somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঘোড়ার ডিম এবং তাহারা তিন জন (অত্যাধুনিক রুপকথা)

২৭ শে এপ্রিল, ২০১১ দুপুর ১:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিদ্রঃ পড়িলে পুরাই পড়িবেন নাইলে বাদ দ্যান
কোনাকুনি (পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর, দক্ষিন কোনটাই না) আমেরিকার এক ঊপকূলবর্তি বনে এক ঘোড়ি (মখিলা ঘোড়া) বাস করিত। সে ছিল খুবই মেধাবি এবং সুন্দরী। ঐ বনেরই একখানা নাম করা ইউনিভার্সিটিতে সে থিসিস করিত, তাহার থিসিসের বিষয় ছিল ঘোড়ার ডিম! বহুলআলোচিত ঘোড়ার ডিমের অস্তিত্ব কি কোন কালে ছিল নাকি আদৌ ছিলনা এই সমস্ত নিয়েই সে দিবা রাত্রি গবেষোনা চালাইত।
যাহাইহউক একদিন প্রাতুস্কালে সে তড়িঘড়ী করিয়া ইউনির উদ্দেশ্যে যাত্রা করিল, তাহাদের ক্যাম্পাসের অবস্থান ছিল একটি বৃদ্ধ বটবৃক্ষের নিচে ছায়াঘেরা পরিবেশে। এবং সে ক্যাম্পাসে যাইতে বাধিত ঘন কাঁশবন। ঘোড়িটি যখন সেই কাঁশবনের পথ অতিক্রম করিতে গেল তখন আচমঁকা একখানা রুপবান এবং সৈনিক ঘোড়ার সঙ্গে তাহার ধাক্কা লাগিল, এবং সেই ধাক্কায় ঘোড়িটির পিঠের বইপত্র গুলো মৃত্তিকায় ছিটকাইয়া পড়িল। অতঃপর ঘোড়াটি দুই পা উচু করিয়া ঘোড়িকে সরি বলিল এবং মৃত্তিকায় পতিত বই-পত্র গুলি মুখ দিয়া উঠাইতে উদ্যত হইল, কাকতালিও ভাবে ঘোড়িটিও একই কাজ করিতে ইচ্ছাপোষন করায়, দুজনার মস্তিস্কে পুনরায় টক্কর লাগিল। এবং সেই ক্ষনে দুইজন দুইজনার দিকে অপলক দৃষিটিতে চাহিয়া রহিল, আর ব্যাকগ্রাউন্ড এ “ঘোড়াতো নয় যেন আগুনেরই গোলা” গানটির মিউজিক বাজিতে লাগিল।
এইখানে বলাই বাহুল্য যে ঘটনা সংঘটনের পর হইতে তাহারা দুইজন দুইজনাকে অন্ধের মতন ভালোপাইতে লাগিল। কিছুদিন এইভাবে অতিবাহিত হওয়ার পরে, বনের রাজা সিংহের পক্ষ হইতে ঘোড়াটির নিকট একখানি ইমেইল আসিল। ইহাতে মাননীয় সিংহ তাহাকে ইরাক যুদ্ধে যাইবার জন্য অনুরোধ করিয়াছে।
এমনি করিয়াই বিদায়ের মুহুর্ত ঘনিয়ে এল। ঘোড়াটি চলিয়া যাইবার পুর্বের নিশিতে তাহারা দুইজন চেরি বাগানে ডেট করিল।
এরপর কাটিয়া গেল দীর্ঘ তিন মাস, একদিন ঘোড়িটি হঠাত করিয়া অস্বস্তিবোধ করিতে লাগিল, তাহার মাথা ঘুরিয়া উঠিল এবং বমি বমি বোধ হইতে লাগিল। ততক্ষানত সে ডাক্তাররের কাছে ছুটিল, বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করিবার পরে ডাক্তার তাহাকে সুসংবাদ খানা বুঝাইয়া দিল। সে আনন্দে আত্নহারা হইয়া তাহার বয়ফ্রেন্ডের নিকটে খুসির সংবাদটি ইমেইল করিয়া দিল।
কিন্তু সমস্যা হইল অন্যখানে এই অসুস্থ শরীরে সে তাহার থিসিসের ব্যাপারে মনোনিবেশ করিতে পারিলনা, ইহার জন্য তাহার মন যারপরনাই খারাপ হইল, কারন সে ছিল খুবই কর্ম পরায়ন মহিয়সী।
তখন ঘোড়াবিষয়ক দেবতা ঘিউস, ব্যাপারখানা বুঝিতে পারিল। তাই তিনি স্বপ্নের মাধ্যমে একরাতে ঘোড়ীটির নিকটে আসিল। তাহার আগমনে ঘোড়ী খুবই বিরক্ত হইয়া বলিল, মাননীয় দেব, আপনাকে না কতবার বলিয়াছি রাত্রি কালে আসিয়া আমার সহিত লুলামি করিবেননা? ইহা আমার বড়ই না পছন্দ।
ঘিউস তখন বলিল, ওহে সুন্দরি আমি তোমার সাথে আজিকে শুধু লুলামি করিতে আসিনাই তোমার উপকারও করিতে আসিয়াছি। অনঃসত্তা হওয়ার কারনে তুমি যে থিসিস করিতে পারিতেছনা এই বিষইয়ে আমি তোমাকে সাহায্য করিতে আসিয়াছি। ঘোড়ি তাচ্ছিল্যভরে শুধাইল কি সে সাহায্য?
ঘিউস কহিল, আমি তোমার গর্ভে ঘোড়ার বাচ্চা না দিয়া একখানা ঘোড়ার ডিম দিয়া দিতে পারি, ইহাতে করিয়া তুমি তোমার নিজ ডিম লইয়া ভারি থিসিস করিতে পারিবা। ঘোড়ি ভাবিয়া দেখিল ব্যাপারখানাতো আসলেই মন্দ হয়না। তাই রাজি হইয়া কহিল তবে তাই হউক। ঘিউস তখন একটু মোড়াইয়া উঠিয়া কহিল তাহা হওয়াইতে গেলে যে আমাকে আজ রাত্রি তোমার সাথে যাপন করিতে হইবে, ইহা কি সম্ভব! ঘোড়ী ঘিউসের এই কুমতলব বুঝিতে পারিল কিন্তু এই সুজোগ হাতছাড়া না করিয়া কহিল, কেন না?
অতঃপর সূর্যদয়ের কালে ঘিউস ঘোড়িকে কহিল, কেউ যেন না জানিতে পারে যে আমি শেষ পর্জন্ত ঘোড়ির সঙ্গে রাত্রিযাপন করিয়াছি, যদি জানে তবে তোমার ঘোড়ার ডিমের আশা কিন্তু বিফলে যাইবে।
সময়কালে ঘোড়ি সত্যি সত্যিই একটি ঘোড়ার রসব করিল। আশাপূরন হওয়াতে প্রথম কয়েকদিন ঘোড়ি চরম আকারে খুসি থাকিলেও কয়েকদিন পরে তাহা গভির দুঃখে পরিনিত হইল। কারন ঘোড়ার ডিমে তা কে দিবে? আর তা না দিলে ডিম ফুটে বাচ্চা কিভাবে বের হইবে! ঘোড়ি উপায়ন্তর না দেখিয়া স্বপ্নে আবার ঘিউসের সরনাপন্ন হইল। ঘিউস শুনিয়া পরিস্কার করিয়া চোখ উল্টাইয়া দিল, এবং বলিয়া দিল এই ব্যাপারে আমি কিছুই করিতে পারিবনা।
ঘোড়ি তখন মনের দুঃখে বিশাল দুঃখময়ী। এখন কি হইবে! তখন সে অ্যামেরিকান সামু ব্লগে দুঃখের ইতিবৃত্য জানাইয়া একখানি বিজ্ঞাপন দিল এবং ঘোষনা করিল যদি কেহ তা দিয়ে তাহার ঘোড়ার ডিম থেকে বাচ্চা ফুটাইতে পারে তবে তাহাকে ১ ট্রিলিয়ন জিম্বাবুইয়ান ডলার প্রদান করা হইবে। উপহারের লোভে প্রথমে আসিল মুরগি তাহার মোরগ সঙ্গিটি লইয়া। মুরগিটি একটানা ১৬ দিন ১৭ রাত্রি দিমে তা প্রদান করিল। ১৭ দিনের মাথায় সে তাহার মোরগ সঙ্গিটিকে ডিমের উপরে বসিবার দায়িত্ব দিয়া ১৬ দিনের বাথরুম একদিনে সারিয়া নিয়া আবার তা দিতে বসিল। কিন্তু দীর্ঘ একমাস তা দিয়া কিছুই হইলনা। এরপর এক এক করিয়া ডিম্ব থেকে জন্ম নেওয়া সকল প্রানীই আসিল কিন্তু ফলাফল সেই শুন্যই থাকিল। ঘোড়ি যখন আশা প্রায় ছাড়িয়াই দিল তখন আসিল বিজ্ঞ শিয়াল পন্ডিত। কিন্তু এই শিয়াল পন্ডিত পান্ডিত্যের চাইতে লুলামিই বেশি করিত।
ঘোড়ি পন্ডিতকে বলিল তুমি ডিমে কিভাবে তা দিবে হে? তোমার কি এই অভিজ্ঞতা কখনও ছিল? পন্ডিত বলিল আমার কাজ হইল তোমার বাচ্চাকে ফুটাইয়া দেওয়া, তাহা আমি যে কোন রুপে করিলেই কি যথেষ্ট নয়? ঘোড়ি বলিল, খুব যথেষ্ট।
পন্ডিত ডিম খানা নিয়া ৭ সুমুদ্র ১৩ নদী পাড়ি দিয়া আমাদের রাজধানী ঢাকায় আসিয়া উপস্থিত হইল। অতঃঅর সে এফ ডি সি তে প্রবেশ করিল, সেখানে কোমলবতি মখিলা তারকাদের খেমটি নৃত্যে পরিবেশ গরম হইয়া উঠিল, এবং সেই গরমে ডিম খানাও গরমিত হইতে লাগিল।এরপরে পন্ডিত মহাশয়, জনপ্রিয় মডেল প্রভার জনপ্রিয় ভিডিও ক্লিপ খানা চালাইয়া দিয়া গরম ডিমখানাকে কম্পুর সামনে রাখিয়া দিল। এবং নিশ্চিন্তে ঘুমাইতে গেল। সকালে উঠিয়া আসিয়া সে চোখ বড় বড় করিয়া দেখিতে পাইল ডিমের চোখ ফুটিয়া গিয়াছে। ইহার পরে আবার কিছুদিন অপেক্ষা করিবার পরে চৈতি নামক অন্য এক মডেলেরব স্বধর্মি ভিডিও ক্লিপের মাধ্যমে একই কাজ করিয়া, ঘোড়ার ডিমের মুখখানাও ফুটাইয়া দিতে সক্ষম হইল।
ইহার পরে বেশ কিছুদিন অতিবাহিত হইয়া গেছে। ঘোড়ার ডিম চোখ ফুটাইয়া মুখ দিয়া বলিতে লাগিল, আমি কবে সম্পুর্ন রুপে ফুটিয়া উঠিব? পন্ডিত উত্তর করিল, ধৈর্য ধর বাছা।
ইহার ভেতরেই পন্ডিত হঠাত একদিন দেশিয় সামু ব্লগের মাধ্যমে খবর পাইল, সখ নান্মি আরেকজন জনপ্রিয় তারকারও নাকি সমজাতিয় ভিডিও ক্লিপ বাজারে প্রকাশ পাইয়াছে। ইহা শুনিয়া পন্ডিতের মনে তো আর খুসি ধরেনা, কারন এই শর্টখানা দেখিলে ঘোড়ার ডিম যে পরিপুর্ন ভাবে ফুটিয়া উঠিবে এই বিষইয়ে কোনই সাক(সন্দেহ) নাই। তাই সে ক্লিপখানি পাইবার জন্যে দিবা-রাত্রি হরদমে নেট গুতাইয়া যাইতাছে। আর ঘোড়ার ডিমখানাও চোখ ফুটাইয়া রহিয়াছে ফুটিবার জন্যে।
বিদ্র২ঃ এই গল্পটির পুনঃপ্রচার দেখতে পাবেন আগামি কাল বিকাল তিনটায়, ততক্ষনে সবাই ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন এবং-------অবশ্যই ফুটতে থাকেন B-)
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে এপ্রিল, ২০১১ দুপুর ২:০১
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×