somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাজস্ব বোর্ডের পুরস্কার বিলাস!

২৪ শে এপ্রিল, ২০১১ সকাল ১০:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সমকাল ২৪/০৪/১১

কর আদায়ে বিশেষ অবদান রাখার ক্ষেত্রে পুরস্কার দেওয়ার নামে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) অনিয়ম চলছে। বিধি ভঙ্গ করে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে এনবিআরের পিয়ন, দারোয়ান, ড্রাইভার, ঝাড়ূদার এমনকি নৈশপ্রহরীকে পর্যন্ত পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। কর ফাঁকি রোধসহ কর আদায়ে বিশেষ অবদান রাখা এবং কর আদায়ে উৎসাহিত করতে এনবিআরের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি) এবং লার্জ ট্যাক্স পেয়ার্স ইউনিটের (এলটিইউ) কর্মকর্তাদের পুরস্কার দেওয়ার বিধান রয়েছে। প্রতি তিন মাস অন্তর এ পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে কর আদেশ মানা হচ্ছে না। বরাদ্দ টাকা ভাগবাটোয়ারা করার জন্য স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে যাকে খুশি তাকে পুরস্কৃত করা হচ্ছে। পাশাপাশি তালিকায় নাম তুলতে তদবিরও চলে বলে অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, বিশেষ অবদান রাখায় সংশ্লিষ্ট নন অথবা
অবদান রাখতে সক্ষম হননি, এমন কর্মকর্তার নামও তালিকাভুক্ত হচ্ছে। তালিকা যাচাই না করেই অনুমোদন দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। আয়কর পুরস্কার আদেশ ১৯৮০-তে কর কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তাকে পুরস্কার দেওয়া যাবে না বলে বিধান থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। নিয়ম লঙ্ঘন করে সিআইসির মহাপরিচালক (কমিশনার পদমর্যাদা) ও এলটিইউতে কর্মরত কমিশনারদের প্রতি বছর পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। আদেশ অনুযায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রতিজনের মূল বেতনের ২৪ মাসের বেশি টাকা পুরস্কার হিসেবে না দেওয়ার কথা থাকলেও এর চেয়ে বেশি টাকার পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। সূত্র জানায়, জাতীয় পর্যায়ে বিশেষ কৃতিত্বের জন্য দেওয়া পুরস্কারের মূল্য ২৫ থেকে ৫০ হাজার এবং সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা পর্যন্ত হলেও রাজস্ব বোর্ড প্রতি জনকে ১০ থেকে ১২ লাখ, অনেক ক্ষেত্রে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত পুরস্কার দিচ্ছে। কর্তৃপক্ষের প্রিয়ভাজন হওয়ায় কেউ তালিকায় নিজের নাম নিজেই বসিয়ে দিচ্ছেন।
এনবিআর সূত্র জানায়, ২০০৮-০৯ ও ২০০৯-১০ অর্থবছরে আট কোটি টাকা করে পুরস্কার দেওয়া হয়। স্থানীয় ও রাজস্ব অডিট অধিদফতরের এক রিপোর্টে বলা হয়, ২০০৬ থেকে ২০০৯_ এই তিন অর্থবছরে পুরস্কার হিসেবে সিআইসি বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ৩ কোটি ৯৭ লাখ ৯৬ হাজার ১৪০ টাকার পুরস্কার নিয়েছেন। শুল্ক আদেশ ১৯৮৬ এবং আয়কর পুরস্কার আদেশ ১৯৮০ অনুযায়ী অনিয়মিত পুরস্কার হিসেবে এ টাকা দেওয়া হয়েছে। এদিকে গত বছর ৯ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় ও রাজস্ব অডিট অধিদফতরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে_ অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে এসব পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এ টাকা ফেরতযোগ্য।
বিধি লঙ্ঘন করে ২০০৯-১০ অর্থবছরে দ্বিতীয় কোয়ার্টারে সিআইসি বিভাগের মহাপরিচালক মোঃ আলাউদ্দিনকে পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয়েছে ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। একই সময়ে একই প্রক্রিয়ায় এ বিভাগের অতিরিক্ত কর কমিশনার মনিরুজ্জামান মালেক ও হারুন-অর-রশিদকে ৬ লাখ ৪ হাজার টাকা করে পুরস্কার দেওয়া হয়। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে বৃহৎ করদাতা ইউনিটের কমিশনার পদে থাকাকালে মোঃ আলাউদ্দিনকে পাঁচ লাখ টাকার পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। ওই সময়ে একই বিভাগের ৭৩ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পুরস্কার দেওয়া হয়। এর মধ্যে চারজন ড্রাইভার, ১৪ জন নোটিশ সার্ভার, একজন দফতরি, একজন নৈশপ্রহরী ও একজন ঝাড়ূদারকে ২০ হাজার টাকা করে পুরস্কার দেওয়া হয়।
এনবিআরের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জাহান আরা সিদ্দিকী সমকালকে বলেন, রাজস্ব ফাঁকির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করা এবং ফাঁকি দেওয়া রাজস্ব আদায়ে বিশেষ অবদান রাখার ক্ষেত্রে পুরস্কার দেওয়া হয়। সাধারণ অবদানের ক্ষেত্রে এ পুরস্কার দেওয়ার কথা নয়। অনিয়ম, স্বজনপ্রীতির প্রশ্নে তিনি বলেন, অনিয়ম-স্বজনপ্রীতি হচ্ছে কি-না তা তার জানা নেই। পুরস্কারের জন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামের তালিকা বোর্ডসভায় যাচাই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচিতদের নামের তালিকা নিয়ে বোর্ডসভায় আলোচনা হয় না। এনবিআর চেয়ারম্যান নিজের ক্ষমতাবলে ওইসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর নামের তালিকা চূড়ান্ত করেন। ঝাড়ূদার, পিয়ন, ড্রাইভার, নৈশপ্রহরীদের পুরস্কারপ্রাপ্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা এর আওতায় পড়েন না। হয়তো মানবিক দিক বিবেচনা করে তাদের পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×