somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রানা প্লাজা-ট্রাজেডি এবং জাকাত

২৮ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



এত দুঃখ কোথায় রাখি? এটি কোন কবিতার লাইন এ মুহূর্তে মনে পড়ছে না। কিন্তু ঘটনাটি ঠিক একই রকমের। যতদূর জানতে পারি, রানা প্লাজায় আহত-নিহত পরিবারের সদস্যরা সরকারের যৎ সামান্য সাহায্যও পায় নি। সরকার একে পাস কাটাতে পেরেছে, এটাই তার স্বস্তি। কিন্তু আমাদের অস্বস্তিটা হল, আমরা কোন দিকে যাবো?

ঘটনার উত্তপ্ত অবস্থায় অনেক সাহায্য সাভারের চারপাশে ঘুরে বেড়িয়েছে। সবাই হাত বাড়িয়ে ছিলেন। কিন্তু বাঙালি তো হুজুগে। যতদিন হুজুগ ছিল, মিডিয়ার কভারেজ ছিল, ততদিন সবার মনই এজন্য উছলে উঠেছিল। এখন তো সবই নীরব। যারা দুর্ঘটনার শিকার, শুধু তারা এবং তাদের পরিবার ভবিষ্যতের গাঢ় অন্ধকারকে বুকে করে দীর্ঘশ্বাস ফেলছে। আর হ্যাঁ, ঘটনাচক্রে বা আমাদের চ্যানেলের মাধ্যমে একটি ডাটা এসে পোঁছাচ্ছে ক্ষীতগ্রস্তদের তালিকাসহ। আর ভিতরে ভিতরে কেঁপে উঠছি, কী করব আমরা? কী করার আছে এ মুহূর্তে?

'কারো চিকিৎসা সমাপ্ত হয় নি, কেউ পঙ্গু হয়ে বাসায় বসে আছে। অন্যের গলগ্রহ হয়ে পেট চালানো কারো কারো জন্য সম্ভব হলেও বাড়ির মালিক তাড়িয়ে দিচ্ছে ভাড়া বাকি পড়ার দরুণ। পিতা-মাতাহীন শিশুগুলো আর কাঁদে না, তবে ক্ষিদের তাড়নায় থালা-বাসন নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েছে। যেই শিশুটি স্কুলমুখো ছিল সে এখন টোকাই...।'

রমজানে আমরাও কিছু ফান্ড সংগ্রহ করি। বলে নেওয়া ভাল, সংগৃহীত পুরোটা ফান্ডই দরিদ্রদের শিক্ষা খাতে ব্যয় হয় অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে। এবং তা এতোই অপ্রতুল যে, শিক্ষার্থীদের চাহিদার নিরিখে সারাটা বছর সংকোচিত হয়ে থাকতে হয়। এবারে এই টানাটানির মাঝেই এক সদস্যের প্রশ্ন, রানা প্লাজায় দুর্ঘটনার শিকার মানুষদের উপস্থিত সাহায্য করার চেয়ে দরিদ্রদের শিক্ষা-কার্যক্রম অব্যাহত রাখা বেশি দরকারি কি-না? যেখানে মানুষ খেতেই পায় না, স্বাভাবিক জীবনের এবং চিকিৎসার নিশ্চয়তা পায় না, সেখানে শিক্ষার চিন্তা বিলাসিতা নয় কি? প্রশ্নের পর কোনো উত্তর উচ্চারিত হয় নি, মাথায় আসে না। তবে কাঁদলাম একান্ত নীরবে এবং প্রশ্নের কারণে যে জ্বলন তৈরি হল, তা কীভাবে নিভানো যায়, তা-ই এখন খুঁজছি। প্রশ্নকর্তা সদস্য একটা প্রস্তাব দিল, জাকাতের টাকাটা নির্ধারিত খাতে থাকুক, কিন্তু এতগুলো মানুষকে দুর্দশায় রেখে আমাদের বর্ণিল ঈদের আয়োজন অযৌক্তিক এবং অবশ্যই দুঃখজনক। ও আরো কিছু মন্তব্য করেছে, যা একান্তই ওর ও আমাদের গণ্ডিবদ্ধ ধর্মীয় তত্ত্বকথা। সে-গুলো এখানে না হলেও চলে। কিন্তু ওর প্রস্তাব হল আমরা যারা এসব কর্মের সঙ্গে জড়িত, তাদের এবারের ঈদে একমাত্র দরকারি কাপড় কিনে বাকি টাকাটা সেই সব হতাহত ভাগ্যপীড়িত মানুষজনদের দিয়ে দেওয়া।

জানা মতে, গেল কয় বছর ধরে সার্কেলের প্রায় অর্ধেক সদস্যই ঈদে কোনো জামা-কাপড় নিজের জন্য কেনে না। এ-খাতে যে বাজেট থাকে, এর সবটাই প্রতি বছর গরিবদের মাঝেই বিতরণ করা হয়। কেউ কেউ অবশ্য এটা বই-কেনায় খরচ করে। এবার তাহলে ভাই-বন্ধু, আত্মীয় স্বজনকেও উদ্বুদ্ধ করতে হবে। ঈদের উপহার-আদান-প্রদানে একটু হ্রাস টানতে হবে।

প্রিয় পাঠক, আপনিও আপনার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসুন। আপনার জাকাতের একটা অংশ নিজ হাতে ক্ষতিগ্রস্ত সেই সব পরিবারের কাছে পৌঁছে দিন। যদি মনটা তৈরি থাকে, নিজের খরচ থেকেও খানিকটা তাদের দিন। এবারকার ঈদে ভাল কাপড়, নতুন কাপড় নাই-বা পরলেন! একটি বিপন্ন মানুষের মুখের হাসি হাজার নতুন ও দামি কাপড়ের চেয়েও শ্রেষ্ঠ! প্লিজ পাঠক... উদ্যোগী হোন...
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্যামুয়েল ব্যাকেট এর ‘এন্ডগেম’ | Endgame By Samuel Beckett নিয়ে বাংলা ভাষায় আলোচনা

লিখেছেন জাহিদ অনিক, ২৮ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৮



এন্ডগেম/ইন্ডগেইম/এন্ডগেইম- যে নামেই ডাকা হোক না কেনও, মূলত একটাই নাটক স্যামুয়েল ব্যাকেটের Endgame. একদম আক্ষরিক অনুবাদ করলে বাংলা অর্থ হয়- শেষ খেলা। এটি একটা এক অঙ্কের নাটক; অর্থাৎ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রায় ১০ বছর পর হাতে নিলাম কলম

লিখেছেন হিমচরি, ২৮ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১

জুলাই ২০১৪ সালে লাস্ট ব্লগ লিখেছিলাম!
প্রায় ১০ বছর পর আজ আপনাদের মাঝে আবার যোগ দিলাম। খুব মিস করেছি, এই সামুকে!! ইতিমধ্যে অনেক চড়াই উৎরায় পার হয়েছে! আশা করি, সামুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যাঙ দমনের নেপথ্যে এবং রাষ্ট্রীয় জ্ঞান-বিজ্ঞানের সমন্বয়

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৭


ব্যাঙ দমনের বাংলায় একটা ইতিহাস আছে,খুবই মর্মান্তিক। বাংলাদেশে বহুজাতিক কোম্পানির কোন সার কেনা হতো না। প্রাচীন সনাতনী কৃষি পদ্ধতিতেই ভাটি বাংলা ফসল উৎপাদন করতো। পশ্চিমবঙ্গ কালক্রমে ব্রিটিশদের তথা এ অঞ্চলের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পজ থেকে প্লে : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

লিখেছেন বন্ধু শুভ, ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:১৫


.
একটা বালক সর্বদা স্বপ্ন দেখতো সুন্দর একটা পৃথিবীর। একজন মানুষের জন্য একটা পৃথিবী কতটুকু? উত্তর হচ্ছে পুরো পৃথিবী; কিন্তু যতটা জুড়ে তার সরব উপস্থিতি ততটা- নির্দিষ্ট করে বললে। তো, বালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামে ভুল থাকলে মেজাজ ঠিক থাকে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৫


বেইলি রোডে এক রেস্তোরাঁয় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে একজন একটা পোস্ট দিয়েছিলেন; পোস্টের শিরোনামঃ চুরান্ত অব্যবস্থাপনার কারনে সৃষ্ট অগ্নিকান্ডকে দূর্ঘটনা বলা যায় না। ভালোভাবে দেখুন চারটা বানান ভুল। যিনি পোস্ট দিয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×