somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্ল্যাক হোল কী

২৯ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ১১:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

খুব সহজ করে বলতে গেলে, ব্ল্যাক হোল হচ্ছে মরে যাওয়া তারা। অপঘাতে মৃত অনেক মানুষ যেমন মরে গেলে ভূত হয়ে যায়, তেমনি তারারা মরে গেলে হয় ব্ল্যাক হোল। যেই শোনা, ওমনি হয়তো ক্যাঁক করে আমাকে চেপে বসলে, অপঘাতে মানুষ মরলেই কি আর ভ‚ত হয়? হুমম, তা সবাই হয় না বটে! কিন্তু তারার ভূতই হলো ব্ল্যাক হোল। দাঁড়াও, বুঝিয়ে বলছি।

তারা কী, তা তো নিশ্চয়ই জেনে গেছো। তারা বা নক্ষত্রের কিছু জ্বালানি থাকে, যেগুলো রাসায়নিক বিক্রিয়া করে তাপ ও আলো উৎপন্ন করে। তাপ ও আলো মূলত শক্তির দুইটি রূপ। যখন কোনো তারার জ্বালানি ফুরিয়ে যায়, সেটা তো তখন আর রাসায়নিক বিক্রিয়া করে শক্তি উৎপন্ন করতে পারে না। করবে কীভাবে, ওর তো জ্বালানিই নেই! তখনই তারাটা মরে যায়। এরমধ্যেই কিন্তু তারাটির ভিতরে এক বিশাল ঘটনা ঘটে যায়।

ঘটনাটা আমাদের সূর্যকে দিয়েই বোঝাই। সূর্যের জ্বালানি হলো হিলিয়াম। সূর্যের ভেতরে তো প্রচণ্ড গরম, তাই সেখানে কোন কিছুই স্থির থাকতে পারে না। খুব গরম পড়লে তুমি খুব লাফালাফি করো না? সেরকমই আর কি। তো হিলিয়াম কণাগুলোও প্রচণ্ড গরমে অনবরত ছোটাছুটি করে। এই ছোটাছুটি করতে গিয়ে হিলিয়াম কণাগুলো অনবরত একটার সঙ্গে আরেকটার ঠোকাঠুকি হচ্ছে। আর তা এতোই জোরে হচ্ছে যে, দুইটা হিলিয়াম কণা ঠোকাঠুকি করে একটা কণা হয়ে যাচ্ছে। আর মজার ব্যাপার কি জানো? দুইটা হিলিয়ামের ভেতরে যে মৌলিক উপাদানগুলো থাকে, একটা হাইড্রোজেন কণাতেও সেই পরিমাণেই ওই উপাদানগুলো থাকে। তাই দুইটা হিলিয়াম কণা মিলে যখনই একটা কণা হচ্ছে, তখন আর সেটা হিলিয়াম থাকছে না। সেটা হয়ে যাচ্ছে হাইড্রোজেন। মজার ব্যাপার না?

এখন ঘটনা হলো, দুইটা হিলিয়ামের যেই ভর, একটা হাইড্রোজেন কণার ভর তারচেয়ে বেশি। কিন্তু আকারে হাইড্রোজেনের একটি কণা দুইটি হিলিয়াম কণার চেয়ে ছোট। ফলে, দিন দিন আমাদের সূর্যের আয়তন কমছে, আর ভর বাড়ছে। ভাবছো, এই ভর আবার কি জিনিস? আমরা যে ওজন মাপি, ওটাই আসলে ভর। ওজন অন্য জিনিস। সে আরেকদিন বোঝাবো।

এখন বলো তো, কোন বস্তুর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি বেশি? হ্যাঁ, যেই বস্তুর ভর বেশি, তার মাধ্যাকর্ষণ শক্তিও বেশি। মানে সে তার চারপাশের বস্তুগুলোকে ততোবেশি শক্তি দিয়ে আকর্ষণ করে। ভাবছো, তাহলে তো আমরা সারাদিন বড়ো বড়ো বিল্ডিংয়েই আটকে থাকতাম। আরে বাবা, পৃথিবী যতো বড়ো, ওর মাধ্যাকর্ষণের কাছে আমাদের চারপাশের সবকিছুর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি এতোই কম, যে আমরা আর কোনো কিছুর মাধ্যাকর্ষণই টের পাই না। অর্থাৎ, দিন দিন সূর্যের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি বেড়ে যাচ্ছে। ফলে গ্রহগুলো আস্তে আস্তে সূর্যের দিকে একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছে। যখন সূর্যের আর কোনো জ্বালানি, মানে হিলিয়াম অবশিষ্ট থাকবে না, সবটুকু হাইড্রোজেন হয়ে যাবে, আমাদের সূর্যও তখন একটা ব্ল্যাক হোল হয়ে যাবে। তখন সূর্যের যে কী পরিমাণ মাধ্যাকর্ষণ শক্তি হবে চিন্তা করেছো? কারণ তখন যে ওর ভর অনেক বেড়ে যাবে! তখন ওর আশেপাশের সবকিছুই ও টেনে পেটের মধ্যে নিয়ে যাবে। আর তখন তো আর ওর জ্বালানি নেই, সুতরাং কোনো আলোও থাকবে না। আর ব্ল্যাক হোলের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি এতো বেশি হয় যে, সেখানে আলোও যদি একবার ঢোকে, আর বেরোতে পারে না, আটকে যায়। তাই ব্ল্যাক হোল দেখতে কালো মনে হয়। আর দিন দিন নানা কিছু খেয়ে ওটা ফুলে শুধু ঢোলই হতে থাকে। কেন এমন হয় ভাবছো? আরে, ওটার আশেপাশে যা-ই আসে, সবই তো ওটা টেনে পেটের ভেতর নিয়ে নেয়। আর যা একবার ওর পেটে ঢোকে, তা কী আর বের হতে পারে? আলোও তো বের হতে পারে না!
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×