(ক্লোনের প্রচলিত ধারনার উপর লেখা)
দৃশ্য-১
২১০০সাল,১৪ এপ্রিল,বুধবার
মফিজ সাহেব পার্কের বেঞে বসে আছেন।তিনি এক দৈনিক পত্রিকায় কাজ করেন তার পাশেই উদাস মনে বসে আছেন এক ভদ্রলোক।লম্বা চুল,খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি,গায়ে সাদা পাঞ্জাবী।মফিজ সাহেব চা ওয়ালাকে ডাকলেন, চা দিতে বললেন।ভদ্রলোকটি ও চা দিতে বললেন।
মফিজ সাহেব জিজ্ঞস করলেন,এই চা কত?
তিনটাকা,
আমার থেকে তো ভাংতি নাই।
পাশের ভদ্রলোকটি মফিজ সাহেবের টাকা দিয়ে দিলেন।অনেক কথা বলে মফিজ সাহেব জানতে পারলেন তিনি একজন কবি ।নাম কাজী নজরুল ইসলাম।পেশায় ঘুরাফেরা করা আর কবিতা গান লেখা। মফিজ সাহেব কিছুটা হেসে বললেন বাহ আপনার নাম ও কবির নামে, পেশায় ও কবিতা লেখেন?লোকটি বলল আমি তো জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ই।মফিজ সাহেব কিছুটা অবাক হয়ে বুজলাম না।
আমি জাতীয় কবির ক্লোন।কবি মৃত্যর আগে এক বিজ্ঞানী তার ক্লোন করেন ।এটা কাঊকে তখন জানানো হয়নি কারন ক্লোন নিষিদ্ধ ছিল তখন।
অবাক হলেন মফিজ সাহেব ।তা এখন কি করেন?কবিতা লিখি।এই যে আমার কবিতার পান্ডুলিপি।
মফিজ সাহেব বললেন,তো এখন তো ক্লোন নিষিদ্ধ নেই।সবাইকে আপনার পরিচয় দেন।
“কেঊ বিশ্বাস করবে না কারন যে বিজ্ঞানী আমার ক্লোন করেছে বেঁচে নেই।“
মফিজ সাহেব তার কবিতা গুলো নিলেন এবং পত্রিকায় ছাপালেন।সারাদেশে ব্যাপক হইচই ।প্রিয় কবিকে যেভাবে হোক ফিরে পেয়েছেন।দেশে আনন্দের বন্যা।কিছুদিনের মধ্যেই তার কবিতার বই বের হল।
দৃশ্য-২
এদিকে কিছু লোক নতুন কবির প্রতি ইর্ষানিত।তারা তার পেছনে লাগল।তার বিভিন্ন কবিতায় ভুল মানবতাবিরোধী কথাবার্তা বের করার জন্য উঠেপড়ে লাগল।তারা অনেক খুঁজে বের করল তিনি নারীকে তার লেখায় ছোট করেছেন।তিনি নারীর সমান অধীকার,সমান অংশগ্রহকে অস্বীকার করেছেন।তাদের প্রমান-
"কোনো কালে একা হয়নি ক’ জয়ী পুরুষের তরবারী,
প্রেরণা দিয়াছে, শক্তি দিয়াছে বিজয় লক্ষ্মী নারী"।
১।এখানে কেন শুধুমাত্র পুরুষদের জয়ের কথাই বলল??
২।নারীর কাজ কি শুধু চেতনা দেয়া?? নারীরা ও সেই বিজয়ে সমানভাবে শারিরীক এবং মানসিকভাবে অংশগ্রহন করেছেন।
৩।যুদ্ধক্ষেত্রেও কি শুধু নারী চেতনা দানকারীনি?এটা কি নারীর অধীকার খর্ব করা নয়?
নারীবাদী(?)এবং তথাকথিত কিছু চুশীল বুদ্ধিজিবী(?)এ নিয়ে ব্যাপক তৎপর হয়ে ঊঠল।এমনকি তারা বলল যে লাইন দুটি বাদ দেয়া হোক অথবা এভাবে লেখা হোক-
পুরুষ এবং নারী
সকল জয়ে সকল কাজে সমান অংশীদারী।
(আহা রে কই শেখ সাদী/কই বকরির লাদী।।কোথায় আগরতলা আর কোথায় চোকির তলা)
তার বইয়ের বিরুদ্ধে কেস করা হল
দৃশ্য-৩
আদালতে জর্জ সাহেব ঃবাদী এবং বিবাদী পক্ষের যুক্তি উপস্থাপিত হোক
নারিবাদী ও চুশীলরাঃযুক্তি পেশ করল।(উপরে দ্রষ্টব্যযুক্তি গুলো)
কবি নজরুলঃমি লর্ড আমি তারা আমার কবিতার ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছে।
১।আমি প্রায় পুরো কবিতায় নারী পুরুষ সমান কথাটা পরিষ্কারভাবে বলেছি।যেমন-
আমার চক্ষে পুরুষ-রমণী কোনো ভেদাভেদ নাই!
বিশ্বে যা-কিছু মহান্ সৃষ্টি চির-কল্যাণকর,
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর
২।এখানে যে কারনে আমি এরকম বলেছি তার কারন আপনি যানেন নারীরা প্রকৃতিগতভাবেই শারিরীক দিকদিয়ে কিছুটা দুর্বল।তাই আমি তাদেরকে কিছু ক্ষেত্র থেকে সরিয়ে রেখে দেখিয়েছি।কিছু দিক দিয়ে তারা অনেক বেশি শক্তিশালী পুরুষদের থেকেও।যেমন- মায়া মমতা ভালবাসা
৩।আমি নারীদেরকে কিছু কিছু কাজে সরাসরি জড়িত না দেখালে ও প্রধান ফুয়েল হিসেবে দেখিয়েছি।আর পুরুষ নামক গাড়ীটি সেই অনেক ক্ষেত্রে সে ফুয়েলে ভর করেই চলে।
আদালতঃআদালত সকল সাক্ষ্য প্রমান বিবেচনায় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে সসম্মানে মামলা থেকে অব্যাহতি দিল।এবং এটা প্রমানিত হল চুশীলরা নারী অধীকারের ধোঁয়া তুলে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়েছে।প্রথমবারের মত তাদেরকে ক্ষমা করা হল এবং ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করা হল।(বাংলা ছিনেমার মত হয়ে গেল)
পর্দার অন্তরালেঃচুশীল ও নারীবাদীদের মাথায় হাত।এবারের ব্যবসাটা গেলরে।দাতারা তো খালি হাতেই ফিরায়া দিল।অপারেশন ফেইলড।
বিঃদ্রঃ-একটি কাঁচা মাথা প্রসুত কাঁচা লেখা।