হয়েছে। এলাকার মাতব্বর হয়েছে।

কেউ তার প্রতিবাদ করেনি।

একজন স্বাধীন নাগরিক হিসাবে, আমি শহীদদের অপমান করেছি। কারণ এই স্বাধীন দেশে রাজাকারদের মেনে নিয়েছিলাম আমরা।

শাহবাগের আন্দোলন, এই এতবছর পরে সেটির প্রকাশ্য প্রতিবাদ। মানুষ প্রকাশ্যে দেশদ্রোহীদের বিরুদ্ধে তাদের আঙ্গুল তুলে দাড়িয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কথা বলছে। আমিও আমার সেই কথা, সেই ক্ষোভের কথা বলতে গিয়েছি। আমার ঘৃণার কথা জানিয়েছি।

তো, সেই আন্দোলনটা যেখানে অরাজনৈতিকভাবে শুরু হয়েছিল, এটা ঠিক যে সেটা পরে সেভাবে থাকেনি। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের নেতারা মঞ্চে এসে দাড়িয়েছে। বাম ঘরানার নেতারা তো আগেই ছিলেন।

কিন্তু তাতে কি, যে দাবিতে শাহবাগের আন্দোলন শূরু হয়েছিল, সেটি পাল্টে গেছে? যে চেতনা নিয়ে শাহবাগ শুরু হয়েছিল, সেই চেতনা থেকে কি সেটি সরে এসেছে?

আপনি নিজে কি সেই চেতনায় বিশ্বাস করেন? আপনি কি মনে করেন, পাকিস্তানের দালালি না করে স্বাধীন হ্ওয়া ঠিক হয়েছে, নাকি এখনো মার-গুতা খেয়ে পাকিস্তানের সাথেই থাকা উচিত ছিল?

মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের, স্বাধীনতার পক্ষের যেকেউ, সবাই তো এই আন্দোলনে এসে দাড়াবে। গলা মেলাবে। যে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে, শুধু সেই এই আন্দোলনের সাথে একমত হবে না।

শাহবাগের পক্ষে থাকার দরকার নাই। বাংলাদেশের পক্ষে থাকুন। যতদিন এই আন্দোলন মুক্তিযুদ্ধের কথা বলবে, আপনার কাছে ভোট না চাইবে, ততদিন থাকুন। যতদিন আপনার বিশ্বাসের কথা বলবে, ততদিন থাকুন।

আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ কি মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে? তারা যখন পক্ষের লোক, সেই বিশ্বাসকে ধারণ করেন, তারা তো এখানে আসবেনই। তাকে কি আন্দোলন দলীয় করণ হয়ে যায়। আপনি আমি, কেউই রাজনীতির বাইরে নয়। এই আন্দোলনও নয়। কিন্তু সেটি ক্ষমতায় যাবার জন্যে নয়। সেই অন্যায়ের বিচার চাওয়ার জন্যে।

এখন কথা হলো, বিএনপি কেন আন্দোলনে যাচ্ছে না? জামায়াতে ইসলামী তো যাবেই না, এই দলটি তো স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থা নিয়েছিল। কিন্তু এই আন্দোলন তো বিএনপির বিরুদ্ধে বা আওয়ামী লীগের পক্ষে নয়। এটা যুদ্ধাপরাধীর বিপক্ষে? বিএনপি কি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায় না?

বরং এই দলটির তো এসে আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করা উচিত, যে দলের প্রতিষ্ঠাতাই কিনা স্বাধীনতার ঘোঘণা দিয়েছিলেন।

অনেকেই দেখছি বলছেন, ১৯৭১ সালে কি হয়েছিল, সেটি জানা নেই। শোনা কথায় কান দেব্নে না।

বিয়াল্লিশ বছর পরেও যদি দেশের সঠিক ইতিহাস না জানেন, সেই লজ্জা আপনার।

তবে চাইলেই সেটি কাটাতে পারেন। ৭১ সালে প্রকাশিত পত্রিকা, বিশেষ করে সংগ্রাম এখনো পাবলিক লাইব্রেরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সেন্ট্রাল লাইব্রেরিতে আছে। সেগুলো একবার দেখে আসুন।

এই গোলাম আযম, সাঈদী, কাদের মোল্লার কর্মকান্ড সম্পর্কে, তাদেরই পত্রিকা সংগ্রাম থেকেই বিস্তারিত জানতে পারবেন।

এটাই কিন্তু শেষ সুযোগ। আপনাকে বেছে নিতে হবে একটি পক্ষ।

এখন এই যে দেশে জামায়াত শিবির চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা এখন মরণ কামড় দিতে চাইবে।

কিন্তু এইবারেই একটি ফয়সালা হয়ে যাবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এই দেশে থাকবে নাকি রাজাকারের চেতনা।

হয় তাদের একেবারে নিমুর্ল করতে হবে, না হলে, তারা শক্তিশালী হয়ে জেকে বসবে।

আপনি ঘরে বসে টকশো দেখতে পারেন। বিরিয়ানি খেতে পারেন। কিন্তু দেশের জন্য কিছু করার একটি সুযোগ হারাবেন।

কিন্তু আপনি যদি ঘরে বসে থাকেন, তাদের যদি এইবারেই ঠেকাতে না পারেন, এই দেশ থেকে কখনোই রাজাকারদের সরাতে পারবেন না। তাহলে এই দেশে অন্ধকারের যুগ জেকে বসবে। সেই যুগ থেকে বের হতে শত শত বছর লেগে যাবে।
১৫টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×