somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

ইহতিশাম আহমদ
একটি বেসরকারী টিভি চ্যানেলে ক্যামেরাপারসন হিসাবে চাকুরীরত। ত্রিকোন চলচ্চিত্র শিক্ষালয় নামে একটি ফিল্ম স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রশিক্ষক। গল্প, কবিতা লেখা ও অভিনয়ের অভ্যাস রয়েছে।

পাশাপাশি দুটি মসজিদে একসাথে মাইকে খুতবা পাঠ কতটা যুক্তিসংগত

২৯ শে এপ্রিল, ২০১১ সকাল ১১:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রত্যেক শুক্রবার জুম্মার নামাজের সময় আমার মাথয় এই প্রশ্নটা ঘুরঘুর করে। কিন্তু বাড়িতে ফিরে এসে পরিবারের সবার সাথে খাওয়া দাওয়ায় ব্যস্ত হয়ে পড়ায় বিষয়টা নিয়ে আর লেখা হয় না। তাই আজ সকাল সকাল বিষয়টা নিয়ে লিখতে বসলাম।

ঢাকা ঘন বসতি পূর্ন এলাকা হওয়ায় বর্তমানে শুধু পাড়ায় পাড়ায় নয় প্রত্যেক গলিতে গলিতে এখন মসজিদ রয়েছে। সেই মসজিদগুলো বহুতল বিশিষ্ট। তাই স্বাভাবিক ভাবেই সেখানে একাধিক লাউড স্পিকারের ব্যবহার থাকে। অবশ্য লাউড স্পিকার বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের প্রায় সব মসজিদেই থাকে। যা নামাজ পড়ানো ও জুম্মায় খুতবা পাঠের সময় বিশেষ প্রয়োজনীয়।আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল মাইক। যার মাধ্যমে আযান দেওয়া হয়। এবং এর আওয়াজ শুধু মসজিদের ভিতরেই সীমাবদ্ধ থাকে না। ছড়িয়ে পড়ে অনেকদূর পর্যন্ত। বেশ কিছু মসজিদ জুম্মার দিন লাউড স্পিকারের পাশাপাশি মাইকেও খুতবা প্রচার করে। উদ্দ্যেশ্যটা খুবই স্পষ্ট, যারা নামাজে আসেনি তারাও যেন খুতবায় বর্নিত জ্ঞান থেকে বঞ্চিত না হন এবং যারা এখনও মসজিদে পৌঁছাতে পারেননি তারা যেন বুঝতে পারেন মূল নামাজ শুরু হতে আর কতটা সময় বাকি।

সম্প্রতি আমাদের বাড়ির কাছে নুতন একটি মসজিদ চালু হয়েছে। যা অতি ক্ষুদ্র তবে মানুষ আসছে প্রচুর। বেশির ভাগ মুসল্লীকেই রাস্তায় দাঁড়াতে হয়। প্রথম দিকে আর্থিক কারণে একাধিক মাইক কেনায় ক্ষমতা না থাকায় বাইরে দাঁড়ানো মুসল্লীদের ইমামের খালি গলার খুতবা শুনতে হত। কিন্তু পাশের গলির বড় মসজিদে সে সময় ইমাম সাহেবর একাধিক মাইকের সাহায্যে উচ্চস্বরে পাঠকৃত খুতবার কারণে মূলত দুই ইমামের মধ্যে একজনেরটাও ঠিক মত শোনা যেত না। বর্তমানে ক্ষুদ্র মসজিদটিতেও একাধিক বড় বড় মাইক লাগানো হয়েছে। যার ফলে জুম্মার সময় এলকাটি মোটামুটি সরগরম থাকে। বিষয়টি ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে কতটা সংগত আমার জানা নেই তবে সামাজিক এবং পরিবেশগত ভাবে অবশ্যই অসংগত।

এখানে আমি আরো একটি বিষয় উল্যেখ করতে চাই। ইসলামী জলসা এবং রাজনৈতিক সভা-এই দুই সমাবেশে, সমাবেশ স্থলের বাইরেও বহুদূর পর্যন্ত সারি সারি মাইক বেঁধে দেওয়া হয় যাতে করে আগ্রহী শ্রোতাদের পাশাপাশি অনাগ্রহী শ্রোতারাও বাধ্য হন তাদের বক্তব্য শুনতে। বিষয়টির মাঝে কতটা ভব্যতা রয়েছে তা আমার বোধগম্য নয়।
আমার পাড়ায় একটি হাসপাতাল রয়েছে যা কেবলমাত্র হৃদ রোগের চিকিৎসার জন্যেই পরিচিত। কয়েক দিন আগে সপ্তাহ ব্যাপি এক ইসলামী জলসায় প্রায় মাইল খানেক এলাকাজুড়ে প্রকম্পিত হচ্ছিল। প্রত্যেক লাইট পোস্টে দুইটা করে মাইক বাঁধা থাকলেও হাসপাতালের সামনের লাইট পোস্ট দুটিতে সৌভাগ্যবশতঃ একটি করে মাইক বাঁধা ছিল। আমার জানা নেই হাসপাতালের রোগীদের সে সময় অবস্থা কি ছিল। হাসপাতালের কথাতে মনে পড়ল, কদিন আগে পি জি হাসপাতালে গিয়েছিলাম। সেখানকার ছাত্র সংগঠনের কি এক অনুষ্ঠানে চার পাঁচটি ঘোড়ার গাড়ী এবং বড় একটি ব্যান্ড পার্টি হাসপাতালের ভিতরে অনেকক্ষণ ধরে খুব করে ঢাক ঢোল পিটালো এবং মেডিকেলের ছাত্ররা ভুভূজিলা বাজানোর প্রতিযোগীতা চালাল।

৯০ এর শেষের দিকে খবরের কাগজে একটি সংবাদ পড়ে খুব উত্তেজিত হয়েছিলাম।পশ্চিম বঙ্গে নাকি মসজিদে মাইক বাজিয়ে আজান দেয়া নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।পরে কলকাতায় চিকিৎসার জন্যে গিয়েছিল এমন একজনের কাছে জানতে পারলাম মাইক বাজানো নয় কেবল মাত্র জোরে মাইক বাজানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শুধু মসজিদে নয় পূজা মন্ডব, রাজনৈতিক সভা সবখানেই র্নিদিষ্ট মাত্রার উপরে মাইক বাজানো নিষিদ্ধ। অর্থাৎ সেখানে নেতা বা মাওলানার কন্ঠ না চাইলে আপনাকে শুনতে হবে না। পূজার সময়ও আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে গান বাজবে না। আমাদের দেশেও কি এমনটা হতে পারে না?
৭টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পুরনো ধর্মের সমালোচনা বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেই নতুন ধর্মের জন্ম

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:১৫

ইসলামের নবী মুহাম্মদকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তিথি সরকারকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে এক বছরের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে প্রবেশনে পাঠানোর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×